কৃষির যান্ত্রিকীকরণ করে কম খরচে উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের খাদ্যনিরাপত্তা অর্জন করতে চায় সরকার। এ জন্য কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন অর্থবছরে ২৪ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এটি প্রস্তাবিত বাজেট ব্যয়ের ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। বিদায়ী অর্থবছরের চেয়ে টাকার অঙ্কে এ খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ২৬৬ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ২৪ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা।
জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার আগামী অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বোরো ধানের উৎপাদন বাড়াতে অতিরিক্ত প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো হাইব্রিড ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আউশ, আমন ও বোরো ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিগত বছরের তুলনায় এ বছর উৎপাদন বেশি হবে বলে প্রাক্কলন করা হচ্ছে।’
দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগামী অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ২০ দশমিক ৫৫ লাখ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় বৈশ্বিক মহামারি করোনা দুর্যোগে খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ বাধার মুখে পড়ার আশঙ্কা থাকলেও সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে বাংলাদেশকে সংকটের মুখে পড়তে হয়নি বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, সরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্য সংরক্ষণের ধারণক্ষমতা ২৭ লাখ টনে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং রূপকল্প ২০২১ অনুযায়ী আধুনিক খাদ্যগুদাম বা সাইলো নির্মাণ করে সংরক্ষণক্ষমতা প্রায় ২২ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে আরও প্রায় ৬ লাখ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার আধুনিক খাদ্যগুদাম বা সাইলো নির্মাণে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।’
খরচ কমিয়ে উৎপাদন বাড়াতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ৩ হাজার ২০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
‘কৃষকদের কৃষিযন্ত্রের ক্রয়মূল্যের ওপর ৫০-৭০ শতাংশ পর্যন্ত সহায়তার মাধ্যমে হ্রাসকৃত মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। এর ফলে কৃষিশ্রমিকের অপ্রতুলতা পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে এবং উৎপাদন ব্যয় হ্রাস পেয়েছে। এর আওতায় ২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত প্রায় ৬৯ হাজার ৮৬৮টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর, রিপার, সিডার, পাওয়ার টিলারসহ কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে।’
করোনাকালে হাওর এলাকার শ্রমিকসংকট মোকাবিলা করে কৃষিযন্ত্রের মাধ্যমে দ্রুত ফসল কেটে আগাম বন্যা থেকে ফসল রক্ষা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘খামার যান্ত্রিকীকরণ কার্যক্রম সম্প্রসারণের মাধ্যমে গ্রামীণ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং মূল্য শৃঙ্খলব্যবস্থার আধুনিকায়নের মাধ্যমে একটি আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে।’
নতুন প্রযুক্তি ও ফসলের জাত উদ্ভাবন করে উৎপাদন বাড়ানো ও বিপণনব্যবস্থা আধুনিকায়ন করে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও টেকসই আধুনিক কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য বলেও উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘কৃষির উন্নয়নে স্বাভাবিক ভর্তুকির অতিরিক্ত হিসেবে কৃষিজাতসামগ্রী রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা ও কৃষিক্ষেত্রে বিদ্যুৎ-চালিত সেচযন্ত্রের ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিলের ওপর ২০ শতাংশ রিবেট দেয়া হচ্ছে।’
কৃষি পুনর্বাসন সহায়তায় বিদায়ী অর্থবছরে ৪১৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকার সার-বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ ২ কোটি ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৯ কৃষককে কার্ডের মাধ্যমে সরকার প্রণোদনা দিয়েছে বলেও জানান আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সম্প্রতি কালবৈশাখীতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১ লাখ বোরোচাষিকে এককালীন নগদ অর্থসহায়তা বাবদ ২৫ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
পতিত জমির ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বাড়াতে ৮০ হাজার হেক্টর অতিরিক্ত জমি চাষাবাদের আওতায় আনা হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি ইঞ্চি জায়গা চাষের আওতায় আনয়ন ও পারিবারিক পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে ৩২টি করে সবজি-পুষ্টি বাগান সৃজন হচ্ছে। এতে ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৯২ কৃষক ও তার পরিবার উপকৃত হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি খাতের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বর্তমানে আমরা পরিবেশবান্ধব ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো উপযোগী কার্যক্রমের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। গবেষণার মাধ্যমে সহিষ্ণু প্রযুক্তি ও ফসলের জাত উদ্ভাবন এবং হস্তান্তরের কাজ চলছে।’
কীটনাশকমুক্ত শাকসবজি নিশ্চিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয় ‘কৃষকের বাজার’ নামে একটি কর্মসূচি নিয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সারা দেশে বর্তমানে ৪১টি জেলায় কৃষকের বাজার স্থাপন করা হয়েছে। ফলে কৃষকরা কৃষিপণ্যের উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছে।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে নতুন প্রযুক্তি ও জাত উদ্ভাবন, উদ্যোক্তা, খামারিদের উদ্বুদ্ধ করা, প্রশিক্ষণ, আত্মকর্মসংস্থান নিশ্চিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে এবং দুধ উৎপাদনে অচিরেই স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ খাত দেশের অভ্যন্তরীণ আমিষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য এবং প্রাণিজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে।’
মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের সফলতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম এবং তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ ও এশিয়ার মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।’
মৎস্য খাতের উন্নয়নে নেয়া সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘খোলা জলাশয়ে মাছ চাষ, বিপন্নপ্রায় মৎস্য প্রজাতির সংরক্ষণ, মাছের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির জন্য অভয়াশ্রম সৃষ্টি, জাটকা সংরক্ষণ, পরিবেশবান্ধব চিংড়ি চাষ অব্যাহত আছে।’
গ্রামীণ মাছচাষি, জেলে ও মৎস্যজীবীদের তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে দেশব্যাপী জেলে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র প্রদান এবং ডাটাবেজ তৈরির কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান মুস্তফা কামাল।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মৎস্য খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় কমিউনিটি-বেইজড ক্লাইমেট রেজিল্যান্ট অ্যাকুয়াকালচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ইন বাংলাদেশ নামের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট নামের একটি প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। হালদা নদীকে “বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ” ঘোষণা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি জানিয়েছিল যে আর কোনো ব্যাংককে একীভূতকরণের সুযোগ দেয়া হবে না। তবে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বিদেশি ব্যাংক আলফালাহকে অধিগ্রহণের জন্য ব্যাংক এশিয়াকে অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নতুন মাত্রার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এশিয়া বিদেশি ব্যাংক আলফালাহকে অধিগ্রহণের পরিকল্পনা করছে। সূত্র: ইউএনবি
করাচিভিত্তিক ব্যাংক আলফালাহ বুধবার (১৭ এপ্রিল) পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জকে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, ব্যাংক আলফালাহ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের বাংলাদেশ পরিচালনা, সম্পদ ও দায় অধিগ্রহণের জন্য প্রাপ্ত বাধ্যবাধকতামুক্ত ইঙ্গিতমূলক প্রস্তাবের ক্ষেত্রে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যাংক আলফালাহ বাংলাদেশের ব্যাংক এশিয়ার জন্য যথাযথ কার্যক্রম শুরুর জন্য স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তানের অনুমোদন চাইছে।
ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইন বলেন, ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এটি একীভূতকরণ নিয়ে খুব বেশি আলোচনার অংশ নয়।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে দুই ব্যাংকের নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে অধিগ্রহণের বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ পাবে বলে।
বিষয়বস্তু অবহিত না করে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে ‘রূপান্তর’ শিরোনামের একটি নাটক প্রচার করায় বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে ওয়ালটন।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সব ধরনের বিজ্ঞাপনী চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
ওয়ালটনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’ এর স্বত্বাধিকারী মোহন আহমেদকে মঙ্গলবার ওই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
ওয়ালটনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট রাইসুল ইসলাম রিয়াদ স্বাক্ষরিত আইনি নোটিশে উল্লেখ করে যা বলা হয়, ‘আপনি লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান এর স্বত্বাধিকারী। আপনার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার নির্মিত ছয়টি নাটকে ওয়ালটন ফ্রিজ ব্র্যান্ডিং করতে সম্মত হয়। শর্ত থাকে যে, উক্ত নাটকসমূহে দেশের আইন, নীতি, নৈতিকতা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হয় এরকম কোনো বিষয় অর্ন্তভুক্ত হবে না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক যে, উক্ত নাটকসমূহের মধ্যে ‘রূপান্তর’ নাটকটিতে এমন কিছু বিষয় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে, যাতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে ও মানুষের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে।’
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে নাটকটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে পূর্বে অবহিত না করে রূপান্তর নাটক প্রচার করায় আপনার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হলো এবং সেই সঙ্গে কেন আপনার বিরুদ্ধে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে নাটক প্রচারের জন্য আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে জানানোর জন্য বলা হলো।’
এর আগে ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম থেকে ‘রূপান্তর’ নাটকটি প্রত্যাহারের জন্য বিজ্ঞাপনী সংস্থাকে নির্দেশ দেয় ওয়ালটন। তাৎক্ষণিকভাবে ফেসবুক-ইউটিউবসহ সব মাধ্যম থেকে নাটকটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
এরপর বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ওয়ালটন গ্রুপের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থি নাটকে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কেন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে লিগাল নোটিশ দেয় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ওয়ালটনের ভাষ্য, দেশের মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো কর্মকাণ্ড কখনও তারা সমর্থন করে না এবং এসব কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকে না। অনাকাঙ্ক্ষিত এই বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ মর্মাহত এবং সম্মানিত ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন রূপালী ব্যাংক পিএলসির মহাব্যবস্থাপক মো. ফয়েজ আলম। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে তিনিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংকের আট জন মহাব্যবস্থাপককে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি দেয়া হয়।
ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি হওয়ার আগে তিনি রূপালী ব্যাংক পিএলসিতে মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
মো. ফয়েজ আলম ১৯৯৮ সালে বিআরসির মাধ্যমে সিনিয়র অফিসার পদে রূপালী ব্যাংকে যোগদান করেন। কর্মজীবনে ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাখার শাখা ব্যবস্থাপক, জোনাল অফিস এবং প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পেশাগত প্রয়োজনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও আরব অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণসহ দেশ-বিদেশে ব্যাংকিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন।
ফয়েজ আলমের জন্ম ১৯৬৮ সালে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার যোগীরনগুয়া গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বিএ অনার্সসহ এমএ পাশ করার পর এমফিল ডিগ্রিও অর্জন করেন খ্যাতিমান এই ব্যাংকার।
পেশাগত জীবনের বাইরে ফয়েজ আলম একজন সফল লেখকও। বাংলাদেশে তিনি অগ্রণী উত্তর উপনিবেশী তাত্ত্বিক, প্রাবন্ধিক ও কবি হিসেবে বিশেষ খ্যাতিমান। এডওয়ার্ড সাঈদের বিখ্যাত গ্রন্থ অরিয়েন্টালিজম-এর অনুবাদক হিসেবেও তার আলাদা খ্যাতি আছে। তার পনেরটির বেশি গ্রন্থ এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে।
ভোজ্যতেলের ওপর শুল্ক অব্যাহতির সময়সীমা শেষ হয়েছে সোমবার (১৫ এপ্রিল)। এ অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিভিওআরভিএমএফএ) সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
বিভিওআরভিএমএফএ’র নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম মোল্লার পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কাঁচামাল আমদানি ও ভোজ্যপণ্য উৎপাদনে কর অব্যাহতির মেয়াদ ১৫ এপ্রিল শেষ হচ্ছে বিধায় পরদিন ১৬ এপ্রিল থেকে ভ্যাট অব্যাহতির আগের নির্ধারিত মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৭৩ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৮৪৫ টাকা ও এক লিটার পাম তেল ১৩২ টাকায় বিক্রি করা হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ফেব্রুয়ারিতে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত (অপরিশোধিত) সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে।
এদিকে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করা যেতে পারে, তবে সময় লাগবে।
‘ভোজ্যতেলের নতুন চালান আমদানির ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
আরও পড়ুন:প্রবাসীদের আয়ের একটি বড় অংশই আসে ঢাকায় অবস্থিত ব্যাংকের শাখাগুলোতে। অর্থাৎ প্রবাসীদের পরিবারের বেশিরভাগই ঢাকায় থাকেন বা তাদের অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট ঢাকার ব্যাংক শাখায়।
ইউএনবি জানায়, রেমিট্যান্সের জেলাভিত্তিক চিত্র নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম। সিলেট তৃতীয় এবং কুমিল্লা চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
এরপরে রয়েছে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর ও নরসিংদীর অবস্থান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জেলাভিত্তিক প্রবাসী আয় প্রতিবেদনে গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে প্রবাসীরা ১ হাজার ৫০৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২১৬ কোটি ডলার। তার আগের মাস জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় ছিল ২১০ কোটি ডলার।
জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়কালে ঢাকা জেলায় এসেছে ৫২৩ কোটি ডলার এবং চট্টগ্রাম জেলায় এসেছে ১৪২ কোটি ডলার।
এই সময়ে সিলেট জেলা ৮৭০ মিলিয়ন ডলার, কুমিল্লা ৮১০ মিলিয়ন ডলার এবং নোয়াখালী ৪৬০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ কোটি, ফেনীতে ৩৭ কোটি, মৌলভীবাজারে ৩৬ কোটি, চাঁদপুরে ৩৫ কোটি ডলার এবং নরসিংদীতে ২৫০ মিলিয়ন ডলার এসেছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলো থেকে বেশি প্রবাসী আয় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু এমনটা হচ্ছে না। কারণ অনেক প্রবাসী বিদেশে স্থায়ী হয়েছেন। বরং তারা (প্রবাসীরা) দেশে থাকা সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে অর্থ পাচার বাড়ছে।
আরও পড়ুন:চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ছয় দশমিক এক শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।
আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংকটি তাদের এপ্রিলের এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে (এডিও) এমন পূর্বাভাস দিয়েছে।
এডিওতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিষয়ে এডিবি বলেছে, ২০২৪ (২০২৩-২৪) অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ছয় দশমিক এক শতাংশ পর্যন্ত। ২০২৫ (২০২৪-২৫) অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগের অর্থবছরের চেয়ে বেড়ে হতে পারে ছয় দশমিক ছয় শতাংশ।
বাংলাদেশে কোনো বছরের জুলাই থেকে পরবর্তী বছরের জুন পর্যন্ত ১২ মাসকে এক অর্থবছর ধরা হয়। সে হিসাবে ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষ হচ্ছে চলতি বছরের ৩০ জুন।
এডিওতে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে চাহিদা কমে যাওয়ার পরও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সস্তা তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা দেশে তৈরি সুতা ও বস্ত্র ব্যবহার করছেন।
মূল্যস্ফীতির বিষয়ে বলা হয়, মূল্যস্ফীতি কমার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার ভোগ বাড়তে পারে। অন্যদিকে ভর্তুকি কম দেয়া এবং কৃচ্ছ্রতার ব্যবস্থাগুলো অব্যাহত রাখায় সরকারি পর্যায়ে ভোগও সামান্য বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মার্চে দেশে মূল্যস্ফীতি দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এর আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে মূলস্ফীতির এই হার ছিল ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
মঙ্গলবার সবশেষ আর্থিক পরিসংখ্যানে এই তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিএস।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মার্চে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশে। আর খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশে। তুলনামূলকভাবে গত ফেব্রুয়ারিতে খাদ্য পণ্যের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের ক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
গ্রামীণ অঞ্চলের তুলনায় শহরে উচ্চতর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পড়েছে। শহর এলাকায় মুদ্রাস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং গ্রামীণ অঞ্চলে ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। মার্চে শহর এলাকায় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং গ্রামীণ এলাকায় খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৪১ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘১৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে দেশ। আর এর বড় বিরূপ প্রভাব পড়ছে সীমিত আয়ের মানুষের ওপর।’
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পলিসি সুদের হার বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু কৌশল বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংক ঋণের সুদের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশে।
তবে ড. মনসুর উল্লেখ করেছেন, বিলম্ব এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপগুলো এখনও উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রভাব দেখাতে পারেনি।
ক্রমাগত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হারের পেছনে একটি অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থা এবং নিয়মিত পণ্যের দাম বৃদ্ধিকে প্রাথমিকভাবে দায়ী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন অর্থনীতিবিদরা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য