আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশের আগেই এটিকে বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে মূল্যায়ন করেছে বিএনপি। করোনাকালে গতানুগতিক বাজেট না দিয়ে ছয় মাসের জন্য বিশেষ বাজেট দেয়ার প্রস্তাব করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আগামী ৩ জুন প্রস্তাব করা হচ্ছে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট। তার পাঁচ দিন আগে বিএনপির বাজেট ভাবনা তুলে ধরতে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফখরুল।
গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত বছরও তাদের পরামর্শ উপেক্ষা করে সরকার যে বাজেট দিয়েছে, সেটা বাস্তবায়ন করা যায়নি, আগামী বাজেটও বাস্তবায়ন করা যাবে না।
ফখরুল বলেন, ‘সরকার এবার ৬ লাখ ২ হাজার ৮৮০ কোটি টাকার যে বাজেট দিতে যাচ্ছে সেটি বিশাল, অবাস্তবায়নযোগ্য, উচ্চাভিলাষী, গতানুগতিক।
‘আসন্ন অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম আট মাসে আদায় হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৫১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা, যা ৫০ শতাংশেরও নিচে। বাকি চার মাসে আদায় করতে হবে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা’- বলেন বিএনপি নেতা।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন ৪৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বলে বাস্তবায়ন, পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ- আইএমইডির প্রতিবেদনও উল্লেখ করেন ফখরুল। বলেন, ‘দুই মাসে খরচ করতে হবে ১ লাখ ৬ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা।
‘এমনিতেই বরাদ্দ কম, তার ওপর বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় করতে পারে না মন্ত্রণালয়। তাহলে এ বাজেটের অর্থ কী?’- প্রশ্ন রাখেন বিএনপি নেতা।
গত বছরও বিএনপি একই দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু সরকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট দিয়েছে, সেটি গতানুগতিক, অবাস্তবায়নযোগ্য হয়েছে বলে দাবি করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘এই বাজেট যা জাতিকে হতাশ করেছে। শেষ পর্যন্ত এই বাজেটের কোনো লক্ষ্যই সেভাবে পূরণ হয়নি। না রাজস্ব আহরণে, না প্রক্ষেপণকৃত উন্নয়ন, প্রণোদনা ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে।’
করোনাভাইরাসে অর্থনীতি বিপর্যস্ত হওয়ায় রাজস্ব আদায়ে সরকার ব্যর্থ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জেনেশুনে এ ধরনের অবাস্তব টার্গেট তাই তামাশা ছাড়া আর কী হতে পারে?’
এবার বাজেট ঘাটতি অনুমান করা হয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৮০২ কোটি টাকা, যা জিডিপির সাড়ে ৬ শতাংশ। ফখরুল বলেন, এত বিশাল পরিমাণ বাজেট ঘাটতি এই প্রথম।
ক্রান্তিকালে গতানুগতিক বাজেট নয়
করোনা মহামারির কথা তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ‘জীবন ও জীবিকার টানাটানিতে জনজীবন ও অর্থনীতি দুটোই মহাসংকটে রয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধ করতে না পারলে কোনোভাবেই অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়।’
গতানুগতিক বাজেট না দেয়ার দাবি করে তিনি বলেন, ‘করতে হবে বিশেষ সময়ের বিশেষ বাজেট। এর মুখ্য উদ্দেশ্য হবে করোনার প্রভাব মোকাবিলার মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা ও দুর্ভোগ উপশম করা। ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করে স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনা। এ জন্য দরকার হবে সহায়ক নীতি-সহায়তা।’
তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, করোনার ভয়াবহতা না কমলে গতানুগতিক বাজেট করে কোনো লাভ নেই। লক্ষ্য হওয়া উচিত আগামী ছয় মাসের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট করা।’
করোনার কারণে পূর্ণাঙ্গ বাজেটের কোনো লক্ষ্যই অর্জিত হবে না দাবি করে তিনি বলেন, ‘অর্থনীতির অস্বাভাবিক সংকোচনে প্রচলিত বাজেটব্যবস্থা থেকে সরে এসে তিন বছরের মধ্যমেয়াদি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার আলোকে বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জীবন-জীবিকার টানাটানির এ দুর্যোগকালে প্রবৃদ্ধি কোনো ইস্যু নয়। এখন প্রবৃদ্ধির কথা না বলে বরং কর্মসংস্থান এবং মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষার কথাই বলতে হবে। কারণ, জীবন ও জীবিকার সমন্বয়ের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
‘তবে মনে রাখতে হবে জীবিকার চেয়ে জীবন আগে। তাই এবারের বাজেট হতে হবে মূলত জীবন বাঁচানোর বাজেট। এ বাজেট হওয়া উচিত ঝুঁকি মোকাবিলা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বাজেট। এ বাজেট হতে হবে জনস্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার বাজেট।’
মাথাপিছু আয় কীভাবে বাড়ল?
সরকার জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ২২৭ ডলার হয়েছে। এই পরিসংখ্যানে সংশয় প্রকাশ করেন ফখরুল। বলেন, ‘মানুষের অর্থনৈতিক জীবন বিপর্যয়ের যে চিত্র চারদিকে তাতে তো তা প্রতিভাত হয় না।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের আয় কমেছে ৩৭ শতাংশ। বেতননির্ভর মানুষের আয় কমেছে ৪৯ শতাংশ। দেশে গত কোভিড সময়ে ২ কোটি ৪৫ লাখ নতুন দরিদ্রের সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তাহলে মাথাপিছু আয় বাড়লটা কার?’
কালোটাকা সাদা করার সুযোগের সমালোচনা
বিএনপির প্রতিটি বাজেটেই এই সুযোগ দেয়া হলেও ফখরুল এখন এর বিরোধিতা করছেন। তিনি বলেন, ‘হরিলুট করে সঞ্চিত কালোটাকা জায়েজ করার দরজা অবারিত করে দিলেন অর্থমন্ত্রী, যা অনৈতিক এবং ন্যায়নীতি মেনে আইন পালনকারী নাগরিকদের প্রতি অবিচার।’
‘কোভিডকালীন এত কালোটাকা কারা আয় করেছে জাতি তা জানতে চায়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতি জানতে চায়, এরা কারা? যদিও এরই মধ্যে সরকারদলীয় ও সরকারের মদদপুষ্ট অনেক রাঘব বোয়ালের নাম বেরিয়ে পড়েছে।’
অপ্রদর্শিত আয়ের বিরাট অংশ পাচার হয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বছরে পাচার হয় ১ লাখ কোটি টাকার অধিক। সাত বছরে পাচার হয়েছে ৫ হাজার ২৭০ কোটি ডলার, টাকার অঙ্কে যা সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকা, যা ২০১৯-২০ সালের জাতীয় বাজেটের প্রায় সমান।
প্রণোদনা পাচ্ছে না সবাই
কোভিড থেকে উত্তরণে সরকার যে প্রণোদনা দিচ্ছে, সেটি টার্গেট গ্রুপের কাছে পৌঁছাতে পারেনি বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, বড় শিল্পপতিরা প্রণোদনা তহবিল যতটা পেয়েছে, তার চেয়ে কম পেয়েছে মাঝারি শিল্প এবং তার চেয়েও কম পেয়েছে ছোট উদ্যোক্তারা। কুটিরশিল্প পেয়েছে আরও কম। অথচ উচিত ছিল সবচেয়ে ছোট যারা, তাদের ক্ষেত্রেই তহবিলের সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন। কারণ, তাদের প্রয়োজনটাই বেশি।
প্রণোদনা প্যাকেজে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, দুস্থ, গরিব, দিনমজুর, শ্রমিকেরা উপকৃত হয়নি অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের ৫০ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা বিতরণই সম্ভব হয়নি, যা মোট অর্থের প্রায় ৪২ শতাংশ।
মেগা বাজেটে বরাদ্দের সমালোচনা
বাজেটে ১০টি মেগা প্রকল্পের জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, এসব মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ কমিয়ে সে অর্থ নিঃস্ব, বেকার, ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে নগদ অর্থ বণ্টনের জন্য বরাদ্দ করা যেত।
স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতায় মানুষ মারা যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল। বলেন, গত এক দশকের মধ্যে এবারই সবচেয়ে কম উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। বরাদ্দের মাত্র ২৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ ব্যয় করতে পেরেছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
স্বাস্থ্য খাতের মতো এমন গুরুত্বপূর্ণ খাতকে অবহেলিত রেখে বিশাল বাজেট প্রণয়ন করে কী হবে?- প্রশ্ন রাখেন বিএনপি নেতা।
বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ১৫ শতাংশ এবং জিডিপির কমপক্ষে ৫ শতাংশ করারও দাবি জানান বিএনপি নেতা। তার অভিযোগ, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই সবচেয়ে কম ব্যয় করে এই খাতে।
টিকা নিয়ে ‘বালখিল্যতা’
করোনার টিকা আনতে শুরু থেকেই একাধিক দেশের সঙ্গে চুক্তি না করারও সমালোচনা করেন ফখরুল। বলেন, ‘আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে শুরু থেকেই জোর দিয়ে বলেছিলাম টিকার জন্য একক উৎসের ওপর নির্ভর না করে বিকল্প সূত্র খুঁজতে। তখন সরকার বলেছিল, বিএনপি নাকি টিকা নিয়ে রাজনীতি করছে। অথচ সরকার এখন চীন এবং রাশিয়া থেকে টিকা আনার চেষ্টা করছে। অবশেষে প্রমাণিত হলো, টিকা নিয়ে বিকল্প অন্বেষণে আমাদের পরামর্শটিই সঠিক ছিল।’
তিনি বলেন, বিএনপির পরামর্শ শুরুতে মানলে সরকারকে এখন ‘লেজেগোবরে’ অবস্থায় পড়তে হতো না।
টিকা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশেই উৎপাদনের পরামর্শও দেন ফখরুল।
দেশে শ্রেণিবৈষম্য ব্যাপক আকার ধারণ করেছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিত্তবান-বিত্তহীনের ব্যবধান দশমিক ৪ পর্যন্ত সহনীয় বলে মনে করা হয়। আমাদের দেশে এটা বর্তমানে দশমিক ৫-এর কাছাকাছি রয়েছে। এটা অসহনীয় একটি অবস্থা।
‘সমাজে যখন ন্যায়-অন্যায়ের কোনো ব্যবধান থাকে না, দুর্নীতি আর অসৎ পন্থাই অর্থ আয়ের প্রধান হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায়, তখন সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়তে থাকে।’
ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমাতে হলে সবার আগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলেও মনে করেন বিএনপি নেতা।
মেগা প্রকল্পের বাজেট বেশি ধরা হয়েছে বলে আগের করা দাবি নতুন করে আবার তুলে ধরেন বিএনপি নেতা। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবিও তুলে ধরেন।
সড়ক নির্মাণে বিশ্বে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘এতেই বোঝা যায় নির্মাণ খাতে কী ধরনের রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় হচ্ছে।’
তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চার লেনের সড়কের চেয়ে ইউরোপে চার লেনের সড়ক নির্মাণের খরচ অর্ধেক।
ব্যাংকে লুটপাট
ব্যাংকিং খাতকে রীতিমতো লুট করা হয়েছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, করোনাভাইরাসের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের বিশেষ নীতিমালার কারণে ঋণ গ্রহীতারা ঋণ পরিশোধ করছে না।
ঋণখেলাপিদের কবল থেকে দেশকে ও অর্থনীতিকে মুক্ত করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঋণ খেলাপির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলা হলেও তাদের আবার বিপুল ঋণ অবলোপন করে দেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ঋণ খেলাপি ও ব্যাংকমালিকদের অনৈতিক সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ আদায়ে জোরদার হওয়ার চেয়ে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে অবলোপনের দিকে, যা কোনো ভালো সমাধান নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক তার ঐতিহাসিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভূমিকা আগের মতো পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘ব্যাংকমালিকদের পরিবারের সদস্যদের অনৈতিকভাবে বছরের পর বছর পরিচালক পদে বহাল থাকার স্থায়ী সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র ঋণখেলাপিরা তুলনামূলকভাবে কম খেলাপি।’
বিএনপির মতে বাজেট যেমন হওয়া উচিত
স্বাস্থ্য খাতকে বাজেটের সর্বাধিক তালিকায় রাখা স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ ব্যয় করা, প্রতিটি মানুষকে জাতীয় স্বাস্থ্যকার্ড প্রদান, প্রতিটি জেলায় ডেডিকেটেড সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, সামাজিক সুরক্ষার বরাদ্দ বাড়ানো ও নতুন দরিদ্রদের চিহ্নিত করে তাদের কাছে সামাজিক সুরক্ষার অর্থ পৌঁছে দেয়া, দরিদ্রদের জন্য তিন মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা এককালীন নগদ প্রদান, উপকারভোগীদের তালিকা নিরপেক্ষভাবে করা, এসএমই, শিল্প ও কৃষি খাতে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে বিশেষ প্রণোদনা অর্থ বরাদ্দ, প্রবাসীদের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ঋণ, নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পাঁচ বছর করছাড়, সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো, কৃষি খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ, ছাঁটাই না করার শর্তে প্রণোদনা দেয়া, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির চেষ্টা, তৈরি পোশাকসহ রপ্তানি খাতে সহায়তা অব্যাহত রাখা, দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূরীকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেয়ার দাবি জানান ফখরুল।
শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের নিয়ে উচ্চপর্যায়ে একটি অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করারও পরামর্শ দেয় বিএনপি।
এ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো, বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ ভর্তুকি বাদ দেয়া, অনিবন্ধিত বিদেশি নাগরিকের কাছ থেকে আয়কর আদায়, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো থেকে কর বৃদ্ধি, দেশি কোম্পানিকে পুনর্নিরীক্ষণ, বিদেশি অনুদান বাড়ানোর চেষ্টা করার পরামর্শ দেন ফখরুল।
ব্যাংক খাত থেকে আর ঋণ না নেয়া, মুদ্রা সম্প্রসারণ নীতি অব্যাহত রাখার কথাও বলেন ফলরুল।
আরও পড়ুন:রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারের আশুলিয়ায় একটি নির্জন বাঁশবাগানের ভেতর থেকে এক নারী পোশাকশ্রমিকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আশুলিয়ার কাঠগড়া নয়াপাড়া এলাকার বাঁশবাগান থেকে শুক্রবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো আনজু খাতুন আশুলিয়ার নরসিংহপুরের হা-মীম গ্রুপের একটি তৈরি পোশাক কারখানার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ি গাইবান্ধা সদর থানার ঘাগুয়া ইউনিয়নে।
পুলিশের ভাষ্য, বাঁশবাগানের ভেতর নারী পোশাকশ্রমিকের মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ওই নারীর গলায় ঝোলানো পরিচয়পত্রে দেখা যায়, তিনি হা-মীম গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার অপারেটর।
হা-মীম গ্রুপের টিআইএসডব্লিএল-১ কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আনজু খাতুন নামে এক নারী শ্রমিক গতকাল রাত ৯টা ১৫ মিনিটের পরে কারখানা থেকে বাসায় যায়, কিন্তু আজ সকালে তিনি আর কারখানায় আসেননি।
‘পরে লাইনের সুপারভাইজার আনজুকে কল দিলেও সে রিসিভ করেনি।’
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ভজন চন্দ্র বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে কেউ তাকে (পোশাকশ্রমিক) হত্যা করে ফেলে রেখে যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু (২২) নামের বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়েছেন।
উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালাংগী বিজিবি ক্যাম্পের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলার এলাকায় শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও যুবকের পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কয়েকজন রাখালসহ শ্রীরামপুর ইউনিয়ন সীমান্তের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলারের ওপারে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গরু আনতে যান আবুল কালাম ডাকু। গরু নিয়ে ফেরার পথে শুক্রবার ভোররাতে বিএসএফের ডোরাডাবরী ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ডাকু গুরুতর আহত হলে সঙ্গীরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে বাংলাদেশ সীমান্তে। পরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঝালাংগী ক্যাম্পের ইনচার্জ নায়েক সুবেদার নুরুল আমিন বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু নামে একজন যুবক নিহত হয়েছেন। পাটগ্রাম থানা পুলিশ পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
নিহত যুবকের মা মমতা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছে। কী অপরাধের জন্য বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করল জানি না। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
পাটগ্রাম থানার ওসি আবু সাইদ বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আহত যুবক আবুল কালাম ডাকুকে পরিবারের সদস্যরা পাটগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যান। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় একটি ইউডি (অপমৃত্যুর) মামলা করা হবে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় তিন চাকার ভ্যানের সঙ্গে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুই সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুস সালাম (৫০) ও ছানোয়ার হোসেন (৪৫) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তারা স্থানীয় কাটিগ্রাম বাজারে সবজির ব্যবসা করতেন।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি সুখেন্দু বসু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর বন্দর আড়ত থেকে চাষীদের কাছ থেকে সবজি কিনে তিন চাকার ভ্যানের মাধ্যমে কাটিগ্রাম যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আবদুস সালাম ও ছানোয়ার হোসেন, কিন্তু ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে পাটুরিয়াগামী একটি কাভার্ড ভ্যান ওভারটেক করতে গিয়ে ওই তিন চাকার ভ্যানকে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই আবদুস সালাম নিহত হন এবং গুরুত্ব অবস্থায় ছানোয়ার হোসেনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, নিহতদের একজনের মরদেহ সদর হাসপাতালে এবং অপরজনের মরদেহ গোলড়া থানায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যানের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় গোলড়া থানায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কেও থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ কামনা করেছেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেতা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি, একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্টে (এলওআই) সই করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত।
‘সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখি।’
বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান পরিসর বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমি প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) আশ্বস্ত করেছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার ও শুধু থাইল্যান্ডের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।’
আরও পড়ুন:উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হয়েছে ১৩৭তম বন্দর দিবস।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে বন্দর ভবন চত্বরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
ওই সময় বোর্ড সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর মোহাম্মদ মাহবুবুবর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পতাকা উত্তোলনকালে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত সব জলযান ও জাহাজ থেকে একনাগাড়ে এক মিনিট হুইসেল বাজানো হয়। এরপর বন্দর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বন্দর দিবসের কেক কাটেন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদ, বন্দরের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।
কর্ণফুলীর মোহনায় ১৩৬ বছর আগে ২৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। ইংরেজ শাসনামলের প্রথম দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সালামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীতে জেটি নির্মাণ করেন। পরে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়।
১৮৮৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দুটি মুরিং নির্মাণ হয়। একই বছরের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। এরপর ১৮৯৯ থেকে ১৯১০ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার এবং আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে যুক্তভাবে চারটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে রেলওয়ের সংযোগ সাধন হয়।
১৯২৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরকে মেজর পোর্ট ঘোষণা করা হয়। সেই থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে আসছে।
আরও পড়ুন:শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বন্য হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ৬০ বছর বয়সী হাজী উমর আলী একই গ্রামের বাসিন্দা।
নালিতাবাড়ী থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া জানান, প্রায় তিন-চার দিন ধরে নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামের পাহাড়ি ঢালে বোরো ধান ক্ষেতে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫টি বন্য হাতি নেমে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে হাতির পালটি বাতকুচি গ্রামের ধান ক্ষেতে যায়। এ সময় উমর আলি ও গ্রামবাসীরা তাদের ফসল বাঁচানোর জন্য মশাল জ্বালিয়ে ডাক ও চিৎকার শুরু করেন।
একপর্যায়ে বন্যহাতির পালটি একটু পিছিয়ে যায়। পরে বাড়িতে যাওয়া সময় পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা হাতির পালটি উমর আলিকে ঘিরে ফেলে ও পা দিয়ে পিষ্ট করে।
বন বিভাগের ময়মনসিংহ মধুটিলা ফরেস্টের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে নিহত উমর আলির পরিবারকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
আরও পড়ুন:সিলেটে মধ্যরাতে খোলা মাঠ থেকে একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার কম্পিউটার ইনচার্জের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নগরের হাজারিবাগ এলাকার পেছনের মাঠ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো অমিত দাস শিবু স্থানীয় দৈনিক উত্তরপূর্বর কম্পিউটার ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিবুর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে। তিনি নগরের বাগবাড়ি নরসিংটিলা এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেবাংশু কুমার দে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাতে কাজ শেষে অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলেন অমিত। তার মৃত্যু রহস্যজনক মনে হচ্ছে। পাশেই তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল রাখা ছিল।’
তিনি জানান, রাত ২টার দিকে স্থানীয় লোকজন মরদেহ দেখে থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।
এসএমপির উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। তার মরদেহের পাশে মোটরসাইকেলটি চাবি লাগানো অবস্থায় রাখা ছিল, তবে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। কিন্তু তার মোবাইলের শেষ লোকেশন ঘটনাস্থলেই দেখাচ্ছে।’
আজবাহার বলেন, ‘অমিতের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। এরপরও ঘটনাটিকে রহস্যজনক ধরে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য