মিসরে বালুর নিচে ঢাকা পড়া তিন হাজার বছরের পুরোনো এক শহরের সন্ধান পাওয়া গেছে। অভাবনীয় এ আবিষ্কারে বিশ্বজুড়ে প্রত্নতত্ত্ববিদদের প্রশংসা কুড়োচ্ছেন অনুসন্ধানকারী দল।
প্রখ্যাত ইজিপ্টলজিস্ট ড. জাহি হাওয়াস ‘হারিয়ে যাওয়া সোনালী শহরের’ আবিষ্কারের কথা বিশ্ববাসীকে প্রথম জানান বলে শুক্রবার দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, ফারাও তুতেনখামেনের সমাধির পর মিসরের বৃহত্তম প্রাচীন শহরটির আবিষ্কার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।
মিসরের প্রত্নতত্ত্ব দলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাহি হাওয়াসের নেতৃত্বে আতেন শহরের হদিস পাওয়া গেছে, যা বালুর নিচে তিন হাজার বছর ধরে হারিয়ে ছিল। প্রাচীন মিসরের ফারাও তৃতীয় আমেনহোতেপের শাসনামল থেকে তুতেনখামেন ও আই পর্যন্ত শহরটির অস্তিত্ব ছিল।
প্রত্নতত্ত্ব দলের তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ইজিপশিয়ান আর্ট অ্যান্ড আর্কিওলজি বিভাগের অধ্যাপক বেটসি ব্রায়ান বলেন, ‘তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কারের পর এটি দ্বিতীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার।’
অনুসন্ধানে আংটিসহ নানা ধরনের গয়না, রঙ-বেরঙের মাটির পাত্র, গুবড়ে পোকার শিল্পকর্ম, তৃতীয় আমেনহোতেপের সিল দেয়া মাটির ইট পাওয়া যায়।
অনুসন্ধানের বিষয়ে মিসরের সাবেক পুরাকীর্তিমন্ত্রী হাওয়াস বলেন, ‘বিদেশি অনেক দল বেশ কয়েকবার এ শহরটি অনুসন্ধানে আসে। কিন্তু কেউই এর খোঁজ পায়নি।’
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে মিসরের রাজধানী কায়রো থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে লুক্সর শহরের কাছে ফারাও তৃতীয় রামসেস ও তৃতীয় আমেনহোতেপের মন্দিরের মধ্যবর্তী জায়গায় প্রত্নতত্ত্ব দলটি খনন কাজ শুরু করে।
বিবৃতিতে দলটি জানায়, খনন কাজ শুরুর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দলকে অবাক করে দিয়ে চারদিক দিয়ে মাটির ইটের দেয়াল দেখতে পাওয়া যায়। আরও খনন করে বিশাল এক শহরের হদিস মেলে, যেখানে রয়েছে দেয়ালসহ দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা জিনিসপত্রে ভরা কক্ষ। শহরটি দেখলে মনে হয় গতকালও বাসিন্দারা এখানে ছিলেন।
খোঁড়াখুঁড়ির সাত মাসের মাথায় ওভেন, মাটির পাত্র থাকা একটি বেকারিসহ শহরটির বেশ কয়েকটি এলাকা উন্মোচন হয়। পাশাপাশি প্রশাসনিক ও আবাসিক জেলারও সন্ধান পাওয়া যায়।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানান, চার দশক ধরে ইউফ্রেটিস থেকে সুদান পর্যন্ত শাসন করেন ফারাও তৃতীয় আমেনহোতেপ। খ্রিস্টপূর্ব আগে ১৩৫৪ সালের দিকে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন:জাপানের দক্ষিণাঞ্চলের একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপপুঞ্জে গেল দুই সপ্তাহে ৯ শতাধিক ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এখন সামনে কী ঘটতে যাচ্ছে, সেই আতঙ্কে সেখানকার নাগরিকদের ঘুম পর্যন্ত হারাম হয়ে গেছে। যদিও এসব ভূকম্পে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর আসেনি।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে। ভূমিকম্পের এই প্রবণতা কখন থামবে, তা বলতে পারছে না জাপানের আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বুধবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির ভূমিকম্প ও সুনামি পর্যবেক্ষণ বিভাগের পরিচালক আয়াতাকা এবিতা বলেন, ‘গেল ২১ জুন থেকে তোকারা দ্বীপপুঞ্জের সমুদ্রে ভূকম্পনীয় তৎপরতা খুবই সক্রিয়।’
দক্ষিণাঞ্চলীয় কিয়ুশু দ্বীপে পাঁচ দশমিক পাঁচ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হওয়ার পরই তিনি এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। এই ভূকম্পবিশারদ বলেন, ‘আজ ৪টা পর্যন্ত ভূমিকম্পের সংখ্যা ৯ শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে।’
অঞ্চলটিতে আরও বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে শঙ্কায় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
জাপানি সংবাদমাধ্যম দ্য মেইনিচি শিম্পুন জানিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত আগের ১০ দিনে অঞ্চলটিতে ৭৪০টি ভূমিকম্প নথিভুক্ত করা হয়েছে। সাত মাত্রার ভূমিকম্পের তীব্রতার স্কেলে এক বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ছিল এগুলো। জাপানে ভূমিকম্পের কাঁপুনির মাত্রা বোঝাতে এই স্কেল ব্যবহার করা হয়, যেখানে সাত হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী মাত্রা।
পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্প হলে মানুষকে সতর্ক করার জন্য সেটি যথেষ্ট বলে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এই মাত্রার ভূমিকম্পে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে পারে, টাল সামলাতে অবলম্বন হিসেবে কিছু একটা ধরে রাখতে বাধ্য হতে হয়।
নিজেদের ওয়েবসাইটে তোকারা গ্রাম জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ভয়ে লোকজন ঘুমাতে না পেরে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন।
‘মনে হচ্ছে, গ্রামটি সবসময় কাঁপছে। যে কারণে ঘুমাতে গেলে আতঙ্ক তৈরি হয়,’ বললেন একজন বাসিন্দা। কখন এই ভূমিকম্প শেষ হবে, তা স্পষ্ট না বলে মন্তব্য করেন আরেক বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘সন্তানদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে হবে কিনা; সেটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।’
সরকারি উপাত্ত থেকে জানা যায়, ২৩ জুন একদিনেই ১৮৩টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ২৬ জুন এই সংখ্যাটি ছিল ১৫; ২৭ জুন ১৬। কিন্তু পরেরদিন থেকে আবার বাড়তে থাকে ভূকম্পের সংখ্যা। ২৮ জুন ৩৪টি ভূমিকম্প হয়েছে, ২৯ জুন ৯৮টি। আর ৩০ জুন ৬২টি ভূমিকম্প হয়েছে।
এরআগে ২০২৩ সালে তোকারা অঞ্চলে একই ধরনের ভূকম্পনীয় প্রবণতা দেখা গেছে। তখন ৩৪৬টি ভূমিকম্প নথিভুক্ত করা হয়েছে।
বিচ্ছিন্ন তোকারা দ্বীপপুঞ্জের সাতটিতে মানুষ বাস করেন। এসব দ্বীপে সবমিলিয়ে ৭০০ বাসিন্দা রয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তোকারা দ্বীপপুঞ্জের আশপাশের অঞ্চলের ভূতাত্ত্বিক গঠন অস্বাভাবিক হওয়ায় সাগরতলের নিচে গিয়ে চাপ জমা পড়ে সহজভাবে, পরে তা ভূমিকম্পের আকারে বেরিয়ে আসে।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ভূকম্পনপ্রবণ দেশগুলোর একটি হচ্ছে জাপান।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অফ ফায়ারের’ পশ্চিম প্রান্ত বরাবর চারটি বড় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত জাপান। সাড়ে ১২ কোটি জনসংখ্যার দেশটির বাসিন্দারা বছরে দেড় হাজারের বেশি ভূকম্পের মুখে পড়েন। যা বিশ্বের মোট ভূমিকম্পের আঠারো শতাংশ।
তবে এগুলোর বেশিরভাগই মৃদু হওয়ায় অবস্থান ও ভূমিকম্পের গভীরতার ওপর ভিত্তি করে ক্ষয়ক্ষতি ঘটে।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সর্বশেষ মূল্যায়নে দেখা গেছে সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে পরিচালিত মার্কিন হামলার ফলে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি এক থেকে দুই বছর পিছিয়ে গেছে বলে বুধবার (০২ জুলাই) পেন্টাগন জানিয়েছে।
ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেল বুধবার (০২ জুলাই) সাংবাদিকদের বলেছেন, আমাদের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই হামলার ফলে তাদের কর্মসূচি অন্তত এক থেকে দুই বছর পিছিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ধারণা করছি এটি দুই বছরের কাছাকাছি সময়ের জন্য তাদের কার্যক্রম থামিয়ে দিয়েছে।
ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জেরে জাতিসংঘের পরমাণু নজরদারি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে ইরান। এই পদক্ষেপকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে আখ্যায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
তেহরান থেকে এএফপি জানায়, গত মাসে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে ১২ দিনের সংঘাতের পরই এই সিদ্ধান্ত এলো। ওই সংঘাতে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে নজিরবিহীন হামলা চালায়, যা তেহরান ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)’র মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে।
গত ২৫ জুন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার একদিন পরই ইরানি আইনপ্রণেতারা আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার পক্ষে বিপুল ভোটে রায় দেন। বুধবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম নিশ্চিত করেছে যে, আইনটি এখন কার্যকর হয়েছে।
ইরানি গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, এই আইনের লক্ষ্য হলো পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি)-এর অধীনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের নিজস্ব অধিকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন নিশ্চিত করা, বিশেষ করে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ওপর জোর দেওয়া।
ওয়াশিংটন গত ১৩ জুন ইসরাইলের সামরিক পদক্ষেপের কারণে স্থগিত হওয়া আলোচনা পুনরায় শুরুর জন্য তেহরানকে চাপ দিচ্ছিল। তারা ইরানের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেছেন, ‘আমরা এটিকে অগ্রহণযোগ্য বলব। এমন এক সময়ে ইরান আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যখন তাদের সামনে শান্তির ও সমৃদ্ধির পথে ফেরার সুযোগ ছিল।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র এই সিদ্ধান্তকে ‘স্পষ্টতই উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন।
এদিকে, পেন্টাগন বুধবার জানিয়েছে যে মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়নে দেখা গেছে, ইরানের পরমাণু স্থাপনায় চালানো হামলায় দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি এক থেকে দুই বছর পিছিয়ে গেছে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা তাদের কর্মসূচিকে অন্তত এক থেকে দুই বছর পিছিয়ে দিয়েছি। প্রতিরক্ষা বিভাগের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা মূল্যায়নে এটিই দেখা গেছে।’
তিনি পরে যোগ করেন, ‘আমরা মনে করি সময়টা সম্ভবত দুই বছরের কাছাকাছি।’
আইএইএ পরিদর্শকদের ইরানের ঘোষিত পরমাণু স্থানগুলোতে প্রবেশাধিকার থাকলেও, এই স্থগিতাদেশের কারণে তাদের বর্তমান অবস্থা অনিশ্চিত।
রোববার, জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি বলেন, ‘পরিদর্শকদের কাজ স্থগিত করা হয়েছে, তবে তাদের বা আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসির বিরুদ্ধে কোনো হুমকির ঘটনা ঘটেনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘পরিদর্শকরা ইরানে আছেন এবং নিরাপদ আছেন। কিন্তু তাদের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে এবং তারা আর আমাদের স্থাপনাগুলোতে প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন না।’
নতুন আইনে স্থগিতাদেশের পর কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
আইএসএনএ বার্তা সংস্থা আইনপ্রণেতা আলিরেজা সালিমিকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘এখন থেকে পরিদর্শকদের পারমাণবিক স্থাপনায় প্রবেশ করতে হলে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন লাগবে।’
অন্যদিকে, মেহর বার্তা সংস্থা আইনপ্রণেতা হামিদ রেজা হাজী বাবাইকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আইএইএ’র ক্যামেরা ব্যবহারের অনুমতিও বন্ধ করে দেওয়া হবে। যদিও এটি নতুন আইনের আওতায় আছে কি না, তা স্পষ্ট নয়।’
সংসদে বিলটি পাস হওয়ার পর গার্ডিয়ান কাউন্সিল তা অনুমোদন করে এবং প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে স্থগিতাদেশ কার্যকর করেন বলে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে।
জবাবে, ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির ইউরোপীয় স্বাক্ষরকারীদের প্রতি ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া চালু করে ইরানের ওপর জাতিসংঘের সমস্ত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার আহ্বান জানান।
স্ন্যাপব্যাক, যা অক্টোবরে শেষ হওয়ার কথা, সেটি ছিল পরমাণু চুক্তির অংশ যা ট্রাম্প ২০১৮ সালে একতরফা ভাবে প্রত্যাহার করার পর ভেঙে পড়ে। ইরান এক বছর পর তার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে শুরু করে।
ইরানি কর্মকর্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া চালু হলে তারা এনপিটি থেকেও সরে যেতে পারে।
ইসরাইল পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হিসেবে পরিচিত হলেও এনপিটি চুক্তির সদস্য নয়।
জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মার্টিন গিজ বলেন, আইএইএ-এর সঙ্গে ইরানের সহযোগিতা স্থগিত করার পদক্ষেপটি একটি ‘ভয়াবহ সংকেত’।
ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর থেকে তেহরান বারবার আইএইএ’র নীরবতার সমালোচনা করেছে।
১২ জুন জাতিসংঘে গৃহীত একটি প্রস্তাবনায় ইরানকে অসহযোগিতার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। তেহরান বলছে, ওই প্রস্তাবই হামলার জন্য অজুহাত তৈরি করেছিল।
বুধবার ইরানের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আলী মোজাফফারি আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি’র বিরুদ্ধে ‘চক্রান্তমূলক ও বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন’ তৈরি করে ইসরাইলকে হামলার ‘পটভূমি তৈরি’ করে দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন।
ইরান জানিয়েছে, গ্রোসি বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শনের জন্য যেতে চাইলেও তেহরান তা প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ—তাদের মতে, তাতে ‘খারাপ উদ্দেশ্য’ রয়েছে।
ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি আইএইএ প্রধানের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের হুমকির নিন্দা জানিয়েছে।
সোমবার, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই বলেন, সহযোগিতা বন্ধের ভোট জনসাধারণের ‘উদ্বেগ ও ক্ষোভের’ প্রতিফলন।
১২ দিনের যুদ্ধে ইরানের বহু সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। ইসরাইলের ওপর পালটা হামলায় ইরানও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে প্রতিক্রিয়া জানায়।
গত ২২ জুন, ইসরাইলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফোরদো, ইসফাহান এবং নাতাঞ্জের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে নজিরবিহীন হামলা চালায়।
বিচার বিভাগ অনুসারে, এই সংঘাতে ইরানে ৯শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
ইসরাইলের সরকারি তথ্যমতে, ইরানের পালটা হামলায় দেশটিতে ২৮ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি স্বীকার করেছেন, ‘স্থাপনাগুলোতে গুরুতর ক্ষতি হয়েছে।’
তবে সিবিএস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বোমা মেরে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান ধ্বংস করা যায় না।’
ইতালির নাগরিক ও নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিসিও-বিডি’র কর্মকর্তা তাবেলা সিজারকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায়, বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এম এ কাইয়ুমসহ চার জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
আজ ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- তামজিদ আহমেদ ওরফে রুবেল, রাসেল চৌধুরী ও মিনহাজুল আরেফিন ওরফে ভাগনে রাসেল। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরো এক বছরের কারাভোগ করতে হবে।
খালাস পাওয়া অপর তিন আসামি হলেন- কাইয়ুমের ভাই আবদুল মতিন, সোহেল ও শাখাওয়াত হোসেন।
আদালতের পেশকার গোলাম নবী বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশান ৯০ নম্বর সড়কের পশ্চিম প্রান্তে গুলশান অ্যাভিনিউ সংলগ্ন গভর্নর হাউজের দক্ষিণের দেওয়াল ঘেঁষা ফুটপাতে দুর্বৃত্তরা তাবেলা সিজারকে গুলি করে।
ওই সময় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
ওই হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইসিসিও কো-অপারেশনের বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি হেলেন দার বিক বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করা হয়।
২০১৬ সালের ২৮ জুন ঢাকার আদালতে বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এম এ কাইয়ুমসহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক গোলাম রাব্বানী।
মামলায় বিচার চলাকালে ৭০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪২ আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
ব্রাজিলিয়ান কফি বিন, ফরাসি শ্যাম্পেন আর চীনা চা—এই ধরনের পানীয়গুলো সাধারণত মার্কিন রেস্তোরাঁগুলোর লাভের মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন বিশ্বব্যাপী শুল্ক নীতির কারণে গত তিন মাসে আমদানি খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। এতে একদিকে ব্যবসার লাভের মার্জিন কমছে এবং অন্যদিকে ক্রেতাদের জন্য মূল্যবৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের খুব কাছেই অবস্থিত 'ক্লাইডস রেস্টুরেন্ট গ্রুপ', যারা স্থানীয় উৎস থেকে মাংস ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য সংগ্রহে গর্ববোধ করে, তারাও বাধ্য হয়েছে মেনুর দাম বাড়াতে।
প্রতিষ্ঠানটির কর্পোরেট বেভারেজ ডিরেক্টর জন ফিলকিন্স এএফপিকে জানান, ‘বাস্তবতা হল, কিছুটা খরচ আমাদের অতিথিদের দিকেই ঠেলতে হচ্ছে। গ্লাসে ওয়াইন, স্পিরিটস বা খাবারের কিছু আইটেমে ৫০ সেন্ট থেকে ১ ডলার পর্যন্ত দাম বেড়েছে।’
তিনি আরও জানান, কফি ও চায়ের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। সেইসঙ্গে কাগজজাত পণ্য ও খাদ্যসামগ্রীর দামেও ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে।
১৯৬০-এর দশকে ওয়াশিংটনে যাত্রা শুরু করা ক্লাইড’স। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিসহ ও তার আশপাশে এক ডজনের বেশি রেস্তোরাঁ রয়েছে।
তাদের একটি রেস্তোরাঁ হ্যামিল্টন শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত, যেখানে পানীয়ের দাম কিছুটা বেড়েছে।
মালিকপক্ষ দাম বৃদ্ধিকে সীমিত রাখার চেষ্টা করলেও, ফিলকিন্স বলছেন এটি কঠিন হয়ে পড়ছে।
জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফিরে আসার পর ট্রাম্প নতুন করে শুল্ক আরোপ করায় ব্যবসায়ীরা সরবরাহ চেইনের বিঘ্ন এবং অতিরিক্ত ব্যয়ে জর্জরিত।
এপ্রিল মাসে প্রেসিডেন্ট তার সবচেয়ে বিস্তৃত শুল্ক ঘোষণা করেন, যার আওতায় অধিকাংশ বাণিজ্য অংশীদারের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। এটি আগামী সপ্তাহ থেকে আরও উচ্চ হারে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
ফিলকিন্সের মতো নেতারা আগামী বুধবারের দিকে নজর রাখছেন, যেদিন থেকে উঁচু হারে শুল্ক কার্যকর হতে যাচ্ছে।
প্রতিটি বাণিজ্য অংশীদার অনুযায়ী আলাদা হার নির্ধারিত হয়েছে—যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের জন্য হার ২০ শতাংশে উঠবে এবং জাপানের জন্য এটি ২৪ শতাংশে পৌঁছাবে, যদি তারা চুক্তির মাধ্যমে হার কমাতে না পারে।
ফিলকিন্স সতর্ক করে বলেন, শুল্ক দীর্ঘদিন বহাল থাকলে ছোট ব্যবসায়ী, আমদানিকারক ও স্বাধীন রেস্তোরাঁর সংখ্যা কমে যেতে পারে।
তিনি বলেন, আশা করছি, আমরা এমন পর্যায়ে আর শুল্ক দেখব না । রেস্তোরাঁ শিল্প সাধারণত কম নগদ প্রবাহ ও কম মুনাফার উপর চলে।
তিনি বলেন, সাধারণত রেস্তোরাঁর মুনাফার হার এক অঙ্কের মধ্যেই থাকে । উদাহরণস্বরূপ, যদি ওয়াইন বাই দ্য গ্লাসের মুনাফার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হারিয়ে যায়। সেটি বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।
ফিলকিন্স বলেন, ক্লাইড’স কফির জন্য ব্রাজিল ও ইন্দোনেশিয়া থেকে বিন সংগ্রহ করে এবং তাদের চা আসে ভারত ও চীন থেকে। গত ছয় মাসে আমরা কফি ও চায়ের খরচে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি দেখেছি। এর কারণ হচ্ছে, সরবরাহকারী ও পরিবেশকেরা শুধু ১০ শতাংশ শুল্কই নয়, বিনিময় হারজনিত অতিরিক্ত খরচও দিচ্ছে।
চীন থেকে আমদানির ক্ষেত্রে বর্তমানে ৩০ শতাংশ শুল্ক প্রযোজ্য যদিও ওয়াশিংটন ও বেইজিং সাময়িকভাবে একে অপরের উপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক কমিয়েছে।
চুক্তি না হলে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত পণ্যে বুধবার থেকে ৩২ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে, এবং ভারতের জন্য এই হার হবে ২৬ শতাংশ। মদ, বিয়ার ও ওয়াইন ক্ষেত্রে, আমরা যে ওয়াইন আমদানি করি তার বেশিরভাগই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আসে।
ফিলকিন্স বলেন, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন ও পর্তুগাল থেকে আসা পণ্যে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। তবে তার কোম্পানি চেষ্টা করছে যাতে সব বাড়তি খরচ গ্রাহকের ওপর না পড়ে।
বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ভোক্তারা বেশি খরচ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না উল্লেখ করে ফিলকিন্স বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি কোভিড-১৯ মহামারির পর তুলনামূলকভাবে ভালো পারফর্ম করেছে। কারণ, শক্তিশালী শ্রমবাজার ভোক্তাদের খরচ চালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। তবে এখন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান কমছে।
এই গ্রীষ্মে অর্থনীতিবিদরা দেখছেন শুল্ক যদি সামগ্রিক মূল্যস্ফীতিতে অবদান রাখে, তাহলে পরিবারগুলো আরও সতর্ক হয়ে খরচ করবে।
ট্রাম্পের ঘন ঘন শুল্ক ঘোষণা, পরিবর্তন ও স্থগিতাদেশ আর্থিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে এবং ব্যবসাগুলো বিনিয়োগ পরিকল্পনা স্থগিত রাখতে বাধ্য হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ফিলকিন্স শুল্ক কমানোর প্রত্যাশা করছেন।
ফিলকিন্স বলেন, পরবর্তী আট দিনে কী হতে যাচ্ছে তা আমাদের পক্ষে বলা কঠিন। আমরা কেবল অনুমানের ওপর ভিত্তি করে সব সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।’
ইলন মাস্কের কম্পানিগুলোকে ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকি বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মঙ্গলবার এ হুমকি দেন। একসময়ের মিত্র এই দুই ব্যক্তির মধ্যে চলমান বাকযুদ্ধ আরো তীব্র হয়েছে।
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’—একটি ট্যাক্স-কাট ও ব্যয়সংকোচন বিল, যা পাস হয়েছে সিনেটে।
এই বিলের ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য বরাদ্দ সরকারি ভর্তুকি ও করছাড় বাতিল হতে পারে, যা টেসলা দীর্ঘদিন ধরে পেয়ে আসছিল। মাস্ক এই বিলের তীব্র সমালোচনা করেন—এবং সেখান থেকেই ফের জ্বলে ওঠে পুরনো দ্বন্দ্ব।
মাত্র কয়েকদিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আতিথেয়তায় রাজকীয় ভোজে অংশ নিয়েছিলেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক ডাইনিং টেবিলে বসে তারা আলোচনা করেছেন রাজনীতি, অর্থনীতি থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবন পর্যন্ত।
মাস্ক তখন ছিলেন ট্রাম্পের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মানুষদের একজন—সরকারি ব্যয় কমানোর লক্ষ্য নিয়ে গঠিত বিশেষ টাস্কফোর্স ‘ডিওজিই’-এর নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি। তবে সময় বেশি দিন সহনশীল থাকেনি। হঠাৎ করেই বন্ধুত্বে দেখা দিয়েছে ফাটল, আর এখন তা রূপ নিয়েছে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে। বন্ধুত্ব আর আস্থার জায়গা ছেড়ে এখন তারা মুখোমুখি দুই শিবিরে।
দ্বন্দ্ব কেবল রাজনীতি নয়, জড়িয়ে পড়ছে ব্যবসা, ব্যক্তিত্ব, এমনকি সামাজিক মাধ্যমে চরম বাকবিতণ্ডায়। কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না—আর এই টানাপড়েনে ঝুঁকির মুখে পড়েছে মাস্কের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য ও ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশল দুই-ই।
গত সোমবার মাস্ক ফের ট্রাম্পের ট্যাক্স-কাট ও ব্যয়ের বিলের সমালোচনা করেন। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘ও ( ইলন মাস্ক) তার ইভি (ইলেকট্রিক ভেহিকল) ম্যান্ডেট হারাতে যাচ্ছে বলে ক্ষুব্ধ। কিন্তু ও আরো অনেক কিছু হারাতে পারে।’
ইলন মাস্ক অতীতে সরকারি ভর্তুকি তুলে দেওয়ার পক্ষে মত দিলেও, বাস্তবে তার কম্পানি টেসলা এ ধরনের সুবিধা থেকে বহু বছর ধরে লাভবান হয়েছে। ৭ হাজার ৫০০ ডলার মূল্যের ট্যাক্স ক্রেডিটসহ নানা সুবিধা ভোক্তাদের বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রতি আগ্রহী করেছে, যা বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণাধীন। মঙ্গলবার টেসলার শেয়ারমূল্য ৫ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে।
এদিকে মাস্ক হুমকি দিয়েছেন, তিনি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবেন এবং ট্যাক্স বিল সমর্থনকারী আইনপ্রণেতাদের হারাতে অর্থ ব্যয় করবেন। যদিও তিনি সরকারি ব্যয় কমানোর পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট মাস্কের বাজেট ঘাটতির সমালোচনার জবাবে বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির দেখভাল আমিই করব।’
মাস্কের উদ্যোগে গঠিত ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ নামের ব্যয় সংকোচন প্রকল্প থেকেও মে মাসে তিনি নিজেই সরে দাঁড়ান। ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশালে লেখেন, ‘ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি পেয়েছে ইলন মাস্ক।’ তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘রকেট লঞ্চ, স্যাটেলাইট বা ইভি উৎপাদন সব বন্ধ করলে আমেরিকার অনেক টাকা বাঁচবে।’
পরে ট্রাম্প আরো বলেন, ‘ডিওজিই এমন একটা দানব যেটা আবার ইলনকেই খেয়ে ফেলতে পারে।’
জবাবে মাস্ক নিজের প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ লেখেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলছি, সব ভর্তুকি বন্ধ করুন, এখনই।’ তিনি আরো পাল্টা আক্রমণ করতে পারতেন বলেও জানান, তবে আপাতত তা থেকে বিরত থাকার কথাও বলেন।
এই দ্বন্দ্ব মাস্কের ব্যবসা সাম্রাজ্যের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষ করে টেসলা বর্তমানে টেক্সাসের অস্টিনে পরীক্ষাধীন রোবোট্যাক্সি প্রোগ্রামের ওপর বড় বিনিয়োগ করেছে, যার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সরকারি নীতিমালার ওপর।
বিশ্লেষক জিন মানস্টার বলেন, ‘টেসলার বাজারমূল্যের বড় অংশ নির্ভর করছে স্বয়ংচালিত প্রযুক্তির অগ্রগতির ওপর। যদিও তাৎক্ষণিক কোনো পরিবর্তন হবে না, তবে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।’
বুধবার টেসলার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক বিক্রয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা। ইউরোপে বিক্রয় মিশ্র হলেও মাস্কের কট্টর ডানপন্থি অবস্থান অনেক বাজারেই টেসলার জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
ইভি ক্রেডিট বাতিল হলে টেসলার আয় ১.২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে জে.পি মরগান—যা ২০২৪ সালের মোট পরিচালন আয়ের প্রায় ১৭ শতাংশ। ইলেকট্রিফিকেশন কোয়ালিশন, একটি ইভি সমর্থনকারী সংগঠন, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসকে অনুরোধ করেছে যেন তারা সিনেট বিলটি সংশোধন করে।
টেসলার বিনিয়োগকারী গ্যারি ব্ল্যাক জানান, গাড়ি বিক্রি কমে যাওয়ায় তিনি শেয়ার বিক্রি করেছেন এবং ইভি ক্রেডিট বাতিল হলে কম্পানিটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এদিকে স্পেসএক্স এখনো প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলারের সরকারি চুক্তির ওপর নির্ভরশীল। পাশাপাশি, টেসলা বিভিন্ন নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার রেগুলেটরি ক্রেডিট বিক্রি করে এসেছে। এ আয় ছাড়া কম্পানিটি এপ্রিল মাসে লোকসান দেখত।
জুনের শুরুতেই ট্রাম্প মাস্কের সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি দেন। তখন থেকেই দুজনের মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে উত্তেজনা বাড়ে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না ওকে (মাস্ককে) ডিপোর্ট করা হবে কি না। এটা খতিয়ে দেখতে হবে।’
ঢাকা, ২ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের আইন চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান।
বুধবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
তেহরান থেকে এএফপি জানায়, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের আইন অনুমোদন করেছেন মাসউদ পেজেশকিয়ান।
গত মাসে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের পর প্রণীত এই আইন আজ কার্যকর করা হলো।
মন্তব্য