করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবারও রমনার বটমূলে বসেনি ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী বৈশাখ বরণ আয়োজন। অনলাইন ও বিটিভিতে সকাল ৭টায় প্রচার হয় সংকলিন অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে প্রাধান্য দিয়ে এবার সাজানো হয় ৪৮ মিনিটের আয়োজন। প্রতিবারের মতো এবারও অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ছিল ছায়ানটের সভাপতি সনজীদা খাতুনের বক্তব্য। বক্তব্যটি আগেই ধারণ করে রাখা হয়েছিল।
সনজীদা খাতুন বলেন, ‘লাখো প্রাণের আত্মদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সংস্কৃতির যাত্রাপথ নির্বিঘ্ন হয়েছে। পঞ্চাশ বছরে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন ঈর্ষনীয়। যা আমাদের আশাবাদী করে তোলে।
‘পহেলা বৈশাখ শুধুই নববর্ষ উদযাপন নয়। আত্মপরিচয়ের সন্ধানে বাঙালি যে পথপরিক্রমায় অংশ নিয়েছে, সে পথ মসৃণ ছিল না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল, নববর্ষের আয়োজন সব ধর্মের বাঙালিকে ঐক্যসূত্রে যুক্ত করে, তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।’
দেশের অগ্রযাত্রাকে অক্ষুন্ন রেখে নেতিবাচক প্রবণতাকে রোধ করবার জন্যে অতীতের মতো সংস্কৃতি চর্চার প্রসার মানবিক সমাজ গঠনে অবলম্বন হয়ে উঠতে পারে বলে জানান সনজীদা খাতুন।
সনজীদা খাতুনের এবারের বক্তব্যে নতুন অবয়বে উত্থিত ধর্ম-বিদ্বেষের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘ধর্মের আসল মর্মবাণী উপেক্ষা করে নতুন অবয়বে উত্থিত ধর্ম বিদ্বেষ, সম্প্রীতির সমাজকে বিনষ্ট করতে সচেষ্ট। লোভের বিস্তার বৈষম্যের বিস্তার করছে। খণ্ড ও বিচ্ছিন্নভাবে আত্মপ্রকাশ করছে সামাজিক অবক্ষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্ধকারের উৎস থেকে আলো উৎসারিত হবেই। নতুন বছর বয়ে আনবে সবার জন্য মঙ্গলবার্তা। আলো আসবেই।’
সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন ছায়ানট সভাপতি।
১৯৬৭ সাল থেকে রমনার বটমূলে বর্ষবরণের আয়োজন করে আসছে ছায়ানট। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অনুষ্ঠিত হয়নি বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এর পর গত বছর এবং চলতি বছর আয়োজন হলো না বটমূলে।
আরও পড়ুন:ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানরা পদত্যাগ না করেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলে আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. শাহদীন মালিক। তিনি সাংবাদিকদের আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এই আদেশের ফলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে ইউপি চেয়ারম্যানদের পদত্যাগ করতে হবে না।
কুষ্টিয়া ও সিলেটের দুটি উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রশ্নে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের আনা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আদেশ দিল উচ্চ আদালত।
পার্বত্য জেলা বান্দরবানে প্রতি বছর ঈদ, পহেলা বৈশাখ ও সাংগ্রাই উৎসব ঘিরে ব্যাপক পর্যটকের সমাগম হয়। বছর ঘুরে এসব উৎসব এলেও এবারের পরিস্থিতি পুরোপুরি ভিন্ন। বিশেষত জেলার রুমা ও থানচিতে পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে। হোটেল-রিসোট পড়ে থাকছে ফাঁকা। দেখা মিলছে না দেশি-বিদেশি পর্যটকের।
সম্প্রতি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ব্যাংকে হামলা ও অস্ত্র লুটের ঘটনার পর পর্যটন খাতে কালো ছায়া পড়েছে। ভয়ে ও আতঙ্কে পর্যটকরা আগে থেকে করে রাখা বুকিং বাতিল করছেন। ফলে ভরা মৌসুমেও লোকসানের মুখে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসা-সংশ্লিষ্টরা।
পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে অবস্থানকারী জেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম বান্দরবান। জেলার রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচির অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ। ইতোমধ্যে এসব স্পটের খ্যাতি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।
বান্দরবান জেলা সদর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে থানচির অবস্থান। আর রোয়াংছড়ি ২০ কিলোমিটার ও রুমার দূরত্ব ৬৯ কিলোমিটার।
বান্দরবান-থানচি সড়কের মাঝামাঝি জীবননগর নামক স্থানে রয়েছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট নীলগিরি। নীল দিগন্ত বিস্তৃত এলাকাটি ম্রো অধ্যুষিত।
থানচি-আলিকদম সংযোগ সড়কে থানচি সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে ক্রাউডং (মারমা) ডিম পাহাড় (বাংলা)। নৌপথে সাংগু নদী বেয়ে তিন্দু ইউনিয়নে রয়েছে রাজা পাথর (বাংলা)।
এরপর রয়েছে রেমাক্রী খাল। জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের রোয়াংছড়ি উপজেলার শীলবাঁধা পাড়ায় দেবতাখুমের অবস্থান। এছাড়াও রয়েছে অনেক পর্যটন স্পট।
বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত প্রাকৃতিক হ্রদ হলো বগা লেক। রুমা উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে তিন হাজার সাতশ’ ফুট উচুঁতে এর অবস্থান। লেকটি পাহাড় চূড়ায় ১৫ হাজার একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত।
বগা লেক নিয়ে নানা কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হল বিজয় (তাজিং ডং)। সমতল থেকে এর উচ্চতা প্রায় ৪ হাজার ৫শ’ ফুট। রুমা উপজেলার রেমাক্রী পাংশা ইউনিয়নে এর অবস্থান।
রুমা উপজেলা সদর থেকে এর দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। শীত মৌসুমে এই পর্বত দেখতে হাজার হাজার মানুষের আগমন ঘটে।
এছাড়াও রয়েছে কেওকারাডং, জলপ্রপাতের পানি ঝিরসহ অনেক পর্যটন স্পট। আবার জেলার থানচিতে পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে থাকা তালিকায় স্থান করে নিয়েছে নাফাখুম ঝরনা, আমিয়াখুং ঝরনা, ভেলাখুং ঝরনা, সাত ভাই খুং ঝরনা, লাংলুক ঝরনা, লৈক্ষ্যং ঝরনা, চিংড়িৎ ঝরনা।
প্রকৃতি এতোসব সম্ভার সাজিয়ে বসে আছে। কিন্তু তা দেখার জন্য পর্যটকের আগমন ঘটছে না। সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে ভয় আর আতঙ্কে তারা পার্বত্য এসব পর্যটন স্পট এড়িয়ে চলছেন।
পর্যটন-সংশ্লিষ্টরা জানান, বান্দরবান জেলায় পর্যটকদের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থানগুলো হচ্ছে রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলায়। বিরাজমান পরিস্থিতিতে এই তিন উপজেলায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফ-এর বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। ফলে এসব দর্শনীয় স্থানে যাতায়াত করাটা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন পর্যটকরা। অধিকাংশ এলাকায় দোকানপাট বন্ধ। যানবাহন চলাচলও সীমিত। সন্ধ্যার আগেই লোকজন ঘরবন্দি হয়ে পড়ছে।
রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচির হোটেল-রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদ ও পহেলা বৈশাখ চলে গেল। এসব উৎসবের ছুটিতে এখানে হোটেল-মোটেলের শতভাগ রুম বুকিং হওয়ার কথা। কিন্তু এবার সেসবের কিছুই হয়নি।
হঠাৎ করে ২ এপ্রিল রাতে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি, অস্ত্র লুট, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করে। পরদিন দুপুরে থানচি সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে অস্থির হয়ে পড়েছে বান্দরবান।
কেএনএফ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শুরু হয় যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান। আর এই খবর দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে ভয়-আতঙ্কে মুখ ফিরিয়ে নেয় পর্যটকরা। অথচ এই সময়টাতে থানচি রেমাক্রীতে হাজার হাজার পর্যটকের সমাগম হওয়ার কথা ছিল।
পর্যটন-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, পর্যটক না আসার কারণে এই ঈদ মৌসুমে তাদেরকে লাখ লাখ টাকার লোকসান গুনতে হবে।
নৌকার এক মাঝি জানান, থানচিতে পর্যটকের ছুটে চলার একমাত্র মাধ্যম হলো নৌকা। এখানে নৌকার সংখ্যা রয়েছে পাঁচ শতাধিক। আর এসব নৌকা চালানোর জন্য সমসংখ্যক মাঝি রয়েছেন। তাদের প্রধান আয়ের উৎস পর্যটক। নৌকা চালাতে পারলে সংসারের চাকা ঘুরবে, অন্যথায় উপোস থাকতে হবে। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে তারা দিনশেষে খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুন বলেন, ‘সরকারিভাবে পর্যটকদের এই এলাকা ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়নি। তবে এমন পরিস্থিতি শোনার পর আর কেউ এখানে ঘুরতে আসবে বলে মনেও হয় না। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিটরা অনেক কষ্ট ও লোকসানে পড়বে বোঝা যাচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ কেএনএফ-এর শতাধিক অস্ত্রধারী ২ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে রুমা উপজেলার ইউএনও অফিস সংলগ্ন মসজিদ ও ব্যাংক ঘেরাও করে। তারা সোনালী ব্যাংকের টাকাসহ ডিউটিরত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ১৪টি অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তারা যাওয়ার সময় রুমা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকেও অপহরণ করে। পরদিন থানচি উপজেলা শহরের সোনালী ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখায় ডাকাতি হয়।
যৌথ অভিযান চালিয়ে সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে র্যাব ও সেনাবাহিনী। এরপর কেএনএফের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানের ঘোষণা দেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
এসব ঘটনায় আটটি মামলা করে পুলিশ। ঘটনার পরপরই জড়িতদের ধরতে এবং সন্ত্রাসীদের নির্মূলে ৬ এপ্রিল যৌথ বাহিনী সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। দুদিনের অভিযানে ১৮ নারীসহ ৫৬ জনকে আটক করে যৌথ বাহিনী। বাকি সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন:চরম আবহাওয়ার খবরে বরাবরই শিরোনামে থাকে চুয়াডাঙ্গার নাম। চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমেও শুরু থেকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়ে আসছে এই জেলায়। অতি তীব্র তাপপ্রবাহের পর এখানে মঙ্গলবার ছিল তীব্র তাপপ্রবাহ। তবে সোমবারের তুলনায় এদিন কয়েক ডিগ্রি কমেছে তাপমাত্রা।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল থেকে সূর্যের চোখ রাঙানিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জেলার জনপদ। দিনের মতোই থাকছে রাতের তাপমাত্রা। বাতাসে আগুনের হল্কা। গরমে একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। পুকুর ও সেচ পাম্পের পানিতে গোসল করে শান্তি খুঁজছেন অনেকে। দিন ও রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে এখানকার জনজীবন।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তালতলা গ্রামের কৃষক ফজলুল হক বলেন, ‘এই তাপে মাঠে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। ভ্যাপসা গরমে কৃষি কাজ করা যাচ্ছে না। ধানে বেশি সেচ লাগছে। কিন্তু সেচ পাম্পে পানিও ঠিকমতো উঠছে না। বিদ্যুতের ভোগান্তি তো আছেই।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ (মঙ্গলবার) তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে। তবে বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। তীব্র তাপদাহ আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।’
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। উপজেলা ভেদে দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হবে।
মঙ্গলবার সকালে নির্বাচন ভবনে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
ইসি সচিব বলেন, ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট দপ্তর, মন্ত্রণালয় সচিব, সিনিয়র সচিব ও দপ্তর প্রধানদের সঙ্গে সমন্বয় সভায় বসেছিল কমিশন। সভার মূল বিষয় ছিল, যার যেটা করণীয় সেটা সবাই সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যেন যত্ন সহকারে করেন।
তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনী ও জনপ্রশাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন তারা যাতে এই নির্বাচনটা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে আরও সুন্দর ও স্বার্থকভাবে আয়োজন করেন, এই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে।
ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্তের মধ্যে আমরা মূলত যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করে থাকি, এই নির্বাচনে তার চেয়ে অধিক পরিমাণে মোতায়েনের প্রচেষ্টা করা হবে। যেহেতু উপজেলা নির্বাচন চার ধাপে সম্পন্ন হবে, জেলা পর্যায়ে যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও জনপ্রশাসনের সদস্য রয়েছে, তারা ওখানেই ধাপে ধাপে দায়িত্ব পালন করবে। তারা বলেছে, তাদের জনবলের ঘাটতি হবে না।
জাহাংগীর আলম বলেন, উপজেলাভিত্তিক বিজিবি মোতায়েন করা হবে। উপজেলা ভেদে দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। জনবলের সংখ্যা উপজেলাভিত্তিক বাড়িয়ে দেয়া হবে।
বড় দল আসবে না, এর প্রভাব ভোটে থাকবে কি-না, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের যে গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে, তারা যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে নির্বাচনে কোনো ধরনের সহিংসতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেনি। দলীয় প্রতীক ছাড়া অনেক দল অংশ নিয়েছে তাই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। একই দলের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, যেসব দল নির্বাচন বর্জন করেছে তাদেরও কিছু কিছু অনুসারীরা এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাই কমিশন আশা করে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন থেকে শুরু করে সব কার্যক্রম নেয়া হবে যাতে নির্বাচনে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তার পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে সুষ্ঠুভাবে বাড়ি যেতে পারেন, যাতে নির্বাচনে তাদের মতামত প্রতিফলিত হয়।
অন্য এক প্রশ্নে ইসি সচিব বলেন, আইনিভাবে যার ভোটে অংশ নেয়ার যোগ্যতা রয়েছে তিনি ভোটে অংশ নিতে পারেন। এখানে কোনো আইনি বাধা নেই। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় জনপ্রতিনিধি যারা আগে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের নিকট আত্মীয়দের নির্বাচনে অংশ নিতে নিষেধ করা হয়েছে। এটা তো আইন না, একটি দলীয় ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।
তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একত্রিত করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা চাই অধিক সংখ্যক প্রার্থী আসবে। জনপ্রশাসন সমন্বিতভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবে। যত প্রার্থী আসবে স্থানীয় নির্বাচন তত সুষ্ঠু হবে বলে মনে করি।
চট্টগ্রামে চিকিৎকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস এবং বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নতুন রোগীর সেবা কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রয়েছে।
দুজন চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এ ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখা জানিয়েছে, পূর্ব-ঘোষিত এ কর্মসূচি পালন শুরু হয় মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে যা চলবে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ ফয়সল ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘সকাল ৬টা থেকে আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি পালন শুরু হয়েছে। দাবি মানা না হলে সামনে আরও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে, তবে বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকে আগে ভর্তি হওয়া রোগীর চিকিৎসা সেবা চলবে।’
চট্টগ্রামের পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে ডা. রক্তিম দাশের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি ও শহরে মেডিক্যাল সেন্টার হসপিটালে ডা. রিয়াজ উদ্দিন শিবলুর ওপর হামলাকারীদের জামিন বাতিলের দাবিতে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) থেকে কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএমএ চট্টগ্রাম শাখা।
এর মধ্যে গত শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা চট্টগ্রামের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে চমেক হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন করে আন্দোলনের এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:পাহাড়ে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ বিরোধী যৌথ অভিযানের কারণে বান্দরবানের থানচি, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমাদের পার্বত্য তিনটি উপজেলাতে বিশেষ করে বান্দরবানের থানচি, রুমা এবং রোয়াংছড়িতে যৌথ বাহিনীর অপারেশন চলমান রয়েছে। আপাতত এই তিনটি উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। পরে সুবিধাজনক সময়ে আয়োজনের চেষ্টা করব।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। থানচি, রোয়াংছড়িতে আগামী ৮ মে ও রুমায় ২১ মে ভোট হওয়ার কথা ছিল।
গত ২ এপ্রিল রুমার সোনালি ব্যাংকে ডাকাতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র লুট করা হয়। এছাড়া ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করা হলেও পরে ছাড়া পান তিনি। পর দিন রুমায় সোনালি ও কৃষি ব্যাংকে দিন দুপুরে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
এ সব ঘটনায় কেএনএফ জড়িত বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। এরপর যৌথ বাহিনীর অভিযানে এখন পর্যন্ত ২১ নারীসহ ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেএনএফ-এর সদস্য অভিযানে নিহতও হয়েছেন।
নির্বাচন ভবনে আয়োজিত সভায় নির্বাচন কমিশন সদস্য, সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন দপ্তর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবারের জাতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক থাকার পরও দেশি-বিদেশি চক্র অপপ্রচার মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরে তো বটেই বাইরেও নির্বাচিত সরকারকে হটানোর চক্রান্ত দীর্ঘদিন ধরে দেখছি।
মঙ্গলবার সকালে গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি আয়োজিত প্রচারপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি চিহ্নিত অপশক্তি দেশের গণতন্ত্র এবং জনগণের ভোটাধিকার নস্যাৎ করতে নির্বাচনবিরোধী অপতৎরতায় লিপ্ত রয়েছে। গণতন্ত্র, শান্তি, উন্নয়ন নির্বাচনবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেণ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ও প্রগতিশীল শক্তির কাছে, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বিরোধী অপশক্তি আমাদের ভিত্তিমূলে আঘাত করতে যাচ্ছে। তাদের আমাদের প্রতিহত করতে হবে, সেজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাধ্যমে সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগের জন্য জনগণকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ভোট দিয়ে আপনার নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে জনগণ সব শক্তির উৎস।
তিনি বলেন, দেশবিরোধী অপশক্তি জাতির পিতার পরিবারকে হত্যা করে জনগণকে সামরিক স্বৈরশাসনের জাঁতাকলে দীর্ঘকাল পিষ্ট করেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে হত্যার রাজনীতি বন্ধ করেছেন।
মন্তব্য