ধানমন্ডির শংকর এলাকা থেকে প্রতিদিনই সাতমসজিদ রোড-সায়েন্স ল্যাবরেটরি হয়ে ফকিরাপুল যাতায়াত করেন প্রিন্টিং ব্যবসায়ী সোহান পারভেজ। এই পথে দুটি জায়গায় রয়েছে ‘হাতির’ ভাস্কর্য। একটি পিলখানার বিজিবি সদর দপ্তরের গেটের পাশে, আরেকটি সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে।
বিজিবি সদর দপ্তরের গেটের পাশের ভাস্কর্যকে প্রথম দর্শনে হাতির বলে মেনে নেয়া বেশ কঠিন। গেটের দুই পাশে দুটি করে মোট চারটি এবং আরও একটি আছে গেটের ওপরে।
প্রকৃতিতে ঘুরে বেড়ানো বা চিড়িয়াখানায় বন্দি হাতির যত ছবি দেখেছেন, তার কোনোটির সঙ্গেই ভাস্কর্যের ‘হাতি’ মেলাতে পারেন না সোহান পারভেজ। এলিফ্যান্ট রোডের দুটি হাতির অবয়ব নিয়েও আপত্তি রয়েছে তার।
এই ব্যবসায়ী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বলতে গেলে প্রতিদিনই একবার করে চোখ আটকায় এই ভাস্কর্যগুলোতে। আমার কাছে সবচেয়ে অদ্ভুত লাগে বিজিবির গেটের হাতিগুলো।
‘হাতি দেখতে কি এ রকম হয় বলেন? দেখতে কেমন যেন! আর সায়েন্সল্যাবের মাথার হাতির দিকে তাকানো যায় না। না বড় হাতি, না বাচ্চা হাতি কেমন জানি সাইজ এগুলোর। অনেক দিন ধরে আবার সেটার মুখ, দাঁত, লেজ ভাঙা, চারদিকে নোংরা।’
বিজিবি সদর দপ্তরের গেটের হাতির প্রতিটিতে দাঁত রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক হাতির বাহ্যিক কিছু বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে লিঙ্গ নির্ধারণের সাধারণ কিছু পদ্ধতি রয়েছে। সে অনুযায়ী, আফ্রিকান হাতির ক্ষেত্রে পুরুষ বা মাদি- দুই ধরনের হাতিতেই লম্বা দাঁত দেখা যায়। তবে এশিয়ান মাদি হাতির লম্বা দাঁত নেই, কখনও কখনও এ ধরনের মাদি হাতির দৃশ্যমান দাঁতই থাকে না। এ ছাড়া, হাতির প্রতিটি দলে পুরুষের পাশাপাশি মাদি হাতিও থাকে।
বিজিবি গেটের ভাস্কর্যে সবগুলো হাতির লম্বা দাঁত থাকায় ধরে নেয়া যেতে পারে, সেগুলো আফ্রিকান প্রজাতির পুরুষ ও মাদি হাতির একটি দল। বিশালাকার কান থেকেও ধরে নেয়া যায়, ভাস্কর এশিয়ান হাতি নয়, তৈরি করতে চেয়েছেন আফ্রিকান প্রজাতির হাতি।
তবে মাথা থেকে শুরু করে দেহের আর কোনো গড়ন থেকেই এই ভাস্কর্যে হাতির বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাওয়া মুশকিল। মাথা, দীর্ঘ প্যাঁচানো শুঁড়, দেহের তুলনায় সরু পা, ঘাড় থেকে নিচের দিকে প্রায় সোজা নেমে যাওয়া দেহ, এমনকি এমন ধবধবে সাদা রঙের হাতি আফ্রিকার কোথাও নেই।
এলিফ্যান্ট রোডে ঢোকার মুখের দুটি হাতি এসব জটিলতা কিছুটা এড়াতে পারলেও প্রাপ্তবয়স্ক হাতির পাশে থাকা বাচ্চা হাতিরও দাঁত কীভাবে গজালো সেই প্রশ্নের কোনো জবাব নেই। তাছাড়া, এই হাতির শুঁড়ও দেহের তুলনায় লম্বা, দেহের গড়ন নিয়েও আছে বিস্তর প্রশ্ন। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভাঙা পড়েছে দাঁত, লেজ।
প্রাণী বিশেষজ্ঞরা দিশেহারা
বাঘ ও হাতি বিশেষজ্ঞ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এ আজিজ বলছেন, এসব ভাস্কর্য যারা বানাচ্ছেন তাদের হাতি নিয়ে বাস্তব কোনো ধারণা নেই।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেউ যদি কোনো প্রাণীর ভাস্কর্য বানান, তার প্রথম দায়িত্ব হলো রিয়েল ওয়ার্ল্ডে প্রাণীটিকে দেখা, ইভেন নট ইন ফটোগ্রাফ। আমাদের এখানে হয় কি, যিনি এটা বানান, ইন্টারনেটে তিনি হয়তো একটা ছবি দেখে সেটা বানানোর চেষ্টা করেন। যিনি এগুলো বানাচ্ছেন, তার উচিত ছিল এক্সপার্টদের সঙ্গে কথা বলা।’
বিজিবি সদর দপ্তরের গেটের পাশের ভাস্কর্যকে আফ্রিকান প্রজাতির হাতি হিসেবে শনাক্ত করার পক্ষে ড. আজিজ। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আফ্রিকান প্রজাতির হাতির কান অনেক বড় হয়, তাছাড়া সামনের দিক থেকে এদের অ্যাপিয়ারেন্স কিছুটা অ্যাগ্রেসিভ। এশিয়ান এলিফ্যান্টের অ্যাপিয়েরেন্স অতটা অ্যাগ্রেসিভ নয়।’
হাতির গায়ে সাদা রং চড়ানোর বিষয়ে প্রচণ্ড আপত্তি আছে ড. আজিজের। তিনি বলেন, কোনো হাতির বায়োলজিক্যাল কোনো প্রবলেম হলে গায়ের রং কিছুটা সাদা হতে পারে। তবে একেবারে সাদা বলতে যা বোঝায় এটা কিন্তু সেই সাদা না। তাছাড়া সাদা হাতি আমি কেন করব! ন্যাচারাল ওয়ার্ল্ডে এটা তো এক্সেপশনাল ঘটনা। মানুষের মধ্যেও আমরা কারও কারও শ্বেত রোগ দেখে থাকি, কিন্তু সেটা তো কমন নয়। আপনি হয়তো বনে এক শটা হাতি দেখলেন, তার মধ্যে একটা হয়তো পাওয়া যাবে কিছুটা সাদা। আমি সেটাই কেন ভাস্কর্যের জন্য বেছে নেব?’
ভাস্কর্যের হাতির শুঁড় তুলনামূলক লম্বা জানিয়ে তিনি বলেন, বিজিবি গেটের হাতির শুঁড়ে যেভাবে কয়েক প্যাঁচ রয়েছে সেটাও অসম্ভব।
অধ্যাপক ড. এম এ আজিজের কাছে এলিফ্যান্ট রোডের বাচ্চা হাতির দাঁত গজানোর কোনো ব্যাখ্যা নেই। তিনি বলেন, ‘নরমালি বাচ্চা হাতির দাঁত বাইরে ওইভাবে এক্সপোজড থাকে না। আমাদের বাচ্চাদেরও তো শুরুতে থাকে না। এরপর তার দুধদাঁত ওঠে, তারপর সেগুলো পড়ে গিয়ে স্থায়ী দাঁত ওঠে।’
ড. আজিজ মনে করেন, এ ধরনের ভাস্কর্য কেবল সৌন্দর্যহানিই ঘটাচ্ছে না, প্রাণী সম্পর্কে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তিরও জন্ম দিচ্ছে। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাচ্চারা বা ইয়াং জেনারেশন হয়তো ১০ বছর পরে আর হাতিই দেখবে না। তখন এসব ভাস্কর্য থেকে তারা একটা ধারণা নেবে। ক্লাসে টিচার যখন বলবে, এশিয়ান মাদি হাতির দাঁত থাকে না, তখন তারা বলবে, কই আমরা তো এলিফ্যান্ট রোডের সব হাতিরই দাঁত দেখেছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ফিরোজ জামানও দিচ্ছেন একই মত।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাতির কানটা কতটুকু লম্বা হয়, শুঁড়টা কতটুকু লম্বা হয়, মাথার সঙ্গে বডির রেশিও কত, এসব চিন্তা করা হচ্ছে না। ভাস্কর্য বানাতে পারে বানিয়ে রেখে দেয়। সেটা কিসের ভাস্কর্য হলো, মানুষের হলো না জন্তুর হলো, এগুলো তারা চিন্তা করে না।
‘ওই জায়গাগুলোতে ভাস্কর্য বসিয়েছে কেন, উদ্দেশ্য কী? এখন এই প্রাণীগুলো অতি বিপন্ন হয়ে গেছে। এই অতি বিপন্ন প্রাণীগুলো নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য, দরদ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন জায়গায় এসব ভাস্কর্য আমরা করে থাকি। সেখানে আমরা একটা হাতির ভাস্কর্য বসাতে গিয়ে সেটা হাতি না হয়ে যদি অন্য কিছু বোঝায় তাহলে এটা খারাপ অবশ্যই।’
তিনি বলেন, ‘আমি নিজে ওয়াইল্ড লাইফ নিয়ে কাজ করি, কখনও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় না। সারা পৃথিবীতে যেকোনো জিনিস সরকার যখন করে তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খোঁজে; এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কে, তাদের পরামর্শ নেয়, সেই অনুয়ায়ী কাজ করে। আর আমাদের দেশে তোয়াক্কা করে না এগুলো।
‘আপনি একটা প্রাণী যখন ডিসপ্লে করবেন, কোন মোশনে সেটা থাকা উচিত, সেই প্রাণীটা বসলে কীভাবে বসে থাকে, কত অ্যাঙ্গেলে মাথাটা ঘুরিয়ে থাকে, কত অ্যাঙ্গেলে বডিটা ঘোরানো থাকে। হাতিটা থাকলে শুঁড়টা কীভাবে থাকে? কোন অ্যাঙ্গেলে ঘোরানো থাকে।’
শিল্পবোদ্ধা, নগর বিশেষজ্ঞরাও দুশ্চিন্তায়
এসব ভাস্কর্য নিয়ে নিউজবাংলা কথা বলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ওরিয়েন্টাল আর্টের শিক্ষক গুপু ত্রিবেদীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘এই ভাস্কর্যগুলো কে করেছে আমি জানি না, কিন্তু কাজগুলো খুবই দুর্বল। সোজা কথা এগুলো ডিসপ্রোপরসন ওয়ার্ক। ভাস্কর্যের যে প্রোপরসন থাকে, সেটা ঠিক নাই। চোখের জায়গায় চোখ নাই, দাঁতের জায়গায় দাঁত নাই। মাথা আর বডির কোনো সম্পৃক্ততা নাই। অ্যাবনরমাল একটা ব্যাপার।
‘আর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ের বাচ্চা হাতির তো দাঁত হয়ে আছে। এই কাজগুলো নিয়ে যদি বলি তাহলে এগুলো না শিল্প, না অশিল্প, কিছুর মধ্যেই পড়ে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ভাস্কর মুকুল কুমার বাড়ৈ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ভাস্কর্যগুলো দিয়ে আমাদের আরবান কর্তৃপক্ষের শিল্পবোধের যে জায়গাটা, সেখানে কিছুটা হলেও দুর্বলতার প্রকাশ পায়। সবকিছু মিলেই তো আমাদের প্রকাশ এবং আমরা আমাদেরই প্রকাশিত করছি। সে ক্ষেত্রে আমাদের শিল্প উৎকর্ষে র যে জায়গাটা সেটা অপ্রকাশিত হচ্ছে।’
নগর পরিকল্পনাবিদ, গবেষক ও শিল্পসমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যখন একটা হাতির ভাস্কর্য বসানো হয়েছিল, সেটা তো করেছিল নিশ্চয় সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য। হাতি, ঘোড়া যাই হোক, এগুলো তো সৌন্দর্যের জন্য বসাতেই পারে।
‘সেটা ঠিক আছে, কিন্তু জায়গাটা যেন সুন্দরভাবে পরিকল্পিত হয় ও স্থাপনাটা সুন্দর হয় এবং সবচেয়ে বড় কথা বসানোর পরে যেন এটা যত্নের সঙ্গে সংরক্ষিত হয়। তা না করে একটা কিছু বানালাম, অযত্নে ফেলে রাখলাম, তাতে শহরের সৌন্দর্য সেটাও বাড়ে না আর শিল্পকর্মের প্রতি আমাদের যে অবজ্ঞা সেটা প্রমাণ দেয়। আর আমরা জন্তু-জানোয়ারকে কতটা ভালোবাসি বা বাসি না সেটাও প্রমাণ রাখে।’
এসব ভাস্কর্য কার পরামর্শে এবং কার অনুমতি নিয়ে করা হচ্ছে- প্রশ্ন ছুড়ে তিনি বলেন, ‘এটায় তো অবশ্যই সিটি করপোরেশনের অনুমোদন লাগবে। এখন আমাদের এত বড় শহর, রাজধানী, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুলের শহরের একটা। কিন্তু এখানে শিল্পকর্ম কোথায় কীভাবে স্থাপন করা হবে, কে সংরক্ষণ করবে কোনো নিয়মকানুন নাই। কোনো চিন্তাভাবনা নাই।’
ভাস্কর অধরা, কর্তৃপক্ষের চোখে শিল্প
বিজিবি সদর দপ্তরের গেটের পাশে ও এলিফ্যান্ট রোডের ভাস্কর্যের নির্মাতা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো তথ্য পায়নি নিউজবাংলা। তবে বেশ কয়েকটি সূত্রের দাবি, বিজিবি গেটের ভাস্কর্যের নির্মাতার নাম কবীর চৌধুরী। দেশে আর কোথাও তার কোনো শিল্পকর্ম আছে কি না, সে ব্যাপারে ভাস্কর্যশিল্পীরাও কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
বিজিবির গেটের হাতিগুলোকে শুধু শিল্পকর্ম হিসেবেই দেখতে চান বাহিনীর পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান।
হাতির ভাস্কর্যের প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি নিউজবাংলা প্রতিবেদককে বলেন, ‘শুঁড় নিয়ে বলবেন তো? শুঁড়টা অনেক লম্বা তাই তো? দেখেন সবকিছু তো স্কেল হিসেবে হয় না। সেই হিসেবে প্রতীকী অর্থে ধরে নেয়াটাই সবচেয়ে শৈল্পিক হবে আরকি।’
বিজিবির এই কর্মকর্তা দাবি করেন, হাতির ভাস্কর্য বানানো হয়েছে ঢাকা ও পিলখানার ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে।
এই ধরনের শ্বেতশুভ্র এবং বেঢপ হাতি ঐতিহ্য বহন করে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটার যৌক্তিকতা একেবারেই একেকজনের কাছে একেক রকম। একেকজনের চিন্তার লাইন একেক রকম হবে। তবে যে উদ্দেশ্যে করা সেটা মূলত ঐহিত্যকে ধারণ, স্মৃতিকে ধরে রাখা। আমরা নিজেদেরকে ঐতিহ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছি; হ্যাঁ পিলখানায় সিম্বল অফ হাতি।’
আর ঢাকায় হাতির ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম।
তিনি বলেন, ‘সংবাদ সংক্রান্ত এবং মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার জন্য আমাদের পাবলিক রিলেশন অফিসার আছে, তার সঙ্গে কথা বলতে হবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার শিশুমেলা থেকে আগারগাঁও রোডের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কার্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আগামীকাল রবিবার (২২ জুন) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। শনিবার (২১ জুন) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘শেরেবাংলা নগর থানার অন্তর্গত শিশুমেলা থেকে আগারগাঁও রোডে অবস্থিত এনবিআর কার্যালয় (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড), বিডা কার্যালয় (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) ও আশেপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো।’
ডিএমপি জানিয়েছে, জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশের ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামী রবিবার (২২ জুন) সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা কার্যকর থাকবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে সই করেন ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার শিশুমেলা থেকে আগারগাঁও রোডের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কার্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আগামীকাল রবিবার (২২ জুন) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। শনিবার (২১ জুন) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘শেরেবাংলা নগর থানার অন্তর্গত শিশুমেলা থেকে আগারগাঁও রোডে অবস্থিত এনবিআর কার্যালয় (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড), বিডা কার্যালয় (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) ও আশেপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো।’
ডিএমপি জানিয়েছে, জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশের ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামী রবিবার (২২ জুন) সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা কার্যকর থাকবে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে সই করেন ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী।
টানা চতুর্থ দিনের মতো ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে আন্দোলন ও বিক্ষোভ করছেন সরকারি কর্মচারীরা। অধ্যাদেশটি বাতিল না হলে আরও কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ভবনের নিচে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে আন্দোলন ও বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা। পরে সচিবালয়ের ভিতরে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
এ সময় বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যাননুরুল ইসলাম জানান, চাকরি অধ্যাদেশ পুরোপুরি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।
কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
সরকারি কর্মচারীরা অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। । এটি বাতিল করার জন্য সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি ছাড়াও কয়েকজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
সারা দেশে লঘুচাপের প্রভাবে গত দুদিন ধরে বৃষ্টিপাতের কারণে বাতাসে দূষণের উপস্থিতিও কমে এসেছে অনেকটা। গত দুদিনের মতো আজও ঢাকার বায়ুমান ‘ভালো’র কাছাকাছি রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল ৯টায় ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৬৪। এই সূচক ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত, যেকোনো প্রকার অস্বাস্থ্যকার শ্রেণি থেকে যা অনেক দূরে।
কণা দূষণের একিউআই সূচক যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
ফলে আজ সকালে রাজধানী ঢাকার বাতাস দূষণ থেকে দূরে এবং ‘ভালো’র একপ্রকার কাছাকাছি বলা চলে।
এই সময়ে ১৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহর ছিল পাকিস্তানের লাহোর। সূচক ১৫২, ১৩৯, ১৩৭ ও ১৩৫ নিয়ে তারপরই ছিল যথাক্রমে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা, চিলির রাজধানী সান্তিয়াগো, ফিলিপাইনের ম্যানিলা এবং কুয়েত সিটি।
এ ছাড়াও ৯৯ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে ছিল পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের শহর দিল্লি। তবে দূষণের মাত্রা কম থাকায় একই সময়ে ঢাকার অবস্থান ছিল অনেক নিচে; ৫৪ নম্বরে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে ঢাকা। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়। বর্ষার শুরুতেই অবশ্য এই আভাস মিলতে শুরু করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে মানি এক্সচেঞ্জে ব্যবসায়ীর ২২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ ঘটনার পর আসামিদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের সূত্র ধরেই অস্ত্রসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গত মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-চক্রের হোতা মো. জলিল মোল্লা (৫২), মো. জাফর (৩৩), মোস্তাফিজুর রহমান (৪০), সৈকত হোসেন ওরফে দিপু মৃধা (৫২), মো. সোহাগ হাসান (৩৪) ও পলাশ আহমেদ (২৬)। এ ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, তিনটি মোটরসাইকেল, পিস্তল, গুলি, জাল টাকা ও লুণ্ঠিত টাকা-বিদেশি মুদ্রাও উদ্ধার করা হয়েছে।
পেশাদার চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে টাকা ও স্বর্ণালংকার ডাকাতি করে আসছিল। চক্রটি দীর্ঘদিন মানি এক্সচেঞ্জের মালিকের ওপর নজরদারি করে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মিন্টুরোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান যুগ্ম-কমিশনার ডিবি (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গত ২৭ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাহমুদ মানি এক্সচেঞ্জের মালিক রাসেল ও তার ভগ্নিপতি জাহিদুল হক চৌধুরী মিরপুর-১১ সি-ব্লকের বাসা থেকে ২১ লাখ টাকা ও বিভিন্ন দেশের মুদ্রা নিয়ে হেঁটে মিরপুর-১০ নম্বরের অফিসে যাচ্ছিলেন। শেরে বাংলা স্টেডিয়াম ও ফায়ার সার্ভিসের মাঝামাঝি গলির মুখে পৌঁছালে মোটরসাইকেলযোগে ওত পেতে থাকা ৭ থেকে ৮ জন মুখোশধারী ছিনতাইকারী তাদের গতিরোধ করে। তাদের একজন পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা ভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। বাধা দিলে আরেকজন গুলি ছোড়ে এবং একজন ধারালো চাপাতি দিয়ে জাহিদুলের কোমরে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় জাহিদুল রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। ডাকাতরা চারটি মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার ভিডিও একজন পথচারী মোবাইল ফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে তা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় আহত জাহিদুল হক চৌধুরী বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় একটি ডাকাতি মামলা করেন। ঘটনার পরপরই ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে ডিবির একাধিক টিম মাঠে নামে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিবি প্রথমে ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস শনাক্ত করে। মাইক্রোবাসের চালক জাফরকে (৩৩) গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাফর ছিনতাইয়ের ঘটনায় তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে তথ্য বিশ্লেষণ করে একযোগে ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ ও যশোরে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের মূল পরিকল্পনাকারী জলিল মোল্লাসহ চক্রের আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতি, হত্যা ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। আসামিদের কাছ থেকে ডাকাতির ৫ লাখ ৩ হাজার টাকা, ১০৬টি বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, ২ লাখ ১২ হাজার টাকার জাল নোট, একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি গুলি, একটি চাপাতি এবং তিনটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এ চক্র আগেও ভয়াবহ কয়েকটি ঘটনায় জড়িত ছিল। গত ২৪ জানুয়ারি কামরাঙ্গীরচর এলাকায় গুলি করে ৫০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই এবং ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোডে গুলি চালিয়ে ৫২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় এ চক্রের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আসামিরা।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধ ডাকাতি চালাতে এ চক্র আধুনিক প্রযুক্তি, আগ্নেয়াস্ত্র ও বিভিন্ন ছদ্মবেশে কার্যক্রম পরিচালনা করতো। বাকি অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত সম্পদ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে যুগ্ম-কমিশনার ডিবি (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল করা না হলে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সচিবালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। তাছাড়া, অধ্যাদেশটি বাতিল না হওয়ার পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানান তিনি।
বুধবার (১৮ জুন) সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের নিচে মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে আন্দোলনকালে এসব কথা জানান তিনি।
নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আট বিভাগে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেছে। আলোচনার নামে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আস্থা ভঙ্গ করেছেন, বিশ্বাস নষ্ট করেছেন। আমরা চাই আমাদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হোক। এ ছাড়া যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলা রয়েছেন, তাদের তাড়াতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সরকারি কর্মচারী, আমরা নিয়ম-শৃঙ্খলায় বিশ্বাসী। অধ্যাদেশ বাতিল না হলে রবিবার (২২ জুন) আরও বৃহত্তর আন্দোলন আসবে।’
এর আগে, চাকরি অধ্যাদেশ পুরোপুরি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।
কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
সরকারি কর্মচারীরা অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এটি বাতিল করার জন্য সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি ছাড়াও আজ (বুধবার) সমাজকল্যাণ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
ঈদুল আজহায় টানা ছুটির মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাস মোটামুটি স্বাস্থ্যকর ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিহীন শুষ্ক পরিবেশ আর ক্রমেই রাজধানীর পুরনো ভিড় বাড়তে থাকায় দূষণও বাড়ছে সমান তালে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ফের শীর্ষস্থানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এ সময়ে ১৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর ছিল বাংলাদেশের রাজধানী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর।
এ সময় ১৫৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহর ছিল ইন্দোনেশিয়ার মেদান। এ ছাড়া ১২৬ ও ১২৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার পরেই ছিল যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিসরের কায়রো।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
মন্তব্য