বাজেটের লক্ষ্য হওয়া উচিত সামগ্রিকভাবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। অর্থনীতির সকল খাতে ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়নে বেশি জোর দিতে হবে। পাশাপাশি করোনাকালীন যে সকল সমস্যা প্রকট আকার ধারন করেছে, সেসব সমস্যা নিরসনে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।
করোনাকালীন সংকট মোকাবিলায় দরিদ্র জনগণের সুরক্ষায় আসন্ন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টণীর আওতা আরও বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে মনোযোগ দেয়া দরকার।
করোনায় অনেক শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন। অনেকেরেই আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের সুরক্ষায় আগামী বাজেটে প্রণোদনা দিতে হবে।
প্রান্তিক ও দরিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো অত্যাবশ্যক। একই সঙ্গে নিম্ম আয়ের মানুষের জন্য কম দামে পণ্যসামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা করা উচিত। এ জন্য সরকারি বিপণনকারী সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কার্যক্রম বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য স্থিতিশীল রাখতে তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করা জরুরি।
স্বাস্থ্যখাতের ঘাটতি ও দুর্বলতাগুলো যথাযথভাবে নিরুপণে একটি কার্যকর ‘স্বাস্থ্য কমিশন’ গঠন করা যেতে পারে।
বাংলাদেশে করোনা নিয়ে যে সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গবেষণায় নিয়োজিত, তাদের জন্যে পর্যাপ্ত আর্থিক ও নীতি সহায়তা প্রদান করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সুনির্দিষ্ট কৌশলপত্র প্রণয়ন জরুরি।
করোনায় শিক্ষাব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও মনস্তাত্ত্বিক ক্ষতির পরিমাণ অপরিমেয়। গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এ সময় অগণিত শিক্ষার্থী পড়াশোনার বাইরে রয়েছে।
অনেকে জীবন ও জীবিকার তাগিদে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে শিশুশ্রম দিতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তায় নিপতিত। এ সংকট থেকে উত্তরণে স্বল্প মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের বিকল্প নেই। নতুবা শিক্ষা ব্যবস্থায় ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না।
বাজেটে শিক্ষা খাতে আরও বরাদ্দ বাড়ানো উচিত। কমপক্ষে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির আওতায় আনতে হবে। উপবৃত্তির মাথাপিছু বরাদ্দের পরিমাণও বাড়াতে হবে।
শিক্ষক-কর্মচারিদের আপৎকালীন আর্থিক প্রণোদনার পরিমাণ বাড়াতে হবে। দুর্বল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিজ্ঞানাগার ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনে সরকারি সহায়তা প্রদান করতে হবে।
অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বেশি সুবিধা দেয়া অত্যাবশক। এ জন্য বাজেটে এ খাতে প্রণোদনা প্যাকেজের পরিসর বৃদ্ধি এবং তা পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের কৌশল প্রণয়ন করতে হবে।
বিশেষ করে গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় কুটির শিল্প ও অতিক্ষুদ্র শিল্পের জন্যে দ্রুত ও কার্যকর আর্থিক এবং নীতি সহায়তা দেয়া উচিত।
নতুন ও বিকাশমান শিল্পের ক্ষেত্রে কর অবকাশ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নতুন উদ্যোক্তাদেরকে পাঁচ বৎসর পর্যন্ত করের আওতামুক্ত রাখা এবং ব্যক্তিশ্রেণি করে আরও ছাড় দিতে হবে।
স্বাস্থ্যখাতের সামগ্রিক উন্নয়নকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগামী বাজেট নিবেদিত থাকবে এ দেশের দরিদ্র মানুষের জন্যে। আমরা মানুষের জীবন-জীবিকার জন্যে বাজেটে জায়গা করে দিব।’ তার কথার সূত্র ধরে বলা যায়, সবার আগে মানুষকে বাঁচাতে হবে; তারপরেই বিবেচনায় আসবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন।
অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, প্রাক্তন অধ্যক্ষ সরকারি শহিদ আসাদ কলেজ ও নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজ।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, সাখাওয়াত হোসেন সুমন
১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থিক অস্থিরতা সামাল দিতে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মুদ্রানীতি সমন্বয় সাধন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। বহু দেশ সংকটে পড়ে এই সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে- কেউ সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি ঋণনির্ভরতার ফাঁদে পড়ে গেছে।
আজ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্রমশ পশ্চিমকেন্দ্রীকতা থেকে সরে পূর্ব ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আইএমএফ তার প্রাসঙ্গিকতা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে এক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন।
ঋণ সহায়তা, নাকি ঋণের ফাঁদ?
আইএমএফ সাধারণত এমন শর্তে ঋণ দেয়, যার মধ্যে থাকে কঠোর ব্যয়সংযম, ভর্তুকি হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারমুখী সংস্কার; কিন্তু এই শর্তগুলো অনেক সময় জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় শিল্প ধসে পড়ে, বৈষম্য বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা এর এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০১৮ সালে আইএমএফ ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ প্যাকেজ ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করে। ফল ছিল বিপরীত- মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, দারিদ্র্য আরও বেড়ে যায় এবং দেশটি আবার মন্দার মুখে পড়ে।
এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে শুধু অর্থনৈতিক সমীকরণ দিয়ে কোনো দেশের সামাজিক বাস্তবতা নির্ধারণ চলে না।
আইএমএফের নীতিনির্ধারণ কাঠামো এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শক্তির ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। উন্নত দেশগুলো (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সংগঠনের ভোটের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত। এই গণতান্ত্রিক ঘাটতি আজ দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে।
বিকল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান
এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (NDB), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং ল্যাটিন আমেরিকান রিজার্ভ ফান্ড (FLAR) নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। (NDB) এর সহায়তা তুলনামূলকভাবে শর্তমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক। এখানে প্রতিটি দেশের ভোটের ও প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ আছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু আর্থিক বিকল্প নয়- এরা এক নতুন উন্নয়ন দর্শনের বাহক। সেই দর্শনে উন্নয়ন নির্ধারিত হয় স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে, বাইরের চাপ বা রূঢ় শর্ত নয়।
বিশ্ব আজ বহুমেরু। অর্থনৈতিক শক্তি ছড়িয়ে পড়ছে নানা অঞ্চলে। এই বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আইএমএফকে নিজস্ব কাঠামো ও দর্শনে রূপান্তর আনতে হবে। প্রয়োজন গভর্ন্যান্সের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে সমান অংশগ্রহণ, এবং সর্বোপরি সহানুভূতিশীল ঋণ নীতিমালা।
আইএমএফ যদি সত্যিই বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অভিভাবক হতে চায়, তাহলে তাকে হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক, এবং আঞ্চলিক বাস্তবতাসম্মত এটি শুধু আইএমএফের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্ন।
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দ কর তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরমর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময়ে এবারের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচারকৃত অর্থ জব্দের মাধ্যমে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস।’
‘গত সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সরকারের এই সময়ে অন্যতম সাফল্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা,’ যোগ করেন তিনি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঋণ বিলিয়ন ডলার করে বছর বছর বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহির্খাত, রেমিট্যান্স, রপ্তানি, দায়-দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুদ বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।’
তবে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এবং করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কোনো কিছু না থাকায় এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না।’
‘যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে আছে, তা অতিমূল্যায়িত ও তার ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। আগের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো, সেগুলো অব্যাহত আছে,’ বলেন তিনি।
সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘রাজস্ব ব্যয় সঠিকভাবে না করলে করদাতাদের উৎসাহ থাকে না। আমাদের কর কাঠামো বৈষম্যনির্ভর। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা অর্জিত হলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ এখনো আশানুরূপ অর্জিত হয়নি।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বিতর্ক সংগঠন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
দুদিন পর ১ জুন থেকে বাজারে আসবে ১০০০, ৫০ এবং ২০ টাকা মূল্যমানের নতুন ডিজাইন এবং সিরিজের নোট। ইতোমধ্যে নতুন নোটের ছবি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, দিয়েছে নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য নিয়ে সম্যক ধারণা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত ১০০০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোটটির আকার হবে ১৬০ মিমি x ৭০ মিমি। নোটটি ১০০ শতাংশ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং জলছাপ হিসাবে আছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ, ইংরেজিতে ‘1000’ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম। নোটটিতে বেগুনি রঙের আধিক্য রয়েছে।
এছাড়া ১০০০ টাকা নোটের সম্মুখভাগের বামপাশে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং মাঝে প্রতিশ্রুত বাক্য ও মূল্যমান (এক হাজার টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা’র ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ওপরে বাঁদিকে নোটের মূল্যমান ‘১০০০’, ডানকোণে ‘1000’ ও নিচে ডানকোণে ‘৳১০০০’ মুদ্রিত রয়েছে।
নোটের পেছনভাগের ডিজাইন হিসেবে জাতীয় সংসদ ভবনের ছবি, উপরে বামকোণে মূল্যমান ‘১০০০’, ডানকোণে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং নিচে ডানকোণ এবং বামকোণে মূল্যমান ‘1000’ মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ডানপাশে উলম্বভাবে ‘1000’ মুদ্রিত রয়েছে।
১০০০ টাকার নোটটিতে মোট ১৩ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ৫ মিমি চওড়া নিরাপত্তা সুতায় যাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং ‘১০০০ টাকা’ খচিত আছে। নোটটি নাড়াচাড়া করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম অংশের নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয় এবং ‘১০০০ টাকা’ অংশে একটি উজ্জ্বল রংধনু বার উপর থেকে নিচে উঠানামা করে।
এছাড়া, নোটের ডানদিকে কোণায় মুদ্রিত মূল্যমান ‘1000’ রং পরিবর্তনশীল উন্নতমানের নিরাপত্তা কালি দ্বারা মুদ্রিত; যাতে নোটটি নাড়াচাড়া করলে এর রং ম্যাজেন্টা থেকে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয়
এবং মূল্যমানের ভেতরে কোনাকুনিভাবে মুদ্রিত ‘১০০০’ লেখাটি দৃশ্যমান হয়।
পাশাপাশি, নোটের সম্মুখভাগের পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা ইউভি ফ্লুরুসিন ম্যাজেন্টা কালি দ্বারা মুদ্রিত যা ইউভি ডিটেক্টর মেশিনে দেখা যায়।
নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে স্বচ্ছ ছবি হিসেবে একটি প্যাটার্ন মুদ্রিত রয়েছে; যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘১০০০' লেখা দৃশ্যমান হবে। এছাড়া, নোটের সম্মুখভাগের বাঁদিকে ‘BANGLADESH BANK' লেখার নিচে মাইক্রোপ্রিন্ট হিসেবে উলম্বভাবে ‘BANGLADESH BANK' মুদ্রিত রয়েছে। পাশাপাশি নোটের পেছনভাগে বামদিকের উপরে ‘১০০০' এবং নিচে ‘1000' লেখার ব্যাকগ্রাউন্ডে 'BANGLADESH BANK এবং এর নিচে 'ONE THOUSAND TAKA' পুনঃপুন মুদ্রিত রয়েছে; যা শুধু Magnifying Glass দ্বারা দেখা যাবে।
ব্যাংক নোটটিতে অন্যান্য নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য হিসেবে অসমতল ছাপা (সম্মুখভাগে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ছবি, 'বাংলাদেশ ব্যাংক' লেখা, গ্যারান্টি ক্লজ, বাংলা ও ইংরেজি মূল্যমান, আড়াআড়িভাবে ৬টি সমান্তরাল লাইন, পেছনভাগে জাতীয় সংসদ ভবন এর ছবি, “BANGLADESH BANK', 'ONE THOUSAND TAKA' লেখা ইত্যাদি ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত), লুকানো ছাপা (সম্মুখভাগের নিচে মূল্যমান 1000), Iridescent Stripe (পেছনভাগে উলম্বভাবে হালকা সোনালী রংয়ে ‘BANGLADESH BANK' লেখা) দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সুবিধার্থে ৬টি বৃত্ত রয়েছে।
৫০ টাকার নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত ৫০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩০ মিমি x ৬০ মিমি। নোটটি ১০০ শতাংশ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ, ‘50' এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম রয়েছে। নোটটিতে গাঢ় বাদামী রঙের আধিক্য রয়েছে।
ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে আহসান মঞ্জিল, ঢাকা এর ছবি এবং মাঝখানে 'প্রতিশ্রুত বাক্য' (Guarantee clause) ও মূল্যমান (পঞ্চাশ টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা'র ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের উপরে বামদিকে মূল্যমান ‘৫০’, ডানকোণে ‘50’ও নিচে ডানকোণে ‘৳৫০' মুদ্রিত রয়েছে। নোটের পেছনভাগে জলছাপ এলাকার ডানপাশে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন এর বিখ্যাত চিত্রকর্ম 'সংগ্রাম' মুদ্রিত রয়েছে। নোটের উপরে বামকোণে মূল্যমান ‘৫০’ ও ডানকোণে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং নিচে ডানকোণ এবং বামকোণে মূল্যমান ‘50' মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ডানপাশে উলম্বভাবে ‘50' মুদ্রিত রয়েছে।
নোটটিতে মোট ৮ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ২ মিমি চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে যাতে ‘৫০ পঞ্চাশ টাকা' খচিত রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া (Tilt) করলে নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয়। নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে See Through image হিসেবে একটি প্যাটার্ন মুদ্রিত রয়েছে; যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘৫০’ লেখা দৃশ্যমান হবে।
এছাড়া নোটের সম্মুখভাগে আহসান মঞ্জিল, ঢাকা-লেখাটির উভয়পাশে Microprint হিসেবে ‘BANGLADESH BANK এবং পেছনভাগের বামদিকের উপরে ‘৫০' ও নিচে ‘50' লেখার ব্যাকগ্রাউন্ডে Microprint হিসেবে যথাক্রমে ‘50 TAKA' এবং 'BANGLADESH BANK' মুদ্রিত রয়েছে।
ব্যাংক নোটটিতে অন্যান্য নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য হিসেবে অসমতল ছাপা (সম্মুখভাগের আহসান মঞ্জিল এর ছবি, 'বাংলাদেশ ব্যাংক, গ্যারান্টি ক্লজ, বাংলা ও ইংরেজিতে মূল্যমান, আড়াআড়িভাবে ৬টি সমান্তরাল লাইন ইত্যাদি ইন্টাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত), লুকানো ছাপা (সম্মুখভাগের নিচে মূল্যমান 50), দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সুবিধার্থে ২টি বৃত্ত রয়েছে।
২০ টাকার নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্বাক্ষরিত ২০ টাকা মূল্যমান ব্যাংক নোটটির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৭ মিমি x ৬০ মিমি। নোটটি ১০০ শতাংশ কটন কাগজে মুদ্রিত এবং নোটে জলছাপ হিসেবে 'রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মুখ', '20' এবং ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম' রয়েছে। নোটটিতে সবুজ রঙের আধিক্য রয়েছে।
ব্যাংক নোটটির সম্মুখভাগের বামপাশে ঐতিহাসিক স্থাপনা কান্তজিউ মন্দির, দিনাজপুর এর ছবি এবং নোটের মাঝখানে ‘প্রতিশ্রুত বাক্য (Guarantee clause) ও মূল্যমান (বিশ টাকা) মুদ্রিত রয়েছে। নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা'র ছবি মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের উপরে বামদিকে মূল্যমান ‘২০’,ডানকোণে ‘20’ ও নিচে ডানকোণে ‘৳২০' মুদ্রিত রয়েছে।
নোটের পেছন ভাগে জলছাপ এলাকার ডানপাশে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, নওগাঁ এর ছবি মুদ্রিত রয়েছে। নোটের উপরে বামকোণে মূল্যমান ‘২০’ ও ডানকোণে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম' এবং নিচে ডানকোণে মূল্যমান '20' মুদ্রিত রয়েছে। এছাড়া, নোটের ডানপাশে উলম্বভাবে ‘20' মুদ্রিত রয়েছে।
নোটটিতে মোট ৫ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংযোজন করা হয়েছে। নোটটির সম্মুখভাগে বামপাশে ২ মিমি চওড়া নিরাপত্তা সুতা সংযোজন করা হয়েছে যাতে ‘৳২০ বিশ টাকা' খচিত রয়েছে। নোটটি নাড়াচাড়া (Tilt) করলে নিরাপত্তা সুতার রং লাল হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয়।
নোটটিতে গভর্নর স্বাক্ষরের ডানপাশে See Through image হিসেবে একটি প্যাটার্ন মুদ্রিত রয়েছে; যা আলোর বিপরীতে ধরলে ‘২০’ লেখা দৃশ্যমান হবে। এছাড়া, নোটের সম্মুখভাগের ডানদিকে এবং পেছন ভাগের বামদিকের গ্লিউইশ প্যাটার্নের ভিতরের অংশে Microprint হিসেবে উলম্বভাবে ‘BANGLADESH BANK' মুদ্রিত রয়েছে।
জাপান ও বাংলাদেশ একটি চুক্তিপত্র বিনিময় করেছে, যার অধীনে টোকিও বাজেট সহায়তা, রেলপথ উন্নয়ন এবং অনুদান হিসেবে বাংলাদেশকে মোট ১ দশমিক ০৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করবে।
মোট অর্থের মধ্যে, জাপান ৪১৮ মিলিয়ন ডলার ডেভেলপমেন্ট পলিসি ঋণ হিসেবে দেবে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির জন্য বরাদ্দ করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরের তৃতীয় দিনে শুক্রবার এই চুক্তি পত্র বিনিময় হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসস’কে এ তথ্য জানান।
এ ছাড়াও, টোকিও ৬৪১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী রুটকে ডুয়েল-গেজ ডাবল রেললাইন হিসেবে উন্নীত করার জন্য এবং আরও ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেবে স্কলারশিপের জন্য।
বিভিন্ন দেশের ওপর ব্যাপকহারে শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি আটকে দিয়েছেন দেশটির এক আদালত। ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির ওপর আদালতের এই রায়কে একটি বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। খবর বিবিসির।
কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড রায় দিয়েছে, জরুরি যে আইনের অজুহাত দেখিয়ে হোয়াইট হাউস এই শুল্ক আরোপ করেছে সেই আইন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে একচেটিয়াভাবে বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে শুল্ক বসানোর এখতিয়ার দেয় না।
ম্যানহাটন-ভিত্তিক এই আদালত আরও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের একচেটিয়া ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে। এক্ষেত্রে মার্কিন অর্থনীতিকে রক্ষা করার জন্য প্রেসিডেন্টের হাতে যে ক্ষমতা, কংগ্রেসের ক্ষমতা তার চেয়ে বেশি।
একইসঙ্গে চীন, মেক্সিকো ও কানাডার ওপর ট্রাম্প প্রশাসন পৃথকভাবে যে শুল্ক আরোপ করেছিল সেটাও স্থগিত করেছে আদালত। তখন হোয়াইট হাউজ বলেছিলো, অগ্রহণযোগ্য মাদক প্রবাহ ও অবৈধ অভিবাসন ঠেকানোই এই শুল্ক আরোপের প্রধান কারণ।
এদিকে, আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে কয়েক মিনিটের মধ্যেই আপিল করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। আদালতের এই রায়ের পর হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কুশ দেশাই এক বিবৃতিতে বলেন, কোনো জাতীয় জরুরি অবস্থা কীভাবে যথাযথভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা নির্ধারণ করা অনির্বাচিত বিচারকদের কাজ নয়।
তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। আর ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিটি নির্বাহী ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সব সংকট মোকাবিলা ও আমেরিকান মহত্ব পুনরুদ্ধারের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানিকারক পাঁচটি ক্ষুদ্র ব্যবসার পক্ষে মামলাটি দায়ের করেছিল রাজনৈতিক সংস্থা লিবার্টি জাস্টিস সেন্টার। যে দেশগুলো থেকে তারা পণ্য আমদানি করে, ওই দেশগুলোর পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
এই মামলাই হলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের তথাকথিত ‘লিবারেশন ডে’ট্যারিফের বিরুদ্ধে প্রথম বড় ধরনের কোনো আইনি চ্যালেঞ্জ। এই মামলাটি ছাড়াও ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধে আরও ছয়টি মামলা চলছে। এগুলো করেছে ১৩টি মার্কিন অঙ্গরাজ্য এবং আরও অনেক ছোট ব্যবসায়ী গোষ্ঠী।
সর্বশেষ রায়ে তিন বিচারকের প্যানেল থেকে বলা হয়েছে, ট্যারিফ বা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৭৭ সালের ‘ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেন্সি ইকোনমিক পাওয়ারস অ্যাক্ট’ (আইইইপিএ)-এর দোহাই দিলেও ওই আইন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে একচেটিয়াভাবে এই ধরনের বিস্তৃত ট্যারিফ আরোপের ক্ষমতা দেয় না।
বিচারকরা লিখেছেন, আইইইপিএ আইনে শুল্ক আরোপের বিষয়ে প্রেসিডেন্টকে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত ‘বিশ্বব্যাপী ও প্রতিশোধমূলক শুল্ক আদেশগুলো’ সেই ক্ষমতার পরিধিকে ছাড়িয়ে গেছে। ট্রাফিকিং ট্যারিফ ব্যর্থ, কারণ এগুলো আদেশে উল্লিখিত হুমকির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
গত ২ এপ্রিল ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্যারিফ ঘোষণার পর থেকে বিশ্ববাজারে টালমাটাল পরিস্থিতি দেখা দেয়। যদিও এরপর ওই ঘোষণা পুনর্বিবেচনা করা হয় এবং কিছু শর্ত তুলে নিয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গে দর কষাকষিও করে হোয়াইট হাউস।
তবে আদালত বৃহস্পতিবার এই রায় দেওয়ার পর সকালে এশিয়ার শেয়ারবাজারে সূচকে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক বেড়েছে, যা প্রায় দেড় শতাংশ। আর অস্ট্রেলিয়ার এএসএক্স ২০০ সূচকেও ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।
মার্কিন শেয়ার বাজারেও এই রায়ের প্রভাব পড়েছে। ভবিষ্যতে সম্পদ কেনা-বেচা করা যাবে এ সংক্রান্ত শেয়ারের দাম বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে, ইয়েন ও সুইস ফ্রাঁর মতো মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলার শক্তিশালী হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আগামী ২ জুন জাতির উদ্দেশে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করবেন।
পূর্ব-রেকর্ড করা বাজেট ভাষণটি ওই দিন বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে সম্প্রচারিত হবে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ ছাড়া জাতীয় বাজেটের ব্যাপক প্রচার নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিও স্টেশনগুলোকে বিটিভি থেকে ফিড গ্রহণ করে বাজেট ভাষণটি একই সঙ্গে সম্প্রচার করার অনুরোধ করা হয়।
এর আগে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল ও বাজেট ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত সভায় জানানো হয়, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন অর্থবছরের বাজেটের আকার চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম।
স্বাধীনতার পর এই প্রথম আগের বছরের তুলনায় নতুন বাজেটের আকার ছোট হচ্ছে: স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম আগের বছরের তুলনায় নতুন বাজেটের আকার ছোট হচ্ছে। মূলত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকুচিত মুদ্রানীতির সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারি ব্যয় কমানো এবং বাজেট ‘বাস্তবায়নযোগ্য’ করতেই আকার কমানো হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সংসদ না থাকায় এবার সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে না। অর্থ উপদেষ্টা টেলিভিশনে নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগেই বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ কারণে সোমবার (২ জুন) বাজেট ঘোষণার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সাধারণত আগের অর্থবছরগুলোতে বৃহস্পতিবার বাজেট দেওয়া হতো। বাজেট ঘোষণার পর আগের রীতি অনুযায়ী অর্থ উপদেষ্টা বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।
সূত্রটি জানিয়েছে, বাজেটের আকার কমানো হলেও সমাজে বৈষম্য কমানোর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির চাপে নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বস্তি দিতে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে উপকারভোগী ও কিছু ক্ষেত্রে ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ থাকছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। একই সঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার জিডিপির প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৫ শতাংশ ধরতে পারে। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অবশ্য বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং এডিবির পূর্বাভাস হলো- এবার প্রবৃদ্ধি এর চেয়ে অনেক কম হবে।
সবশেষ সংসদের বাইরে বাজেট দেওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন ক্ষমতায় ছিল সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) স্বায়ত্তশাসিত ও বিশেষায়িত একটি বিভাগে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। রবিবার (২৫ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দেওয়া সাম্প্রতিক বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করতেই এই ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রাজস্ব নীতি ও প্রশাসন সংস্কার অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি দূর করতে সরকার পুনরায় ব্যাখ্যা দিয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, রাজস্ব নীতিকে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া থেকে পৃথক করার যে কাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছে, সেখানে বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ও বিসিএস (ট্যাক্সেশন) ক্যাডারের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে।
এ বিষয়ে এনবিআর, রাজস্ব সংস্কার পরামর্শক কমিটি এবং অন্যান্য প্রধান অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ প্রক্রিয়ায় একদিকে যেমন এনবিআরকে আরও শক্তিশালী করা হবে, অন্যদিকে রাজস্ব নীতির জন্য একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলা হবে বলে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনতে ২০২৫ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। সংশোধন কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত অধ্যাদেশটি বলবৎ করা হবে না।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকার আশা করে, এই ঘোষণার মাধ্যমে কর, শুল্ক ও মূসক বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তাদের সব ধরনের উদ্বেগ দূর হবে এবং সকল রাজস্ব অফিস পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে রাজস্ব আহরণ ও সেবা কার্যক্রমে ফিরে যাবে।’
মন্তব্য