× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাজেট
ভাতার ৫০০ টাকায় কী হয়?
google_news print-icon

ভাতার ৫০০ টাকায় কী হয়?

ভাতার-৫০০-টাকায়-কী-হয়?
ভাতার কার্ড হাতে বরিশালের আনোয়ার বেগম। ছবি: নিউজবাংলা
নতুন বাজেটে এক কোটি ছাড়িয়ে যাবে সরকারের ভাতাভোগীর সংখ্যা। কিন্তু যে গরিব, অসহায় মানুষদের জন্য ভাতা দেয়া হয়, মাসে ৫০০ টাকা কতটা কাজে লাগে তাদের? কী করেন তারা এ ভাতা দিয়ে?

সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীরা মাসে ৫০০ টাকা ভাতা পান। তিন বছর ধরে এই একই পরিমাণ ভাতা পাচ্ছেন তারা।

এই তিন বছরে গড়ে সাড়ে ৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। কিন্তু ভাতার পরিমাণ বাড়েনি। এমনকি করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও তাদের ভাতার অঙ্ক বাড়ায়নি সরকার।

অনেকেই আশায় ছিলেন, এবারের বাজেটে ভাতা বাড়ানো হবে। কিন্তু ৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যে বাজেট প্রস্তাব সংসদে উপস্থাপন করেছেন, তাতে তাদের সে আশা পূরণ হয়নি। এত দিন যে ভাতা পেতেন, সেই ভাতাই পাবেন তারা।

তবে ভাতাভোগীর সংখ্যা আরও ১৫ লাখ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

সরকারি হিসাবেই বাজারে মোটা চালের কেজি এখন ৫০ টাকা। গ্রামের মানুষ সাধারণত তিন বেলা ভাত খায়। সে ক্ষেত্রে একজনের জন্য প্রতিদিন প্রায় এক কেজির মতো চাল লাগে।

এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, একজন বয়স্ক, বিধবা বা স্বামী নিগৃহীতা নারী মাসে সরকারের কাছ থেকে যে ভাতা পান, ১০ কেজি চাল কিনতেই তা শেষ হয়ে যায়। অর্থাৎ একজনের ১০ দিনের চালের খরচও হয় না এই টাকা দিয়ে।

যাদের অন্য কোনো আয় নেই; কাজ করতে পারেন না, তাদের এই অল্প টাকা দিয়ে আসলে কিছুই হয় না।

কঠিন এই বাস্তবতায় এসব ভাতার পরিমাণ কমপক্ষে ১ হাজার টাকা করার দাবি উঠেছে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে।

দেশের চার জেলায় যারা ভাতা পান, তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম। তারা তাদের নিদারুণ কষ্টের কথা জানিয়ে ভাতা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

তবে এই মুহূর্তে সরকার ভাতা বাড়াতে চায় না। ভাতাভোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়াতে চায়।

এ বিষয় নিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে কলটি রিসিভ হয়নি। এসএমএস করা হলেও কোনো জবাব আসেনি।

পরে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকার আসলে আপাতত ভাতার পরিমাণ বাড়াতে চায় না। গ্রামে একজন বয়স্ক মানুষের কাছে ৫০০ টাকা অনেক। আমাদের সরকারের এই মুহূর্তে প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, আগে সবাই পাক। তারপর ভাতার টাকা বাড়ানোর কথা ভাবা যাবে।

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের এমন নির্দেশনাই দিয়েছেন। আমরা সে মোতাবেকই কাজ করছি। নতুন বাজেটে আরও ১৫০ উপজেলার সব বয়স্ক এবং বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত নারীকে ভাতার আওতাভুক্ত করা হবে।’

বিদায়ি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ১১২টি উপজেলার সব বয়স্ক এবং বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে ভাতার আওতাভুক্ত করার ঘোষণা দেয়া হয়। বর্তমানে সারা দেশে ৪৯ লাখ বয়স্ক নাগরিককে মাসে ৫০০ টাকা করে ভাতা দেয় সরকার।

ভাতার ৫০০ টাকায় কী হয়?

নতুন বাজেটে আরও ১৫০ উপজেলায় সব বয়স্ককে ভাতার আওতাভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এতে নতুন করে ৮ লাখ সুফলভোগী যোগ হবে। সব মিলিয়ে মোট ভাতাভোগীর সংখ্যা হবে ৫৭ লাখ।

২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে আরও ১৫০টি উপজেলায় সোয়া ৪ লাখ বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীকে নতুন করে ভাতার আওতায় আনার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। বর্তমানে ১১২টি উপজেলায় ২০ লাখ ৫০ হাজার নারীকে এই ভাতা দেয়া হয়।

এ ছাড়া নতুন বাজেটে অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার জন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে নতুন অর্থবছরের বাজেটে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা খরচের যে পরিকল্পনা অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল সাজিয়েছেন, তার মধ্যে ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি বরাদ্দ রেখেছেন সামাজিক নিরাপত্তা খাতে।

এই অঙ্ক মোট বাজেটের প্রায় ১৮ শতাংশ। আর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩ দশমিক ১১ শতাংশ।

নতুন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় বিভিন্ন ভাতাভোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করা হলেও ভাতার অঙ্ক একই আছ। সব মিলিয়ে আরও প্রায় ১৫ লাখ গরিব মানুষ সরকারের সহায়তা পাবে।

এতদিন এই ভাতা পাচ্ছিলেন ৮৮ লাখ গরিব, অসহায় মানুষ। নতুন করে সুবিধাভোগীর সংখ্যা যোগ হলে ভাতা পাওয়া গরিবের সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।

বয়স্ক ভাতা পেতে হলে পুরুষের বয়স কমপক্ষে ৬৫ এবং নারীর ৬২ বছর হতে হয়। এই ভাতা পেতে হলে মাসে আয় ১০ হাজার টাকার কম হতে হবে।

কেমন আছেন বরিশালের ভোতাভোগীরা

বরিশাল শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের মাদ্রাসা রোডের বাসিন্দা আম্বিয়া খাতুন। বয়স ৬৯ বছর। চার বছর ধরে পান ভাতা। কিন্তু এই টাকা দিয়ে কিছুই হয় না তার।

নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপকালে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘স্বামী নাই আর পোলাও নাই। দুই মাইয়া আল্লে হেয়া বিয়া দিয়া দিছি মেলা আগে। হেরা বছ্ছরে একবার পারলে সাহায্য করে, না পারলে করে না। মোর ভরসা ওই বয়স্ক ভাতাডাই।

‘৪ বছর ধইরা পাই। যা পাই, ওয়া দিয়া ঘরের ল্যাম্পও জ্বালান যায় না, হেইরপরও ওইটাই ভরসা। ওইয়া দিয়াই চলতে হয়। অনেক সময় আশপাশের মানু মেলাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে।’

ভাতার ৫০০ টাকায় কী হয়?
ভাতার কার্ড হাতে বরিশালের আম্বিয়া খাতুন। ছবি: নিউজবাংলা

নানা অভিযোগ অনুযোগ করে আম্বিয়া বলেন, ‘তিন মাস পরপর কাউন্সিলর অফিসে যাইয়া ১৫০০ টাহা আনতে হয়। আমনেরাই কন, এই দিয়া কিছু হয়? পেট তো চালান লাগে।

‘ছোডো একটু ঘরে থাহি। এক বেলা রাইন্দা দুই দিন খাই। টাহা তো লাগবে খাইতে। আর দোহানদাররা তো বাহিও দেতে চায় না মোরে। মুই তো হেয়া শোধ করতে পারমু না। সরকার যদি মোগো এই বয়স্ক ভাতার টাহাডা বাড়াইয়া দিত তাইলে অনেক ভালো হইত। এক হাজার টাহা দেলেও হেলে দুই বেলা তো খাইতে পারতাম একটু।’

একইভাবে ভাতা টাকা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন শহরের কসাইখানা এলাকার বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম।

তিনি বলেন, ‘৭৪ বছর বয়স হইছে মোর। এহন চলতে ফেরতে কষ্ট হয় অনেক। কয়েক বছর ধইরা ভাতা পাই। হেয়া একটাহাও বাড়ে নাই। জিনিসপত্রের দামও তো অনেক বাড়ছে। হেইয়ার হিসেবে এহন যে তিন মাস পরপর ১৫০০ টাহা কইরা দেয় হেতে কি কিছু হয়?

‘মোর চক্ষুতে অনেক সমস্যা। ঠিকমতো চোহে দেহি না। কেমনে যে চলি আল্লাহই জানে। মাইয়ারে বিয়া দেওয়ার পর হে কি খালি বছরে কাপড় দেয়। আর পোলার চায়ের দোহানে এক ঘণ্টা সময় দেতে হয়। হেই পারপাস আমারে দেহাশুনা করে পোলায়।’

আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আগে চাউলের কেজি যে টাহা ছিল, হেই টাহা তো এহন আর নাই। সবকিছুর দাম বাড়ছে। কয়দিন পর দেখমু পানিটাও কিন্না খাওয়া লাগতে আছে। এইয়ার মধ্যে মোগো যে ভাতা দেতে আছে হেয়া তো বাড়ে না, মোগো আগের টাহাই দেতে আছে।

‘মালের দাম বাড়ার লগে লগে মোগো টাহাও যদি বাড়াইয়া দেয়, তাইলে অনেক ভালো হয়। নাইলে মোর চলতে অনেক সমস্যা। ওষুধপত্রসহ পোলার সংসারে তিনমাস পর পর ওই টাহা দেতে হয়। এই যুগে কী হয় ১৫০০ টাহায়?’

আম্বিয়া খাতুন, আনোয়ারা বেগমের মতো বয়স্কভাতা বাড়ানোর দাবি করেছেন বিএম কলেজ রোড এলাকার বৃদ্ধা ময়নামতি দাস, পলাশপুরের সোনা খাতুনসহ অনেকে।

গাইবান্ধা

তিন বছর ধরে বিধবা ভাতা পেয়ে আসছেন গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের উত্তর মরুয়াদহ গ্রামের বিধবা রোকেয়া বেওয়া। স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে কাছমতি বেগমকে নিয়ে তার সংসার।

মা-মেয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তারপরও তাদের মুখে খানিকটা হাসি এনে দিয়েছে সরকারের দেয়া বিধবা ভাতার মাসিক ৫০০ টাকা।

ভাতার ৫০০ টাকায় কী হয়?
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের উত্তর মরুয়াদহ গ্রামের বিধবা রোকেয়া বেওয়া

এই টাকা দিয়ে কী করেন জানতে চাইলে রোকেয়া বেওয়া বলেন, ‘টেকা তুলি বাজারঘাট করি। চাউল কিনি। ১৫০০ টেকা হামার কাছে মেলা টেকা। এই টেকা না দিলি বাঁচনো না হয় বাবা। না খায়া মনো হয়।’

এই টাকায় সংসার চলে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ। আর টেকা পামো কোনটে? এই টেকাই চলি ফিরি খাই। মানষের বাড়িত থাকি এনা-ওনা আনি। এগলে দিয়েই মিলিধিলি চলি বাবা।

‘কষ্ট হয় চলতি। তাও করিধরি বাঁচি আছি। আর এনা বেশি টেকা পালে ভালই চলবের পানো হয়। মানষের বাড়িত কাম করা নাগিল নে হয়।’

একই উপজেলার উত্তর দামোদরপুর গ্রামের বয়স্ক ভাতাভোগী মোন্তাজ আলী প্রামানিক বলেন, ‘ছয় মাস পর ঈদের আগত টেকা পাচি ৩ হাজার। টেকা তুলি বাড়িত যাবার পাই নাই। তার আগে শেষ। দোকানত বাকিবুকি। বাজারত বাকি সোগ শোধ কচ্চি।

‘পত্তি ওষুধপাতি খাম। টেকার জন্যি ওষুধ পামো না। বিছনেত পড়ি আছম। যে টেকা পামো, তাক দিয়ে এখান-ওখান হয়; পেটত ভাত দিবের পাম না।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাসে একটা হাজার টেকা পালি যেন হলি হয়। ডাল-ভাত, ওষুধপাতি খাবার পানো হয়। ৫০০ টেকা দিয়ে কিছু হয় না রে বাপ।’

হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জ পৌরসভার কামড়াপুর এলাকার মৃত তুফায়েল আলীর স্ত্রী খুদেজা খাতুন। দুই ছেলে এবং চার মেয়ে। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন, ছেলেরাও বিয়ে করে আলাদা থাকেন। তার ভরণ-পোষণের জন্য ছেলেরাই মাস খরচ দেন।

তিনি বলেন, ‘সরকার আমরারে বয়স্ক ভাতা দেয় মাসে ৫০০ টেকা কইরা। তিন মাস পরপর এই টেকা তুলতা পারি। সরকারি কর্মকর্তারার বেতন বাড়ছে, জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, কিন্তু আমরার ভাতা বাড়তাছে না।’

দুঃখ করে তিনি বলেন, ‘মাসে ৫০০ টেকা দিয়ে একজন মানুষ চলত পারে? ৫০০ টেকা দিয়া এখন ১০ কেজি চাউলও পাওয়া যায় না।’

তেঘরিয়া গ্রামের আবু মিয়া। তিন ছেলে দুই মেয়ে। তিনিও ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেরা কেউ কেউ রিকশা চালান, কেউ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। অভাব-অনটনের সংসারে অসুস্থ আবু মিয়া যেন ছেলের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘সংসার চালাইতে পুলাইনতের (ছেলেদের) অনেক কষ্ট হয়। এর মাঝে আমি অসুস্থ হওয়ার কারণে কয়দিন পরপর ওষুদ লাগে। এখন লকডাউনের লাইগা রিকশা চালাইত পারে না, অন্য কোনো কামও পায় না। অনেক কষ্টে আছি আমরা।

‘সরকার আমারে যে ভাতা দেয়, ইডা দিয়া আমার ওষুদের খরচই হয় না। এই ভাতা আরও বাড়ানো দরকার।’

সরকার ভাতা না বাড়িয়ে নতুন লোকদের ভাতার আওতায় আনতে চাচ্ছে। বিষয়টিকে কীভাবে দেখেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা বুড়া হইছে, সবাইকেই ভাতা দেয়া উচিত। কিন্তু এত কম টেকা দিলে অইব কেমনে। আরও বেশি দিতইব।’

নীলফামারী

নীলফামারী শহরের নিউ বাবুপাড়া মহল্লার বাসিন্দা পলাশ হোসেন। ২০১০ সাল থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে আসছেন। সেখানকার আশরাফ হোসেন দুলাল ও শাবানা বেগম ছালেহার সন্তান পলাশ।

সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় মাসিক সাড়ে ৭০০ টাকা পাচ্ছেন পলাশ।

সরকারি ভাতা পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে পলাশ বলেন, ‘যে টাকা পাচ্ছি এ জন্য ধন্যবাদ জানাই তাকে। তবে এই সময়ে এসে মাসে সাড়ে ৭০০ টাকা কাজে আসে না।

‘চলাফেরা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ভাতার পরিমাণ হিসাব করলে যৎসামান্য। আমি দাবি জানাই, যেন এর পরিমাণ বাড়ানো হয়।’

মিলন পল্লী এলাকার প্রয়াত বিষাদু মামুদের স্ত্রী ছাবিয়া বেগম। ১৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে বয়স্ক ভাতা ভোগ করে আসছেন তিনি। নানা রোগ আষ্টেপৃষ্ঠে ধরেছে তাকে। প্রতি মাসে শুধু ওষুধই কিনতে হয় ১ হাজার ২০০ টাকার।

ছাবিয়া বেগম বলেন, ‘এই ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হলে উপকৃত হবেন আমার মতো দেশের লাখ লাখ অসহায় বয়স্ক মানুষরা।’

একই দাবি গাছবাড়ি মহল্লার খোঁচা মামুদের স্ত্রী আমিনা বেগমেরও। একমাত্র সন্তানের উপার্জনে সংসার চালাতে হয় পাঁচজনের খরচ। অভাব অনটন লেগেই থাকে।

আমিনা বেগম বলেন, ‘শরীরে ব্যথা লেগেই রয়েছে। সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছি না। নানা রোগ শরীরে ধরেছে। আমাদের ভাতার টাকা যদি বাড়ানো হয় তাহলে কিছুটা উপকৃত হতাম।’

৯৮ সাল থেকে শুরু বয়স্ক ভাতা

অবহেলিত বয়স্ক জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছর থেকে চালু হয় বয়স্ক ভাতা। সে সময় ভাতার পরিমাণ ছিল ১০০ টাকা। ৪ লাখ ৪ হাজার জন পেতেন ভাতা। বাজেটে এ বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ৪৮ হাজার ৫০ লাখ টাকা।

২০০৬-০৭ অর্থবছর ভাতার পরিমাণ বাড়িয়ে ২০০ টাকা করা হয়। ভাsতাভোগীর সংখ্যা বেড়ে হয় ১৬ লাখ।

২০০৯-১০ অর্থবছরে ভাতার অঙ্ক বাড়িয়ে করা হয় ৩০০ টাকা। সুবিধাভোগীর সংখ্যা হয় ২২ লাখ ৫০ হাজার।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভাতার পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করে সরকার। ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়িয়ে করা হয় ৪০ লাখ।

৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটেও ভাতার অঙ্ক সেই ৫০০ টাকাই আছে। তবে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৪৯ লাখ হয়েছে। বাজেটে বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা।

বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা শুরু ১৯৯৯ সাল থেকে

এই ভাতাও ১০০ টাকা দিয়ে শুরু হয়েছিল। বিভিন্ন সময়ে বেড়ে ৫০০ টাকায় ঠেকেছে। বর্তমানে ২০ লাখ ৫০ হাজার নারী এই ভাতা পাচ্ছেন। বাজেটে বরাদ্দ আছে এক হাজার ২৩০ কোটি টাকা।

এ ছাড়া সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ৭ লাখ ৭০ হাজার দরিদ্র মায়েদের মাতৃত্বকালীন ভাতা দেয়া হচ্ছে। ১৮ লাখ অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধীকে মাসে ৭৫০ টাকা করে ভাতা দিচ্ছে সরকার।

এসব ভাতা বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক মঞ্জুর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন কঠিন সময়। মহামারির এই সময়ে বাজেটের আকার, ঘাটতি বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামানোর প্রয়োজন আমি দেখছি না।

‘কোভিডের মধ্যে চলতি অর্থবছরে চার-সাড়ে চার শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও যথেষ্ট। আগামী অর্থবছরে ৫ শতাংশ হলেও ভালো। সরকার নতুন বাজেটে এসব ভাতা যাতে আরও বেশিসংখ্যক মানুষ পায়, সে ব্যবস্থা নিয়েছে। এটা খুবই ভালো। তবে একই সঙ্গে আমি ভাতার পরিমাণটা বাড়ানোরও অনুরোধ করছি। কেননা এই বাজারে ৫০০ টাকা দিয়ে আসলেই তেমন কিছু হয় না।’

[সহযোগী প্রতিবেদক: বরিশাল প্রতিনিধি তন্ময় তপু, গাইবান্ধা প্রতিনিধি পিয়ারুল ইসলাম, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি কাজল সরকার এবং নীলফামারী প্রতিনিধি নূর আলম]

আরও পড়ুন:
অন্তঃসত্ত্বা না হয়েও মাতৃত্বকালীন ভাতা
‘এডা টেহার কাট’ চান ৭৫ বছরের ফুলেছা
৮৮ লাখ ভাতাভোগীর তথ্যভান্ডার তৈরি
ঈদে এক কোটি পরিবারকে ৪৫০ কোটি টাকা
ভাতা বাড়িয়ে হাজার টাকা করতে চান মন্ত্রী

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাজেট
Say no to war Prime Minister

যুদ্ধকে ‘না’ বলুন: প্রধানমন্ত্রী

যুদ্ধকে ‘না’ বলুন: প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে জাতিসংঘের কনফারেন্স সেন্টারে (ইউএনসিসি) বৃহস্পতিবার এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ইয়াসিন কবির জয়/ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে এবং যুদ্ধকে ‘না’ বলতে হবে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘শান্তির জন্য নতুন এজেন্ডা’র পক্ষে।”

সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর পাশাপাশি যুদ্ধকে ‘না’ বলতে বৃহস্পতিবার সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

থাইল্যান্ডে জাতিসংঘের কনফারেন্স সেন্টারে (ইউএনসিসি) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান বলে বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে এবং যুদ্ধকে ‘না’ বলতে হবে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘শান্তির জন্য নতুন এজেন্ডা’র পক্ষে।”

ভাষণে সব ধরনের যুদ্ধ, আগ্রাসন ও নৃশংসতা বন্ধে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলা ‍শুধু হতাহতের সংখ্যা বাড়াচ্ছে, বিশেষত নারী ও শিশুরা এর বলি হচ্ছে। অথচ আলোচনায় আসতে পারে শান্তি।

তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি যুদ্ধ ও গণহত্যা চলছে। এটি অবশ্যই বন্ধ হতে হবে। যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা তার উদ্যোগ ও শাসনামলে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে ‘পার্বত্য শান্তি চুক্তি’র কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আঞ্চলিক বিরোধ ও উত্তেজনা নিষ্পত্তি করতে হবে।’

আরও পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে, লাল গালিচা সংবর্ধনা
থাইল্যান্ডের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ
বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই
জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড়ের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ন্যাপ এক্সপো উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর

মন্তব্য

বাজেট
Crying for water in Varendra region

বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির জন্য হাহাকার

বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির জন্য হাহাকার পানির সংকট, ঝরে পড়ছে আমের মুকুল। ছবি: নিউজবাংলা
কয়েকটি আম বাগান ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর পরিমাণ আম ঝড়ে পড়ছে। গাছের নিচে ঝড়া আম স্তুপ হয়ে আছে।

তীব্র তাপপ্রবাহে পানির জন্য হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে বরেন্দ্র অঞ্চল রাজশাহীতে। পানির অভাবে ব্লাস্টসহ বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের শিকার হচ্ছে বোরো ধান। ধানের পাশাপাশি ক্ষতির মুখে পড়েছে অন্যান্য ফসলও। পানির সংকট হওয়ায় আমের মুকুল ঝরে যাচ্ছে।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ধান চাষি আজমত উল্লাহ জানান, পানির অভাবে ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। ধানে পোকাড় আক্রমণ হচ্ছে। ধানের থোড়া আসায় পানির দরকার হলেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েকদিন বরেন্দ্রের গভীর নলকূপে সেচের জন্য ঘুরছেন। তবে সিরিয়াল পাচ্ছেন না।

জেলার কয়েকটি আম বাগান ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর পরিমাণ আম ঝড়ে পড়ছে। গাছের নিচে ঝড়া আম স্তুপ হয়ে আছে।

চারঘাট উপজেলার আমচাষী জব্বর আলী বলেন, পানির অভাবে আম ঝড়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই আম ঝড়ে যাচ্ছে। পানি দিয়েও আম ঝড়া ঠেকানো যাচ্ছে না। পানিও ঠিক মত উঠছে না। এবার আমের ফলন ঠিক মত হবে না।

অন্যান্য চাষীরাও বলছেন একই কথা। পানি না থাকায় বালায় নাশক স্প্রেও দেয়া যাচ্ছে না। ফলে পোকামাকড় আক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বরেন্দ্রের অপরিকল্পিত সেচ প্রকল্পের কারণে এই অঞ্চলে পানির স্তর ক্রমেই নিচে নামছে। ফলে পানির সংকট সৃষ্টি হয়ে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। পানির অভাবে বোরো ধানের উৎপাদন প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান বলেন, বোরো ধানের জমিতে কম পক্ষে ৩ সেন্টিমিটার পানি থাকা প্রয়োজন। তা না হলে ধানের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। ধানের থোড়া তে প্রচুর পরিমাণ চিটা দেখা দেয়। আর পানির অভাবে বোরো ধানে ব্লাস্ট রোগ হয়ে ধান গাছ হলুদ হয়ে যায়। যেভাবেই হোক বোরো ধানের জমিতে সব সময় পানির ধরে রাখতে হবে। এবার যেভাবে তাপ প্রবাহ ও পানির সংকট তৈরি হয়েছে এটা আরো কিছুদিন অব্যাহত থাকলে বোরোর উতপাদন ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, তাপ প্রবাহের ফলে আমের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। পানির সংকট তৈরি হওয়ায় আম ঝড়ে পড়ছে। আমের ঝড়ে পড়া রোধে আম গাছের গোড়াতে সপ্তাহে অন্তত একদিন পানি দিতে হবে হবে। কৃষকদের আমরা গাছের গোড়াতে পানি দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এ বছর রাজশাহী জেলায় ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ২ লাখ ৬০ হাজার ১৬৪ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হলেও তা অর্জন করা সম্ভব হবে না।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শীতাংশু কুমার পাল বলেন, রাজশাহী অঞ্চলে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে প্রতি বছর পানির তীব্র সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অপরিকল্পিত গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ প্রকল্পের কারণে পানির স্তর আরো বেশি দ্রুত নিচে নেমেছে। গভীর নলকূপেও এখন ঠিম মত অয়ানি উঠছে না। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ পেতে হবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন কমিয়ে নদী থেকে জমিতে সেচ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি বৃষ্টির পানি জমানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

তবে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রশিদের দাবি, সমালোচকরা পানি সংকটের বিষয়ে বরেন্দ্রের ঘাড়ে এককভাবে দোষ চাপাচ্ছে। পানির সংকট মোকাবিলায় নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে কৃষি জমিতে সেচ দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পদ্মা নদী থেকে আশেপাশের অঞ্চলে সেচের পানি সরবারাহ করতে ইতিমধ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি নষ্ট হয়ে যাওয়া গভীর নলকূপ গুলোও মেরামত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, তীব্র তাপ প্রবাহের ফলে কিছুটা পানি সংকট তৈরি হলেও তা দ্রুত সমাধান করতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। বোরো ধানের জমিতে পানি পানি সরবারাহের বিষয়ে বরেন্দ্র অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সাবিনা বেগম জানান, বোরো ধানের জমিতে পানি সরবাহর নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর একযোগে কাজ করার ব্যাপারে সমন্বয় করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে কথা বলা হচ্ছে যেন সেচের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবারাহ নিশ্চিত করা যায়।

মন্তব্য

বাজেট
Accused of killing niece for greed of property

সম্পত্তির লোভে ভাতিজিকে হত্যার অভিযোগ

সম্পত্তির লোভে ভাতিজিকে হত্যার অভিযোগ গাইবান্ধার জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক শারমিনকে মৃত বলে জানান। হাসপাতাল এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সে রাখা তার মরদেহ। ছবি: নিউজবাংলা
পলাশবাড়ী থানার ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘প্রাথমিক সুরতহালে নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া গলাতে কোনো দাগ চোখে পড়েনি, তবে শ্বাসরোধের বিষয়টি ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।’ 

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে সম্পত্তির লোভে মারধর করে আপন ভাতিজিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের কুমুদপুর গ্রামে বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নারীসহ তিনজনকে আট করেছে পলাশবাড়ী থানা পুলিশ।

প্রাণ হারানো তরুণীর নাম শারমিন আক্তার (২২), যিনি প্রয়াত শুক্কুর উদ্দিনের মেয়ে। বিয়ে বিচ্ছেদের পর শারমিন বাবার বাড়িতেই থাকতেন।

শারমিনের অভিযুক্ত চাচার নাম আবদুল খালেক।

তরুণীর পরিবার, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানায়, প্রায় এক বছর আগে পিতৃহারা শারমিনকে কৌশলে বিয়ে দেন তার চাচারা। বিয়ের পর তালাক হলে সমঝোতায় দেনমোহরের টাকা শারমিনকে না দিয়ে আত্মসাৎ করেন তার বড় চাচা আবদুল খালেক। সেই টাকা ও শারমিনের নামে থাকা জমি নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল।

তারা আরও জানান, সম্পত্তি নিয়ে বুধবার বেলা ১১টার দিকে শারমিনের সঙ্গে তার চাচাদের বিরোধ বাধে। ওই সময় অভিযুক্তদের মারধরে গুরুতর আহত হন শারমিন। পরে আহত শারমিনকে অভিযুক্তরাই উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধার জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।

শারমিনের দুলাভাই রুহুল আমিন বলেন, ‘শারমিন ও শাম্মী আপন দুই বোন। আমার শ্বশুর (শারমিনের বাবা) মারা গেছেন। বাবা মারা যাওয়ার পর শারমিন আমার বাড়িতেই থাকত। পরে শারমিনের বাবলু নামের এক ফুফা ও তার জ্যাঠারা মিলে কৌশলে শারমিনকে আমার বাড়ি থেকে নিয়ে এসে বিয়ে দেন।

‘বিয়ের তিন-চার মাস পরই তালাক হয় শারমিনের। তখন থেকেই শারমিন আমার শাশুড়ির সাথে তার বাবার বাড়িতেই থাকত।’

শারমিনের মা এবং এ তরুণীর দুলাভাই রুহুল আমিনের অভিযোগ, শাম্মী ও শারমিনের নামে ৩২ শতাংশ জমি আছে। সেই জমি নেয়ার লোভে ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন সময়ে ঝগড়া-বিবাদ, গালিগালাজসহ শারমিনকে মারধর করতেন তার চাচা আবদুল খালেক। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার শারমিনের কাছে জমি চেয়ে মারধর শুরু করেন তিনি। পরে আবদুল খালেকের ভাই আবদুল বারী, ভাতিজা রহমান ও ছকু নামের একজন মারধর করতে থাকেন। ওই সময় তাদের মারধরে শারমিন ঘটনাস্থলেই মারা যান।

মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পলাশবাড়ী থানার ওসি কেএম আজমিরুজ্জামান বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় নারীসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

‘নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ওই সময় এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘প্রাথমিক সুরতহালে নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া গলাতে কোনো দাগ চোখে পড়েনি, তবে শ্বাসরোধের বিষয়টি ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।’

আরও পড়ুন:
মাথায় গুলি করে ইউএনও’র দেহরক্ষীর ‘আত্মহত্যা’
কক্সবাজারে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা
বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, দুই ছেলে পলাতক
অনলাইন জুয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বন্ধুর প্রাণ কাড়ল কিশোর
টাকা চেয়ে না পেয়ে বাবার প্রাণ নিল ছেলে

মন্তব্য

বাজেট
The fire may continue for another 72 hours

আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে দাবদাহ

আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে দাবদাহ গরমের তীব্রতা বাড়ার মধ্যে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় গোসল করছেন এক ব্যক্তি। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর চলমান তাপপ্রবাহ আজ (২৫ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।’

দেশজুড়ে চলমান দাবদাহ আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বৃহস্পতিবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর চলমান তাপপ্রবাহ আজ (২৫ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।’

৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাস

আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে জানায়, খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আরও পড়ুন:
দাবদাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ
গাছহীন সড়কটি যেন ‘উত্তপ্ত কড়াই’
অতি তীব্র দাবদাহ চুয়াডাঙ্গায়, তাপমাত্রা ৪২.২
দাবদাহে ঢাবি জবিতে বন্ধ সশরীরে ক্লাস
দাবদাহ থেকে মুক্তি মিলবে কবে

মন্তব্য

বাজেট
288 Myanmar soldiers and BGP members returned

ফেরত গেলেন মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্য

ফেরত গেলেন মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্য কড় নিরাপত্তায় পানি পথে ফেরত পাঠানো হয় মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপি সদস্যদের। ছবি: নিউজবাংলা
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিটিএ জেটি ঘাট থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের টাগবোটে তুলে দেয়া হয়।

সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২৮৮ জন সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিটিএ জেটি ঘাট থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের টাগবোটে তুলে দেয়া হয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন জানান, গভীর সাগরে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে অপেক্ষায় থাকা মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ চিন ডুইনে তাদের তুলে দেয়া হবে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওই জাহাজ বুধবারই বাংলাদেশের জলসীমায় পৌঁছায়। ওই জাহাজে করেই ১৭৩ জন বাংলাদেশি ফিরে এসেছেন। যারা বিভিন্নভাবে মিয়ানমারে আটকা পড়েছিলেন বা সাজা পেয়ে জেলখানায় ছিলেন।

মিয়ানমার নৌবাহিনীর ওই জাহাজে করে দেশটির ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও বুধবার দুপুরে কক্সবাজার পৌঁছায়। পরে তারা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়নে বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর তারা মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের যাচাই-বাছাইসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।

বিজিবি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ১১টি বাসে করে মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাটে নিয়ে আসা হয়।

সেখানে আনার পর ইমিগ্রেশন ও ডকুমেন্টেশনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে শুরু হয় হস্তান্তর প্রক্রিয়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও কোস্ট গার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশশে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ দেশটির প্রতিনিধি দলের কাছে তাদের হস্তান্তর করেন।

এরপর সকাল ৭টার দিকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কর্ণফুলি টাগবোটে তুলে দেয়া হয়। কোস্ট গার্ডের একটি ট্রলার টাগবোটটিকে পাহারা দিয়ে গভীর সাগরে নিয়ে যায়।

দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, যার আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাতেও। সীমান্তের ওপারের মর্টার শেল ও গুলি এসে এপারে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।

ওই সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জনকে প্রথম দফায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফেরত পাঠিয়েছিল সরকার।

তাদের মধ্যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি ৩০২ জন, তাদের পরিবারের চার সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।

এরপর বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্ত নিয়ে কয়েক দফায় আরো ২৮৮ জন সীমান্তরক্ষী ও সেনা সদস্য এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এবার তাদের ফেরত পাঠানো হলো।

মন্তব্য

বাজেট
Death toll in Sajeke dump truck ditch rises to 9

সাজেকে ডাম্প ট্রাক খাদে, নিহত বেড়ে ৯

সাজেকে ডাম্প ট্রাক খাদে, নিহত বেড়ে ৯ খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। ছবি: নিউজবাংলা
বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানাধীন সাজেকে শ্রমিকবাহী ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে।

বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।

এর আগে বিকেলে সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশের ভাষ্য, খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয়জনের মৃত্যু হয়।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

আরও পড়ুন:
কুমিল্লায় বাসচাপায় দুই নারী ও শিশু নিহত, আহত আরেক শিশু
ছাত্রলীগ নেতা রকি হত্যা মামলার আসামি বাসচাপায় নিহত
বাসের ধাক্কায় দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত, আহত ১
চট্টগ্রামে অটোরিকশায় ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২
গাছে বাসের ধাক্কায় একজন নিহত, আহত ৭

মন্তব্য

বাজেট
288 members of Myanmar Army BGP are going back

ফেরত যাচ্ছেন মিয়ানমারের সেনা-বিজিপির ২৮৮ সদস্য

ফেরত যাচ্ছেন মিয়ানমারের সেনা-বিজিপির ২৮৮ সদস্য মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য ঘাটে রাখা হয় ২৮৮ জনকে। ছবি: নিউজবাংলা
গত ১১ মার্চ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি ও আশারতলী সীমান্তে দিয়ে প্রথম দফায় ১৭৯ জন মিয়ানমারের বিজিপির সদস্য আশ্রয় নেন। পরে কয়েক দফায় ঘুমধুম, তুমর্রু ও কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে দিয়ে মোট ২৮৮ জন মিয়ারমারের সেনা ও বিজিপির সদস্য আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ২৮৮ জন বিজিপি ও সেনা সদস্যকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার ভোর রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে থেকে কক্সবজার ইনানী নৌবাহিনী জেটি ঘাটে নেয়া হয় তাদের। সেখানে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

গত ১১ মার্চ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি ও আশারতলী সীমান্তে দিয়ে প্রথম দফায় ১৭৯ জন মিয়ানমারের বিজিপির সদস্য আশ্রয় নেন। পরে কয়েক দফায় ঘুমধুম, তুমর্রু ও কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে দিয়ে মোট ২৮৮ জন মিয়ারমারের সেনা ও বিজিপির সদস্য আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিজিপি ও সেনা সদস্যদেরকে নাইক্ষ্যংছড়ি বর্ডার গার্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছিল। তাদের সে দেশের নৌবাহিনীর জাহাজে করে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি কর্মকর্তারা।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জন। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার উখিয়ার ইনানী নৌ-বাহিনীর জেটিঘাট দিয়ে তাদের মিয়ানমারে পাঠানো হয়েছিল।

মন্তব্য

p
উপরে