× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
গান আলাপে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা
google_news print-icon

গান আলাপে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা

গান-আলাপে-কিংবদন্তি-কণ্ঠশিল্পী-রুনা-লায়লা
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গান, এর সংকট ও সমাধানের পাশাপাশি রুনা লায়লার অসামান্য জীবনের নানা বাঁকের কথা উঠে এসেছে এই আলাপে। রুনা লায়লার মুখোমুখি হয়েছিলেন কবি আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির। খুবই আন্তরিক আলাপে তিনি এ সময়ের গানের ভুবন প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখন তো কাটপেস্টের যুগ।' শিল্পীদের প্রসঙ্গে বলেন, 'শুধু নতুন শিল্পী হলেই হবে না, মান থাকতে হবে।'

উপমহাদেশের অন্যান্য চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির মতো, ঢাকাই চলচ্চিত্রে গানের বড় একটা ভূমিকা থাকায় স্বভাবতই ভালো গায়ক বা গায়িকার বড় প্রয়োজন আগেও ছিল, এখনো আছে। যারা দশকের পর দশক ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্লেব্যাক জগতের প্রতিনিধিত্ব করছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম রুনা লায়লা। দেশের সীমানার বাইরে তার খ্যাতি ছড়িয়েছে বৈচিত্র্যময় গায়কির জন্য। গজল, ফোক, ডিসকো, নজরুলগীতিসহ গানের বিভিন্ন ধারায় তার সাড়া জাগানো উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে বহুবার।

গোল্ডেন ডিস্ক, প্লাটিনাম ডিস্ক-জয়ী বিভিন্ন সুপার হিট অ্যালবাম তিনি করেছেন উর্দু আর হিন্দি ভাষায়। টিভি অনুষ্ঠান ও মঞ্চে রুনা লায়লার নিজেকে উপস্থাপন করার স্টাইল এখনো অনেক শিল্পীর অনুকরণীয়। এত কিছুর পরেও নিজেকে প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন কিংবদন্তি এই শিল্পী।

১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্ম নেয়া রুনার শৈশব কেটেছে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানে। বাবার চাকরিসূত্রে সেখানে থাকতে হয়েছিল তাকে। ১৯৬৪ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে লাহোরে জুগনু ছবিতে ‘গুড়িয়াছি মুন্নি মেরি’ গানের মাধ্যমে প্লেব্যাক জগতে পা রাখেন রুনা। ১৯৭০ সালে ঢাকার স্বরলিপি ছবিতে প্রথম বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য গান করেন; গানটি ছিল ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে।’

১৯৭৪ সালে মুম্বাইয়ের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তার অভিষেক হয় এক সে বাড়কার এক ছবির মাধ্যমে। পাকিস্তান আর ভারতে উর্দু, হিন্দি, সিন্ধি, পাঞ্জাবি, পশতু ইত্যাদি ভাষায় প্রচুর গান গাইলেও, ঢাকার চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকেই তিনি বেছে নিয়েছেন তার মূল কর্মক্ষেত্র হিসেবে।

গান আলাপে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা
রুনা লায়লা, ষাটের দশকে


সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গান, এর সংকট ও সমাধানের পাশাপাশি এই শিল্পীর অসামান্য জীবনের নানা বাঁকের কথা উঠে এসেছে এই আলাপে। রুনা লায়লার মুখোমুখি হয়েছিলেন কবি আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির। ১৩ আগস্ট ২০১১ সালে নেয়া এ সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গ ও সমসাময়িকতা বিবেচনায় এখনো প্রাসঙ্গিক।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: ক্ল্যাসিকাল, সেমি-ক্ল্যাসিকাল ও গানের অন্যান্য ধারায় কিন্তু আপনি বিশেষভাবে খ্যাত; তারপরেও চলচ্চিত্রের গানকেই আপনি মূল কর্মক্ষেত্র হিসেবে নিয়েছেন। চলচ্চিত্রের গানের ক্ষেত্রে আপনার ভালো লাগা বা দুর্বলতা কতখানি?

রুনা লায়লা : চলচ্চিত্রের গানে একটা বড় সুবিধা হলো, এখানে সব ধরনের গান করার সুযোগ পাওয়া যায়। আধুনিক গান হোক, রোমান্টিক ধাঁচের হোক, সেমি-ক্ল্যাসিকাল হোক, ডিসকো, পপ, ফোক সবই আছে এর মধ্যে। এর প্রচারও অনেক বেশি। অনেক মানুষই চলচ্চিত্র দেখে বা যারা নাও দেখে রেডিওতে গানগুলো শোনে। আর আমি তো মূলত প্লেব্যাক সিঙ্গারই, ন্যাচারালি এর প্রতি একটা উইকনেস তো থাকবেই।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: আপনি ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ তিন দেশের জন্যই প্লেব্যাক করেছেন। বাংলাদেশ ছাড়া বাকি দুটো দেশে বড় সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আপনি ঢাকার চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকেই বেছে নিয়েছেন। ওই দুই দেশে আপনার অভিজ্ঞতাও যথেষ্ট। ওখানকার আয়োজন, বিশেষ করে সঙ্গীতায়োজনে আপনার বিশেষ কিছু ভালো লাগা নিশ্চয়ই আছে। আপনার এই অভিজ্ঞতাগুলোর কতখানি এখানে কাজে লাগাতে পেরেছেন?

রুনা লায়লা : আসলে তিন দেশে গানের স্টাইল বা ধারা একদম অন্য রকম। আমাদের এখানে মূলত বাংলা গানটাই বেশি হয়, মানে বাংলা স্টাইলেই বেশি হয়। তারপরেও বলব যে, এখানে আমি অনেক ধরনের গানই গাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আর যেহেতু আমি বাংলাদেশের গায়িকা, বাংলাদেশেই থাকি, সেহেতু স্বাভাবিকভাবেই বাংলা ছবিতেই আমার বেশি গান হয়েছে এবং হচ্ছে। আর ইন্ডিয়াতে ওরা হচ্ছে টেকনিক্যালি অনেক অ্যাডভান্সড। একটা গানের মধ্যে অনেক কিছু তারা অ্যাড করতে পারে। এবং অনেক ধরনের, সংখ্যায় অনেক অ্যাক্যুস্টিক ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করা হয়। যা আমাদের এখানে দুঃখজনকভাবে বলতে গেলে একদমই নেই, আর থাকলেও খুবই কম। তো অনেক মিউজিক ডিরেক্টরকে দেখেছি, তারা যেহেতু এখানে সেরকম ইন্সট্রুমেন্ট পায় না, ইন্ডিয়াতে গিয়ে রেকর্ড করে আনে, ট্র্যাক করে আনে।

আর পাকিস্তানের কথা বলতে গেলে, মূলত আমি ওইখানেই আমার ক্যারিয়ার শুরু করেছি। ফিল্মের গান প্রথম আমি ওখানেই গাই। এরপর অনেক বছর, অনেক ধরনের, অনেক সুরকারের সাথে আমি কাজ করেছি। ওই অভিজ্ঞতাগুলো আমি এখানে কাজে লাগাচ্ছি, যেহেতু আমার বেইজটাতে বেশ বৈচিত্র্য রয়েছে। আমি আগেই অনেক ধরনের গান গাওয়ার সুযোগ পেয়েছি পাকিস্তানে, যার কারণে ওই অভিজ্ঞতাটা আমি এখানে কাজে লাগাতে পারছি।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: পাকিস্তানে আপনার চলচ্চিত্রের ক্যারিয়ারের প্রসঙ্গ যখন এলোই, তখন যার সঙ্গীত, যার নাম সবার আগে আসে, তিনি নিসার বাজমি। অনেক ভার্সেটাইল একজন সুরকার। বলা হয়ে থাকে আপনার এবং তার অসাধারণ একটা কেমিস্ট্রি ছিল। উনি ডিসকো, পপ, মডার্ন, ক্ল্যাসিকাল সব ধরনের গান আপনাকে দিয়ে করিয়েছেন চলচ্চিত্রে। ওনার সম্পর্কে জানাটা জরুরি। আমাদের দেশে ওনার সম্পর্কে জানাশোনা একটু কম।

রুনা লায়লা : আসলে নিসার বাজমি সাহেব তো ওনার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ইন্ডিয়াতে। এবং আমি যখন ১৯৭৪ সালে প্রথমবার লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারালালজির গান করতে যাই, লক্ষ্মীকান্তজি আমাকে বললেন যে, নিসার বাজমি সাহেবের সুরে আমার করা কিছু গানের ক্যাসেট ওনাদের কাছে ছিল; লক্ষ্মীকান্তজির কাছে। আমি জিজ্ঞেস করায় উনি বললেন, বাজমি সাহেব তো আমাদের গুরু। উনি যখন এখানে সুর করতেন আমরা তখন মিউজিশিয়ানস ছিলাম, ওনার সাথে অনেক কাজ করেছি। খুব শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করলেন বাজমি সাহেবকে।

আর বাজমি সাহেব বেসিক্যালি এত ধরনের গান আমাকে দিয়ে গাইয়েছেন যে, আমার মনে হয়, আমার ভয়েজটাকে উনিই একমাত্র পুরোপুরি ইউটিলাইজ করেছেন। অনেক সময় আমি নিজেও জানতাম না যে আমি এই ধরনের গান গাইতে পারব, কিন্তু উনি ঠিকই বের করে নিয়েছেন আমার কাছ থেকে। ওনার মধ্যে ওই জিনিসটা ছিল। উনি বুঝতে পারতেন যে, কোন আর্টিস্টকে দিয়ে কোন গান গাওয়ালে সে ভালো করবে।

আমাকে উনি সব সময় বলতেন, তুমি একজন ভার্সেটাইল সিঙ্গার, তুমি সব ধরনের গানই গাইবে। সব ধরনের গানই উনি আমাকে দিয়ে গাইয়েছেন। এবং ওনার অসাধারণ কিছু কম্পোজিশনে আমি গাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। যার জন্যে এখনো ওই গানগুলো মানুষ শুনতে চায়। ‘দিল ধারকে’ যে রকম, তারপরে ‘আপ দিলকি আঞ্জুমান মে’, ‘কাটে না কাটেরে রাতিয়া’। ভিন্ন ধরনের গান কিন্তু সবগুলো, প্রত্যেকটার আলাদা একটা আপিল আছে। উনি যে অর্কেস্ট্রেশন, যে অ্যারেঞ্জমেন্টগুলো করতেন, ওই অ্যারেঞ্জমেন্টগুলো বোধ হয় এই সাব-কন্টিনেন্টে কম হয়েছে। হি ওয়াজ ওয়ান অব দ্য লিডিং মিউজিক ডিরেক্টরস। খুব জিনিয়াস একটা লোক।

অনেক কাজ করেছি আমরা একসঙ্গে। আমাকে এত গান গাওয়ানোর জন্য ওনাকে অনেক প্রবলেম ফেইস করতে হয়েছে। অনেক আর্টিস্ট রাগ করেছেন। কিন্তু আমার উপর ওনার খুব বিশ্বাস ছিল। আমাকে দিয়ে তিনি সব ধরনের গান গাইয়ে ছেড়েছেন। তখন আমার বয়সও অনেক কম ছিল। অনেক সময় আমি বলতাম, বাজমি সাহাব, এই গানটা অনেক কঠিন, আমি পারব না গাইতে। উনি বলতেন, পারবে না কেন? অবশ্যই পারবে। উনি আমার ভিতরের সম্ভাবনাটাকে, অ্যাবিলিটিটাকে চিনতে পেরেছিলেন।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: সেই তুলনায় আমাদের সঙ্গীতায়োজনের সমস্যা কী? বিশেষ করে ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে কিন্তু বৈচিত্র্যের অভাবসহ আরও অনেক ধরনের সংকট দেখা গেছে। ২০০০ সালের দিকে আপনার ঘোষণা মনে হয় পত্রিকায় এসেছিল যে, আপনি আর নিয়মিত গাইবেন না। এরপর কিন্তু সংকটটা আরও বেড়েছে।

রুনা লায়লা : আসলে মাঝখানে আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা, ছবির যে অবস্থা ছিল; খুব খারাপ একটা সময় গেছে। শুধু গানের ক্ষেত্রেই না, আমি বলব ফিল্মের সব ক্ষেত্রেই খুব বাজে একটা সময় গেছে এবং সেটাকে কাটিয়ে উঠতেই অনেক সময় লেগেছে। আস্তে আস্তে এখন ভালো ভালও ছবিও কিছু হচ্ছে, ভালও গানও কিছু বেরোচ্ছে।

আর আমাদের মেইন প্রবলেম হচ্ছে যে, বড় ধরনের টেকনিক্যাল সাপোর্ট নেই; প্লাস আমাদের অ্যাকুস্টিক ইন্সট্রুমেন্টের একটা অভাব আছে। আমার মনে হয় যে, আমাদের অ্যাক্যুস্টিক ইন্সট্রুমেন্টের প্লেয়ার ছিল, কিন্তু তাদের সেভাবে ইউটিলাইজ করা হয় নাই। যার কারণে, আস্তে আস্তে ওই ফ্লোটা মরে গেছে। পুরো গানের সবকিছু একজনই করছে, একজনই সবকিছু বাজিয়ে দিচ্ছে। এভাবে তো আসলে মজাটা থাকে না। ভায়োলিন থাকল, ফ্লুট থাকল, সান্তুর বা সেতার থাকল, সারেঙ্গি থাকল। এসব কিন্তু আর শোনাই যায় না, গেলেও খুব কম। আর এখন কাজ যেটা হচ্ছে সেটা ঝটপট করে ফেলা।

আগে তো আমরা মিউজিক ডিরেক্টরের সাথে একটা গান তিন দিন রিহার্সেল করতাম, তারপরে দুই দিন মিউজিশিয়ানদের সাথে ফুল রিহার্সেল হতো; তারপরে আমরা রেকর্ডিংয়ে যেতাম। রেকর্ডিং লাইভ হতো, ইন্সট্রুমেন্টসহ। একটা গান করতে সারা দিন, অনেক সময় সারা রাতও লেগে যেত। লাইভ ছিল, তাই কেউ একজন ভুল করলে আবার নতুন করে শুরু করতে হতো।

এখন ওই ডেডিকেশনটাও কমে গেছে, কাজের যে একটা ফ্লো ছিল, সেটাও নেই। আমরাও এখন অনেকটা লেজি হয়ে গেছি। একবার একটা লাইন গাইলাম, ঠিক হলো না, আচ্ছা আর একবার করে নিই; বা মুখটা গাইলাম আর দরকার নাই। কাট্‌ অ্যান্ড পেস্ট করে শেষে ওটাই লাগিয়ে দেব। এখন তো কাট অ্যান্ড পেস্টের যুগ।

গান আলাপে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা
সংগীত পরিবেশনরত রুনা লায়লা


আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: কাট অ্যান্ড পেস্ট করলে কিন্তু গানের এসেন্সটা নষ্ট হয়ে যায়। যেমন আপনার ক্ষেত্রে আমরা খেয়াল করেছি, আপনি একটা লাইন শুরুতে যেভাবে গান, পরে আবার অন্য যেকোনো জায়গায় লাইনটা এলে আর ওভাবে গান না। গানের ক্ষেত্রে শেষ করা শুরু করার ধরনটা কিন্তু আলাদা।

রুনা লায়লা: হ্যাঁ। আমি সেইজন্য চেষ্টা করি পুরোটাই করার, পুরো গানটাই আমি গাই। পারতপক্ষে তাই কাট অ্যান্ড পেস্ট করতে দিই না। কাট অ্যান্ড পেস্টে ইমোশনটাও অনেক কমে যায়।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: আপনি, সাবিনা ইয়াসমীন; আপনারা যখন ৬০-এর দশকের শেষে বা ৭০-এ আসলেন, অনেক বড় মাপের গায়ক-গায়িকাদের উত্তরাধিকার হিসেবে। আপনারা কিন্তু জনপ্রিয়তা বা যোগ্যতায় আগের সবাইকে একরকম ছাড়িয়ে গেলেন। আপনাদের পরে এত দিন চলে গেল, একটা শিল্পীও আসে নাই, যারা ছাড়িয়ে যাওয়া দূরে থাক, আপনাদের সাথে তুলনায়ও যেতে পারে। এরকম হওয়ার কারণটা কী?

রুনা লায়লা: এটার কারণ আসলে খুঁজে বের করা খুবই কঠিন, কেন আসেনি। এমনকি ভারতেও, লতাজি, আশাজির পরে ওই মাপের সিঙ্গার তো আর আসেনি। হ্যাঁ, অনেক ভালো সিঙ্গার আছে, কিন্তু ওই জিনিস তো আর হবে না। যে রকম পাকিস্তানে ম্যাডাম নূরজাহানের পরে অনেক সিঙ্গার এসেছে, ভালো গান করেছে কিন্তু তার মতো আর আসেনি। আমার মনে হয় আমাদের এখানেও ব্যাপারটা অনেকটা ওই রকম। আমাদের এখানে সুযোগের অভাবেও অনেক ট্যালেন্ট বেরিয়ে আসতে পারছে না। ওই প্ল্যাটফর্মও পাচ্ছে না। কারণ মিউজিক ডিরেক্টররা নতুনদের গাওয়াতে ভয় পাযন।

আমি অনেক সময় অনেক মিউজিক ডিরেক্টরকে, প্রডিউসারকে বলি নতুনদের দিয়ে গাওয়ান না কেন? আমরা তো অনেককাল গাইলাম। তারা বলে, ‘ম্যাডাম, ওই জিনিস তো হবে না।’ আমার কথা হলো, ওই জিনিস না হোক, ওরা ওদের মতন করে অন্যকিছু দিক। এখন যদি মাথার মধ্যে সব সময় ওইটাই থাকে যে সাবিনা-রুনার মতো হতে হবে, তাহলে তো অন্য কেউ আর আসতে পারবে না। সেই সুযোগটা তো ওদের করে দিতে হবে।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: ক্ল্যাসিকাল গানের ব্যাপারে আসা যাক। পাকিস্তানের চলচ্চিত্রের গানের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য ক্ল্যাসিকাল-বেইজড গানের ব্যবহার। আপনিও পাকিস্তানের চলচ্চিত্রে অনেকগুলো এই ধরনের গান করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশে এই রকম গানের ব্যবহার কম। হাতেগোনা ছবি আনারকলি, মহানায়ক বা রাজলক্ষ্মীশ্রীকান্ত ছাড়া খুব একটা দেখা যায় না। রিসেন্টলি রূপকথা গল্পের ‘কার তরে নিশি জাগো রাই’ গানটি হয়েছে। এ রকম গানের ব্যবহার খুব একটা হয় না কেন?

রুনা লায়লা : বাংলাদেশি ছবিতে ক্ল্যাসিকাল গান যত হয়েছে, তার ম্যাক্সিমাম গাওয়ার সুযোগ আমার হয়েছে। আমার বেইজটা ক্ল্যাসিকালের ছিল। আর পাকিস্তানে থাকাকালীন যেসব গান গেয়েছি, যাদের গান গেয়েছি, ওরা অনেক ক্ল্যাসিকাল বেইজড গান করত। এদেশেও হয়েছে এই রকম গান। কিন্তু অনেক কম। কারণ, এখানে গানের ধারাটাই অন্যরকম। ওখানে যে রকম ক্ল্যাসিকালকে নিয়ে ওরা খেলা করে।

আর এখানে যদি কোনো সিকোয়েন্স থাকে, যদি দরকার পড়ে, তাহলেই কেবল এ ধরনের গান দেয়া হয়। আদারওয়াইজ এখানে সেমি-ক্ল্যাসিকাল গানও হয় না। এবং ‘কার তরে নিশি জাগো রাই’ এই গানটার কথা যখন আমাকে প্রথমে বারী (বারী সিদ্দিকী) বলল, ‘ম্যাডাম, একটা ক্ল্যাসিকাল গান আছে ফিল্মের জন্য, আপনি কি গাইবেন?’ আমি বললাম, ‘গাইব না কেন? শুনি আগে একটু।’ তারপর ও এল বাসায়। গানটা শুনলাম। গানটা তো আমার আগেই শোনা ছিল। বাড়ে গুলাম আলী সাহাবের গাওয়া ‘বাজুবন্দ খুর খুল যায়’ ছিল ওই সুরের। শুনিয়ে ও আমাকে জিজ্ঞেস করল গাইবে নাকি। বললাম, অবশ্যই গাইব। সাংঘাতিক ভালো গান! কঠিন গান! খুবই কঠিন।

যাই হোক, ভালোয় ভালোয় পার করা গেল। বারী একটা কথা বলল, ‘এই গানটা, ম্যাডাম আপনি যদি বলতেন গাইবেন না, তাহলে এখানে আর হতো না। আমাকে ইন্ডিয়াতে যেতে হতো।’ এই গানটা আমি গেয়েছিও একটু অন্য স্টাইলে। একদম ঠুমরী, টপ্পা গানগুলোর গায়কি যে রকম হয়, সেই রকম করে গাওয়ার চেষ্টা করেছি।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: ১৯৭৭ সালে যখন প্রথম স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হলো, তখন বলা চলে, বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের গানের জন্য একটা বড় রকমের স্বীকৃতি এসেছিল। একজন প্লেব্যাক গায়িকাকে কাজী নজরুল ইসলাম, জয়নুল আবেদিন বা মাওলানা ভাসানীর মতো মানুষদের সাথে পুরস্কৃত করা হলো। কিন্তু এই ধরনের স্বীকৃতি আপনার ক্ষেত্রে বা অন্য কারও ক্ষেত্রে কিন্তু পরে গিয়ে আর কন্টিনিউ করেনি। একুশে পদক কিন্তু আপনাকে এখনো দেয়নি। তো এই ব্যাপারগুলো চলচ্চিত্রের গানের জন্য কতখানি, আপনি কীভাবে দেখেন?

রুনা লায়লা : আমি একটা জিনিস বলব যে, স্বাধীনতা পুরস্কার আমাকে দিয়েছে বিজ্ঞ লোকদের সঙ্গে, অনেক বড় মাপের মানুষদের সাথে। তখন আমি বয়সেও ছোট বা এক্সপেরিয়েন্সেও ছোট। তবু কন্ট্রিবিউশনের জন্যে, এটা মাথায় রেখে হয়তো দিয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে ওর সাথে যে সম্মানটা আসা উচিত ছিল, যেমন ভিআইপি পাওয়া, ওইটা কিন্তু আমি এখনো পাইনি। ভিআইপি স্ট্যাটাসও পাইনি, সিআইপি স্ট্যাটাসও পাইনি।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে ট্রাভেল করি, আসি-যাই। আমাকে সাধারণ মানুষ অনেক সম্মান দেয়, শ্রদ্ধা করে। কিন্তু কোনো সরকারের কাছ থেকেই ওই স্বীকৃতিটা, পদকের সাথে যেই স্বীকৃতি আসার কথা, সেটা আসেনি। এটা আমার একটা বিরাট দুঃখ।

আমার মনে হয়, আমি যতটুকুই করতে পেরেছি আমার দেশের জন্য, আমার দেশের গানকে নিয়ে বাইরের দেশে যতটা পারি রিপ্রেজেন্ট করতে, সেটুকু আমি করেছি। স্ট্যাটাসটা আদৌ কখনো আসবে কি না জানি না। এটা একটা বিরাট দুঃখ আমার মনে। আমরা দেখি, নতুন, ইয়াং অনেক ক্রিকেটারও ভিআইপি পাচ্ছে। কিন্তু অনেক জাতীয় পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পদক বা একুশে পদক যারা পেয়েছেন, তারা অনেকেই কিন্তু এ দিক থেকে পিছিয়ে আছেন। তাদেরকে কোনোরকম সম্মানজনক স্বীকৃতি কিন্তু কোনো সরকারই দেয়নি। এটা খুব দুঃখজনক।

আর এরপরে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির গানের জগত থেকে আর কাকে দিয়েছে বা না দিলে কেন দেয় নি- এটা আমি বলতে পারব না। যারা কমিটিতে আছেন, তারাই ঠিক করেন কাদের দেবেন।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: আপনি যখন চলচ্চিত্রে গান করেন, আপনার একটা বিশেষ খ্যাতি আছে; তা হলো গানের, সুরের বৈচিত্র্য। বিভিন্ন রকম ভয়েজে আপনি গান করতে পারেন। এটা কি বিশেষ কোনো স্ট্র্যাটেজি? আপনার গলা মাঝে মাঝে যার উপর পিকচারাইজড হচ্ছে, তার সাথে এত বেশি মিলে যায় যে মনে হয় ওই অভিনেত্রী নিজেই গাচ্ছেন। আপনি কি পারসোনালি অভিনেত্রীদের চিনে জেনে তারপর গান করেন?

রুনা লায়লা : আসলে পাকিস্তানে থাকতে, ইন্ডিয়াতে বা এখানেও আমি যেকোনো গান গাওয়ার আগে জিজ্ঞেস করে নিই, গানটা কার উপরে পিকচারাইজড হবে। শবনম, রানীর উপরে হবে, না আমাদের এখানে শাবনূর, মৌসুমী বা ববিতার উপরে হবে? কার উপরে যাবে? তার কথা চিন্তা করে, সে কী ধরনের এক্সপ্রেশন দেবে বা তার মুভমেন্ট কেমন হবে এসব মাথায় রেখে আমি গানটা ওই স্টাইলেই করি। আর চেষ্টা করি, গানের মধ্যে নব্বই ভাগ এক্সপ্রেশন দিয়ে দিতে, আর বাকি দশ ভাগ ওদের নিজেদের দিতে হয়। এতে করে ওদের খাটুনিটাও কমে যায়।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: কিন্তু অনেক সময় এত বেশি মিলে যায় যে অবাক লাগে, প্রিয়শত্রু ছবিতে দিতির লিপে; ‘চিঠি কেন আসে না’ বা ‘তুমি আজকে যাও বন্ধু’ এসব গানের ভিডিও দেখলে মনে হয় ভয়েজটা দিতির নিজের! কিংবা মৌসুমীর ‘কাল তো ছিলাম ভালো’…

রুনা লায়লা : মৌসুমী, শাবনূর সবার জন্যই তো গেয়েছি। কিন্তু সব থেকে মজার ব্যাপার যেটা, সেটা হলো, মৌসুমী বলো, শাবনূর বলো, পপি সবারই কিন্তু প্রথম ছবির প্রথম গানটি কিন্তু আমার গাওয়া।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: দিতি, শাবনাজ এদেরও। ‘বন্ধুর বাঁশি বাজেরে, আমার কানে কানে’!

রুনা লায়লা : হ্যাঁ।

গান আলাপে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা
সাম্প্রতিক সময়ে মঞ্চে রুনা লায়লা

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: পুরোনো গানের রিমেক বা রিমিক্স প্রসঙ্গে আসি। যেসব পুরোনো গান রিমেক করে বা রিমিক্স করে, আবার বাজারে আনা হয়। দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রেই নতুন গানের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়। এতবার শোনা চলচ্চিত্রের সেইসব গানের এত গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তি আসলে কী?

রুনা লায়লা: এটা কিন্তু শুধু বাংলাদেশেই হয়; এমন না। ইন্ডিয়ার গানগুলো দ্যাখো, সেই পুরোনো গানগুলোই কিন্তু আসছে ঘুরে-ফিরে। ইয়াং জেনারেশন নিয়ে যতগুলো কম্পিটিশন হচ্ছে, সেই লতাজি, আশাজির, মুকেশজি, কিশোরদার, রাফি সাহাবের গানগুলোই সবাই গাইছে এবং সেগুলো এখনো অনেক পপুলার গান! আগে, আমার মনে হয়, কম্পোজিশন সবকিছু মিলিয়ে পুরো জিনিসটাই এমনভাবে পরিবেশন করা হতো যে যুগের পর যুগ চলছে। এবং আরও চলবে। দেখবে তোমার পরে যারা আসবে তারাও ঐ গানগুলোকে নেবে।

এখানে আমার একটা কথা বলার আছে, গানগুলো যে রিমেক, রিমিক্স হচ্ছে এগুলো যদি অরিজিনাল আর্টিস্টকে দিয়েই আবার করানো হয়, আমার মনে হয় অনেক ভালো হতো। অনেক সময় রিমেক, রিমিক্স করতে গিয়ে গানগুলো ঠিক ওই রকম হয়ও না। আবার অনেক কিছু ওর মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। যেগুলো শুনতেও ভালো লাগে না। অমনই নাকি চলে! তারপরেও আমার মত হলো, অরিজিনাল আর্টিস্টকে দিয়ে গাওয়াতে পারলেই সবচেয়ে ভালো।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: গানের কথায়, সঙ্গীতায়োজন নিয়ে আপনি হয়তো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। শিল্পীসহ নানা সংকট নিয়ে বা এগুলোর সমাধান নিয়ে চিন্তা নিশ্চয়ই আপনার মাথাতেও এসেছে।

গান আলাপে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা
সাক্ষাৎকারের পর কবি আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির এর সাথে রুনা লায়লা

রুনা লায়লা: এক নম্বর কথা হলো, সবার আগে যেটা দরকার, নতুন শিল্পীদের সুযোগ দিতেই হবে। আমাদের ঘরে নতুন শিল্পী তৈরি রাখতেই হবে। এছাড়া কোনো উপায় নেই। শুধু নতুন শিল্পী হলেই হবে না, মান থাকতে হবে। ভালো শিল্পী তৈরি করতে হবে। অনেক প্রতিভাবান ছেলেমেয়ে, অনেক ক্ষেত্রেই সুযোগ পাচ্ছে না। সুযোগের অভাবে অনেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। এদেরকে যদি সবাই মিলে সুন্দর সুযোগ করে দিই আমরা, আমার মনে হয়, আরও অনেক ভালো শিল্পী আমাদের এখানে হবে। অনেকে আবার মনে করতে পারে আগের জনদের মতো তো হবে না। আসলে কেউ কারও জায়গাটা নিতে পারে না, যার যার স্থানে সে সে আছে। কেউ আর রুনা-সাবিনা হতে পারবে না।

যে যার নিজস্ব একটা পজিশন গড়ে নিয়েছে। এরপর যারা আসবে, তারা তাদের মতো পজিশন করে নেবে। এর জন্য প্রচুর সাধনা, ডেডিকেশন দরকার। সত্যিকার অর্থে গান ভালোবাসতে হবে। আমরা এত বছর পার করে এসে এখন মোটামুটি একটা পজিশনে এসে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু এর পিছনে যে কত খাটুনি, কত পরিশ্রম, কত ত্যাগ! কতকিছু করে তারপর আমরা এখানে এসেছি। তো এই জিনিসটা যারা নতুন আসছে তাদের মাথায় থাকা দরকার। তাদের আমি বলব যে, টাকা অনেক আসবে জীবনে। কিন্তু টাকাটাই বড় না।

ইচ্ছা যদি থাকে, যদি সাধনা থাকে, সত্যিকার অর্থে গানবাজনা মনে এনে গান করলে তারপরে একসময় কাজ পাবে। কাজ পেলে টাকাও আসবে। আর আমি টাকার জন্য গাইব, এটা মাথায় রেখে যদি নামি গানের জগতে, তাহলে কিন্তু হবে না। তবে এখন বেশির ভাগেরই আমি এই প্রবণতা দেখি। আমি কাউকে ছোট করার জন্য বলছি না বা সবার বেলায় বলব না। কিন্তু বেশির ভাগই চিন্তা করে কটা শো করা যায়, কত টাকা আমি পাচ্ছি। একজন তরুণ শিল্পী একদিন আমার সাথে গান গাইছিল, তাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘তুমি গান শিখ?’

বলে, ‘না।’

বললাম, ‘রেওয়াজ করো?’

বলল, ‘না।’

বলি, ‘তাহলে তুমি গাও কী করে?’

বলে, ‘যা জানি তাই গাই। এমনিতেই আমি শো করছি, সুযোগ পাচ্ছি, গান শেখার আর দরকার তেমন পড়ে না।’

এ রকম মানসিকতা হলে তা খুবই হতাশার ব্যাপার!

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: প্রিয় শিল্পী, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

রুনা লায়লা: তোমাকেও অনেক ধন্যবাদ।

কবি আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদিরের জন্ম সিরাজগঞ্জে, ১৯৯০ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা শেষ করে এখন শিক্ষকতা করছেন ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে। দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতায় ছোটগল্প ও কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ ২০১০ সালে । এখন পর্যন্ত প্রকাশিত কবিতার বই দুইটা, অন্য গাঙের গান, সমুদ্রসমান (২০১৬) ও যুদ্ধ যুদ্ধ রুদ্ধ দিন (২০২০)। প্রথম গল্প সংকলন বছরের দীর্ঘতম রাত প্রকাশিত হয়েছে ২০১৯ সালে।

আরও পড়ুন:
মধ্যরাতের গান ছুঁলো কোটি প্রাণ
অর্থহীনের সুমন সংকটাপন্ন নন: ম্যানেজার
মারা গেছেন ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’ গানের সুরকার
কণ্ঠশিল্পী আসিফের শুদ্ধি অভিযান
‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’ গীতিকারে পরিবর্তন

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Live to appeal hearing next Sunday in the August 28 grenade attack case

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল আগামী রোববার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আজ জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য আপিলটি ছিলো। কিন্তু এই মামলায় হাইকোর্টের অথর জাজ বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান আজ আপিল বিভাগের বেঞ্চে ছিলেন।

নিয়ম অনুযায়ী হাইকোর্টে রায় দানকারী বিচারপতি একই মামলা আপিল বেঞ্চে শুনানি গ্রহণ করতে পারেন না।

এজন্য আগামী রোববার পুনর্গঠিত বেঞ্চে আপিলটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে। আদালত বিষয়টিতে আজ নট টুডে আদেশ দিয়েছেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার।

তবে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে।

দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন।

আলোচিত ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজি’র সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ।

বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সে রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামীরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।

এছাড়া, বিচারিক আদালতের রায়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআই-এর মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপি’র সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডি’র সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ ও সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এই মামলার আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

বিচারিক আদালতে এই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলছিল।

তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামীকে খালাস দিয়ে রায় দেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

মন্তব্য

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প প্রতীকী ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

ভূমিকম্পটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে অনুভূত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

এ ভূমিকম্পে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:
জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
চীনে ভূমিকম্পে নিহত ৫৩, আহত ৬২
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
বছরের শুরুতেই ভূমিকম্পে কাঁপল সিলেট

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The United States will pay and 1 million for the Rohingya

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: বাসস
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত বৃহত্তম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সাহায্য কমে যাওয়ার ফলে সংকট আরও গভীর হওয়ার উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন (সাত কোটি ৩০ লাখ) ডলার নতুন আর্থিক সহায়তা দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে।

‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

সিনহুয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অংশ হিসেবে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট এবং ফেডারেল ব্যয় ব্যাপকভাবে হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু অংশ ভেঙে ফেলার বিস্তৃত প্রচেষ্টার মধ্যেই এ অনুদান দেওয়া হলো।

জাতিসংঘের দুটি সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তহবিলের ঘাটতি গত আট বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।

রোহিঙ্গারা আশঙ্কা করছেন, তহবিল হ্রাসের ফলে ক্ষুধা পরিস্থিতির অবনতি হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা এবং জ্বালানি হ্রাস পাবে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বড় সহায়তা প্রদানকারী দেশ ছিল। প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে আসছে দেশটি। কিন্তু জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর সাম্প্রতিক তহবিল স্থগিত করার ফলে কমপক্ষে পাঁচটি হাসপাতাল তাদের সেবা কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।

ট্রাম্প ও বিলিয়নেয়ার মিত্র ইলন মাস্ক প্রধান মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এর অবশিষ্টাংশগুলোকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করেছেন। শত শত কর্মী এবং ঠিকাদারকে বরখাস্ত করেছেন এবং কোটি কোটি ডলারের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন, যার ওপর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নির্ভরশীল।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং এ ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তিসঙ্গত প্রশাসনিক খরচ মওকুফ করেছিলেন।

ওয়াশিংটন টাইমস জানায়, এ মাসের শুরুতে ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার তত্ত্বাবধানকারী ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যায়ক্রমে সাহায্য বন্ধের প্রস্তাব করেছিলেন।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে।

কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন শিবিরের বাসিন্দারা এখন জনপ্রতি মাসিক ১২ ডলার করে খাদ্য বরাদ্দ পাবেন, যা আগের ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কম।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডব্লিউএফপি একটি চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানিয়েছে, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।’

তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১৩ ডলার করে পাবে, যা কক্সবাজারের তুলনায় এক ডলার বেশি।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমানোর পরিকল্পনা ডব্লিউএফপি পূর্বে জানানোর পর এ পরিবর্তন এসেছে।

গত ৫ মার্চ বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশন ডব্লিউএফপি থেকে একটি চিঠি পায়, যেখানে বলা হয়, তহবিল সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করা হবে।

চিঠিতে শরণার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।

তার সফরের সময় তাকে ছয় ডলারে রোহিঙ্গারা কী খাবার পাবে তার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করা হয়েছিল। সে সময় অপর্যাপ্ত পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন:
ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৯ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
ঋণের সুদহার কমাতে ইতিবাচক সাড়া চীনের, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার আশ্বাস
২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ
রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: উদ্ধার ২৫, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা যুক্তরাজ্য ও জার্মানির

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The government is working to implement the demands of the workers Home Ministry

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো। ফাইল ছবি
বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার আন্তরিক ও একমত বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক দাবির নামে গার্মেন্টস শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি, অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ, নৈরাজ্য ও সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং তা কখনোই মেনে নেয়া হবে না।

‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সরকার তা কঠোরভাবে প্রতিহত করবে। গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানায় সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখা এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সরকার এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ উভয়ের সহযোগিতা কামনা করছে।’

আরও পড়ুন:
গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, ছুটির পর চালু বিভিন্ন কারখানা
বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস, রেলের অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
ঐতিহ্য ও আভিজাত্যে মোড়া লা রিভের ঈদ কালেকশন
টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ধর্মঘট টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিকদের

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Environment adviser

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: ইউএনবি
তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ মোকাবিলায় কার্যকর আঞ্চলিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের বায়ুদূষণের ৩০-৩৫ শতাংশ আসে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে। তাই এ সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক আলোচনার গণ্ডি পেরিয়ে বাস্তব পদক্ষেপ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জরুরি।

তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

কলম্বিয়ার কার্টাগেনায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর দ্বিতীয় বৈশ্বিক সম্মেলনের বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া সাইড ইভেন্টে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশের বায়ুদূষণ সমস্যা, বিশেষ করে ঢাকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন।

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের বহুমাত্রিক বায়ুদূষণ সমস্যা মোকাবিলায় বায়ুমান নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা ডব্লিউএইচওর অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ আইনি বিধিমালায় দূষণকারী খাতগুলোর জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ২০২৪ সালে চূড়ান্ত হওয়া জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পিছিয়ে ছিল, তবে এখন তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো মানুষের দূষণজনিত ঝুঁকি কমানো ও পরিষ্কার বায়ুর দিন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

পরিবেশ উপদেষ্টা আরও জানান, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে শিগগিরই বাস্তবায়ন শুরু হবে। এ প্রকল্প নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করা, আইন প্রয়োগ জোরদার করা, শিল্প কারখানায় দূষণ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং গণপরিবহন খাত আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে।

তিনি ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোকে ইটভাটামুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনার কথা জানান, যেখানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকবে।

এ ছাড়া ২০২৫ সালের মে থেকে পুরনো বাস ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে, যা পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ ধুলাবালি দূষণ রোধে ঢাকা শহরের খোলা সড়কগুলোতে সবুজায়নের উদ্যোগ এবং রাস্তা পরিস্কারে আরও শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান।

উপদেষ্টা জানান, অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানের ফলে এরই মধ্যে বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এ অগ্রগতি ধরে রাখতে কঠোর নজরদারি ও খাতগুলোর আধুনিকায়ন জরুরি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ মানুষ বায়ুদূষণের কারণে মারা যায় এবং ঢাকার মতো দূষিত শহরগুলোতে মানুষের গড় আয়ু ৫-৭ বছর কমে যাচ্ছে। এই সংকট আমাদের সবার জন্য, আমাদের শিশু, বাবা-মা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি। নিষ্ক্রিয়তার মূল্য অনেক বেশি। আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী। কারণ আমি বিশ্বাস করি, এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রযুক্তি ও বিকল্প ব্যবস্থা আমাদের হাতে রয়েছে, শুধু প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়ন দরকার।

‘বায়ুদূষণ শুধুই পরিবেশগত ইস্যু নয়, এটি মানবিক সংকট।’

সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি, পরিবেশ ও জ্বালানি খাতের নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, গবেষক, স্থানীয় প্রশাসন, পরিবহন ও শিল্প খাতের বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

তারা দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ রোধে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

আরও পড়ুন:
‘অস্বাস্থ্যকর বাতাস’ নিয়ে বিশ্বে পঞ্চম দূষিত শহর ঢাকা
বায়ুদূষণে বিশ্বে প্রতিদিন ২ হাজার শিশুর মৃত্যু: প্রতিবেদন
ছুটির দিনে বাতাসের নিম্ন মানে সপ্তম ঢাকা
সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ঢাকার বাতাস
ছুটির দিনে মানে উন্নতি, তবু ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Holy Lilatul Kadar today

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ প্রতীকী ছবি
মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর বৃহস্পতিবার। এর অর্থ ‘অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত’ বা ‘পবিত্র রজনী’।

আজ সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হবে কদরের রজনী।

যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সারা দেশে রাতটি পালন করা হবে।

মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

এ রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষণ করা হয়। নির্ধারণ করা হয় মানবজাতির ভাগ্য।

৬১০ সালে কদরের রাতেই মক্কার নূর পর্বতের হেরা গুহায় ধ্যানরত মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) কাছে সর্বপ্রথম সুরা আলাকের পাঁচ আয়াত নাজিল হয়। এরপর আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর বহনকৃত ওহির মাধ্যমে পরবর্তী ২৩ বছর ধরে মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা এবং ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট আয়াত আকারে বিভিন্ন সুরা নাজিল করা হয়।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে তুমি কি জানো? কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতারা ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।

‘শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা আল- কদর, আয়াত ১-৫)।’

হাদিসে বর্ণিত আছে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন এবং বলতেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ ১০ রাতে লাইলাতুল কদর সন্ধান করো (বুখারি ও মুসলিম)।’

মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় পবিত্র রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটিয়ে দেন। কামনা করেন মহান রবের অসীম রহমত, নাজাত, বরকত ও মাগফিরাত।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ রাত থেকে পরের দিন ভোররাত পর্যন্ত মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও আখেরি মোনাজাত করবেন তারা।

এই উপলক্ষে শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে রাতব্যাপী ওয়াজ মাহফিল, ধর্মীয় বয়ান ও আখেরি মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।

এ ছাড়া দেশের সব মসজিদেই তারাবির নামাজের পর থেকে ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন থাকবে।

পবিত্র লাইলাতুল কদর/শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিওগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।

এ ছাড়া সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The chief adviser to create a clear roadmap to build a prosperous Asia

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার চীনের হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে বৃহস্পতিবার বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

এশীয় দেশগুলোকে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও যৌথ সমৃদ্ধির জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চীনের হাইনানে বৃহস্পতিবার বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

আর্থিক সহযোগিতা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই একটি টেকসই অর্থায়ন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি) ও অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোর এ প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন নির্ভরযোগ্য তহবিল দরকার যা আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করবে।’

বাণিজ্য সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এশিয়া এখনও বিশ্বের অন্যতম কম সংযুক্ত অঞ্চল।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এ দুর্বল সংযুক্তি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের অবশ্যই বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য দ্রুত কাজ করতে হবে।’

খাদ্য ও কৃষি সহযোগিতা বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এশীয় দেশগুলোকে অবশ্যই সম্পদ-সাশ্রয়ী কৃষিকে উৎসাহিত এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে। টেকসই প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষি সমাধান ও জলবায়ুবান্ধব চাষাবাদের ক্ষেত্রে উদ্ভাবন বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‌এশিয়াকে অবশ্যই একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে, যা পুনর্গঠনমূলক, সমবণ্টনমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।

তিনি বলেন,‘আমাদের জ্ঞান, তথ্য ভাগ করে নিতে হবে এবং প্রযুক্তি ইনকিউবেশন ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করতে হবে। ডিজিটাল সমাধানে সহযোগিতা আমাদের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিশেষে বলব আমাদের সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে মেধা সম্পদ ও যুবশক্তিকে রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করতে হবে—একটি আত্মরক্ষা ও আত্মস্থায়ী সমাজ। আমাদের শূন্য-বর্জ্যের জীবনধারার ওপর ভিত্তি করে একটি পাল্টা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ভোগ সীমিত রাখতে হবে মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে।

‘আমাদের অর্থনীতিকে সামাজিক ব্যবসার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে হবে, যা ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক কাঠামো হিসেবে উদ্ভাসিত হবে, যেখানে উদ্ভাবন, লক্ষ্য ও দায়িত্ববোধ একীভূত থাকবে।’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বোয়াও ফোরাম ও অন্যান্য অনুরূপ উদ্যোগগুলোকে যুবসমাজ ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে হবে, যেন আগামী প্রজন্মের জন্য এশিয়াকে আরও উন্নত করা যায়।

আরও পড়ুন:
চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা প্রধান উপদেষ্টার
স্টারলিংকের ইন্টারনেট বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
দেশবিরোধী আন্দোলনে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা

মন্তব্য

p
উপরে