× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী নির্যাতিত এক নারীর শিল্পীসত্ত্বা
google_news print-icon
স্মরণে শ্রদ্ধায় মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী

ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী: নির্যাতিত এক নারীর শিল্পীসত্ত্বা

আজ প্রিয়ভাষিণীর প্রয়াণদিবস
ফেরদৌসী-প্রিয়ভাষিণী-নির্যাতিত-এক-নারীর-শিল্পীসত্ত্বা
ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীই প্রথম নারী যিনি স্বাধীনতা-উত্তরকালে সামাজিক চোখ রাঙানীকে উপেক্ষা করে জনসমক্ষে যুদ্ধকালীন নির্যাতনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। পরবর্তীতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহ-সভানেত্রী হিসেবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে কাজ করেছেন। ২০০১ সালে জাপানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশের পক্ষে অংশ নেন। ২০০৪ সালে রিডার্স ডাইজেস্ট পত্রিকায় তিনি ‘হিরো অব দি মান্থ’ মনোনীত হয়েছিলেন।

সময়টা ১৯৪৭ এর ফেব্রুয়ারি। খুলনা জেলার ডাকবাংলো মোড়ের দৃষ্টিনন্দন এক বাড়ি ‘ফেইরি কুইন’। সেই বাড়িতেই ১৯ তারিখ জন্ম হয় একটি কন্যা সন্তানের। রওশন হাসিনা ও সৈয়দ মাহবুবুল হক’র প্রথম সন্তান। এই কন্যা সন্তানটিই ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী নামে পরবর্তীতে জড়িয়ে যান বাংলাদেশের ইতিহাসের নানান অধ্যায়ের সাথে।

যে ‘ফেইরি কুইন’ বাড়িতে জন্ম প্রিয়ভাষিণীর সে বাড়িটি ছিলো মূলত তাঁর নানার বাড়ি। প্রিয়ভাষিণীর ব্যক্তি ও শিল্পী জীবনে তাঁর নানা বাড়ির প্রভাব অপরিসীম। এই বাড়িটিতেই কেটেছে শৈশব-কৈশোরের মধুর দিনগুলো। প্রকৃতির সাথে মিলেমিশে একাত্ম হবার প্রথম সুযোগটি ঘটে এখানেই। ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর নানা এ্যাডভোকেট আব্দুল হাকিম কংগ্রেসের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৫২ সালে তার নানা সুপ্রিম কোর্টে কাজ করার জন্য চলে আসেন ঢাকায়। প্রিয়ভাষিণীও নানার পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় আসেন। তখন তাঁর বয়স সবে মাত্র পাঁচ বছর। জীবনে প্রথমবারের মতো স্কুলে যাওয়া শুরু করেন। টিকাটুলির ‘নারী শিক্ষা মন্দির’ তার প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের শাসনামলে তার নানা স্পীকার হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। নানা স্পীকার হওয়ার সুবাদে তারা চলে আসেন মিন্টু রোডের এক বাসায়। এবার প্রিয়ভাষিণী ভর্তি হন সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলে। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম তখন ছিলেন সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। পরীক্ষায় ফলাফল যাই হোক না কেন নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত থাকার জন্য প্রিয়ভাষিণী প্রতিবছরই পুরস্কৃত হতেন। লেখাপড়ার প্রতি অদম্য টান বা স্কুলের প্রতি বিশেষ ভালো লাগা এসব কোনও বিষয়ই কিন্তু তাকে রোজ স্কুলে টেনে নিয়ে আসতো না। কারণটি ছিলো সম্পূর্ণ অন্যকিছু। প্রিয়ভাষিণী জাহানারা ইমামকে না দেখে একটা দিনও থাকতে পারতেন না। তাই তাকে দেখার জন্যই প্রতিদিন নিয়ম করে স্কুলে যেতেন তিনি।

স্কুলের পাশাপাশি প্রিয়ভাষিণী পারিবারিকভাবে একটি শিল্প-সাংস্কৃতিক পরিবেশের মাঝে বেড়ে উঠেছেন। সেই সাথে পেয়েছেন খালাদের কঠোর অনুশাসন। বড় মামা নাজিম মাহমুদ নাটক ও গান লিখতেন, সেইসাথে নিজে গান ও আবৃত্তিও করতেন। মেজ মামা সেলিম বুলবুলও গান করতেন। তবলার উপর একটা বইও রয়েছে তাঁর। আর খালারাও ছিলেন আবৃত্তি ও গানে পটু। কাজেই স্বাভাবিকভাবেই তাদের মননশীলতার ছোঁয়া প্রিয়ভাষিণীকেও করেছিলো আলোড়িত। সেই ছোটবেলা থেকেই আবৃত্তি আর গানের প্রতি তাঁর একধরণের ঝোঁক তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ করেই সবকিছু ছেড়ে তাকে চলে আসতে হয়। ১৯৫৬ সালের দিকে নয় বছর বয়সে প্রিয়ভাষিণীকে চলে আসতে হয় বাবার কাছে। তাঁর বাবা তখন খুলনার দৌলতপুর কলেজের অধ্যাপক। যদিও তাঁর দাদার বাড়ি ফরিদপুর শহরের চর কমলাপুর রোডে। কিন্তু দাদার বাড়ির সাথে কখনোই তেমন কোনও সখ্যতা গড়ে ওঠেনি তাঁর। দাদা সৈয়দ জহুরুল হক ছিলেন বড় লাটের ‘কেয়ার টেকার’। দাদার চিন্তাভাবনাও ছিলো তৎকালীন ইউরোপীয় সাহেবদের দ্বারা প্রভাবিত। তিনি বাড়িটিও তৈরি করেছিলেন ইউরোপীয় ঢঙে। বাবার কর্মস্থল দৌলতপুরে এসে তিনি ভর্তি হন ‘বীণাপানি’ পাঠশালায়। পাঠশালার সেই দিনগুলোর স্মৃতি তার জীবনে শেষ পর্যন্ত অম্লান হয়ে ছিলো। পাঠশালার বেঞ্চ আর বাঁশের খুঁটিতে লেখা থাকতো টুকরো টুকরো নানান অর্থহীন কথা। এর সবই পরবর্তীতে তাঁর করা ভাস্কর্য ‘বীনাপানি পাঠশালা’তে ঠাঁই পেয়েছে।

ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী: নির্যাতিত এক নারীর শিল্পীসত্ত্বা
বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত বড় লালটিপে মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী

পারিবারিক ও সামাজিক নানান সমস্যার মধ্যেও অনিয়মিত হিসেবে তিনি খুলনার পাইওনিয়ার গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি এবং গার্লস কলেজ থেকে এইচএসসি ও ডিগ্রি পাস করেন। বাবা মায়ের ১১ সন্তানের মধ্যে প্রিয়ভাষিণীই সবার বড়। বয়সে বড় হওয়ায় মায়ের কাজে সহযোগিতা করতে, ছোট ভাইবোনকে সামলে রাখতে হতো তাকেই। আর এ কারণে প্রায়ই মাটি হয়ে যেত তার বিকেলের খেলা। তবে পুতুল খেলা কামাই হতো না কখনও। পাড়ার মেয়েদের সঙ্গে দুপুরের নির্জন সময়ে মেতে উঠতেন পুতুল খেলায়। বর-কনে সাজিয়ে রীতিমত ঘটা করে দিতেন পুতুলের বিয়ে। প্রিয় পুতুল মঞ্জুরিকাকে নিয়ে অনেক সময় বানিয়ে বানিয়ে গল্পও বলতেন।

খুব ছোটবেলা থেকেই অনেক মহৎ মানুষদের সান্নিধ্যে আসতে পেরেছিলেন তিনি। অম্লান দত্ত, কবি সুফিয়া কামাল, এস.এম.সুলতান থেকে শুরু করে খান সরওয়ার মুর্শিদ, জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী ছাড়াও আরো অনেকের নৈকট্য লাভ করেছেন ছোটবেলাতেই। কিন্তু এতো কিছুর পরও বাবার কঠিন শাসনে হাঁপিয়ে উঠত প্রিয়ভাষিণীর মন। মনে মনে ভাবতেন কবে ষোল বছর পূর্ণ হবে, কবে স্বাধীন হবেন তিনি। এই স্বাধীনতার লোভেই হয়তো মাত্র ষোল বছর বয়সে জীবনে প্রথমবারের মতো ভুল করে ভুল মানুষের প্রেমে পড়ে যান। প্রিয়ভাষিণী নিজেই যার নাম দিয়েছিলেন ‘ষোড়শ সমস্যা’। এই ‘ষোড়শ সমস্যা’য় পড়ে তিনি ওই অল্প বয়সেই পছন্দের মানুষকে বিয়ে করেন। কিন্তু তার স্বামীর ছিলোনা কোনও শিক্ষাগত যোগ্যতা। ‘যে মানুষকে ভালোবাসা যায় তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই বলে তাকে ছেড়ে যাওয়া নৈতিক নয়’ এই ভাবনা থেকে প্রিয়ভাষিণী তাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। পরিবারের খরচ, সন্তানের খরচ সেই সাথে স্বামীর খরচ- সব মিলিয়ে তীব্র অর্থ কষ্টে জীবন চলছিলো তাঁর। তাই প্রিয়ভাষিণী সিদ্ধান্ত নেন চাকুরি করার। ১৯৬৩ সালে খুলনার আঁগা খান স্কুলে মাত্র ৬০ টাকা বেতনে চাকুরি জীবন শুরু করেন। ২০/৩০ টাকা বেতনে তিন/চারটা টিউশনিও জোগাড় করেন। এতকিছুর পরেও সংসারটা বাঁচাতে পারেননি তিনি। ১৯৭১ সালে বিচ্ছেদ হয়ে যায় প্রথম স্বামীর সঙ্গে। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর যুদ্ধের সেই ভয়াবহতার মাঝে একজন নারী হয়েও তিনি সন্তানদের নিয়ে নতুন জীবন শুরু করার কথা ভাবেন। কিন্তু এর মাঝে তার জীবনে নেমে আসে চরম এক বিপর্যয়। ১৯৭১ সালে এদেশের লক্ষ লক্ষ মেয়েদের মতো তিনিও অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন পাক হানাদার বাহিনীর। যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে প্রিয়ভাষিণী আবারও বিয়ে করেন। তার দ্বিতীয় স্বামী আহসান উল্লাহ আহমেদ ছিলেন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা। স্বামী, সন্তান, সংসার সামলিয়ে মাঝে কিছু বছর কর্মবিরতির পর ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তিনি একটানা কাজ করে গেছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। এতোকিছুর মাঝে পরম যত্নে বড় করে তুলেছেন ছয় সন্তানকে। বড় ছেলে কারু তিতাস, মেজ ছেলে কাজী মহম্মদ নাসের, ছোট ছেলে কাজী মহম্মদ শাকের (তূর্য্য)। তিন মেয়ে-রাজেশ্বরী প্রিয়রঞ্জিনী, রত্নেশ্বরী প্রিয়দর্শিনী, ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী।

জীবনের তীব্র বঞ্চনাবোধ থেকেই বের হয়ে এসেছে তাঁর যাবতীয় শিল্পকর্ম বলে মনে করেন প্রিয়ভাষিণী। ১৯৭৭ সালে তিনি নিজেকে নতুন করে ফিরে পেলেন। উপলব্ধি করলেন, কিছু একটা করতে হবে। আর সেকারণেই তিনি সেসময় নিজেকে নানান কাজে ব্যস্ত রাখা শুরু করলেন। কিন্তু হাজার কিছুর ভীড়েও একাকিত্বের একটা বোধ তাকে পেয়ে বসতো মাঝেমধ্যেই। প্রকৃতির মাঝে যে মৌনতা আছে, যে একাকিত্ব আছে তাই আবার বহুকাল পরে তাঁকে টেনে নিল। প্রকৃতির বিষন্নতা, মোহময়তা তাঁর মাঝে নানা ছবি গড়ে তুলতে শুরু করলো। তখনই তিনি ঝরা পাতা, মরা গাছের ডাল আর গাছের গুড়িতে খুঁজে পেলেন নানান অবয়ব। স্বামীর চাকরির কারণে যখন তিনি গ্রামে থাকতেন তখন চারপাশের প্রকৃতিতে যা কিছু পেতেন তাই দিয়ে তিনি সুন্দর করে ঘর সাজাতে চেষ্টা করতেন। তখন ফুলের টবে গাছ লাগাতেন সুন্দর করে। মূলত ঘর ও নিজেকে দামী জিনিসের পরিবর্তে সহজলভ্য জিনিস দিয়ে কীভাবে সাজানো যায় তার সন্ধান থেকেই তাঁর শিল্পচর্চার শুরু। ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্ম দেখে সেসময় অনেকেই মুগ্ধ হতেন। এরকমই এক সময়ে তার জীবনে আরেকবার উদয় হন শিল্পী এস এম সুলতান। শিল্পী সুলতানের সঙ্গে খুব ছোটবেলায় একবার দেখা হয়েছিলো ১৯৫৯ সালে, দৌলতপুর কলেজে। তখনও এস এম সুলতান শিল্পী হিসেবে ততটা সুনাম অর্জন করেননি। বড়ই অদ্ভূতভাবে দেখা হয়েছিলো তাঁর সাথে প্রিয়ভাষিণীর। এরপর দীর্ঘদিন আর তাঁর দেখা পাননি প্রিয়ভাষিণী। ১৯৮৫ সালে আবার তাঁর সাথে যোগাযোগ হয়। একদিন সুলতান তাঁর কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। এস এম সুলতানের অনুপ্রেরণা আর উৎসাহে ভাস্কর হিসেবে প্রিয়ভাষিণীর আত্মপ্রকাশ ঘটে সর্বমহলে। প্রিয়ভাষিণীর হাতে সামান্য এক নারকেলের শুষ্ক খোলা অথবা ঝরে পড়া তরুর শাখা এক দৃষ্টিনন্দন পাখির চেহারায় পরিবর্তিত হয়ে যায়। তার সৃষ্টিশীলতায় নিরেট শাখা-শিকড়-পত্রপল্লব থেকে জেগে ওঠে ক্রোধ, ভালোবাসা, ক্ষোভ, ঘৃণা এবং প্রেম,কখনও মাদার তেরেসা, কখনও ছিন্নমূল, কখনওবা একাত্তর। সুলতানের বিশেষ অনুপ্রেরণা ও স্থানীয় সংগঠন চারুপীঠের উদ্যোগে ১৯৯০ সালে যশোর জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয় তাঁর প্রথম প্রদর্শনী। কেবল বাঁশ আর কাঠের বিভিন্ন আসবাবপত্রের প্রদর্শনী ছিলো সেটা। এরপর ১৯৯৪ সালে ঢাকার বেঙ্গল ফাউন্ডেশনে তার দ্বিতীয় প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে এশিয়ান ও দ্বিবার্ষিকসহ অনেকগুলো প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন তিনি। প্রিয়ভাষিণীর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ভাস্কর্য হলো- কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প, শরণার্থী, অস্তগামী জীবন, পোট্রেট অব আব্রাহাম লিংকন, পোট্রে্ইট অফ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মিছিল, ভালোবাসার দিন, নারী নির্যাতন, মুক্তিযুদ্ধের নানা ইতিহাস ইত্যাদি।

ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীই প্রথম নারী যিনি স্বাধীনতা-উত্তরকালে সামাজিক চোখ রাঙানীকে উপেক্ষা করে জনসমক্ষে যুদ্ধকালীন নির্যাতনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। পরবর্তীতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহ-সভানেত্রী হিসেবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে কাজ করেছেন। ২০০১ সালে জাপানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশের পক্ষে অংশ নেন। ২০০৪ সালে রিডার্স ডাইজেস্ট পত্রিকায় তিনি ‘হিরো অব দি মান্থ’ মনোনীত হয়েছিলেন। এছাড়াও নারী ও মানবাধিকারসহ অন্যান্য বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নানাভাবে তার সংশ্লিষ্টতা ছিলো। শিল্পকলায় অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০১০ সালে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। ২০১৮ সালের ৬ মার্চ ৭১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন দেশবরেণ্য এই ভাস্কর।


লেখক: গবেষক ও গণমাধ্যমকর্মী

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
We do not have any alternative to elections in the first half of February Chief Advisor

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের কোন বিকল্প আমাদের হাতে নেই : প্রধান উপদেষ্টা

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের কোন বিকল্প আমাদের হাতে নেই : প্রধান উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন শুধুমাত্র একটি সাধারণ নির্বাচনই নয়, এটি হচ্ছে একটি ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন যার মাধ্যমে আগামীর বাংলাদেশের পথরেখা নির্ধারিত হবে। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদেরকে অবশ্যই মৌলিক সংস্কারগুলো চূড়ান্ত করে ফেলতে হবে। একই সঙ্গে মাথায় রাখতে হবে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের কোন বিকল্প আমাদের হাতে নেই।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানতম তিনটি মেন্ডেটের অন্যতম হচ্ছে সংস্কার। তাই নির্বাচন ও বিচারের মতোই সমান গুরুত্ব দিয়ে জুলাই সনদের বিষটিকে দেখতে হবে।’

দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব এবং এ সংক্রান্ত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে গঠিত ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটির প্রস্তাবনাগুলোও উপস্থাপন করা হয়।

কমিশন সদস্যরা জানান, খুব শিগগিরই কমিশন তাদের প্রতিবেদন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জমা দেবে। এই বিষয়টিকে সামনে এগিয়ে নিতে আগামী রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারো বৈঠক করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ, কমিশন সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, ড. আসিফ নজরুল, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানও বৈঠকে অংশ নেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Former MP of Bogra including wife

স্ত্রীসহ বগুড়ার সাবেক এমপি রিপুর দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা

স্ত্রীসহ বগুড়ার সাবেক এমপি রিপুর দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা

বগুড়া-৬ আসনের সাবেক এমপি রাগেবুল আহসান রিপু ও তার স্ত্রী জোবাইদা আহসান জবার দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।

বৃহস্পতিবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক ইব্রাহীম মিয়া এ আদেশ দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

আবেদনে বলা হয়, বগুড়া-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি মাধ্যমে শত কোটি টাকা অর্জনের একটি অভিযোগের অনুসন্ধান দুদকে চলমান রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। অভিযোগটির সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে রাগেবুল আহসান ও তার স্ত্রীর বিদেশ যাওয়া রহিত করা প্রয়োজন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Worship Mandap is instructed to ensure maximum security at the place of the pavilion

পূজা মণ্ডপ স্থানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ

পূজা মণ্ডপ স্থানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ

আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে নৌ অধিক্ষেত্রের পূজা মণ্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জনের স্থানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য নৌ পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছে নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি কুসুম দেওয়ান।

বৃহস্পতিবার নৌ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকার সম্মেলন কক্ষে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ‘নৌ অধিক্ষেত্রে পূজা মণ্ডপ, প্রতিমা বিসর্জন ঘাট ও নদীতে প্রতিমা বিসর্জন’ সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি।

সভার শুরুতেই প্রতিমা তৈরির স্থানে পূজা কমিটির করণীয়, নৌ পুলিশের করণীয়, পূজা চলাকালীন পূজা কমিটি ও নৌ পুলিশের করণীয় এবং প্রতিমা বিসর্জনের সময় করণীয় বা বর্জনীয় ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়।

আলোচনায় পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ দুর্গাপূজা শুরু থেকে প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত নৌ পথে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বা অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে নৌ টহল জোরদার করার পরামর্শ দেন এবং নৌ পুলিশের সহযোগিতা কামনা করেন।

নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি কুসুম দেওয়ান বলেন, সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও অপরাধ রোধে নৌ অধিক্ষেত্রে নৌ পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। পূজামণ্ডপের উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রেখে নারী ও শিশুরা নির্বিঘ্নে সেখানে যাতায়াত করতে পারে সেই ব্যাপারে পরামর্শসহ গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পুলিশ সুপারদের উপস্থিত থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে নৌ পুলিশের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ পূজা কমিটির বিভিন্ন পদবির নেতৃবৃন্দ সরাসরি ও ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Water is frozen for 6 months at the Chandanpur school grounds in Singhair

সিংগাইরের চন্দনপুর স্কুল মাঠে ৬ মাসই জমে থাকে পানি

সিংগাইরের চন্দনপুর স্কুল মাঠে ৬ মাসই জমে থাকে পানি

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের চন্দনপুর সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠটি দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার কিংবা মাটি ভরাট না করায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বছরে ৬ মাসই মাঠ জলাবদ্ধতা থাকে। ফলে কোমলমতি শিশু কিশোরেরা খেলাধূলা ও চিত্তবিনোদন হতে বঞ্চিতসহ ভোগান্তি হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজলোর জামির্ত্তা ইউনিয়নের ৪৫ নং চন্দনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ যেন একটি ডোবা নালা পুকুরে পরিনত হয়েছে। স্কুলটি ১৯২২ সালে ৬১ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। স্কুলের ভবনও ঝুঁকিপূর্ণ। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে স্কুল মাঠ ও জমির পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি স্কুলের জমি সংক্রান্ত তথ্য জানেন না বলে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে সহকারী শিক্ষকের কাছ হতে জানাগেছে স্কুল সংলগ্ন পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত ৩৬ শতাংশ। আর বাকী ২৫ শতাংশ জমি রয়েছে বিছিন্ন। স্কুলের সমানে উত্তর দক্ষিণে রয়েছে বাড়ী পূর্ব পাশে রয়েছে ক্লিনিক। দুই পাশের বাড়ী হতে স্কুলের মাঠ নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

এ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেরুন জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই মাঠে পানি জমে থাকে। এতে মাঠের ঘাস ও আগাছা পঁচে দুর্গন্ধ ছড়ায়, চার পাশে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে মশা বংশ বিস্তার করছে বিধায় ডেঁঙ্গু আক্রান্ত নিয়েও আমরা চিন্তিত। দ্রুত বিদ্যালয় মাঠটি মাটি ভরাট সংস্কারের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

স্থানীয় ব্যাংকার আব্দুস সালাম জানান, এ সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। মাঠ ভরাটে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

প্রধান শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার বলেন দূর্ভোগের কথা কি বলব, কত সাংবাদিক ছবি নিল, বড় স্যারদের ভিডিও করে দিলাম কিছুই হলো না। মাঠের পানি নিয়ে মুশকিলে আছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.কামরুল হাসান সোহাগ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে প্রধান শিক্ষক আবেদন দিলে সরকারি বরাদ্দে দ্রুত মাঠ ভরাটের ব্যবস্থা করা হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Self sufficient

জয়পুরহাটে ডিমের খোসা থেকে পাউডার তৈরি করে স্বাবলম্বী

জয়পুরহাটে ডিমের খোসা থেকে পাউডার তৈরি করে স্বাবলম্বী

জয়পুরহাটে ডিমের নষ্ট ও পরিত্যাক্ত খোসা থেকে পাউডার তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন এক উদ্যোক্তা। এই পাউডার ব্যবহার হচ্ছে মাছ, মুরগি, গরুর খাবারের ক্যালসিয়াম হিসেবে ও জমির জৈব সার হিসেবে। জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি-হ্যাচারি থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করে এই পাউডার তৈরি করা হয়। বর্তমানে যা বিক্রি হচ্ছে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে ভাগ্য বদলেছে বেলাল মোল্লার। আর এই পাউডার নিয়ে নানা সম্ভাবনার কথা বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার বেলতলী গ্রামের বাসিন্দা বেলাল মোল্লা ১০-১২ বছর থেকে জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি হ্যাচারি থেকে পরিত্যক্ত ডিমের খোসা সংগ্রহ করতেন। সেই খোসা তিনি বগুড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করতেন। এরপর জানতে পারেন সেই খোসা দিয়ে পাউডার তৈরি করে বিক্রি করা হয়। সেই ভাবনা থেকে ২০২৪ সালে স্থাপন করেন ডিমের খোসা থেকে পাউডার তৈরির কারখানা। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার ছোট কারখানায় প্রতিদিন ডিমের খোসার পাউডার তৈরি করে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করছেন। আর এ পাউডার ব্যবহার হচ্ছে জৈব সার হিসেবে। এছাড়া গরু, মাছ ও মুরগির জোগান দিচ্ছে ক্যালসিয়ামের। উপকার পেয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ডিমের পাউডার নিতে আসছেন কৃষক ও মৎসচাষিরা। ৫০ কেজির পাউডার বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে তার লাভ থাকছে ২০ হাজার টাকা।

বেলাল মোল্লা বলেন, আগে বিভিন্ন হ্যাচারি ও পোল্ট্রি থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করতাম। পাউডারের বিষয়ে জানতে পেরে নিজে কারখানা স্থাপন করেছি। আমার এখানে ৫ জন কাজ করে। এই পাউডারের প্রচুর চাহিদা। বর্তমান জয়পুরহাটসহ আরও ১৫টি জেলায় এই পাউডার সরবরাহ করছি। চাহিদা মতো সরবরাহ দিতে পারছিনা।

কারখানার শ্রমিক আব্দুল খালেক বলেন, ডিসের খোসা পরিষ্কার করে মেশিনের ভেতর দেওয়ার পর তা পাউডার হয়ে বের হয়ে আসে। তারপর এখান থেকে বাজারজাত করা হয়। আমরা এখানে ৫ জন কাজ করি। এখান থেকে যে বেতন পাই তা দিয়ে আমাদের সংসার ভাল মতো চলে।

সদর উপজেলার জামালগঞ্জ এলাকার হাবিব হাসান বলেন, এতদিন জানতাম ডিমের খোসা অপ্রয়োজনীয় জিনিস। কখনো ভাবিনি যে এটা কোন কাজে লাগতে পারে। এখন দেখছি এখান থেকে যে পাউডার তৈরি হচ্ছে তা মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কেউ জমির জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

সদর উপজেলার বেতলী গ্রামের বিপ্লব হোসেন বলেন, ‘আমাদের এলাকাতে ডিমের খোসা থেকে যে পাউডার তৈরি হচ্ছে সেটা অনেক ভালো বিষয়। এমন উদ্যোগে পরিবেশ রক্ষা হচ্ছে তেমন বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।’

কালাই উপজেলার মাদাই গ্রামের মকবুল হোসেন বলেন, আমি একজন মাছ চাষি। এখান থেকে ডিমের পাউডার কিনে দানাদার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে মাছকে খাইয়েছি। এতে দেখছি, মাছ যে পরিমাণ বাড়ার কথা ছিল, তার চেয়ে একটু বেশি বেড়েছে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফসিয়া জাহান বলেন, এই ডিমের খোসার পাউডার অনেক কৃষক জমিতে ব্যবহার করছে। ডিমের খোসাতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার এই জাতীয় উপাদানগুলো পাওয়া যায়। যেটা কোন গাছের খাদ্য উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। এটাকে আমরা যদি গাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে নিশ্চিতভাবে উপকারে আসবে। বেলাল মোল্লা যে পাউডার উৎপাদন করছেন সেটাতে কি পরিমাণ কোনো উপাদান আছে সেটা যদি পরীক্ষা করা হয়, তাহলে জমিতে কি পরিমাণ ব্যবহার করা যাবে তার একটা মাত্রা নির্ধারণ করা যাবে। এ ব্যাপারে অনেক কাজ করার সুযোগ আছে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান বলেন, জয়পুরহাট জেলায় পোল্ট্রি অধ্যষিত এলাকা হওয়ায় এখানকার প্রচুর ডিম বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়া হতো। এখন সেই ডিমের খোসা থেকে বেলাল মোল্লা পাউডার তৈরি করছেন। এই পাউডার মৎস্য, পোল্ট্রি ও কৃষি জমিতে ব্যবহার হচ্ছে। ডিমের খোসায় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাংগানিজ, বোরন, জিংকসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই খোসা ব্যবহারের মাধ্যমে একদিকে পরিবেশ দূষণ থেকে মুক্ত হচ্ছে, অন্যদিকে আমাদের খাদ্যের মিনারেলের ঘাটতি পূরণ হচ্ছে। এই উপাদানগুলো আমাদের আমদানি করতে হয়, যখন আমরা এর উৎপাদন বাড়াতে পারব, তখন আমদানি পরিমাণ কমে আসবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
BFIDC is able to create export potential in the international market Rizwana Hassan

বিএফআইডিসি আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি সম্ভাবনা তৈরি করতে সক্ষম: রিজওয়ানা হাসান

বিএফআইডিসি আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি সম্ভাবনা তৈরি করতে সক্ষম: রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাংলাদেশ ফরেস্ট ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (বিএফআইডিসি) দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও উল্লেখযোগ্য রপ্তানি সম্ভাবনা তৈরি করতে সক্ষম।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর গ্রিনরোডের পানি ভবনে উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘের ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইউএনসিডিএফ)-এর এশিয়া প্যাসিফিক ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন ডিভিশনের রিজিওনাল ইনভেস্টমেন্ট টিম লিড মারিয়া পেরডোমো বৈঠক করেন।

বিএফআইডিসির আধুনিকায়ন নিয়ে আলোচনাকালে তিনি বলেন, তবে পুরনো যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়ার কারণে আধুনিক আসবাবপত্র শিল্পের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

উপদেষ্টা আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন, নকশা উদ্ভাবন, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং যৌথ বিনিয়োগ চুক্তির জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বৈঠকে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বিএফআইডিসি দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও উল্লেখযোগ্য রপ্তানি সম্ভাবনা তৈরি করতে সক্ষম। তবে পুরনো যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়ার কারণে আধুনিক আসবাবপত্র শিল্পের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

তিনি আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন, নকশা উদ্ভাবন, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং যৌথ বিনিয়োগ চুক্তির জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, কৌশলগত অংশীদারিত্ব, সময়োপযোগী সম্পদ সংগ্রহ ও সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে বিএফআইডিসিকে সৃজনশীল ও প্রতিযোগিতামূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা সম্ভব। রাবার চাষের পাশাপাশি বাঁশ ও বেতের মতো বিকল্প উপকরণে বৈচিত্র্য আনা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করলে বনজ সম্পদের ওপর চাপ কমবে। সরকার জাতীয় উন্নয়ন অগ্রাধিকার ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে বিএফআইডিসি আধুনিকায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

মারিয়া পেরডোমো আর্থিক, কারিগরি ও সক্ষমতা উন্নয়নে ইউএনসিডিএফ-এর সহায়তার আশ্বাস দেন এবং জানান, এ প্রক্রিয়ায় ইউএনডিপি ও বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীর সম্পৃক্ততাও নিশ্চিত করা যেতে পারে।

সভায় বিএফআইডিসি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসানসহ ইউএনসিডিএফ ও বিএফআইডিসি-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে প্রকল্প সংক্রান্ত নথি ও সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পর্যালোচনার জন্য ভাগাভাগি এবং সম্পদ সংগ্রহ ও উন্নয়ন সহযোগীদের সম্পৃক্ততা জোরদারে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
New Member of the Press Council Matiur Rahman Chowdhury

প্রেস কাউন্সিলের নতুন সদস্য মতিউর রহমান চৌধুরী

প্রেস কাউন্সিলের নতুন সদস্য মতিউর রহমান চৌধুরী

সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’

বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।

এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।

মন্তব্য

p
উপরে