× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
গান আলাপে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা
google_news print-icon

গান আলাপে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা

গান-আলাপে-কিংবদন্তি-কণ্ঠশিল্পী-রুনা-লায়লা
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গান, এর সংকট ও সমাধানের পাশাপাশি রুনা লায়লার অসামান্য জীবনের নানা বাঁকের কথা উঠে এসেছে এই আলাপে। রুনা লায়লার মুখোমুখি হয়েছিলেন কবি আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির। খুবই আন্তরিক আলাপে তিনি এ সময়ের গানের ভুবন প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখন তো কাটপেস্টের যুগ।' শিল্পীদের প্রসঙ্গে বলেন, 'শুধু নতুন শিল্পী হলেই হবে না, মান থাকতে হবে।'

উপমহাদেশের অন্যান্য চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির মতো, ঢাকাই চলচ্চিত্রে গানের বড় একটা ভূমিকা থাকায় স্বভাবতই ভালো গায়ক বা গায়িকার বড় প্রয়োজন আগেও ছিল, এখনো আছে। যারা দশকের পর দশক ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্লেব্যাক জগতের প্রতিনিধিত্ব করছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম রুনা লায়লা। দেশের সীমানার বাইরে তার খ্যাতি ছড়িয়েছে বৈচিত্র্যময় গায়কির জন্য। গজল, ফোক, ডিসকো, নজরুলগীতিসহ গানের বিভিন্ন ধারায় তার সাড়া জাগানো উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে বহুবার।

গোল্ডেন ডিস্ক, প্লাটিনাম ডিস্ক-জয়ী বিভিন্ন সুপার হিট অ্যালবাম তিনি করেছেন উর্দু আর হিন্দি ভাষায়। টিভি অনুষ্ঠান ও মঞ্চে রুনা লায়লার নিজেকে উপস্থাপন করার স্টাইল এখনো অনেক শিল্পীর অনুকরণীয়। এত কিছুর পরেও নিজেকে প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন কিংবদন্তি এই শিল্পী।

১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্ম নেয়া রুনার শৈশব কেটেছে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানে। বাবার চাকরিসূত্রে সেখানে থাকতে হয়েছিল তাকে। ১৯৬৪ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে লাহোরে জুগনু ছবিতে ‘গুড়িয়াছি মুন্নি মেরি’ গানের মাধ্যমে প্লেব্যাক জগতে পা রাখেন রুনা। ১৯৭০ সালে ঢাকার স্বরলিপি ছবিতে প্রথম বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য গান করেন; গানটি ছিল ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে।’

১৯৭৪ সালে মুম্বাইয়ের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তার অভিষেক হয় এক সে বাড়কার এক ছবির মাধ্যমে। পাকিস্তান আর ভারতে উর্দু, হিন্দি, সিন্ধি, পাঞ্জাবি, পশতু ইত্যাদি ভাষায় প্রচুর গান গাইলেও, ঢাকার চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকেই তিনি বেছে নিয়েছেন তার মূল কর্মক্ষেত্র হিসেবে।

গান আলাপে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা
রুনা লায়লা, ষাটের দশকে


সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গান, এর সংকট ও সমাধানের পাশাপাশি এই শিল্পীর অসামান্য জীবনের নানা বাঁকের কথা উঠে এসেছে এই আলাপে। রুনা লায়লার মুখোমুখি হয়েছিলেন কবি আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির। ১৩ আগস্ট ২০১১ সালে নেয়া এ সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গ ও সমসাময়িকতা বিবেচনায় এখনো প্রাসঙ্গিক।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: ক্ল্যাসিকাল, সেমি-ক্ল্যাসিকাল ও গানের অন্যান্য ধারায় কিন্তু আপনি বিশেষভাবে খ্যাত; তারপরেও চলচ্চিত্রের গানকেই আপনি মূল কর্মক্ষেত্র হিসেবে নিয়েছেন। চলচ্চিত্রের গানের ক্ষেত্রে আপনার ভালো লাগা বা দুর্বলতা কতখানি?

রুনা লায়লা : চলচ্চিত্রের গানে একটা বড় সুবিধা হলো, এখানে সব ধরনের গান করার সুযোগ পাওয়া যায়। আধুনিক গান হোক, রোমান্টিক ধাঁচের হোক, সেমি-ক্ল্যাসিকাল হোক, ডিসকো, পপ, ফোক সবই আছে এর মধ্যে। এর প্রচারও অনেক বেশি। অনেক মানুষই চলচ্চিত্র দেখে বা যারা নাও দেখে রেডিওতে গানগুলো শোনে। আর আমি তো মূলত প্লেব্যাক সিঙ্গারই, ন্যাচারালি এর প্রতি একটা উইকনেস তো থাকবেই।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: আপনি ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ তিন দেশের জন্যই প্লেব্যাক করেছেন। বাংলাদেশ ছাড়া বাকি দুটো দেশে বড় সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আপনি ঢাকার চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকেই বেছে নিয়েছেন। ওই দুই দেশে আপনার অভিজ্ঞতাও যথেষ্ট। ওখানকার আয়োজন, বিশেষ করে সঙ্গীতায়োজনে আপনার বিশেষ কিছু ভালো লাগা নিশ্চয়ই আছে। আপনার এই অভিজ্ঞতাগুলোর কতখানি এখানে কাজে লাগাতে পেরেছেন?

রুনা লায়লা : আসলে তিন দেশে গানের স্টাইল বা ধারা একদম অন্য রকম। আমাদের এখানে মূলত বাংলা গানটাই বেশি হয়, মানে বাংলা স্টাইলেই বেশি হয়। তারপরেও বলব যে, এখানে আমি অনেক ধরনের গানই গাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আর যেহেতু আমি বাংলাদেশের গায়িকা, বাংলাদেশেই থাকি, সেহেতু স্বাভাবিকভাবেই বাংলা ছবিতেই আমার বেশি গান হয়েছে এবং হচ্ছে। আর ইন্ডিয়াতে ওরা হচ্ছে টেকনিক্যালি অনেক অ্যাডভান্সড। একটা গানের মধ্যে অনেক কিছু তারা অ্যাড করতে পারে। এবং অনেক ধরনের, সংখ্যায় অনেক অ্যাক্যুস্টিক ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করা হয়। যা আমাদের এখানে দুঃখজনকভাবে বলতে গেলে একদমই নেই, আর থাকলেও খুবই কম। তো অনেক মিউজিক ডিরেক্টরকে দেখেছি, তারা যেহেতু এখানে সেরকম ইন্সট্রুমেন্ট পায় না, ইন্ডিয়াতে গিয়ে রেকর্ড করে আনে, ট্র্যাক করে আনে।

আর পাকিস্তানের কথা বলতে গেলে, মূলত আমি ওইখানেই আমার ক্যারিয়ার শুরু করেছি। ফিল্মের গান প্রথম আমি ওখানেই গাই। এরপর অনেক বছর, অনেক ধরনের, অনেক সুরকারের সাথে আমি কাজ করেছি। ওই অভিজ্ঞতাগুলো আমি এখানে কাজে লাগাচ্ছি, যেহেতু আমার বেইজটাতে বেশ বৈচিত্র্য রয়েছে। আমি আগেই অনেক ধরনের গান গাওয়ার সুযোগ পেয়েছি পাকিস্তানে, যার কারণে ওই অভিজ্ঞতাটা আমি এখানে কাজে লাগাতে পারছি।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: পাকিস্তানে আপনার চলচ্চিত্রের ক্যারিয়ারের প্রসঙ্গ যখন এলোই, তখন যার সঙ্গীত, যার নাম সবার আগে আসে, তিনি নিসার বাজমি। অনেক ভার্সেটাইল একজন সুরকার। বলা হয়ে থাকে আপনার এবং তার অসাধারণ একটা কেমিস্ট্রি ছিল। উনি ডিসকো, পপ, মডার্ন, ক্ল্যাসিকাল সব ধরনের গান আপনাকে দিয়ে করিয়েছেন চলচ্চিত্রে। ওনার সম্পর্কে জানাটা জরুরি। আমাদের দেশে ওনার সম্পর্কে জানাশোনা একটু কম।

রুনা লায়লা : আসলে নিসার বাজমি সাহেব তো ওনার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ইন্ডিয়াতে। এবং আমি যখন ১৯৭৪ সালে প্রথমবার লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারালালজির গান করতে যাই, লক্ষ্মীকান্তজি আমাকে বললেন যে, নিসার বাজমি সাহেবের সুরে আমার করা কিছু গানের ক্যাসেট ওনাদের কাছে ছিল; লক্ষ্মীকান্তজির কাছে। আমি জিজ্ঞেস করায় উনি বললেন, বাজমি সাহেব তো আমাদের গুরু। উনি যখন এখানে সুর করতেন আমরা তখন মিউজিশিয়ানস ছিলাম, ওনার সাথে অনেক কাজ করেছি। খুব শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করলেন বাজমি সাহেবকে।

আর বাজমি সাহেব বেসিক্যালি এত ধরনের গান আমাকে দিয়ে গাইয়েছেন যে, আমার মনে হয়, আমার ভয়েজটাকে উনিই একমাত্র পুরোপুরি ইউটিলাইজ করেছেন। অনেক সময় আমি নিজেও জানতাম না যে আমি এই ধরনের গান গাইতে পারব, কিন্তু উনি ঠিকই বের করে নিয়েছেন আমার কাছ থেকে। ওনার মধ্যে ওই জিনিসটা ছিল। উনি বুঝতে পারতেন যে, কোন আর্টিস্টকে দিয়ে কোন গান গাওয়ালে সে ভালো করবে।

আমাকে উনি সব সময় বলতেন, তুমি একজন ভার্সেটাইল সিঙ্গার, তুমি সব ধরনের গানই গাইবে। সব ধরনের গানই উনি আমাকে দিয়ে গাইয়েছেন। এবং ওনার অসাধারণ কিছু কম্পোজিশনে আমি গাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। যার জন্যে এখনো ওই গানগুলো মানুষ শুনতে চায়। ‘দিল ধারকে’ যে রকম, তারপরে ‘আপ দিলকি আঞ্জুমান মে’, ‘কাটে না কাটেরে রাতিয়া’। ভিন্ন ধরনের গান কিন্তু সবগুলো, প্রত্যেকটার আলাদা একটা আপিল আছে। উনি যে অর্কেস্ট্রেশন, যে অ্যারেঞ্জমেন্টগুলো করতেন, ওই অ্যারেঞ্জমেন্টগুলো বোধ হয় এই সাব-কন্টিনেন্টে কম হয়েছে। হি ওয়াজ ওয়ান অব দ্য লিডিং মিউজিক ডিরেক্টরস। খুব জিনিয়াস একটা লোক।

অনেক কাজ করেছি আমরা একসঙ্গে। আমাকে এত গান গাওয়ানোর জন্য ওনাকে অনেক প্রবলেম ফেইস করতে হয়েছে। অনেক আর্টিস্ট রাগ করেছেন। কিন্তু আমার উপর ওনার খুব বিশ্বাস ছিল। আমাকে দিয়ে তিনি সব ধরনের গান গাইয়ে ছেড়েছেন। তখন আমার বয়সও অনেক কম ছিল। অনেক সময় আমি বলতাম, বাজমি সাহাব, এই গানটা অনেক কঠিন, আমি পারব না গাইতে। উনি বলতেন, পারবে না কেন? অবশ্যই পারবে। উনি আমার ভিতরের সম্ভাবনাটাকে, অ্যাবিলিটিটাকে চিনতে পেরেছিলেন।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: সেই তুলনায় আমাদের সঙ্গীতায়োজনের সমস্যা কী? বিশেষ করে ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে কিন্তু বৈচিত্র্যের অভাবসহ আরও অনেক ধরনের সংকট দেখা গেছে। ২০০০ সালের দিকে আপনার ঘোষণা মনে হয় পত্রিকায় এসেছিল যে, আপনি আর নিয়মিত গাইবেন না। এরপর কিন্তু সংকটটা আরও বেড়েছে।

রুনা লায়লা : আসলে মাঝখানে আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা, ছবির যে অবস্থা ছিল; খুব খারাপ একটা সময় গেছে। শুধু গানের ক্ষেত্রেই না, আমি বলব ফিল্মের সব ক্ষেত্রেই খুব বাজে একটা সময় গেছে এবং সেটাকে কাটিয়ে উঠতেই অনেক সময় লেগেছে। আস্তে আস্তে এখন ভালো ভালও ছবিও কিছু হচ্ছে, ভালও গানও কিছু বেরোচ্ছে।

আর আমাদের মেইন প্রবলেম হচ্ছে যে, বড় ধরনের টেকনিক্যাল সাপোর্ট নেই; প্লাস আমাদের অ্যাকুস্টিক ইন্সট্রুমেন্টের একটা অভাব আছে। আমার মনে হয় যে, আমাদের অ্যাক্যুস্টিক ইন্সট্রুমেন্টের প্লেয়ার ছিল, কিন্তু তাদের সেভাবে ইউটিলাইজ করা হয় নাই। যার কারণে, আস্তে আস্তে ওই ফ্লোটা মরে গেছে। পুরো গানের সবকিছু একজনই করছে, একজনই সবকিছু বাজিয়ে দিচ্ছে। এভাবে তো আসলে মজাটা থাকে না। ভায়োলিন থাকল, ফ্লুট থাকল, সান্তুর বা সেতার থাকল, সারেঙ্গি থাকল। এসব কিন্তু আর শোনাই যায় না, গেলেও খুব কম। আর এখন কাজ যেটা হচ্ছে সেটা ঝটপট করে ফেলা।

আগে তো আমরা মিউজিক ডিরেক্টরের সাথে একটা গান তিন দিন রিহার্সেল করতাম, তারপরে দুই দিন মিউজিশিয়ানদের সাথে ফুল রিহার্সেল হতো; তারপরে আমরা রেকর্ডিংয়ে যেতাম। রেকর্ডিং লাইভ হতো, ইন্সট্রুমেন্টসহ। একটা গান করতে সারা দিন, অনেক সময় সারা রাতও লেগে যেত। লাইভ ছিল, তাই কেউ একজন ভুল করলে আবার নতুন করে শুরু করতে হতো।

এখন ওই ডেডিকেশনটাও কমে গেছে, কাজের যে একটা ফ্লো ছিল, সেটাও নেই। আমরাও এখন অনেকটা লেজি হয়ে গেছি। একবার একটা লাইন গাইলাম, ঠিক হলো না, আচ্ছা আর একবার করে নিই; বা মুখটা গাইলাম আর দরকার নাই। কাট্‌ অ্যান্ড পেস্ট করে শেষে ওটাই লাগিয়ে দেব। এখন তো কাট অ্যান্ড পেস্টের যুগ।

গান আলাপে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা
সংগীত পরিবেশনরত রুনা লায়লা


আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: কাট অ্যান্ড পেস্ট করলে কিন্তু গানের এসেন্সটা নষ্ট হয়ে যায়। যেমন আপনার ক্ষেত্রে আমরা খেয়াল করেছি, আপনি একটা লাইন শুরুতে যেভাবে গান, পরে আবার অন্য যেকোনো জায়গায় লাইনটা এলে আর ওভাবে গান না। গানের ক্ষেত্রে শেষ করা শুরু করার ধরনটা কিন্তু আলাদা।

রুনা লায়লা: হ্যাঁ। আমি সেইজন্য চেষ্টা করি পুরোটাই করার, পুরো গানটাই আমি গাই। পারতপক্ষে তাই কাট অ্যান্ড পেস্ট করতে দিই না। কাট অ্যান্ড পেস্টে ইমোশনটাও অনেক কমে যায়।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: আপনি, সাবিনা ইয়াসমীন; আপনারা যখন ৬০-এর দশকের শেষে বা ৭০-এ আসলেন, অনেক বড় মাপের গায়ক-গায়িকাদের উত্তরাধিকার হিসেবে। আপনারা কিন্তু জনপ্রিয়তা বা যোগ্যতায় আগের সবাইকে একরকম ছাড়িয়ে গেলেন। আপনাদের পরে এত দিন চলে গেল, একটা শিল্পীও আসে নাই, যারা ছাড়িয়ে যাওয়া দূরে থাক, আপনাদের সাথে তুলনায়ও যেতে পারে। এরকম হওয়ার কারণটা কী?

রুনা লায়লা: এটার কারণ আসলে খুঁজে বের করা খুবই কঠিন, কেন আসেনি। এমনকি ভারতেও, লতাজি, আশাজির পরে ওই মাপের সিঙ্গার তো আর আসেনি। হ্যাঁ, অনেক ভালো সিঙ্গার আছে, কিন্তু ওই জিনিস তো আর হবে না। যে রকম পাকিস্তানে ম্যাডাম নূরজাহানের পরে অনেক সিঙ্গার এসেছে, ভালো গান করেছে কিন্তু তার মতো আর আসেনি। আমার মনে হয় আমাদের এখানেও ব্যাপারটা অনেকটা ওই রকম। আমাদের এখানে সুযোগের অভাবেও অনেক ট্যালেন্ট বেরিয়ে আসতে পারছে না। ওই প্ল্যাটফর্মও পাচ্ছে না। কারণ মিউজিক ডিরেক্টররা নতুনদের গাওয়াতে ভয় পাযন।

আমি অনেক সময় অনেক মিউজিক ডিরেক্টরকে, প্রডিউসারকে বলি নতুনদের দিয়ে গাওয়ান না কেন? আমরা তো অনেককাল গাইলাম। তারা বলে, ‘ম্যাডাম, ওই জিনিস তো হবে না।’ আমার কথা হলো, ওই জিনিস না হোক, ওরা ওদের মতন করে অন্যকিছু দিক। এখন যদি মাথার মধ্যে সব সময় ওইটাই থাকে যে সাবিনা-রুনার মতো হতে হবে, তাহলে তো অন্য কেউ আর আসতে পারবে না। সেই সুযোগটা তো ওদের করে দিতে হবে।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: ক্ল্যাসিকাল গানের ব্যাপারে আসা যাক। পাকিস্তানের চলচ্চিত্রের গানের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য ক্ল্যাসিকাল-বেইজড গানের ব্যবহার। আপনিও পাকিস্তানের চলচ্চিত্রে অনেকগুলো এই ধরনের গান করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশে এই রকম গানের ব্যবহার কম। হাতেগোনা ছবি আনারকলি, মহানায়ক বা রাজলক্ষ্মীশ্রীকান্ত ছাড়া খুব একটা দেখা যায় না। রিসেন্টলি রূপকথা গল্পের ‘কার তরে নিশি জাগো রাই’ গানটি হয়েছে। এ রকম গানের ব্যবহার খুব একটা হয় না কেন?

রুনা লায়লা : বাংলাদেশি ছবিতে ক্ল্যাসিকাল গান যত হয়েছে, তার ম্যাক্সিমাম গাওয়ার সুযোগ আমার হয়েছে। আমার বেইজটা ক্ল্যাসিকালের ছিল। আর পাকিস্তানে থাকাকালীন যেসব গান গেয়েছি, যাদের গান গেয়েছি, ওরা অনেক ক্ল্যাসিকাল বেইজড গান করত। এদেশেও হয়েছে এই রকম গান। কিন্তু অনেক কম। কারণ, এখানে গানের ধারাটাই অন্যরকম। ওখানে যে রকম ক্ল্যাসিকালকে নিয়ে ওরা খেলা করে।

আর এখানে যদি কোনো সিকোয়েন্স থাকে, যদি দরকার পড়ে, তাহলেই কেবল এ ধরনের গান দেয়া হয়। আদারওয়াইজ এখানে সেমি-ক্ল্যাসিকাল গানও হয় না। এবং ‘কার তরে নিশি জাগো রাই’ এই গানটার কথা যখন আমাকে প্রথমে বারী (বারী সিদ্দিকী) বলল, ‘ম্যাডাম, একটা ক্ল্যাসিকাল গান আছে ফিল্মের জন্য, আপনি কি গাইবেন?’ আমি বললাম, ‘গাইব না কেন? শুনি আগে একটু।’ তারপর ও এল বাসায়। গানটা শুনলাম। গানটা তো আমার আগেই শোনা ছিল। বাড়ে গুলাম আলী সাহাবের গাওয়া ‘বাজুবন্দ খুর খুল যায়’ ছিল ওই সুরের। শুনিয়ে ও আমাকে জিজ্ঞেস করল গাইবে নাকি। বললাম, অবশ্যই গাইব। সাংঘাতিক ভালো গান! কঠিন গান! খুবই কঠিন।

যাই হোক, ভালোয় ভালোয় পার করা গেল। বারী একটা কথা বলল, ‘এই গানটা, ম্যাডাম আপনি যদি বলতেন গাইবেন না, তাহলে এখানে আর হতো না। আমাকে ইন্ডিয়াতে যেতে হতো।’ এই গানটা আমি গেয়েছিও একটু অন্য স্টাইলে। একদম ঠুমরী, টপ্পা গানগুলোর গায়কি যে রকম হয়, সেই রকম করে গাওয়ার চেষ্টা করেছি।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: ১৯৭৭ সালে যখন প্রথম স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হলো, তখন বলা চলে, বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পের গানের জন্য একটা বড় রকমের স্বীকৃতি এসেছিল। একজন প্লেব্যাক গায়িকাকে কাজী নজরুল ইসলাম, জয়নুল আবেদিন বা মাওলানা ভাসানীর মতো মানুষদের সাথে পুরস্কৃত করা হলো। কিন্তু এই ধরনের স্বীকৃতি আপনার ক্ষেত্রে বা অন্য কারও ক্ষেত্রে কিন্তু পরে গিয়ে আর কন্টিনিউ করেনি। একুশে পদক কিন্তু আপনাকে এখনো দেয়নি। তো এই ব্যাপারগুলো চলচ্চিত্রের গানের জন্য কতখানি, আপনি কীভাবে দেখেন?

রুনা লায়লা : আমি একটা জিনিস বলব যে, স্বাধীনতা পুরস্কার আমাকে দিয়েছে বিজ্ঞ লোকদের সঙ্গে, অনেক বড় মাপের মানুষদের সাথে। তখন আমি বয়সেও ছোট বা এক্সপেরিয়েন্সেও ছোট। তবু কন্ট্রিবিউশনের জন্যে, এটা মাথায় রেখে হয়তো দিয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে ওর সাথে যে সম্মানটা আসা উচিত ছিল, যেমন ভিআইপি পাওয়া, ওইটা কিন্তু আমি এখনো পাইনি। ভিআইপি স্ট্যাটাসও পাইনি, সিআইপি স্ট্যাটাসও পাইনি।

আমি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে ট্রাভেল করি, আসি-যাই। আমাকে সাধারণ মানুষ অনেক সম্মান দেয়, শ্রদ্ধা করে। কিন্তু কোনো সরকারের কাছ থেকেই ওই স্বীকৃতিটা, পদকের সাথে যেই স্বীকৃতি আসার কথা, সেটা আসেনি। এটা আমার একটা বিরাট দুঃখ।

আমার মনে হয়, আমি যতটুকুই করতে পেরেছি আমার দেশের জন্য, আমার দেশের গানকে নিয়ে বাইরের দেশে যতটা পারি রিপ্রেজেন্ট করতে, সেটুকু আমি করেছি। স্ট্যাটাসটা আদৌ কখনো আসবে কি না জানি না। এটা একটা বিরাট দুঃখ আমার মনে। আমরা দেখি, নতুন, ইয়াং অনেক ক্রিকেটারও ভিআইপি পাচ্ছে। কিন্তু অনেক জাতীয় পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পদক বা একুশে পদক যারা পেয়েছেন, তারা অনেকেই কিন্তু এ দিক থেকে পিছিয়ে আছেন। তাদেরকে কোনোরকম সম্মানজনক স্বীকৃতি কিন্তু কোনো সরকারই দেয়নি। এটা খুব দুঃখজনক।

আর এরপরে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির গানের জগত থেকে আর কাকে দিয়েছে বা না দিলে কেন দেয় নি- এটা আমি বলতে পারব না। যারা কমিটিতে আছেন, তারাই ঠিক করেন কাদের দেবেন।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: আপনি যখন চলচ্চিত্রে গান করেন, আপনার একটা বিশেষ খ্যাতি আছে; তা হলো গানের, সুরের বৈচিত্র্য। বিভিন্ন রকম ভয়েজে আপনি গান করতে পারেন। এটা কি বিশেষ কোনো স্ট্র্যাটেজি? আপনার গলা মাঝে মাঝে যার উপর পিকচারাইজড হচ্ছে, তার সাথে এত বেশি মিলে যায় যে মনে হয় ওই অভিনেত্রী নিজেই গাচ্ছেন। আপনি কি পারসোনালি অভিনেত্রীদের চিনে জেনে তারপর গান করেন?

রুনা লায়লা : আসলে পাকিস্তানে থাকতে, ইন্ডিয়াতে বা এখানেও আমি যেকোনো গান গাওয়ার আগে জিজ্ঞেস করে নিই, গানটা কার উপরে পিকচারাইজড হবে। শবনম, রানীর উপরে হবে, না আমাদের এখানে শাবনূর, মৌসুমী বা ববিতার উপরে হবে? কার উপরে যাবে? তার কথা চিন্তা করে, সে কী ধরনের এক্সপ্রেশন দেবে বা তার মুভমেন্ট কেমন হবে এসব মাথায় রেখে আমি গানটা ওই স্টাইলেই করি। আর চেষ্টা করি, গানের মধ্যে নব্বই ভাগ এক্সপ্রেশন দিয়ে দিতে, আর বাকি দশ ভাগ ওদের নিজেদের দিতে হয়। এতে করে ওদের খাটুনিটাও কমে যায়।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: কিন্তু অনেক সময় এত বেশি মিলে যায় যে অবাক লাগে, প্রিয়শত্রু ছবিতে দিতির লিপে; ‘চিঠি কেন আসে না’ বা ‘তুমি আজকে যাও বন্ধু’ এসব গানের ভিডিও দেখলে মনে হয় ভয়েজটা দিতির নিজের! কিংবা মৌসুমীর ‘কাল তো ছিলাম ভালো’…

রুনা লায়লা : মৌসুমী, শাবনূর সবার জন্যই তো গেয়েছি। কিন্তু সব থেকে মজার ব্যাপার যেটা, সেটা হলো, মৌসুমী বলো, শাবনূর বলো, পপি সবারই কিন্তু প্রথম ছবির প্রথম গানটি কিন্তু আমার গাওয়া।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: দিতি, শাবনাজ এদেরও। ‘বন্ধুর বাঁশি বাজেরে, আমার কানে কানে’!

রুনা লায়লা : হ্যাঁ।

গান আলাপে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা
সাম্প্রতিক সময়ে মঞ্চে রুনা লায়লা

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: পুরোনো গানের রিমেক বা রিমিক্স প্রসঙ্গে আসি। যেসব পুরোনো গান রিমেক করে বা রিমিক্স করে, আবার বাজারে আনা হয়। দেখা যায়, অনেক ক্ষেত্রেই নতুন গানের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়। এতবার শোনা চলচ্চিত্রের সেইসব গানের এত গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তি আসলে কী?

রুনা লায়লা: এটা কিন্তু শুধু বাংলাদেশেই হয়; এমন না। ইন্ডিয়ার গানগুলো দ্যাখো, সেই পুরোনো গানগুলোই কিন্তু আসছে ঘুরে-ফিরে। ইয়াং জেনারেশন নিয়ে যতগুলো কম্পিটিশন হচ্ছে, সেই লতাজি, আশাজির, মুকেশজি, কিশোরদার, রাফি সাহাবের গানগুলোই সবাই গাইছে এবং সেগুলো এখনো অনেক পপুলার গান! আগে, আমার মনে হয়, কম্পোজিশন সবকিছু মিলিয়ে পুরো জিনিসটাই এমনভাবে পরিবেশন করা হতো যে যুগের পর যুগ চলছে। এবং আরও চলবে। দেখবে তোমার পরে যারা আসবে তারাও ঐ গানগুলোকে নেবে।

এখানে আমার একটা কথা বলার আছে, গানগুলো যে রিমেক, রিমিক্স হচ্ছে এগুলো যদি অরিজিনাল আর্টিস্টকে দিয়েই আবার করানো হয়, আমার মনে হয় অনেক ভালো হতো। অনেক সময় রিমেক, রিমিক্স করতে গিয়ে গানগুলো ঠিক ওই রকম হয়ও না। আবার অনেক কিছু ওর মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। যেগুলো শুনতেও ভালো লাগে না। অমনই নাকি চলে! তারপরেও আমার মত হলো, অরিজিনাল আর্টিস্টকে দিয়ে গাওয়াতে পারলেই সবচেয়ে ভালো।

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: গানের কথায়, সঙ্গীতায়োজন নিয়ে আপনি হয়তো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। শিল্পীসহ নানা সংকট নিয়ে বা এগুলোর সমাধান নিয়ে চিন্তা নিশ্চয়ই আপনার মাথাতেও এসেছে।

গান আলাপে কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা
সাক্ষাৎকারের পর কবি আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির এর সাথে রুনা লায়লা

রুনা লায়লা: এক নম্বর কথা হলো, সবার আগে যেটা দরকার, নতুন শিল্পীদের সুযোগ দিতেই হবে। আমাদের ঘরে নতুন শিল্পী তৈরি রাখতেই হবে। এছাড়া কোনো উপায় নেই। শুধু নতুন শিল্পী হলেই হবে না, মান থাকতে হবে। ভালো শিল্পী তৈরি করতে হবে। অনেক প্রতিভাবান ছেলেমেয়ে, অনেক ক্ষেত্রেই সুযোগ পাচ্ছে না। সুযোগের অভাবে অনেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। এদেরকে যদি সবাই মিলে সুন্দর সুযোগ করে দিই আমরা, আমার মনে হয়, আরও অনেক ভালো শিল্পী আমাদের এখানে হবে। অনেকে আবার মনে করতে পারে আগের জনদের মতো তো হবে না। আসলে কেউ কারও জায়গাটা নিতে পারে না, যার যার স্থানে সে সে আছে। কেউ আর রুনা-সাবিনা হতে পারবে না।

যে যার নিজস্ব একটা পজিশন গড়ে নিয়েছে। এরপর যারা আসবে, তারা তাদের মতো পজিশন করে নেবে। এর জন্য প্রচুর সাধনা, ডেডিকেশন দরকার। সত্যিকার অর্থে গান ভালোবাসতে হবে। আমরা এত বছর পার করে এসে এখন মোটামুটি একটা পজিশনে এসে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু এর পিছনে যে কত খাটুনি, কত পরিশ্রম, কত ত্যাগ! কতকিছু করে তারপর আমরা এখানে এসেছি। তো এই জিনিসটা যারা নতুন আসছে তাদের মাথায় থাকা দরকার। তাদের আমি বলব যে, টাকা অনেক আসবে জীবনে। কিন্তু টাকাটাই বড় না।

ইচ্ছা যদি থাকে, যদি সাধনা থাকে, সত্যিকার অর্থে গানবাজনা মনে এনে গান করলে তারপরে একসময় কাজ পাবে। কাজ পেলে টাকাও আসবে। আর আমি টাকার জন্য গাইব, এটা মাথায় রেখে যদি নামি গানের জগতে, তাহলে কিন্তু হবে না। তবে এখন বেশির ভাগেরই আমি এই প্রবণতা দেখি। আমি কাউকে ছোট করার জন্য বলছি না বা সবার বেলায় বলব না। কিন্তু বেশির ভাগই চিন্তা করে কটা শো করা যায়, কত টাকা আমি পাচ্ছি। একজন তরুণ শিল্পী একদিন আমার সাথে গান গাইছিল, তাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘তুমি গান শিখ?’

বলে, ‘না।’

বললাম, ‘রেওয়াজ করো?’

বলল, ‘না।’

বলি, ‘তাহলে তুমি গাও কী করে?’

বলে, ‘যা জানি তাই গাই। এমনিতেই আমি শো করছি, সুযোগ পাচ্ছি, গান শেখার আর দরকার তেমন পড়ে না।’

এ রকম মানসিকতা হলে তা খুবই হতাশার ব্যাপার!

আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির: প্রিয় শিল্পী, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

রুনা লায়লা: তোমাকেও অনেক ধন্যবাদ।

কবি আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদিরের জন্ম সিরাজগঞ্জে, ১৯৯০ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা শেষ করে এখন শিক্ষকতা করছেন ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে। দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতায় ছোটগল্প ও কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ ২০১০ সালে । এখন পর্যন্ত প্রকাশিত কবিতার বই দুইটা, অন্য গাঙের গান, সমুদ্রসমান (২০১৬) ও যুদ্ধ যুদ্ধ রুদ্ধ দিন (২০২০)। প্রথম গল্প সংকলন বছরের দীর্ঘতম রাত প্রকাশিত হয়েছে ২০১৯ সালে।

আরও পড়ুন:
মধ্যরাতের গান ছুঁলো কোটি প্রাণ
অর্থহীনের সুমন সংকটাপন্ন নন: ম্যানেজার
মারা গেছেন ‘অশ্রু দিয়ে লেখা’ গানের সুরকার
কণ্ঠশিল্পী আসিফের শুদ্ধি অভিযান
‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’ গীতিকারে পরিবর্তন

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Savar residents want metro rail up to the memorial

স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত মেট্রোরেল চান সাভারবাসী

স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত মেট্রোরেল চান সাভারবাসী ছবি: নিউজবাংলা
সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।

মেট্রোরেলের চলমান প্রকল্পটি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় নাগরিক সমাজ।

বৃহস্পতিবার সকালে সাভার উপজেলা পরিষদের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় মেট্রোরেলের এমআরাটি-৫ ও এমআরটি-৬-এর চলমান প্রকল্পটি হেমায়েতপুর থেকে নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ অথবা দিয়াবাড়ি থেকে সাভারের রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পে সরকার যদি কোনোরকম জটিলতা মনে করে তাহলে এমআরটি-৬ প্রকল্প উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে বিরুলিয়া হয়ে সাভার রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। পর্যায়ক্রমে তা নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিও জানান তারা।

কর্মসূচিতে সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন সাভার নাগরিক কমিটির সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি কামরুজামান খান।

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের প্রকল্প সাভার পৌর এলাকার শেষ সীমানা পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবকে এ ব্যাপারে অবগতপত্র দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে রেলমন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালকে পত্র দিয়ে এবং সরাসরি সবকিছু অবগত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত সাভারবাসী রেলসেবা পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাভারের লাখ লাখ মানুষ মেট্রেরেলের সুবিধা প্রত্যাশা করেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া হক, সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষানুরাগী সালাহউদ্দিন খান নঈম, সাভার পৌর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মিজানুর রহমান মাসুদ, সংস্কৃতিকর্মী স্বরণ সাহা, প্রভাত ডি রোজারিও, বন্ধুরহাট যুব সংগঠনের আলোকুর রহমান, জাগরণী থিয়েটারের সভাপতি আজিম উদ্দিনসহ আরও অনেকে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
US human rights report uses baseless facts

‘যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য ব্যবহার হয়েছে’

‘যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য ব্যবহার হয়েছে’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বৃহস্পতিবার ঢাকায় মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরেন। ছবি: সংগৃহীত
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘প্রতিবেদনে সরকারের অনেক উন্নতি ও অর্জন স্থান পায়নি। অন্যদিকে বিচ্ছিন্ন ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে। এটি দেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং নির্দিষ্ট কিছু সংবিধিবদ্ধ সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে মূল্যায়ন করতে শুধু ব্যর্থই হয়নি বরং অবমূল্যায়ন করেছে।’

বাংলাদেশকে নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২৩ সালের মানবাধিকার প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনটি নিয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য তুলে ধরেন। সূত্র: ইউএনবি

তাতে বলা হয়েছে, ‘প্রতিবেদনটি দেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং নির্দিষ্ট কিছু সংবিধিবদ্ধ সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে মূল্যায়ন করতে শুধু ব্যর্থই হয়নি বরং অবমূল্যায়ন করেছে, যা এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর মনোবল ও কার্যকারিতার জন্য ক্ষতিকর।’

সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মুখপাত্র বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য যে সরকারের অনেক উন্নতি ও অর্জন প্রতিবেদনে স্থান পায়নি। অন্যদিকে বিচ্ছিন্ন ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে।

‘প্রতিবেদনটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়লে স্পষ্ট হবে যে এতে পৃথকভাবে রিপোর্ট করা বা কথিত ঘটনাগুলোর পরিপূর্ণ রেফারেন্স দেয়া হয়নি। এটি সরলীকরণ অনুমাননির্ভর তথ্যে ভরপুর।’

ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজায় অব্যাহতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করার বিষয়ে উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ সরকার। একইসঙ্গে আশা প্রকাশ করেছে, ফিলিস্তিনে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন, নিরপরাধ নারী ও শিশু হত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চলমান প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করবে।

সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘গত বছর অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন অজুহাতে এবং বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে অস্থিরতা, সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির বিষয়টি প্রতিবেদনে অনুপস্থিত।

‘বেশিরভাগই স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার (বেনামী উৎসসহ) কাছ থেকে পাওয়া অনুমাননির্ভর তথ্য দিয়ে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো যুক্তরাষ্ট্র সরকার বা সংশ্লিষ্ট সংস্থা সমর্থিত।’

‘প্রতিবেদনটি সহজাত পক্ষপাতদুষ্ট, এটি বেশ স্পষ্ট।’

বাংলাদেশ সরকার অবশ্য বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের অব্যাহত আগ্রহের প্রশংসা করেছে।

মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা যতই প্রত্যাশা করি না কেন, বিশ্বের কোথাও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিখুঁত নয়। মানবাধিকার কোনো শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তবে আর্থ-সামাজিক সীমাবদ্ধতা প্রায়ই এসব অধিকার আদায়ের গতিকে সীমাবদ্ধ করে।’

‘বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।

‘যেসব ক্ষেত্রে আরও উন্নতি প্রয়োজন সেগুলো সম্পর্কে সচেতন হয়ে বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে টানা মেয়াদে মানবাধিকার পরিস্থিতির অর্থবহ অগ্রগতি করতে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘যেকোনো বিচক্ষণ পর্যবেক্ষক লক্ষ্য করবেন, এ জাতীয় প্রচেষ্টার ফলে নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা, শিশুদের অধিকার, প্রবীণদের অধিকার, শ্রমিকদের অধিকার, অভিযোগ নিষ্পত্তি, ন্যায়বিচারের সুবিধা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, বাক-স্বাধীনতা, সংগঠন করার স্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা এবং আরও অনেক কিছুতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘প্রতিবেদনে কিছু ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও এটি বিএনপি এবং তার রাজনৈতিক মিত্রদের সহিংসতা ও ভাঙচুরের বিষয়টি তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। ওইসব ঘটনা সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে এবং এর ফলে সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

‘এ ধরনের পরিকল্পিত প্রচারণা থেকে জনসাধারণের জীবন, শৃঙ্খলা ও সম্পত্তি রক্ষায় আইনানুগ পদক্ষেপ এবং প্রতিকারের চেষ্টা করার রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপকেও প্রতিবেদনে দায়ী করা হয়েছে। এটি খুবই হাস্যকর।’

তিনি বলেন, ‘এটা অবশ্যই উল্লেখ করা উচিত যে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করেছে এবং যেকোনো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পূর্ণ পেশাদারত্বের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে।’

সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনায় সরকারের আন্তরিক সমর্থন ও পেশাদারত্বের ভিত্তিতে ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ২৮টি দল দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। বিএনপি ও অন্যান্য দলের নির্বাচন বর্জন সত্ত্বেও ৪২ শতাংশ মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে।’

মুখপাত্র বলেন, ‘মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবেদনে বার বার বেশকিছু অভিযোগ বা অনুযোগ উঠে এসেছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।

‘উদাহরণস্বরূপ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে শরণার্থী বা রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি হিসেবে অভিহিত করা অব্যাহত রয়েছে, যা মিয়ানমারের নাগরিক বা বাসিন্দা হিসেবে স্বীকৃতির বৈধ দাবিকে ক্ষুণ্ন করছে।’

অন্য একটি উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, “কিছু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে দেশের সাংবিধানিক বিধানের পরিপন্থী ‘আদিবাসী জনগণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা অব্যাহত রয়েছে, যা অযৌক্তিক উত্তেজনা ও বিভাজনকে উসকে দেয়ার প্রচেষ্টার নামান্তর।

“আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রতিবেদনটি আলাদাভাবে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিনিময় করা অকাট্য প্রমাণ বা তথ্য বাদ দিয়েছে বা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

“উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, শাহীন মিয়া ও মোহাম্মদ রাজু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচারিক কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়েছে, যাতে ঘটনাগুলো আইনের আওতাভুক্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে। জেসমিন সুলতানার ক্ষেত্রে যে বিচারিক প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে তা প্রতিবেদনে যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়নি, বিশেষ করে চলমান যথাযথ প্রক্রিয়ার বিষয়টি।”

মুখপাত্র বলেন, ‘একইভাবে শ্রম অধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলো, বিশেষত ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধকরণ ও কার্যক্রম সম্পর্কিত প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি মামলা চিহ্নিত করা হয়েছে, যা বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় প্ল্যাটফর্মে সংশ্লিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।’

‘বরাবরের মতোই প্রতিবেদনে আইনগত কর্মকাণ্ডের চিত্র ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বরাবরের মতো এবারও কারখানা, প্রতিষ্ঠান, সরকারি সম্পত্তি বা ব্যবস্থাপনা কর্মীদের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের নামে অযাচিত বাধা বা ভাঙচুরের ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের গৃহীত আইনানুগ পদক্ষেপের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।

‘প্রতিকার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে গৃহীত প্রশাসনিক ও বিচারিক পদক্ষেপের বিস্তারিত বিবরণ না দিয়ে প্রতিবেদনে মানবাধিকারের পদ্ধতিগত অপব্যবহারের অংশ হিসেবে বেসরকারি ব্যক্তি বা সংস্থার দ্বারা সংঘটিত ঘটনাগুলো প্রকাশের প্রবণতা বজায় রাখা হয়েছে।

মুখপাত্র আরও বলেন, ‘সাধারণভাবে বাংলাদেশ সরকার সামগ্রিক প্রতিবেদনটি নজরে নিয়ে যেকোনো পরিস্থিতিতে সব নাগরিকের মানবাধিকারের পূর্ণ উপভোগ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি সমুন্নত রাখতে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রক্রিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদার ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রত্যাশায় রয়েছে।’

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই: যুক্তরাষ্ট্র

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Not only the recognition but also the quality of the product should be looked at
১৪টি জিআই পণ্যের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী

শুধু স্বীকৃতি নয়, পণ্যের মানের দিকেও নজর দিতে হবে

শুধু স্বীকৃতি নয়, পণ্যের মানের দিকেও নজর দিতে হবে বাংলাদেশ ফরিন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মাল্টিপারপাস হলে বৃহস্পতিবার ডিপিডিটি আয়োজিত ১৪টি জিআই পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। ছবি: নিউজবাংলা
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘মাটি, বায়ু, পানি, পরিবেশ, কারিগরদের দক্ষতা প্রভৃতি স্বতন্ত্র ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ছোট এ ভূখণ্ডের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব পণ্যকে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি এর গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে।’

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, ‘পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ একটি অমিত সম্ভাবনাময় দেশ। ষড়ঋতুর এ দেশকে প্রকৃতি যেমন দুহাত ভরে তার বৈচিত্র্যময় সম্পদ ঢেলে দিয়েছে, তেমনি এদেশের মেহনতি মানুষ তাদের আপন শৈল্পিক কারুকার্যের মাধ্যমে অনন্যসাধারণ সামগ্রী প্রস্তুত করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সুনাম ও খ্যাতি বৃদ্ধি করেছে।’

তিনি বলেন, ‘মাটি, বায়ু, পানি, পরিবেশ, কারিগরদের দক্ষতা প্রভৃতি স্বতন্ত্র ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ছোট এ ভূখণ্ডের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব পণ্যকে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি এর গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে।’

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বেইলি রোডে বাংলাদেশ ফরিন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মাল্টিপারপাস হলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) আয়োজিত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ও নরসিংদীর অমৃত সাগর কলাসহ ১৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ডিপিডিটির মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা, ফরিন সার্ভিস অ্যাকাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফী বিনতে শামস ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা।

শুধু স্বীকৃতি নয়, পণ্যের মানের দিকেও নজর দিতে হবে

মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববাজারে জিআই পণ্যের প্রচার ও প্রসারে আমাদের এখনই কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশের বাংলাদেশ মিশনসমূহ, দেশের সকল আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয়ভাবে এসব পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মেলায় জিআই পণ্যসমূহ প্রদর্শন করা যেতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ডিপিডিটি, বিসিক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এসব পণ্যের উন্নয়ন ও প্রসারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।’

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন কোনো খালি বাস্কেট নয়, এটি একটি পরিপূর্ণ ভরা বাস্কেট। আমাদের সম্পদের কোনো অভাব নেই, শুধু প্রয়োজন এর সদ্ব্যবহারের। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা, কারিগরি সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব সম্পদ ও পণ্যের প্রচার-প্রসার ঘটাতে হবে।’

জ্যেষ্ঠ শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে এমন ৫০০টি পণ্যের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছি। একটু দেরিতে হলেও আমরা এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় আমরা ২০১৩ সালে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন প্রণয়ন করি এবং পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের জিআই পণ্যকে সুরক্ষা দিতে হবে এবং একই সঙ্গে এর পেটেন্ট দিতে হবে। জিআই পণ্যের প্রচার-প্রসারে বিভিন্ন উৎসব, পালাপার্বণ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এসব পণ্যকে আমরা উপহার হিসেবে প্রদান করতে পারি। তাছাড়া এসব পণ্য সম্পর্কে টিভিসি (বিজ্ঞাপন), ডকুমেন্টারি তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।’

অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল শাড়িসহ বাংলাদেশের মোট ১৪টি ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সনদ প্রদান করা হয়।

সেগুলো হলো যথাক্রমে- গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মৌলভীবাজারের আগর, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মুক্তাগাছার মণ্ডা, যশোরের খেজুরের গুড়, রাজশাহীর মিষ্টি পান এবং জামালপুরের নকশিকাঁথা।

এ নিয়ে ডিপিডিটি কর্তৃক জিআই সনদপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১টিতে।

আরও পড়ুন:
‘আমি বরই দিয়ে ইফতার করব, আর তুই খেজুর-আঙুর খাবি?’
‘টাঙ্গাইল শাড়ি আমাদেরই থাকবে’
গোপালগঞ্জের রসগোল্লা পেল জিআই পণ্যের স্বীকৃতি
জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল মুক্তাগাছার মণ্ডা
টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য ঘোষণা করেছে সরকার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Democracy established on January 7 will fail if upazila elections fail CEC

উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র ব্যর্থ হবে: সিইসি

উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র ব্যর্থ হবে: সিইসি সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ফাইল ছবি
সিইসি বলেন, ‘দেশের নির্বাচনে আবেগ-অনুভূতির জন্য কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন) যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেটি ব্যর্থ হবে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বিষয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সিইসি বলেন, ‘দেশের নির্বাচনে আবেগ-অনুভূতির জন্য কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে। এই নির্বাচনে ব্যর্থ হলে বিগত সংসদ নির্বাচনে যে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তা ক্ষুণ্ন হতে পারে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে, তা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।’

সভায় দেশের সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
নৌকা ২২২ লাঙ্গল ১১ স্বতন্ত্র পেল ৬২ আসন
ভোট ৪০ শতাংশের মতো, আরও বাড়তে পারে: সিইসি
বেশির ভাগ জায়গায় নৌকা ছাড়া অন্য এজেন্ট পেলাম না: সিইসি
ভোট দিলেন সিইসি
জাতির উদ্দেশে ভাষণে সিইসি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Say no to war Prime Minister

যুদ্ধকে ‘না’ বলুন: প্রধানমন্ত্রী

যুদ্ধকে ‘না’ বলুন: প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে জাতিসংঘের কনফারেন্স সেন্টারে (ইউএনসিসি) বৃহস্পতিবার এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ইয়াসিন কবির জয়/ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে এবং যুদ্ধকে ‘না’ বলতে হবে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘শান্তির জন্য নতুন এজেন্ডা’র পক্ষে।”

সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর পাশাপাশি যুদ্ধকে ‘না’ বলতে বৃহস্পতিবার সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

থাইল্যান্ডে জাতিসংঘের কনফারেন্স সেন্টারে (ইউএনসিসি) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান বলে বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে এবং যুদ্ধকে ‘না’ বলতে হবে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘শান্তির জন্য নতুন এজেন্ডা’র পক্ষে।”

ভাষণে সব ধরনের যুদ্ধ, আগ্রাসন ও নৃশংসতা বন্ধে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলা ‍শুধু হতাহতের সংখ্যা বাড়াচ্ছে, বিশেষত নারী ও শিশুরা এর বলি হচ্ছে। অথচ আলোচনায় আসতে পারে শান্তি।

তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি যুদ্ধ ও গণহত্যা চলছে। এটি অবশ্যই বন্ধ হতে হবে। যুদ্ধ কোনো সমাধান দিতে পারে না।’

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা তার উদ্যোগ ও শাসনামলে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে ‘পার্বত্য শান্তি চুক্তি’র কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আঞ্চলিক বিরোধ ও উত্তেজনা নিষ্পত্তি করতে হবে।’

আরও পড়ুন:
প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে, লাল গালিচা সংবর্ধনা
থাইল্যান্ডের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ
বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই
জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড়ের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ন্যাপ এক্সপো উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The fire may continue for another 72 hours

আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে দাবদাহ

আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে দাবদাহ গরমের তীব্রতা বাড়ার মধ্যে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় গোসল করছেন এক ব্যক্তি। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর চলমান তাপপ্রবাহ আজ (২৫ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।’

দেশজুড়ে চলমান দাবদাহ আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বৃহস্পতিবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর চলমান তাপপ্রবাহ আজ (২৫ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।’

৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাস

আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে জানায়, খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আরও পড়ুন:
দাবদাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ
গাছহীন সড়কটি যেন ‘উত্তপ্ত কড়াই’
অতি তীব্র দাবদাহ চুয়াডাঙ্গায়, তাপমাত্রা ৪২.২
দাবদাহে ঢাবি জবিতে বন্ধ সশরীরে ক্লাস
দাবদাহ থেকে মুক্তি মিলবে কবে

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Tribute to memorial on 11th anniversary of Rana Plaza tragedy

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১তম বার্ষিকীতে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১তম বার্ষিকীতে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকাল থেকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়। ছবি: নিউজবাংলা
সমাবেশে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পর এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।

রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পূর্তিতে বুধবার প্রাণ হারানো শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন হতাহত শ্রমিক, তাদের পরিবার, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও পুলিশ সদস্যরা।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনায় পাঁচটি পোশাক কারখানার এক হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক প্রাণ হারান। পঙ্গুত্ব নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন দুই সহস্রাধিক শ্রমিক।

ট্র্যাজেডির বার্ষিকীতে আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শ্রমিক ও সংগঠনগুলোর সদস্যরা।

সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকাল থেকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়।

একে একে নিহত শ্রমিকের পরিবার, আহত শ্রমিক, পুলিশ ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ফুলের শ্রদ্ধায় সিক্ত হয়ে ওঠে বেদি। ওই সময় নিহত শ্রমিকদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, র‌্যালি ও মানববন্ধন করা হয়।

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো শ্রমিকদের অনেক স্বজন প্রিয়জনের কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

সমাবেশে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পর এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।

একই সঙ্গে ভবনের মালিক সোহেল রানার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডেরও দাবি জানান তারা।

আরও পড়ুন:
সাভারে যুগান্তরের সাংবাদিকের ওপর রাসায়নিক নিক্ষেপ
সাভারে গোডাউন খুলতেই বিস্ফোরণ, দগ্ধ তিন
টেইলার্সে এসি বিস্ফোরণে আটজন আহত
ধামরাইয়ে বাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরোহীর মৃত্যু
সাভার থেকে চুরি হওয়া শিশু নারায়ণগঞ্জে উদ্ধার

মন্তব্য

p
উপরে