× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
কবিতায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন
google_news print-icon

কবিতায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন

কবিতায়-বঙ্গবন্ধুর-স্বদেশ-প্রত্যাবর্তন
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে এদেশের শিল্পী-সাহিত্যিকরা অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন সৃজনশীলতার উঠোনে। যেমন, সিকান্দার আবু জাফরের ‘সে নাম মুজিব’ ও আবুবকর সিদ্দিকের ‘প্রশ্ন’ জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে লেখা কবিতা। ফিরে আসা বঙ্গবন্ধুর চোখে অশ্রু ছিল সেদিন। কোনো কোনো কবি সেই দৃশ্যও কবিতার চরণে উপস্থাপন করেছেন।

বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্যে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সমুজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। কেবল কবিতায় নয় গল্প-উপন্যাস ও চিত্রকলায় তার ফিরে আসা অন্ধকার থেকে আলোর জগতে ফিরে আসা হিসেবে চিহ্নিত। স্বপ্ন ও আশাবাদীতায় জাগ্রত জনতার কথাও এসেছে এ প্রসঙ্গে। অন্যদিকে বাঙালির স্বাধীনতা লাভের ইতিহাসও বিবৃত হয়েছে। দেশভাগের পর ১৯৭১ পর্যন্ত যে ঘটনাগুলো মুখ্য হয়ে উঠেছিল তার কয়েকটি দিক কবিতা বিশ্লেষণের পূর্বে স্মরণ করা যেতে পারে।

২.

১৯৪৮ সালের মার্চের ভাষা প্রশ্নে প্রতিবাদের পথ বেয়ে ১৯৪৯-এ জন্ম হয় ‘আওয়ামী মুসলিম লীগে’র। এই রাজনৈতিক সংগঠনটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান অনুঘটক। অন্যদিকে বিভাগোত্তর কালের কমিউনিস্ট পার্টির একমাত্র প্রগতিশীল সাহিত্য সংগঠন ‘প্রগতি লেখক ও শিল্পী সঙ্ঘ’ ক্রমশই কমিউনিস্ট বিপ্লবের দ্বিধাবিভক্ত ও তাত্ত্বিক বিতর্কের ফলে ১৯৫০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা জেলায় এর অস্তিত্ব একেবারে বিলুপ্ত হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের অবদমন নীতি ও বাংলাদেশকে পাকিস্তানের নতুন-কলোনিতে পরিণত করার চক্রান্তে এবং রাষ্ট্রভাষা প্রসঙ্গে যে গভীর ষড়যন্ত্র ও বিতর্ক উত্থাপিত হয়, এরই ফলে সংগঠিত হয় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন।

১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ এই কালক্রমিক ঘটনা প্রবাহে পাকিস্তানের শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ ২১ ফেব্রুয়ারির রক্তদান ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে বাঙালির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অস্তিত্বের জানান দেওয়ার ঘটনা। দেশ-বিভাগোত্তর কেন্দ্রীয় প্রশাসনের রাজনৈতিক কূটজাল, অত্যাচার, নিপীড়ন, ধর্মীয় কলহ ও দুর্নীতির ভয়াবহ বিস্তারের বিরুদ্ধে বাঙালির ঐক্য ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয় লাভ অনিবার্য করে তোলে। কিন্তু যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রিসভা গঠিত হলেও পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের চক্রান্তে বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতির অবনতি ও বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে দাঙ্গার সৃষ্টি করে ১৯৫৪ সালের মে মাসে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা পরিকল্পিতভাবে বাতিল করা হয়।

১৯৫৪ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক প্রশাসনের বিচিত্রমুখী ষড়যন্ত্রের পরে দেশে সামরিক জান্তার ক্ষমতা দখলের ঘটনা ঘটে। সামরিক শাসক দেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়। মূলত দেশবিভাগ থেকে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন এবং পরবর্তী পাঁচ বছর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ দ্বন্দ্ব-জটিল হলেও এর সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলটি ছিল সকল বিকৃতি, কুসংস্কার, কূপমণ্ডুকতা এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণ ও সম্প্রদায়গত সকল প্রকার বৈরীভাবের বিরুদ্ধে মানবতার আদর্শকে রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনের সকল ক্ষেত্রে মহিমাদীপ্ত করার কাল।

এদিক থেকে ১৯৫৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কাগমারিতে পূর্ব পাকিস্তানের আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনের আন্তর্জাতিক মানের সাংস্কৃতিক সম্মেলনের কথা উল্লেখযোগ্য। রাজনীতির সঙ্গে সংস্কৃতির এই যোগসূত্র বাংলাদেশের কবিদের আলোড়িত করেছিল স্বাভাবিক কারণে। তবে ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৯ সালের সামরিক জান্তার করতলগত বাংলাদেশের নগর-গ্রামের গণজাগরণ এ অঞ্চলের সমাজ মানসের প্রগতিশীল রূপান্তরের স্বতন্ত্র মাত্রা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এরপর স্বাধিকার অর্জনের পথে ১৯৬৯-এর পথ বেয়ে ১৯৭১-এর মুক্তিসংগ্রাম দেশ বিভাগের পরবর্তী আরেকটি দেশবিভাগের ঘটনাকে ত্বরান্বিত করে দেয়। জন্ম হয় নতুন দেশ- ‘বাংলাদেশ’।

১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত বিভিন্ন কালানুক্রমিক ঘটনা ধারায় আমাদের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মানসে অসাম্প্রদায়িক চেতনা, মানবতাবাদী আদর্শ এবং প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক জীবনবোধের বিকাশ ঘটে। কবিরা সেই শ্রেণির অংশ হিসেবে তাদের কবিতার ধারায় ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে নির্মাণ করেন স্বাধিকারের সপক্ষে আমাদের সমাজমানসের বিচিত্র তরঙ্গ। মনে রাখা দরকার ভাষা-আন্দোলন থেকে ১৯৭১ পর্যন্তই কেবল নয় ২০২০ সালে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর নানান অনুষঙ্গে অভিব্যক্ত এদেশের কবিতায় স্বতন্ত্র পর্যবেক্ষণ যুক্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু নিজে কবি ছিলেন না কিন্তু ছিলেন রাজনীতির কবি- ‘রাজনীতির প্রকৌশলী নন মুজিব, মুজিব হচ্ছেন রাজনীতির কবি, বাঙালির স্বাভাবিক প্রবণতা প্রয়োগিক নয়, শৈল্পিক। তাই মনে হয়, বাংলাদেশের সকল মানুষ, শ্রেণি ও মতাদর্শকে এক সূত্রে গাঁথা হয়ত কেবল মুজিবের মতো রাজনৈতিক কবির পক্ষেই সম্ভব।’ বেলাল চৌধুরী বলেছেন, কবিতা একটি জাতির ভাষার স্মৃতি। (কবিতায় বঙ্গবন্ধু, ভূমিকা, ২০১০) প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত কবিতায় বাঙালি জাতির ভাষার স্মৃতি উচ্চকিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর মতো মহাপুরুষকে নিয়ে রচিত কবিতায় কবি সমাজ ও জীবনের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে বাধ্য। কারণ কবিতার মাধ্যমে কবি একাত্মতার বাণী প্রচার করেন। মানুষের সঙ্গে মানুষের একাত্ম হওয়ার এই বাণী অসংখ্য কবির অজস্র চরণে কখনও শেখ মুজিব, কখনও বঙ্গবন্ধু স্বাক্ষরিত হয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে।

৩.

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় একটি দিন। সেদিন মহান নেতা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে ফিরে এসেছিলেন মুক্ত স্বদেশে। যে স্বদেশকে তিনি নিজের জীবনের অংশ করে নিয়েছিলেন। সেদিন ঢাকার ১০ লাখ মানুষের সামনে ভাষণ দিতে গিয়ে বারবার ভেঙে পড়েছেন; অশ্রু সজল নয়নে চেয়েছেন মানুষের মুখপানে। ১৯৭১ সালে দেশের মধ্যে যা কিছু ঘটেছে তা তিনি জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই জেনেছিলেন। হানাদার বাহিনী ও এদেশীয় লুটেরা রাজাকার-আলবদর-আলশামসের অত্যাচারের কথা শুনেছিলেন। এজন্যই আবেগময়ী ভাষণে তিনি এদেশকে পাকিস্তান কর্তৃক শ্মশান করে ফেলার কথা বলেছিলেন। তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। তার অনুভূতি তখন প্রতিটি তন্ত্রীতে তন্ত্রীতে শিহরণ জাগাচ্ছিল।

যখন তাকে বহন করা বিমানটি ঢাকার মাটি স্পর্শ করছিল, তখন বিপুল জনতার ঢেউ দেখে তিনি বলেছিলেন- ‘আমার দেশের মানুষ আমাকে এত ভালোবাসে। আমি এদেরকে খাওয়াবো কীভাবে?’ (দ্রষ্টব্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান: জীবন ও রাজনীতি, ২০০৮, বাংলা একাডেমি, পৃ ৮৬১-৬৪) দেশ পরিচালনায় জননেতার এই উৎকণ্ঠা সত্যিই শেষ দিন পর্যন্ত অটুট ছিল। যুদ্ধোত্তর ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে তিনি প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও বীরের মতো মানুষের জন্য উদগ্রীব হয়েছেন। একাত্তরে হত্যাযজ্ঞের শিকার মানুষের আত্মীয়-স্বজনের হাহাকার, নিরাশ্রয় আর খাদ্যহীন পরিস্থিতির কথা বলে তিনি বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিলেন পাকিস্তানীদের বীভৎসতার চালচিত্র।

‘স্বাধীন’ শব্দটি তার প্রাণের গহীন থেকে উচ্চারিত হলো - ‘ভাইয়েরা আমার লক্ষ মানুষের প্রাণদানের পর আজ আমার দেশ স্বাধীন হয়েছে। আজ আমার জীবনের সাধ পূর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন।’(প্রাগুক্ত)

এই স্বাধীন দেশের প্রথম সংবর্ধনায় তিনি তার ভাষণে আত্মত্যাগী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। শহিদদের জন্য অন্তরের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন। বলেছেন- ‘আমার বাংলায় আজ এক বিরাট ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছে। তিরিশ লক্ষ লোক মারা গেছে। আপনারা জীবন দিয়েছেন, কষ্ট করেছেন। বাংলার মানুষ মুক্ত হাওয়ায় বাস করবে, খেয়ে-পরে সুখে থাকবে, এটাই ছিল আমার সাধনা।’(প্রাগুক্ত)

তিনি সেদিন ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তার মুক্তির জন্য ইন্দিরা গান্ধীর প্রচেষ্টাকে স্মরণ করেছেন। আর বড় হৃদয়ের মানুষ ছিলেন বলেই শত্রু পাকিস্তানিদেরও মঙ্গল কামনা করেছেন। কারণ বাংলাদেশ তখন স্বাধীন। এর চেয়ে বড় আর কোনো চাওয়া ছিল না তার।

১০ জানুয়ারির ভাষণেই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন- ‘অনেকেই আমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছে আমি তাদের জানি। ইয়াহিয়া সরকারের সাথে যারা সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’(প্রাগুক্ত)

তিনি আরও উল্লেখ করে বলেছিলেন- ‘২৫ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ৯ মাসে বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এদেশের প্রায় সব বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করেছে। তারা আমার মানুষকে হত্যা করেছে। হাজার হাজার মা-বোনের সম্ভ্রম নষ্ট করেছে।’(প্রাগুক্ত)

বিশ্ব মানবতার ইতিহাসে জঘন্যতম কুকীর্তির তদন্ত হওয়া দরকার বলেই পরবর্তীকালে ১১ হাজার কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের কারাগারে আটকও রাখা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সপরিবারে জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করার পরে জেনারেল জিয়া ক্ষমতা গ্রহণ করে তাদের জেল থেকে ছেড়ে দেন।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে এদেশের শিল্পী-সাহিত্যিকরা অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন সৃজনশীলতার উঠোনে। যেমন, সিকান্দার আবু জাফরের ‘সে নাম মুজিব’ ও আবুবকর সিদ্দিকের ‘প্রশ্ন’ জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে লেখা কবিতা। ফিরে আসা বঙ্গবন্ধুর চোখে অশ্রু ছিল সেদিন। কোনো কোনো কবি সেই দৃশ্যও কবিতার চরণে উপস্থাপন করেছেন। (শেখ মুজিব একটি লাল গোলাপ, প্রাগুক্ত, পৃ ৫৬৯) আবুবকর সিদ্দিক ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় ফেরা’ কবিতায় বঙ্গবন্ধুর ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আনন্দ এবং বিরান বাংলায় স্বজন হারানোর বেদনাকে পাশাপাশি উপস্থাপন করেছেন।’(সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, আমি তোমাদেরই লোক, পৃ ৫৭১) কামাল চৌধুরীর ‘১০ জানুয়ারি ১৯৭২’- এ বিষয়ের আরেকটি উল্লেখযোগ্য কবিতা। বঙ্গবন্ধু ফিরে এলেন, মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন। কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের হাল টেনে ধরলেন, মানুষ আশায় বুক বাঁধল-

‘চতুর্দিকে শোক, আহাজারি, ধ্বংসচিহ্ন, পোড়াগ্রাম, বিধ্বস্ত জনপদ

তিনি ফিরে আসলেন, ধ্বংসস্তূপের ভেতর ফুটে উঠল কৃষ্ণচূড়া

মুকুলিত হ’ল অপেক্ষার শিমুল

শোক থেকে জেগে উঠল স্বপ্ন, রক্তে বাজল দারুণ দামামা

বেদনার অশ্রুরেখা মুছে ফেলে

‘জয় বাংলা, জয় বাংলা’ ব’লে হেসে উঠল

লতাগুল্ম, ধূলিকণা, পরিপূর্ণ দীপ্ত পতাকা।’(কবিতায় বঙ্গবন্ধু, ২০১২, পৃ ৩৭)

সিকানদার আবু জাফর রচিত ‘ফিরে আসছেন শেখ মুজিব’ সম্পর্কে কবীর চৌধুরী লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মাটিতে, তার মুক্তস্বদেশে ফিরে আসেন ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আগেই আন্তর্জাতিক তৎপরতা ও পাকিস্তানের বাস্তব পরিস্থিতির ফলে তখন তার মুক্তি ও বাংলাদেশে ফিরে আসার বিষয়টি সুনিশ্চিত হয়ে যায়, তখন সংগ্রামী কবি সিকানদার আবু জাফর ‘ফিরে আসছেন শেখ মুজিব’ নামে একটি চমৎকার কবিতা লেখেন। সিকানদার আবু জাফর তখন আরও বহু দেশত্যাগী বাংলাদেশের মানুষের মতো ভারতের পশ্চিম বাঙলায় ছিলেন।’(কবীর চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, বাঙালি জাতীয়তাবাদ মুক্তবুদ্ধির চর্চা, র‌্যাডিকেল এশিয়া পাবলিকেশন্স, লন্ডন, ১৯৯২, পৃ ১১) মূলত কবি এ কবিতায় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা সংগ্রামে ডাকের সফলতার চিত্র তুলে ধরেছেন।

বাঙালির ত্যাগ-তিতিক্ষার ফল স্থপতিরূপে বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসা। তার প্রত্যাবর্তন আমাদের স্বপ্নগুলো বাস্তবে পরিণত করে। কবি জানতেন বঙ্গবন্ধু ফিরে আসবেন। ৭ মার্চের ডাক ব্যর্থ হতে পারে না। মা- বোনদের ইজ্জত বৃথা যেতে পারে না। নির্মলেন্দু গুণের ‘প্রত্যাবর্তনের আনন্দ’ বঙ্গবন্ধুর আত্মকথনে রচিত। স্বদেশে ফিরে আসা বীরের চেতনার নানা প্রান্ত উন্মোচিত হয়েছে এখানে। পঁচাত্তরের পনের আগস্ট ও পরবর্তীতে সত্যের জয়গান সম্পর্কে জাতির পিতার কথনে কবির চরণ এরকম-

‘আনন্দের ঘোর কাটতে না কাটতেই,

একাত্তরের পরাজিত এজিদবাহিনী

রাত্রির অন্ধকারে সংগঠিত হয়ে পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট

সপরিবারে হত্যা করলো আমাকে।...

বহুদিন পর আজ সত্য জয়ী হয়েছে-,

সংগ্রাম জয়ী হয়েছে, সুন্দর জয়ী হয়েছে।

আজ আমার খুব আনন্দের দিন।’( মুজিবমঙ্গল, ২০১২, পৃ ৬১-৬২ )

কবি আসাদ মান্নানের কবিতায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাল্যকালের অভিজ্ঞতাকে বর্তমানের বোধিতে ধরা, বৃহত্তর পরিসরে জাতির পিতার চিরন্তন ভাবমূর্তিকে প্রকাশ করা সত্যিই অভিনব। কখনোবা আবেগের সঙ্গে যুক্তির বিন্যাসে ও লেখনী নিঃসৃত চিত্রকল্পসজ্জায় উপলব্ধিময় আখ্যানের রূপ দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবির চিন্তা পাঠকের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছেন প্রযত্নে। ভাষার নানা নির্দেশ ও ইতিহাস অনুসন্ধিৎসার উপস্থাপনা এবং বাংলা কবিতার ঐতিহ্য সংলগ্নতায় আসাদ মান্নান অনন্য। ১০ জানুয়ারি নিয়ে লেখা ‘পিতা তুমি ফিরে এলে’ কবিতার একটি অংশ-

‘নতুন আশার টানে ছুটে যায় আলো জ্বালতে গঞ্জের বাজারে-

কামার কুমার কুলি জেলে তাঁতী এক পায়ে নেমেছে রাস্তায়:

ভয়াবহ অই দীর্ঘ রক্তপথ পার হয়ে আলোর নাবিক

তুমি পিতা ফিরে এলে বীর বেশে বিজয়ী যোদ্ধার মতো-

স্বপ্নের জাহাজে চড়ে তীরে এসে দাঁড়িয়েছ মুক্তির হাওয়ায়;

মাঠে মাঠে সোনা ফলে, কৃষকের হাসি জমে ধানের গোলায়:

তোমার আভার কাছে পরাজিত সূর্যটাকে মেঘের আড়ালে

ঢেকে রাখে দুঃখিনী মুজিব বাংলা- বাঙালির স্বাধীন ভূখণ্ড।’

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রচনায়, হাবীবুল্লাহ সিরাজীর কবিতায় কিংবা অজস্র প্রবন্ধ-নিবন্ধে বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসা পরিপূর্ণ মুক্তির দিশা হিসেবে এবং স্বাধীনতা অর্জনের সার্থকতায় শোভিত হয়েছে।

বস্তুত ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসা এদেশবাসীর কাছে ছিল বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম আলোড়িত ঘটনা। এজন্য কবিদের অনুভূতি ও মননে সেই সন্দ্বীপন ইতিহাস ও কল্পনায় রঙিন হবে এটাই স্বাভাবিক। কবিতার চরণে সেই দিনটির আনন্দ, উচ্ছ্বাস ফিরে আসার তাৎপর্যে অনন্য হয়ে প্রকাশ পেয়েছে।

লেখক: ড. মিল্টন বিশ্বাস, কবি, কলামিস্ট, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য, সম্প্রীতি বাংলাদেশ এবং অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
BJPs operation on the Daulatpur border recovered Tk 12 lakh

দৌলতপুর সীমান্তে বিজেপির অভিযানে ৩২ লক্ষ টাকার মাদক উদ্ধার

দৌলতপুর সীমান্তে বিজেপির অভিযানে ৩২ লক্ষ টাকার মাদক উদ্ধার

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে পৃথক তিনটি অভিযানে মাদকদ্রব্য, কারেন্ট জাল ও আতশবাজি জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার ভোরে মহিষকুন্ডি আশ্রায়ন বিওপি এলাকার পুরাতন ঠোটারপাড়া পদ্মা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় ৮ হাজার ৮০ পিস ইয়াবা ও ৭৭ কেজি কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। এসব মালামালের বাজারমূল্য প্রায় ২৭ লাখ ৩২ হাজার টাকা।

এর আগে শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণপুর বিওপির আওতাধীন মোহাম্মদপুর মাঠে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ২৪ বোতল মদ এবং ২৫৭ পিস ট্যাপেন্ডেবল ট্যাবলেট জব্দ করে বিজিবি। এসবের আনুমানিক বাজারমূল্য এক লাখ ১৩ হাজার ১০০ টাকা।

একইদিন রাত ১১টার দিকে চিলমারী বিওপির আওতাধীন শান্তিপাড়া মাঠ এলাকায় আরও একটি অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিজিবি সদস্যরা এক হাজার পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট এবং ১ হাজার ৮০ পিস আতশবাজি জব্দ করেন। যার বাজারমূল্য প্রায় তিন লাখ ২৭ হাজার টাকা।

বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, মালিক বিহীন এসব জব্দকৃত কারেন্ট জাল তাৎক্ষণিকভাবে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে এবং মাদকদ্রব্যগুলো মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ধ্বংসের জন্য ব্যাটালিয়নের মাদক স্টোরে জমা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, “সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি সর্বদা কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে”

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Two people were killed in a train in Lohagara for a period of 3 days

লোহাগাড়ায় ৫ দিনের ব্যবধানে ট্রেনে কাটা পড়ে ২ জনের মৃত্যু

লোহাগাড়ায় ৫ দিনের ব্যবধানে ট্রেনে কাটা পড়ে ২ জনের মৃত্যু

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নে ট্রেনে কাটা পড়ে মো. হাছান (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ১৮ মাস বয়সী এক শিশুরও মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল।

গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের চুনতি হাফেজিয়া মাদ্রাসার উত্তরে রেলক্রসিংয়ের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে এবং আলী বাপের পাড়া এলাকার রেললাইন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

হাসান চুনতি ইউনিয়নের পশ্চিম চুনতি হাদুর পাড়ার বাসিন্দা সৈয়দ আহমেদের ছেলে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুল মাবুদ রয়েল জানান, ঘটনাস্থলের পাশে রেললাইনের মাঝখানে সাড়ে দশটার দিকে হাসানের মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। তবে, ট্রেনের কাটায় তার লাশ চারদিকে ছিড়ে ছিটকে পড়েছিল।

লোহাগাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারি স্টেশন মাস্টার মোঃ লোকমান বলেন , ট্রেনের কাটায় যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি।কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা সৈকত এক্সপ্রেস রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাচ্ছিল।

উল্লেখ্য এই ঘটনার মাত্র পাঁচ দিন আগে গত ২৬ জুলাই একই ইউনিয়নের নাজির পাড়া এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় তাওসিফ আলম ওয়ালিদ নামে ১৮ মাস বয়সী এক শিশুরও মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে একই এলাকার দুটি মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The body of the old man was recovered from the lake in Kamlganj

কমলগঞ্জে লেক থেকে বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার

কমলগঞ্জে লেক থেকে বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর চা বাগান লেক থেকে রামলাল রবিদাস (৭৫) নামে এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে উপজেলার শমশেরনগর দেওছড়া চা বাগানের ১২ নম্বর সেকশনের একটি লেক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত রামলাল রবিদাস শমশেরনগর চা বাগানের বজ্রনাথ রবিদাসের ছেলে।


পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রামলাল গোসল করতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুজি করে কোথাও পায়নি। পরে লেকের পাড়ে দেখতে পাওয়া যায় রামলালের গামছা, জুতা ও সাবান। গোসল করতে গিয়ে লেকে ডুবে মারা গেছেন এমন ধারনা থেকে শুক্রবার শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ি ও ফায়ারসার্ভিসের ডুবুরি সিলেট থেকে এসে লেকের পানি থেকে লাশ উদ্ধার করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মাসুদ আহমদ বলেন, ‌‘বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগানের লেকে রামলাল গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।পরে মরদেহ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে জানিয়ে পরিবারের কাছে মরদেহ দেওয়া হয়েছে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The locals are breaking the Narails Navaganga river panic

ভাঙছে নড়াইলের নবগঙ্গা নদী, আতঙ্কে এলাকাবাসী

ভাঙছে নড়াইলের নবগঙ্গা নদী, আতঙ্কে এলাকাবাসী

ভাঙ্গতে শুরু করেছে নড়াইলের নবগঙ্গা নদী । ইতোমধ্যে কালিয়া উপজেলার নদী তীরবর্তী গ্রাম, বাজার,ফসলিজমি,ঘরবাড়ি ধর্মীয়প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলিণ হয়েছে। এতে পাল্টে যাচ্ছে এলাকার মানচিত্র। আতঙ্কে নির্ঘুম রাতযাপন করছে এলাকার মানুষ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারবৃন্দ।

জানাগেছে,গত ১৫ দিনের বিরামহীন বর্ষণে নদীতে পানি বৃদ্ধি এবং স্রোত বেড়ে যাওয়ায় কালিয়া উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বারইপাড়া, মাহাজন বাজার, বড়দিয়া নৌবন্দর বাজার,গৌড়ীয় মঠসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা ঝুকির মধ্যে রয়েছে। আতঙ্কে নির্ঘুম রাতযাপন করছেন নদী তীরবর্তী এলাকাবাসী।

সরজমিন দেখা যায়, কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর ও কালিয়া পৌরসভার উথলি গ্রামে শুরু হয়েছে ভাঙ্গন। নদীগর্ভে চলে গেছে ঘরবাড়ি, গাছপালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙ্গনের ঝুকিতে রয়েছে বারইপাড়া মাহাজন সড়ক, বসতভিটা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভেড়িবাধের ওপর নির্মিত সড়কটি নদীগর্ভে বিলীন হলে তলিয়ে যাবে আশপাশের ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার একর ফসলী জমি। ভেসে যাবে কয়েক হাজার মাছের ঘের। এই পানি চলে যাবে লোহাগড়া ও সদর উপজেলার ৩০টি গ্রামে।

কালিয়া পৌরসভার উথলি গ্রামের বাচ্চু শেখ,পান্নু শেখ,শামু শেখ,লিপি বেগমসহ ২০টি পরিবারের বাড়ীঘর,ফসলি জমি নদীতে বিলীণ হয়েছে। ঝুকির মধ্যে রয়েছে ৬০টি পরিবার। বাচ্চু শেখ,পান্নু শেখ,শামু শেখ,লিপি বেগম বলেন,আমাদের চোখের সামনে সবার বসতবাড়ি গাছপালা নদীতে চলে যেতে দেখেছি।রক্ষা করতে পারিনি। তারা বলেন,ঘরে খাবার নেই। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা ক্ষুধার জালায় কান্নাকাটি করছে। তাদের কান্না দেখে পাশের গ্রামের কয়েকজন মানুষ শুকনা খাবার দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

কালিয়া পৌরসভার উথলি গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু শেখ বলেন,আমাদের পুরানো বাড়িঘর সব নদীতে চলে গেছে। ভেড়িবাধের পাশে মাথা গোজার মত একটা ছোট কুড়ে ঘর ছিল তাও চলে গেল ।এখন আমার পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে জীবনযাপন করছি ।

একই এলাকার স্কুল শিক্ষক রোস্তম মোল্যা বলেন,নদীতে প্রচন্ড স্রোত বইছে। আমরা খুবই আতংকের মধ্যে দিন পার করছি। বাড়িঘর নদীতে চলে গেছে। ভেরিবাধের খুপড়ির মধ্যে বাস করছি।তিনি বলেন,এই বাধ ভেঙ্গে গেলে নড়াইল সদর ও লোহাগড়া উপজেলার ২০টি গ্রামে পানি ঢুকে যাবে। এতে এলাকার প্রায় লক্ষাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়বে। তিনি বলেন,

বাড়িঘর,ফসলি জমিসহ এলাকার প্রায় ৩০ হাজার পুকুর,মাছের ঘের ভেসে যাবে । এ বছর আর ফসল উৎপাদন হবে না। আমাদের এলাকার প্রায় সবাই কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে।

নদী ভাঙ্গনে বসতবাড়ি হারিয়েূ সর্বশান্ত লিপি বেগম। তিনি বলেন ,আমার বাড়ি নদীতে চলে গেছে। বসতবাড়ি হারিয়ে এখন আমি সর্বশান্ত । কোথায় থাকবো কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না । ওই বাড়িটুকু ছাড়া আমার আর কোনো জায়গা জমি ছিল না । একটু মাথা গোজার মত জায়গা পাবো কোথায় । এখন আমার ছেলে মেয়েদের নিয়ে কোথায় থাকবো।

বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা শাবু শেখ আবেগঘন হয়ে বলেন, আমার সারাজীনের কষ্টের ফসল আমার এই বাড়ি টুকু তাও নদীতে চলে গেলো । অনেক কষ্টে আমি বাড়িটা করেছিলাম আমার আর কিছুই থাকলো না । জানিনা এখন পরিবার নিয়ে কোথায় থাকবো ।

আঙ্গিনার সবজি ক্ষেত ও বসতবাড়ি হারিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পথে আশ্রয় নেওয়া পান্নু শেখ। তিনি বলেন, আমার আর কিছুই নেই। সব নদীতে চলে গেছে । আশ্রয় নেয়ার মত এখন আমার রাস্তা ছাড়া আর কোথাও জায়গা নেই । রাতে ঘুম নেই খাবার নেই, কিভাবে দিন পার করছি আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না ।

সংবাদ পেয়ে নদী ভাঙ্গনের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী অভিজিৎ সাহা । তিনি বলেন, কালিয়া পৌর এলাকার উথলি গ্রামে ৯৫ মিটার ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জরুরী ভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধে ১২০ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে তাৎক্ষনিত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে । নদী ভাঙ্গণ এলাকা প্রতিরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উদ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Benazirs doctorate degree suspended Dabi

বেনজীরের ডক্টরেট ডিগ্রি স্থগিত করল ঢাবি

বেনজীরের ডক্টরেট ডিগ্রি স্থগিত করল ঢাবি

পুলিশের বিতর্কিত সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জনের সময় অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে সত্যানুসন্ধান কমিটি। ভর্তির যোগ্যতা পূরণ না করেও তার ডিগ্রি নেওয়ার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে কমিটি।

গত ২০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামে তথ্যানুসন্ধান কমিটি তাদের প্রতিবেদন তুলে ধরে। পরে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিষয়টি উচ্চতর তদন্তের জন্য ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত তার ডক্টরেট ডিগ্রি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদকে আহ্বায়ক এবং রেজিস্ট্রার মুন্সি শামস উদ্দিন আহম্মদকে সদস্য সচিব করা হয়। এছাড়া সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ ও মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম শহিদুল ইসলাম।

তাদের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিগ্রি নেন বেনজীর আহমেদ। গত বছরের ১৪ জুন তার ডক্টরের ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ভর্তি যোগ্যতা না থাকলেও তিনি এই ডিগ্রি গ্রহণ করে নিজের নামের পাশে ড. পদবি ব্যবহার করছিলেন।

বেনজীর আহমেদ পুলিশের বিতর্কিত আইজিপি। গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগেই তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন, ব্যাপক জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ ও জমি দখলের অভিযোগ ওঠে। অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর বেনজীর পুলিশপ্রধান ও র‌্যাবপ্রধান থাকাকালে বিচারবহির্ভূত বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডসহ নানা নিপীড়নের অভিযোগ সামনে আসে। তিনি বর্তমানে পলাতক।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The banks information was stuck for forgetting the information

ব্যাংক তথ্য ভুলে আটকে গেল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ‘বিশেষ অনুদান’

ব্যাংক তথ্য ভুলে আটকে গেল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ‘বিশেষ অনুদান’

সরকারি বরাদ্দ পাওয়া সত্ত্বেও শুধু ব্যাংক হিসাবসংক্রান্ত ভুল, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) তথ্য বিভ্রাট এবং কে-ওয়াইসি আপডেট না থাকার কারণে ‘বিশেষ অনুদান’ পাননি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত এই সহায়তা কার্যক্রমে তথ্যঘাটতির জেরে অনেক প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দকৃত টাকাও জমা হয়নি নির্ধারিত হিসাবে।

সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বাজেট শাখা থেকে প্রকাশিত একটি স্মারকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের অনুদান বাবদ মনোনীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের তালিকা গত ১৭ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল ১০১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ক্যাটাগরিতে ২৫০ জন এবং ৭ হাজার ১০০ জন শিক্ষার্থী। তবে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ এর মাধ্যমে অর্থ বিতরণের সময় দেখা যায়, ১০১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০টির ব্যাংক হিসাবসংক্রান্ত তথ্য ভুল ছিল। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের হিসাবে টাকা পাঠানো যায়নি।

এছাড়া শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রী ক্যাটাগরিতে ৬ হাজার ৯৯৯ জন উপকারভোগীর মধ্যে ৪৬২ জনের ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টে কে-ওয়াইসি তথ্য হালনাগাদ না থাকায় তাদেরও অনুদানের টাকা প্রদান করা সম্ভব হয়নি।

এ অবস্থায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে- যেসব শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা তাদের আবেদনপত্রে দেওয়া নগদ মোবাইল নম্বরে এখনও অর্থ পাননি, তাদেরকে ওয়াইসি তথ্য আগামী ৭ আগস্টের মধ্যে হালনাগাদ করতে হবে। আর যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তথ্য ভুল রয়েছে, তাদের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব নম্বর, শাখার নাম, রাউটিং নম্বর, হিসাবের নামসহ প্রয়োজনীয় তথ্য প্রতিষ্ঠান প্রধানের স্বাক্ষর এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির প্রতিস্বাক্ষরসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখায় নির্ধারিত ই-মেইল ([email protected]) ঠিকানায় পাঠাতে বলা হয়েছে।

একই সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্য না পাঠালে বা হালনাগাদ না করলে অনুদান বিতরণে বিলম্ব হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The price of vegetables is not relieved in the price of vegetables

বৃষ্টির অজুহাতে সবজির দাম চড়া, ডিম-মাছেও নেই স্বস্তি

ইলিশ এখনো মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে
বৃষ্টির অজুহাতে সবজির দাম চড়া, ডিম-মাছেও নেই স্বস্তি

রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি নেই মধ্যবিত্তের। কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দামে। এতে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। পাশাপাশি ডিম ও মুরগির দামেও স্বস্তি নেই। ব্রয়লার মুরগির দাম খুব বেশি না বাড়লেও সোনালি জাতের মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। এছাড়া সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি ইলিশের। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সবজি বিক্রেতারা জানান, আলু ও পেঁপে ছাড়া বাকি সব সবজি ৬০ টাকার বেশি দরে কিনতে হচ্ছে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি সবজির চড়া দামকে আরও উসকে দিয়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্র‍য়লার মুরগির দামে খানিকটা স্থিতিশীলতা লক্ষ্য করা গেলেও বেড়েছে সোনালি জাতের মুরগির দাম। প্রতি কেজি সোনালি মুরগির ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিন আগেও যা বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়।

গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও খাসির মাংস কেজি প্রতি ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সরবরাহ বাড়লেও ইলিশ এখনো মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরেই রয়ে গেছে। বাজারগুলোতে ১ কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ১ হাজার ৮০০ টাকা, ৫০০ গ্রামের ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকা, ৩০০ গ্রামের ইলিশ হাজার টাকা ও ১৫০ থেকে ২০০ গ্রামের ইলিশ ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

অন্যান্য মাছের ক্ষেত্রে এক কেজি শিং চাষের (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, দেশি শিং ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, পোয়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকায় ও পাঁচ মিশালি মাছ ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে কয়েকদিন আগেও ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন ১২০ থেকে ১২৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হলেও এখন দাম বেড়ে তা ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।

এছাড়া প্রতি কেজি বেগুন, ঝিঙা, কচুর লতি, করলা কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। সপ্তাহখানেক আগে এসব সবজির দাম কিছুটা কম থাকলেও বৃষ্টির কারণে এখন সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। ঢেঁড়স, পটল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।

তবে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে পেঁপে। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। এছাড়া বরবটি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচামরিচ প্রকারভেদে ১৬০ থেকে ২৪০ টাকা।

প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ইন্ডিয়ান গাজর ১৪০ টাকা, দেশি শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা ও হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ১০ থেকে ২০ টাকা, ধনেপাতা ৩০০ টাকা কেজি, কাঁচাকলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০ টাকা পিস, কাঁকরোল ৮০ টাকা ও মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এক আঁটি লালশাক কিনতে কমপক্ষে ২০ টাকা লাগছে। লাউশাক কিনতে খরচ হচ্ছে বাজারভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কলমিশাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত প্রতিআঁটি বিক্রি হচ্ছে। কলমিশাক ২ আঁটি ২০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা ও ডাটা শাক দুই আঁটি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বৃষ্টি হওয়ায় সরবরাহ কমেছে ফলে। বেশিরবভাগ সবজির দাম বেড়েছে।

চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা চালের দাম ৬০ টাকার বেশি। মাঝারি মানের এক ধরনের কিছু মিনিকেট ও নাজিরশাইল রয়েছে, যা শুধু ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বাকি সব চালের কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মন্তব্য

p
উপরে