বাংলা একাডেমির সভাপতি হসেবে নিয়োগ পেয়েছেন স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, গবেষক ও লেখক ড. রফিকুল ইসলাম।
মঙ্গলবার তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ‘বাংলা একাডেমি আইন, ২০১৩’ এর ধারা-৬ (১) অনুযায়ী এই নিয়োগ পেয়েছেন তিনি।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
এর আগে বাংলা একাডেমির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১৪ এপ্রিল মারা যান তিনি। এরপর থেকেই একাডেমির সভাপতির পদ শূন্য ছিল।
অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এক সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রায় ৩০টি বই লিখেছেন ও সম্পাদনা করেছেন তিনি।
২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে পুরুস্কৃত করে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক ও একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক।
রফিকুল ইসলাম ১৯৩৪ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে লেখাপড়া শেষে ভাষাতত্ত্বে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন ও গবেষণা সম্পাদনা করেন আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়, মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়, মিশিগান-অ্যান আরবর বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্ট ওয়েস্ট সেন্টারে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মালয়েশিয়ায় তিনদিনের সরকারি সফরের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন ।
প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি আজ সোমবার দুপুর ২টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে প্রফেসর ইউনূস এই সফর করছেন।
সফরকালে তিনি মালয়েশিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পাশাপাশি একাধিক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হবেন।
এই সফরে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও হালাল খাদ্যসহ বিভিন্ন খাতে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর এবং তিনটি নোট বিনিময়ের কথা রয়েছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশ ও আনসারের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ৮০ হাজারেরও বেশি সদস্য মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি আজ দুপুরে কেরানীগঞ্জে ঢাকা-৩ সংসদীয় আসনের ৩ নং ভোটকেন্দ্র তেঘরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে পুলিশ, আনসার ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি ও নৌবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে।
নির্বাচনে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দায়িত্ব শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নয়। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সর্বোপরি জনগণ। আশা করি, আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পারবো।
উপদেষ্টা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের নিরাপত্তার জন্য অস্ত্রসহ একজন বাড়তি আনসার সদস্য (গানম্যান) নিয়োজিত থাকবে।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব। পরিস্থিতি যে পর্যায়ে আছে আমাদের নির্বাচন করতে কোনও সমস্যা নেই।
তিনি জানান, নির্বাচনের সময় পুলিশ সদস্যদের কাছে বডি ক্যামেরা থাকবে। ভোট যেন সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর হয় সেজন্য সরকারের সব ধরনের প্রচেষ্টা থাকবে। এ সময় রাজনৈতিক দলগুলো ও জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের জন্য ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা কেনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হারানো অস্ত্রগুলো উদ্ধার করতে আমরা একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি৷ যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হারানো অস্ত্রের সন্ধান দিতে পারবে, তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে।
এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, র্যাব ১০ অফিস ও কেরানীগঞ্জ থানা পরিদর্শন করেন।
নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার ১১ আগষ্ট দুপুর ১ টায় নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে এই সম্মেলনের অধিবেশনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম
উদ্বোধনের শুরুতেই জাতীয় সংগীত ও দলীয় গান পরিবেশন করে সন্মান প্রদর্শন করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল শহীদ ও জুলাই আন্দোলনে সকল শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি নতুনভাবে দল পরিচালনার পাশাপাশি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম ও এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান চন্দন।
এদিন বিকেল ৩টা থেকে শুরু হবে ভোট গ্রহণ। চলবে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত। কাউন্সিলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং দুটি সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জেলার ১৪টি ইউনিটের ১ হাজার ৪১৪ ভোটার গোপন ব্যালটে জেলা বিএনপির নেতৃত্ব নির্ধারণ করবেন।
কাজেই সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ পদ কারা পাচ্ছেন, কারা হাসবে জয়ের হাসি, কাদের নেতৃত্বে চলবে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক কার্যক্রম তা নিয়ে চলছে গুঞ্জন।
দীর্ঘ ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জেলা বিএনপির সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এতদিন নানা সীমাবদ্ধতায় সম্মেলন করতে না পারলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বেশ ঘটা করে সম্মেলনের আয়োজন করেছে দলটি। তাই সম্মেলন ঘিরে পুরো শহর সেজেছে নতুন কমিটির নেতৃত্বে আসা নেতাদের ছবি, ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে। এই সম্মেলন ঘিরে ১৭ বছর হামলা, মামলা, নির্যাতন ও কারাবরনে জর্জরিত নেতাকর্মীরা ফিরে পেয়েছেন প্রাণচাঞ্চল্য। কর্মীরাও মুখে আছেন নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে।
এই সম্মেলনে নেতৃত্বে কারা আসছেন এ নিয়ে তৃনমূল থেকে শুরু করে শহরের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। অনেক নেতাকর্মী ভাবছেন নতুন নেতৃত্ব আসবে, আবার কেউ কেউ ভাবছেন ধারাবাহিক নেতার মধ্যে দুই একজন জয়ী হতে পারেন।
তবে নেতাকর্মীরা বলছেন, যারা বিএনপির রাজনীতিতে রাজপথে ছিলেন, রাজপথ থেকে উঠে এসেছেন, রাজনীতিতে যাদের দলীয় পরিচয় বেশি, যারা কর্মী বান্ধব তারাই আসুক নেতৃত্বে। দলের দুর্দিনে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তারা যেন সঠিক মূল্যায়ন পান। এছাড়াও সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন করে দলকে পুনরুজ্জীবিত ও সুসংগঠিত করে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে বিজয়ী করতে ভূমিকা রাখবে এমন নেতৃত্ব চান নেতাকর্মীরা।
দলীয় সুত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১০ সালে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন সামসুজ্জোহা খান, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন মামুনুর রহমান রিপন। ২০১৫ সালে ওই কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর সম্মেলনের মাধ্যমে আর কোনো কমিটি গঠন হয়নি।
এরপর ২০২২ সালে আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নুকে আহ্বায়ক ও বায়েজিদ হোসেন পলাশকে সদস্য সচিব করে গঠিত আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছিল।
পট পরিবর্তনের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুসারে, ঘোষিত সম্মেলন উপলক্ষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। গত রোববার (৩ আগষ্ট) তফসিল ঘোষণা করেন সম্মেলন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা। পরের দিন সোমবার জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এই দুইটি পদপ্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়। একই দিনে মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই-বাছাই ও চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ, সভাপতি পদপ্রত্যাশীরা হলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজমুল হক সনি, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মাষ্টার হাফিজুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান তুহিন, পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবদুস শুকুর, জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ এস এম মামুনুর রহমান ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য এ বি এম আমিনুর রহমান।
সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ার জন্য লড়ছেন চারজন। তারা হলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম ও আমিনুল হক বেলাল। এবং সাংগঠনিক সম্পাদকের দুটি পদের জন্য আটজন মনোনয়ন তুলেছেন। তারা হলেন শফিউল আজম (ভিপি) রানা, নূর-ই আলম, ফরিদুজ্জামান, খায়রুল আলম, শবনম মোস্তারী, সুলতান মামুনুর রশিদ, কামরুজ্জামান কামাল ও জহুরুল হক।
এদিকে এই সম্মেলনের আগের দিন রোববার (১০ আগস্ট) দুপুর ২টায় নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে সম্মেলনের কাউন্সিলর বা ভোটার তালিকাকে ‘বিতর্কিত’ উল্লেখ করে সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম বেলাল।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অবৈধ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অভিযানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আব্দুল হামীদ (৪০) নামে এক পুলিশের সোর্স গুলিবিদ্ধ হয়েছে। উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের দারোগার মোড় এলাকায় সোমবার (১১ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মাদক বিরোধী অভিযানে গুলি করা হয়। এ ঘটনার পর নুরুজ্জামান তারাগদিয়া নামে একজনকে আটক করেন থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক কেনাবেচা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর এর পরিদর্শক খবির আহম্মেদ এর নেতৃত্বে একটি টীম ওই এলাকায় নরুজ্জামান (৪৫) এর বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান কালে ফিলিপগর মাঠপাড়া এলাকার হাফিজুর সর্দারের ছেলে শীর্ষ সন্ত্রাসী চল্লিশ বাহীনির প্রধান রাখি (৩৫), বৈরাগীর চর রিফুজি পাড়া এলাকার ভাঙ্গন হোসেনের ছেলে মিঠু লাল (৩২) ও একই এলাকার ককিল তারাগদিয়ার ছেলে নুরুজ্জামান তারাগদিয়া (৪৫) গুলি করে পালিয়ে যায়। এসময় আব্দুল হামীদ (৪০) নামে এক পুলিশের সোর্স গুলিবিদ্ধ হয়। বর্তমানে গুলিবিদ্ধ আব্দুল হামীদ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিতসাধীন অবস্থায় রয়েছে। আহত আব্দুল হামীদ পার্শ্ববর্তী মিরপুর উপজেলার নওদা খালিমপুর এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে।
এসময় ৫০ পীচ ইয়াবা ট্যাবলেট, একটি হীরো ডিলাক্স মোটর সাইকেল সহ নুরুজ্জামান তারাগদিয়া নামে একজন সন্ত্রসীকে আটক করে থানা পুলিশ।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সোলাইমান শেখ বলেন, অবৈধ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অভিযানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আব্দুল হামীদ (৪০) নামে এক পুলিশের সোর্স গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এঘটনায় মাদকসহ একজন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। বাকি সন্ত্রাসীদের আটকে অভিযান অব্যহত আছে।
বগুড়া নাটোর মহাসড়কের জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলায় দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন।
সোমবার (১১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মহাসড়কের রুপিহার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম আব্দুস সালাম (৩২)। তিনি নাটোরের সিংড়া উপজেলার খেজুরতলা আতাইকুলা গ্রামের মৃত মহর আলীর ছেলে।কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানান, বগুড়া থেকে ছেড়ে আসা বালুবোঝাই একটি ট্রাক রূপিহার এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। এতে ট্রাক চালক ও হেলপারসহ ছয়জন গুরুতর আহত হন। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুস সালাম মারা যান। আহতদের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
গাজীপুরের সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার প্রতিবাদে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০ টায় প্রেসক্লাব চত্বরে এ কর্মসূচিতে জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরতসাংবাদিকরা অংশ নেন।মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একজন পেশাদার সাংবাদিককে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিক নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি। হত্যাকারীদের ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে সমাজে এর প্রভাব থেকে যাবে। এ ঘটনার জরুরী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বাস্তবায়ন করতে হবে। নইলে আন্দোলন চলমান থাকবে।বক্তারা আরো বলেন, সাংবাদিকরা মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত নানা হুমকি, হামলা ও
হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থায় সরকারের উচিত সাংবাদিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট আইন ও নীতি প্রণয়ন করা। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গোলাম সারোয়ার ছানু,সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক শাহানুর ইসলাম, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শাজাহান বিশ্বাস, আবুল বাশার আব্বাসী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন আনসারী, সহ-সম্পাদক জাহিদুল হক চন্দন, সাংবাদিক সমিতি মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মানবেন্দ্র চক্রবর্তী, টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মনিরুল ইসলাম মিহির, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি শহিদুল ইসলাম সুজনসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
ভোলায় চলতি বছরে গেলো ৮ মাসে ১শো ২০জন শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার দুপুরে ভোলা সদর হাসপাতালে দেখা মিলে, এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের। একমাত্র কন্যা শিশু রাইসাকে (৮) হারিয়ে হাসপাতালের মেঝেতে গড়াগড়ি করে কাদঁছেন রাইসার বাবা রাসেল মিয়া ও তার স্ত্রী। রাইসা তার দাদির সঙ্গে গোসল করতে গিয়ে পুকুরে পানিতে ডুবে মারা যান।
জেলা সিভিল সার্জনের তথ্য মতে, পরিবারের অসচেতনতায় প্রতি বছরই পানিতে ডুবে প্রায় ২শোর মত শিশুর মৃত্যু হয়। তবে, চলতি বছরে ৮ মাসেই ১২০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে, চরফ্যাশনে ৩৭ জন, মনপুরায়, ৮ জন, তজুমদ্দিনে ১০ জন, লালমোহনে ১২ জন, দৌলতখানে ৩ জন, বোরহানউদ্দিনে, ২৪ জন, ভোলা সদর উপজেলায় ২৬ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বর্ষা মৌসুম আসলেই জেলার নদ -নদী ও পুকুর গুলো পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। শিশুরা পানিতে খেলা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করায় পানির পাশে অনায়াসে গিয়ে এরকম দূর্ঘটনার শিকার হন। শিশু মৃত্যুর প্রতিকারে, পরিবারের সচেতনতাই মূল দায়িত্ব বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলছেন, 'পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অধিকাংশ শিশুই সকাল ১০ টাকা থেকে দুপুর ২ টার মধ্যে পানিতে ডুবে মারা যায়। কারন, এসময় শিশুদের মায়েরা ঘরে রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকেন। এই সুযোগে শিশুরা বাড়ির আঙ্গিনায় খেলা করার সময় অসাবধানতাবশত পানিতে ডুবে গিয়ে মৃত্যু হয়।'
জেলায় পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি চরফ্যাশন উপজেলায়। এই উপজেলায় বিস্তীর্ণ জনপদে রয়েছে অসংখ্য পুকুর আর খাল বিল। যার, ফলে এখানে প্রায় পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
গেলো মার্চ মাসে এই উপজেলার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নে নানা বাড়িতে বেড়াতে এসে রেদোয়ান নামের ৫ বছর বয়সী এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির বাবা প্রবাসী রুবেল হোসেন আজও ছেলেকে হারানোর শোক বুকে নিয়ে প্রবাস জীবন কাটাচ্ছেন। মা মুক্তা বেগম একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে মাঝে মাঝে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কেঁদে ওঠেন।
ভোলা সদর হাসপাতালে নিহত শিশু রাইসার চাচা ফরহাদ মিয়া সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, গতকাল শনিবার দুপুর ১টার দিকে শিশু রাইসা ও তার চাচাতো ভাই রাহাত তাদের দাদির সঙ্গে বাড়ির পাশে একটি পুকুরে গোসল করতে যান। পরে তাদের দাদির গোসল শেষে রাইসা ও রাহাতকে ডেকে বাড়িতে আসতে বলে তিনি ঘরে ফিরে আসেন। কিছুক্ষন পর তাদের দেখতে না পেয়ে পূনরায় পুকুর ঘাটে গিয়ে শিশু রাহাতকে পানিতে ভেসে থাকতে দেখেন। তাৎক্ষনিক রাহাতকে উদ্ধার করে রাইসাকে খুঁজে পান পুকুরের ঘাটলার নিছে। পরে দু'জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক রাইসাকে মৃত ঘোষণা করেন। এবং রাহাতকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
গেল বৃহস্পতিবার ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নে খাদিজা নামের ৩ বছর বয়সী এক শিশুর পুকুরের পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়। শিশুটির মা জাহানারা বেগম সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, 'আমার মাইয়্যা ডা আর নাই, ওরে কইলাম মা তুমি পুস্কুনিত (পুকুরে) যাইয়ো না' কিন্তুুক মাইয়্যা ডা কোন ফাঁকে গেল গা টের পাইলাম না। বাড়ির উডানে (আঙ্গিনা) দেখলাম খেলে, এরপর আর দেখি নাই, চাইয়্যা দেখি মাইয়্যা আমার পুস্কুনির (পুকুর) পানিতে ভাসে।
পানি ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমাতে বাংলাদের শিশু একাডেমির সহযোগীতায় একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার অর্থায়নে সাঁতার প্রশিক্ষণ প্রকল্পের মাধ্যমে শিশুদের সাঁতার শিখানো হচ্ছে।
শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ ও সুরক্ষা এবং সাঁতার সুবিধা প্রদান (আইসিবিসি) প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর মো হারুন অর রশির সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, 'পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার কমাতে ভোলায় ৫০ টি সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার শিশুকে সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এই প্রকল্পে জেলায় ১০০ জন প্রশিক্ষকের মাধ্যমে ৬ বছরে থেকে ১০ বছরের শিশুদের সাঁতার শিখানো হচ্ছে। আশা করি এই প্রকল্পের মাধ্যমে কিছুটা হলেও শিশু মৃত্যুর হার কামনো যাবে।'
ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের লোকাল সুইমিং ইনস্ট্রাক্টর (এলএসআই) মো. আল আমিন সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, 'আমাদের প্রতিটি সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সপ্তাহে ৫০ জন শিশুকে সাঁতার শিখানো হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি শিশু সাঁতার শিখে নিজেকে আত্নরক্ষা করতে পারে। এতে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার অনেকটা কমে আসবে।'
ভোলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. মনিরুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, 'চলতি বছরের ৮ মাসে পানিতে ডুবে ১২০ জন শিশু মৃত্যু হয়েছে। যা অত্যান্ত দুঃখজনক। শিশু মৃত্যু রোধে শিশুর মায়েদের আরও সচেতন হতে হবে। বাড়ির পাশের পুকুর থাকলে তাতে জাল বা বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে দিতে হবে, যাতে শিশুরা পুকুরে কাছে যেতে না পারে। এছাড়াও শিশুদের পর্যাপ্ত সময় দিয়ে তাদের প্রতি নজর রাখতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'বেশিরভাগ শিশুই সকাল ১০ টাকা থেকে দুপুর ২ টার মধ্যে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়। এসময় মায়েরা ঘরে রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকেন। যার ফলে শিশুরা খেলা করার সময় অসাবধানতাবশত পানিতে ডুবে গিয়ে মৃত্যু হয়। এই সময়টায় শিশুদের প্রতি খেয়াল রেখে শিশুদের মায়েদের কাছে রাখতে হবে। 'পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। এছাড়াও, শিশুদের ৪ /৫ বছর বয়স হওয়ার সাথে সাথে তাদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। যাতে নিজেদের আত্নরক্ষা করতে পারে।'
মন্তব্য