রাজধানীর পল্লবীতে সাত বছর বয়সী সন্তানের সামনে ব্যবসায়ী সাহিনুদ্দিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার মামলায় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালসহ দুজনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বুধবার বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকার মুখ্যমহানগর আদালতের (সিএমএম) হাকিম মাহমুদা আক্তার এ আদেশ দেন৷
তার সঙ্গে কারাগারে যাওয়া অপর আসামি হলেন জহির উদ্দিন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন সাবেক এমপি এম এ আউয়ালসহ তিনজনকে আদালতে হাজির করেন৷
এরপর আসামি আউয়াল ও জহিরকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন৷
এ মামলার আরেক আসামি নুর মোহাম্মদ হাসান ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন একই তদন্ত কর্মকর্তা।
এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জামিনের আবেদন করেন।
গত ২১ মে ঢাকার মুখ্য মহানগর (সিএমএম) আদালত আউয়ালকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠান।
গত ২০ মে ভৈরব এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি এম এ আউয়ালকে গ্রেপ্তার করে র্যাব সদস্যরা।
পরে জানা যায়, সাহিনুদ্দিনের জমি দখল করতে তাকে খুন করায় আওয়াল। নিহতের শিশুসন্তান এই খুনের দৃশ্য দেখার পর থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে।
গত ১৬ মে খুনের পরদিন সাহিনুদ্দিনের মা আকলিমা বেগম পল্লবী থানায় ২০ জনের নামে মামলা করেন। প্রধান আসামি করা হয় সাবেক এমপি আউয়ালকে, যিনি ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি নামে একটি দলের চেয়ারম্যান।
মা আকলিমা বেগমের অভিযোগ, পল্লবীর সেকশন-১২ বুড়িরটেকের আলীনগর আবাসিক এলাকার হ্যাভেলি প্রোপার্টিজ ডেভেলপার লিমিটেডের এমডি আউয়ালের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা সাহিনুদ্দিনকে হত্যা করেছে।
আলীনগর এলাকায় সাহিনুদ্দিনদের আনুমানিক ৫ কোটি টাকা মূল্যের ১০ একর জমি জবরদখলে বাধা দেয়ায় খুন হতে হয় তাকে।
১৯ মে সকালে হত্যা মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।
৩০ লাখ টাকায় আউয়াল এই খুন করান বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। যারা হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেন বলে অভিযোগ উঠেছে সেই মো. মনির ও মো. মানিক পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
সাহিনুদ্দিন হত্যার ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, মনির চাপাতি দিয়ে সাহিনুদ্দিনের ঘাড়ে একের পর এক কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা নগরীতে নিখোঁজের একদিন পর রেল সড়কের পাশ থেকে জামশেদ ভূঁইয়া নামের এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় শহরতলীর পালপাড়া রেললাইনের পাশের একটি ঝোপ থেকে পুলিশ ওই মরদেহ উদ্ধার করে। জামশেদ ভূঁইয়া কুমিল্লা নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ড কালিয়াজুরী ভূঁইয়া বাড়ির সাবেক কমিশনার প্রয়াত আব্দুল কুদ্দুস ভূঁইয়া তৃতীয় পুত্র।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম।
পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় বাসা থেকে মাগরিবের নামাজ আদায় করার জন্য বের হন জামশেদ। এরপর তিনি বাসায় ফেরেননি। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। রোববার বিকেলের পর রেললাইনের পাশে একটি ঝোপে ওই ব্যক্তির মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন মরদেহ শনাক্ত করে।
রাতে কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে শনিবার রাতে জামশেদ ভূঁইয়া ভাই থানায় অভিযোগ করেছিলেন। রোববার সন্ধ্যায় আমরা মরদেহ উদ্ধার করেছি। তবে ওই ব্যক্তির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। এখনো মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। সোমবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তা শেষ করতে ‘আপ্রাণ চেষ্টার’ তাগিদ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। এজন্য ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান প্রতিবেদনের জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
এ নিয়ে সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ১২১তম বার পেছান হলো। আদালতের শেরেবাংলা নগর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজিজুল আদালতে উপস্থিত হন। বেলা ১২টা ১০ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। আদালত আজিজুলের কাছে জানতে চান, তিনি সিআইডিতে আছেন কিনা? আজিজুল জানান, পিবিআইতে আছেন।
আদালত– তদন্তের অগ্রগতি কতদূর?
কর্মকর্তা– উচ্চ আদালতের নির্দেশে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্সের মাধ্যমে তদন্ত শুরু হয়। এরপর আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তদন্তের। আমি এই মামলা সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন ও ডিএনএ এক্সপার্টদের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। দুজনের মিক্সড ডিএনএ তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু শনাক্ত করা যাচ্ছে না। এসব কারণে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে দেরি হচ্ছে। কিছুদিন আগে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় পার হলেও উচ্চ আদালত থেকে আরও সময় নেওয়া হয়েছে।
বিচারক– যা বুঝলাম, এই মামলার আগের তদন্ত কর্মকর্তা যিনি ছিলেন, তিনিও একই কথা বলেছেন। আপনার তদন্তের অগ্রগতিতে আদালত অসন্তুষ্ট। আপনি আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়। এরপর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান মামলা করেন।
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে এক স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে পাঁচ বখাটে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলের দিকে উপজেলার ষাইট ঘর তেওতা বটতলা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের সাতুরিয়া গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে ইমরান শেখ ৩), একই এলাকার আলী চাঁনের ছেলে আশিক খাঁ (২৪), পার্শ্ববর্তী চরধুবলীয়া গ্রামের মৃত বিষা খাঁর ছেলে শিপন খাঁ (২৪), পয়লা গ্রামের তোতা শেখের ছেলে ইয়াছিন শেখ (২২) এবং ভাঙ্গাবাড়ি এলাকার মৃত আজাহার আলীর ছেলে ফরিদ শেখ (২০)। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্য়াতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী তার বান্ধবীর সঙ্গে রবিবার বিকালের দিকে স্কুল থেকে বাসায় ফিরছিল। পথিমধ্যে আরিচা-জাফরগঞ্জ সড়কের ষাইট ঘর তেওতা আবুলের বটতলা মোড় এলাকায় ইমরান, আশিক, শিপন, ইয়াসিন এবং ফরিদ নামের পাঁচজন বখাটে ওই ছাত্রীকে গতিরোধ করে। এসময় তারা তাকে ওড়না ধরে টান দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। ঘটনার আকস্মিকতায় ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার বান্ধবী আত্মচিৎকার করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার ও বখাটের আটক করে।
এসময় উত্তেজিত হয়ে লোকজন তাদের পিটিয়ে শিবালয় থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন জানান, ইভটিজিংয়ের দায়ে পাঁচ বখাটেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্য়াতন দমন আইনে মামলা রুজু হয়েছে। আজ সোমবার তাদের আদালতে পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শিবালয় থানা পুলিশ ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স রয়েছে।
দেশের ১০ জেলায় দুপুরের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থায় এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সোমবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শয্যা সংখ্যা বাড়লেও সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধ বিপাকে ফেলছে রোগী, স্বজন ও দর্শনার্থীদের। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে ছড়িয়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা। সিঁড়ি থেকে শুরু করে ওয়ার্ড ও জানালার পাশে জমে আছে পলিথিন, পরিত্যক্ত খাবার, ব্যবহৃত সিরিঞ্জসহ নানান আবর্জনা। এসব ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট ব্যবস্থা না থাকায় রোগী, স্বজন ও নার্সরাই জানালা দিয়ে বাইরে ফেলছেন, ফলে নিচে তৈরি হয়েছে ময়লার ভাগাড়। জরাজীর্ণ ভবনের ছাদ দিয়ে পড়ছে বৃষ্টির পানি, ধসে পড়ছে পলেস্তার। হাসপাতালজুড়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। নামে ৫০ শয্যা হাসপাতাল হলেও প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। হাসপাতালের ১৩৬ টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ৮৬ জন। শূন্য রয়েছে ৫০টি পদ। সামান্য রোগ নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে জেলা হাসপাতালে। চিকিৎসক ছাড়াও বিভিন্ন পদ শূন্য থাকায় সেবা নিতে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ৭ বছর আগে এ হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও প্রয়োজন অনুযায়ী জনবল নিয়োগ হয়নি।
রোববার দুপুরে তিনি এনসিপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হঠাৎ করেই পরিদর্শনে আসেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব প্রীতম দাশ। হাসপাতালটি ঘুরে দেখেন এবং রোগী, তাদের স্বজন ও কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। হাসপাতালে অবস্থানকালে তিনি বিভিন্ন সমস্যার খোঁজখবর নেন। রোগীদের অভিযোগ শোনার পাশাপাশি চিকিৎসকদের কাছ থেকেও দৈনন্দিন কার্যক্রম ও সমস্যার কথা শোনেন তিনি। পরে হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রীতম দাশ।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন যে সংখ্যক রোগী আসেন, তার তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা অনেক কম। পরিছন্নতাকর্মীও অপর্যাপ্ত। ৪ লাখ মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য মাত্র ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে পর্যাপ্ত জনবল নেই। এতে চিকিৎসা সেবার মানও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় শুনে আসছি এই হাসপাতালে রোগীদের দুর্দশার কথা। তারা নানা ভাবে আমাদের জানিয়েছে। এই প্রতিষ্টানটা আমাদের প্রতিষ্টান। আমাদের ভ্যাট টেক্সের টাকা এটা চলে। শুতরাং এখানে যারা সেবাদান করছেন তাদের সবসময় মনে রাখতে হবে তাদের বেতনটা জনগনের টাকায় হয়। আমরা এখানে এসে যেটা দেখলাম ডাক্তার সহ অন্যান্য চিকিৎসক স্টাফ তেমন নেই। পাশাপাশি আরেকটা জিনিস আমরা লক্ষ করলাম,এখানে বর্তমানে যে পরিমানে জনবল আছে সে পরিমানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিটা ওর্য়াডে যে পরিমান ময়লা,আবর্জনা পাশাপাশি বাতরুমে ডুকাই যায়না। রোগীরা এসে কি সেবা নিবে ভালো মানুষরাই রোগী হয়ে যাবে। যদি কোন ব্যক্তি এখানে এখানে একটা রোগের জন্য চিকিৎসা নিতে আসেন, বাসায় গেলে পরবর্তিতে আরও ৫টা রোগের ঔষধ নিতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করবো জেলা সিভিল সার্জন সহ সকল কর্মকর্তা এখানে এসে দেখে যান কি অবস্থা এই হাসপাতালের। দ্রত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। হাসপাতালে ঠিকমতো ঔষধ দেওয়া হয়না। সকল থেকে আমার এখানে দাড়িয়ে দেখছি তেম কোনো রোগী নাই। রেজিস্টার দেখানো হয়েছে অনেক রোগীকে ঔষধ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাস্তবতার সাথে কোনো মিল নাই। ঔষধগুলো কোথায় যায়? এছাড়া এই হাসপাতালে রাতের বেলা মাদকসেবন হয়, বিভিন্ন অপকর্ম হয়।একটা হাসপাতালে এসব কি? প্রশাসন সহ সকলের কাছে আমাদের অনুরোধ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। এই হাসপাতালটা নিজেই দুখছে। হাসপাতালে অনেক জায়গায় লাইট নষ্ট হয়ে থাকায় অন্ধকার থাকে। বৃষ্টি হলে হাসপাতালের বেডের উপড় পানি পড়ে। আসলে এগুলো সমাধান না হলে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
প্রীতম দাশ বলেন, আমরা এনসিপির পক্ষ থেকে দ্রুত স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলব, যেন এখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স, পরিছন্নতাকর্মী ও নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এই হাসপাতাল কখনো ঠিক হবে না। কারো নজর নেই এখানে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের আশেপাশে একাধিক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন হাসপাতালের দায়িত্বরন কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া ৬বছর ধরে এই হাসপাতালে আছেন। কিন্তু এই ৬বছর ধরে হাসপাতালের কোনো উন্নতি হয়নি।বরং তিনি কোটি টাকার জায়গা জমি কিনেছেন এখানে। উনার দূর্নীতি শেষ নাই।
স্থানীয় বাসিন্দা হাসনাত আলী অভিযোগ করে বলেন, একমাত্র সমাধান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া ও স্যানেটারী অফিসার দুলাল মিয়াকে এখান থেকে বদলি করলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
এদিকে তারেক আহমদ নামে একজন ফেইসবুকে হাসপাতালের সমস্যা নিয়ে একজন সাংবাদিকের একটি পোস্টের কমেন্টে করেছেন। তিনি সেই কমেন্টে লিখেছেন মানুষের চিকিৎসার সেবাকে জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া। তারে নিয়া ঠিক মত নিউজ করেন সে দুর্নীতি করতেছে তার কারণে কোন এমবিবিএস ডাক্তার আসতে পারছে না, মহিলা ডেলিভারি রুম খুবই খারাপ অবস্থা এটাই নিয়ে কিছু কথা বলেন তারেক আহমদ।
দায়সারা কথা বললেন কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া। তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, প্রথম শ্রেণির ডাক্তার এবং কনসালটেন্ট সহ ১৯টা পদ আছে। তার মধ্যে ৮পদে লোক আছে। বাকিগুলো খালি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, প্রাণি থেকে মানুষের দেহে রোগ ছড়ানো মারাত্মক হতে পারে। তাই প্রাণির রোগ নিয়ন্ত্রণ করা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। আমরা বিশেষ কোন রোগ জানা মাত্রই তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। সকল প্রাণিকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে সরকার ভ্যাকসিন উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু করবে। আমরা প্রাণি থেকে মানুষের দেহে রোগ ছড়ানোর চান্স দিতে চাই না।
রোববার দুপুরে রংপুর আরডিআরএস বেগম রোকেয়ার মিলনায়তনে লাইভস্টক এন্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আয়োজনে প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিভাগীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, নিরাপদ মাংস, দুধ, ডিম পেতে হলে প্রাণিকে নিরাপদ ও রোগমুক্ত করতে হবে। আমরা যেহেতু ভ্যাকসিন আমদানি করি, তাই দাম বেশি হওয়ায় খামারিরা প্রাণিদের ঠিকমত ভ্যাকসিন দিতে পারে না। আমরা সকল প্রাণিকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়ান হেলথ কনসেপ্টের আওতায় মানুষ ও প্রাণি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের, যুগ্ম সচিব মোসাম্মৎ জোহরা খাতুন, বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পরিচালক ডা. আব্দুল হাই সরকারসহ রংপুর বিভাগের ৮ জেলা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি প্রদর্শন নিয়ে উত্তেজনা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার উপস্থিতিতে কর্মশালায় শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি প্রদর্শিত হওয়ায় উত্তেজনা দেখা দেয়। রোববার দুপুর রংপুর আরডিআরএস বেগম রোকেয়ার মিলনায়তনে লাইভস্টক এন্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের আয়োজনে প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিভাগীয় কর্মশালায় মাল্টিমিডিয়া প্রজেন্টেশন দেন, প্রকল্প সমন্বয়কারী গোলাম রব্বানী।
প্রকল্পের তথ্য-চিত্র প্রদর্শনের সময় একটি স্লাইডে প্রশিক্ষণ কর্মশালার ছবিতে হলরুমে অতিথিদের মাথার উপর শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবি দেখা যায়। চব্বিশের গণঅভ্যূত্থান পরবর্তী পতিত সরকার প্রধানের ছবি প্রদর্শন নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করতে থাকে। বিষয়টি জানাজানি হলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানান। সেই সাথে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবী করেন।
এ নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, এটি ইচ্ছাকৃতভাবে হতে পারে না। যদি ইচ্ছাকৃতভাবে হয় তবে সেটি চরম অবমাননাকর। এত মানুষের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আমলে এটি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তবে যিনি মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপন করেছেন, তিনি বলেছেন এটি ভুলক্রমে হয়েছে। তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা মনে করছি ফ্যাসিবাদ জাস্ট চলে গেছে। ফ্যাসিবাদ অনেক রকম রূপে রয়েছে, তার প্রতিফলন নানাভাবে ঘটছে। আমরা যখন বিষয়গুলো জানতে পারছি, তাক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছি।
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৮নং ধাক্কামারা ইউনিয়নের করতোয়া নদীর ওপর স্থায়ী সেতু হয়নি। ফলে নদীর দুই তীরে থাকা অন্তত কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ আজও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জীবন-যাপন করছে। ভরসা কেবল একটি কাঠের সাঁকো। এতে ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে স্থানীয়দের।
গ্রামের শত শত মানুষ প্রতিদিন কাঠের সাঁকো পেরিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি কার্যক্রমে পড়ছে বড় ধরনের বাধা। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা যেমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, তেমনি জরুরি মুহূর্তে রোগী বা গর্ভবতী নারীকে হাসপাতালে নেওয়ার সময়ও ঘটছে দুর্ঘটনা। বর্ষার সময় ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
স্থানীয়রা আরও জানান, একদিকে নেই গাড়ি যাতায়াতের সেতু অপরদিকে নেই রাস্তাঘাট। এ কারণে এই এলাকায় কেউ আত্মীয়তা করতে চায় না। তাই এই নদীর ওপর একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ হলে এ অঞ্চলের শিক্ষার্থী, কৃষক, নারী-পুরুষ সবার জীবনযাত্রায় আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন। শুধু তাই নয়, এলাকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে সেতুটি হবে মাইলফলক।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি বারবার দাবি জানিয়েছি, এখানে একটা স্থায়ী সেতু খুবই দরকার। জনগণের ভোগান্তি নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা হওয়া উচিত।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, ‘আমি উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে কথা বলব। এখানে যাতে স্থায়ী সমাধান হয়, সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
একটি সেতু শুধু যোগাযোগের পথ নয়, বদলে দিতে পারে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির চিত্র। নদীর ওপর একটি স্থায়ী সেতুই বদলে দিতে পুরো এলাকার ভাগ্যচিত্র।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপির) আওতায় ব্রিজ নির্মাণের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র কয়েকদিনের মধ্যে পাঠাব।
মন্তব্য