আগামী অর্থবছরের বাজেট পেশের আগেই এটিকে বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে মূল্যায়ন করেছে বিএনপি। করোনাকালে গতানুগতিক বাজেট না দিয়ে ছয় মাসের জন্য বিশেষ বাজেট দেয়ার প্রস্তাব করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আগামী ৩ জুন প্রস্তাব করা হচ্ছে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট। তার পাঁচ দিন আগে বিএনপির বাজেট ভাবনা তুলে ধরতে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফখরুল।
গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত বছরও তাদের পরামর্শ উপেক্ষা করে সরকার যে বাজেট দিয়েছে, সেটা বাস্তবায়ন করা যায়নি, আগামী বাজেটও বাস্তবায়ন করা যাবে না।
ফখরুল বলেন, ‘সরকার এবার ৬ লাখ ২ হাজার ৮৮০ কোটি টাকার যে বাজেট দিতে যাচ্ছে সেটি বিশাল, অবাস্তবায়নযোগ্য, উচ্চাভিলাষী, গতানুগতিক।
‘আসন্ন অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম আট মাসে আদায় হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৫১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা, যা ৫০ শতাংশেরও নিচে। বাকি চার মাসে আদায় করতে হবে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা’- বলেন বিএনপি নেতা।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন ৪৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বলে বাস্তবায়ন, পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ- আইএমইডির প্রতিবেদনও উল্লেখ করেন ফখরুল। বলেন, ‘দুই মাসে খরচ করতে হবে ১ লাখ ৬ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা।
অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট দিতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ছবি: সংগৃহীত
‘এমনিতেই বরাদ্দ কম, তার ওপর বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় করতে পারে না মন্ত্রণালয়। তাহলে এ বাজেটের অর্থ কী?’- প্রশ্ন রাখেন বিএনপি নেতা।
গত বছরও বিএনপি একই দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু সরকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট দিয়েছে, সেটি গতানুগতিক, অবাস্তবায়নযোগ্য হয়েছে বলে দাবি করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘এই বাজেট যা জাতিকে হতাশ করেছে। শেষ পর্যন্ত এই বাজেটের কোনো লক্ষ্যই সেভাবে পূরণ হয়নি। না রাজস্ব আহরণে, না প্রক্ষেপণকৃত উন্নয়ন, প্রণোদনা ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে।’
করোনাভাইরাসে অর্থনীতি বিপর্যস্ত হওয়ায় রাজস্ব আদায়ে সরকার ব্যর্থ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জেনেশুনে এ ধরনের অবাস্তব টার্গেট তাই তামাশা ছাড়া আর কী হতে পারে?’
এবার বাজেট ঘাটতি অনুমান করা হয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৮০২ কোটি টাকা, যা জিডিপির সাড়ে ৬ শতাংশ। ফখরুল বলেন, এত বিশাল পরিমাণ বাজেট ঘাটতি এই প্রথম।
ক্রান্তিকালে গতানুগতিক বাজেট নয়
করোনা মহামারির কথা তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ‘জীবন ও জীবিকার টানাটানিতে জনজীবন ও অর্থনীতি দুটোই মহাসংকটে রয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধ করতে না পারলে কোনোভাবেই অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়।’
গতানুগতিক বাজেট না দেয়ার দাবি করে তিনি বলেন, ‘করতে হবে বিশেষ সময়ের বিশেষ বাজেট। এর মুখ্য উদ্দেশ্য হবে করোনার প্রভাব মোকাবিলার মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা ও দুর্ভোগ উপশম করা। ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করে স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনা। এ জন্য দরকার হবে সহায়ক নীতি-সহায়তা।’
তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, করোনার ভয়াবহতা না কমলে গতানুগতিক বাজেট করে কোনো লাভ নেই। লক্ষ্য হওয়া উচিত আগামী ছয় মাসের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট করা।’
করোনার কারণে পূর্ণাঙ্গ বাজেটের কোনো লক্ষ্যই অর্জিত হবে না দাবি করে তিনি বলেন, ‘অর্থনীতির অস্বাভাবিক সংকোচনে প্রচলিত বাজেটব্যবস্থা থেকে সরে এসে তিন বছরের মধ্যমেয়াদি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার আলোকে বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জীবন-জীবিকার টানাটানির এ দুর্যোগকালে প্রবৃদ্ধি কোনো ইস্যু নয়। এখন প্রবৃদ্ধির কথা না বলে বরং কর্মসংস্থান এবং মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষার কথাই বলতে হবে। কারণ, জীবন ও জীবিকার সমন্বয়ের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
‘তবে মনে রাখতে হবে জীবিকার চেয়ে জীবন আগে। তাই এবারের বাজেট হতে হবে মূলত জীবন বাঁচানোর বাজেট। এ বাজেট হওয়া উচিত ঝুঁকি মোকাবিলা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বাজেট। এ বাজেট হতে হবে জনস্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার বাজেট।’
মাথাপিছু আয় কীভাবে বাড়ল?
সরকার জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ২২৭ ডলার হয়েছে। এই পরিসংখ্যানে সংশয় প্রকাশ করেন ফখরুল। বলেন, ‘মানুষের অর্থনৈতিক জীবন বিপর্যয়ের যে চিত্র চারদিকে তাতে তো তা প্রতিভাত হয় না।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের আয় কমেছে ৩৭ শতাংশ। বেতননির্ভর মানুষের আয় কমেছে ৪৯ শতাংশ। দেশে গত কোভিড সময়ে ২ কোটি ৪৫ লাখ নতুন দরিদ্রের সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তাহলে মাথাপিছু আয় বাড়লটা কার?’
কালোটাকা সাদা করার সুযোগের সমালোচনা
বিএনপির প্রতিটি বাজেটেই এই সুযোগ দেয়া হলেও ফখরুল এখন এর বিরোধিতা করছেন। তিনি বলেন, ‘হরিলুট করে সঞ্চিত কালোটাকা জায়েজ করার দরজা অবারিত করে দিলেন অর্থমন্ত্রী, যা অনৈতিক এবং ন্যায়নীতি মেনে আইন পালনকারী নাগরিকদের প্রতি অবিচার।’
‘কোভিডকালীন এত কালোটাকা কারা আয় করেছে জাতি তা জানতে চায়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতি জানতে চায়, এরা কারা? যদিও এরই মধ্যে সরকারদলীয় ও সরকারের মদদপুষ্ট অনেক রাঘব বোয়ালের নাম বেরিয়ে পড়েছে।’
অপ্রদর্শিত আয়ের বিরাট অংশ পাচার হয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বছরে পাচার হয় ১ লাখ কোটি টাকার অধিক। সাত বছরে পাচার হয়েছে ৫ হাজার ২৭০ কোটি ডলার, টাকার অঙ্কে যা সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকা, যা ২০১৯-২০ সালের জাতীয় বাজেটের প্রায় সমান।
প্রণোদনা পাচ্ছে না সবাই
কোভিড থেকে উত্তরণে সরকার যে প্রণোদনা দিচ্ছে, সেটি টার্গেট গ্রুপের কাছে পৌঁছাতে পারেনি বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, বড় শিল্পপতিরা প্রণোদনা তহবিল যতটা পেয়েছে, তার চেয়ে কম পেয়েছে মাঝারি শিল্প এবং তার চেয়েও কম পেয়েছে ছোট উদ্যোক্তারা। কুটিরশিল্প পেয়েছে আরও কম। অথচ উচিত ছিল সবচেয়ে ছোট যারা, তাদের ক্ষেত্রেই তহবিলের সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন। কারণ, তাদের প্রয়োজনটাই বেশি।
প্রণোদনা প্যাকেজে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, দুস্থ, গরিব, দিনমজুর, শ্রমিকেরা উপকৃত হয়নি অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের ৫০ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা বিতরণই সম্ভব হয়নি, যা মোট অর্থের প্রায় ৪২ শতাংশ।
মেগা বাজেটে বরাদ্দের সমালোচনা
বাজেটে ১০টি মেগা প্রকল্পের জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, এসব মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ কমিয়ে সে অর্থ নিঃস্ব, বেকার, ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে নগদ অর্থ বণ্টনের জন্য বরাদ্দ করা যেত।
স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতায় মানুষ মারা যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল। বলেন, গত এক দশকের মধ্যে এবারই সবচেয়ে কম উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। বরাদ্দের মাত্র ২৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ ব্যয় করতে পেরেছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
স্বাস্থ্য খাতের মতো এমন গুরুত্বপূর্ণ খাতকে অবহেলিত রেখে বিশাল বাজেট প্রণয়ন করে কী হবে?- প্রশ্ন রাখেন বিএনপি নেতা।
বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ১৫ শতাংশ এবং জিডিপির কমপক্ষে ৫ শতাংশ করারও দাবি জানান বিএনপি নেতা। তার অভিযোগ, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই সবচেয়ে কম ব্যয় করে এই খাতে।
টিকা নিয়ে ‘বালখিল্যতা’
করোনার টিকা আনতে শুরু থেকেই একাধিক দেশের সঙ্গে চুক্তি না করারও সমালোচনা করেন ফখরুল। বলেন, ‘আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে শুরু থেকেই জোর দিয়ে বলেছিলাম টিকার জন্য একক উৎসের ওপর নির্ভর না করে বিকল্প সূত্র খুঁজতে। তখন সরকার বলেছিল, বিএনপি নাকি টিকা নিয়ে রাজনীতি করছে। অথচ সরকার এখন চীন এবং রাশিয়া থেকে টিকা আনার চেষ্টা করছে। অবশেষে প্রমাণিত হলো, টিকা নিয়ে বিকল্প অন্বেষণে আমাদের পরামর্শটিই সঠিক ছিল।’
গণটিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর টিকা নিচ্ছেন এক নারী। ফাইল ছবি
তিনি বলেন, বিএনপির পরামর্শ শুরুতে মানলে সরকারকে এখন ‘লেজেগোবরে’ অবস্থায় পড়তে হতো না।
টিকা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশেই উৎপাদনের পরামর্শও দেন ফখরুল।
দেশে শ্রেণিবৈষম্য ব্যাপক আকার ধারণ করেছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিত্তবান-বিত্তহীনের ব্যবধান দশমিক ৪ পর্যন্ত সহনীয় বলে মনে করা হয়। আমাদের দেশে এটা বর্তমানে দশমিক ৫-এর কাছাকাছি রয়েছে। এটা অসহনীয় একটি অবস্থা।
‘সমাজে যখন ন্যায়-অন্যায়ের কোনো ব্যবধান থাকে না, দুর্নীতি আর অসৎ পন্থাই অর্থ আয়ের প্রধান হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায়, তখন সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়তে থাকে।’
ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমাতে হলে সবার আগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলেও মনে করেন বিএনপি নেতা।
মেগা প্রকল্পের বাজেট বেশি ধরা হয়েছে বলে আগের করা দাবি নতুন করে আবার তুলে ধরেন বিএনপি নেতা। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবিও তুলে ধরেন।
সড়ক নির্মাণে বিশ্বে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘এতেই বোঝা যায় নির্মাণ খাতে কী ধরনের রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় হচ্ছে।’
তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চার লেনের সড়কের চেয়ে ইউরোপে চার লেনের সড়ক নির্মাণের খরচ অর্ধেক।
ব্যাংকে লুটপাট
ব্যাংকিং খাতকে রীতিমতো লুট করা হয়েছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, করোনাভাইরাসের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের বিশেষ নীতিমালার কারণে ঋণ গ্রহীতারা ঋণ পরিশোধ করছে না।
ঋণখেলাপিদের কবল থেকে দেশকে ও অর্থনীতিকে মুক্ত করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঋণ খেলাপির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলা হলেও তাদের আবার বিপুল ঋণ অবলোপন করে দেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ঋণ খেলাপি ও ব্যাংকমালিকদের অনৈতিক সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ আদায়ে জোরদার হওয়ার চেয়ে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে অবলোপনের দিকে, যা কোনো ভালো সমাধান নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক তার ঐতিহাসিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভূমিকা আগের মতো পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘ব্যাংকমালিকদের পরিবারের সদস্যদের অনৈতিকভাবে বছরের পর বছর পরিচালক পদে বহাল থাকার স্থায়ী সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র ঋণখেলাপিরা তুলনামূলকভাবে কম খেলাপি।’
বিএনপির মতে বাজেট যেমন হওয়া উচিত
স্বাস্থ্য খাতকে বাজেটের সর্বাধিক তালিকায় রাখা স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ ব্যয় করা, প্রতিটি মানুষকে জাতীয় স্বাস্থ্যকার্ড প্রদান, প্রতিটি জেলায় ডেডিকেটেড সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, সামাজিক সুরক্ষার বরাদ্দ বাড়ানো ও নতুন দরিদ্রদের চিহ্নিত করে তাদের কাছে সামাজিক সুরক্ষার অর্থ পৌঁছে দেয়া, দরিদ্রদের জন্য তিন মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা এককালীন নগদ প্রদান, উপকারভোগীদের তালিকা নিরপেক্ষভাবে করা, এসএমই, শিল্প ও কৃষি খাতে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে বিশেষ প্রণোদনা অর্থ বরাদ্দ, প্রবাসীদের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ঋণ, নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পাঁচ বছর করছাড়, সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো, কৃষি খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ, ছাঁটাই না করার শর্তে প্রণোদনা দেয়া, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির চেষ্টা, তৈরি পোশাকসহ রপ্তানি খাতে সহায়তা অব্যাহত রাখা, দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূরীকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেয়ার দাবি জানান ফখরুল।
শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের নিয়ে উচ্চপর্যায়ে একটি অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করারও পরামর্শ দেয় বিএনপি।
এ ছাড়া অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো, বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ ভর্তুকি বাদ দেয়া, অনিবন্ধিত বিদেশি নাগরিকের কাছ থেকে আয়কর আদায়, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো থেকে কর বৃদ্ধি, দেশি কোম্পানিকে পুনর্নিরীক্ষণ, বিদেশি অনুদান বাড়ানোর চেষ্টা করার পরামর্শ দেন ফখরুল।
ব্যাংক খাত থেকে আর ঋণ না নেয়া, মুদ্রা সম্প্রসারণ নীতি অব্যাহত রাখার কথাও বলেন ফলরুল।
আরও পড়ুন:পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা সীমান্ত থেকে ৫ নারী-পুরুষকে আটক করেছে বিজিবি সদস্যরা। গত মঙ্গলবার রাতে সীমান্তের ১৭/৭ এস এর ২২ আর পিলারের নিকট থেকে তাদের আটক করা হয়।
বিজিবি জানায়, শার্শা উপজেলার কায়বা সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশি নাগরিকরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করতে পারে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবির একটি টহল দল সীমান্ত পিলার ১৭/৭ এস এর ২২ আর পিলার থেকে আনুমানিক ৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশের সময় ২ জন পুরুষ এবং ৩ জন নারীকে আটক করে।
আটককৃত ব্যক্তিদের বাড়ি, যশোর, বাগেরহাট, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা এবং সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায়। আটককৃতদের শার্শা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান বিজিবি। খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ খুরশীদ আনোয়ার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাম্প্রতিককালে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধকল্পে বিজিবি সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বৃষ্টি নুনিয়া (২০) নামে এক তরুণী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার উপজেলার পৌর এলাকার সিন্দুরখান রোডের নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। বৃষ্টি ওই এলাকার হীরালাল নুনিয়ার মেয়ে।
শ্রীমঙ্গল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। গত মঙ্গলবার রাতে পরিবারের সঙ্গে খাবার খেয়ে নিজ কক্ষে ঘুমাতে যান বৃষ্টি। রাতের কোনো একসময় পরিবারের অজান্তে তিনি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বাসার ছাদের মন্দিরের পিলারের সাথে ফাঁস দেন। রাত আড়াইটার দিকে তার মা ডাকতে গেলে কক্ষে তাকে না পেয়ে ছাদে গিয়ে ওই অবস্থায় দেখতে পান এবং পরে পুলিশকে খবর দেন।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
সাতক্ষীরায় পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে আব্দুস সামাদ (৫২) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে তাকে আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক মাসের সাজা দেওয়া হয়। তিনি সাতক্ষীরা পৌরসভার রসুলপুর এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরায় পুলিশের ট্রেইনিং রিক্রুট কনস্টেবল পদের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষার পর আব্দুস সামাদ বেশ কয়েকজন প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আব্দুস সামাদকে শহরের সঙ্গীতা মোড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে সাতক্ষীরা কারাগারে পাঠানো হয়।
ফটিকছড়ি উপজেলর কাঞ্চন নগর ইউনিয়নে ধুরুং নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে দুইশত বছরের পুরোনো কবরস্থান ও বসতভিটা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ধুরুং নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে নদীপাড় ভাঙনের সৃষ্টি হয়ে বসতভিটাসহ শতবর্ষী কবরস্থান বিলীন হতে চলেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কাঞ্চননগর গ্রামের আবদুল হাকিম কেরানীবাড়ী-সংলগ্ন বিশাল কবরস্থানের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা ভেঙে পার্শ্ববর্তী ধুরুং নদীতে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এর মধ্যে স্বনামধন্য ধন্য আলেম ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব হজরত অছিউদ্দিন শাহর মাজারও রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান ধুরুং নদীর পাড়ঘেঁষা শতবর্ষী এ কবরস্থানে বছর দুয়েক আগেও শতাধিক কবর ছিল। প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিরা এখানে জিয়ারত করতে আসত।
কিন্তু নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়ে কবরস্থানটি দিন দিন ছোট হয়ে আসছে।
এ স্থানটিতে খাল এমনভাবে ভেঙেছে, এখানে যে কিছুদিন আগেও কবরস্থান ছিল, তা বোঝার উপায় নেই। বর্তমানে অনেক কবরের স্মৃতি চিহ্ন পর্যন্ত মুছে গেছে।
এদিকে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সাথে কথা হলে তারা নাম প্রকাশে না করার শর্তে বলেন প্রভাবশালী একটি মহল নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারনে ভাঙন মাত্রা আগের চাইতে বেড়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপ্রকৌশলী সোহাগ তালুকদার বলেন, নদীর ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে অর্থ বরাদ্দের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে এ নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে বেড়িবাঁধ রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে।
এ নিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কাঞ্চন নগর ইউপির প্রশাসক মো. নজরুল ইসলম ড্রেজার মেশিন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়ে বলেন ভাঙনকবলিত কবরস্থানটি শীঘ্রই পরিদর্শন করা হবে।
মন্তব্য