বুধবার রাত ৯টা ৪১ মিনিটে টুই টুই শব্দে ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে একটি খবর ভেসে উঠল। নাট্যকার মান্নান হীরা আর নেই। মালিবাগের বাসায় হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দিলে কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেয়ার পথে রাত পৌনে নয়টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
মোবাইলের স্ক্রিনে কত সময় যে চোখ নিবদ্ধ হয়ে রইল বলতে পারবো না। এমনি করে আমার মতো অজস্র মানুষের চোখ আটকে যায় মোবাইল স্ক্রিনে। হীরা ভাই আপনি এভাবে চলে গেলেন? মাত্র ৬৩ বছর বয়সে কি এমন তাড়া ছিল?
১৯৫৬ সালে সিরাজগঞ্জ জেলায় তার জন্ম। সেখান থেকে মাধ্যমিক, রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায়ই নাট্যচর্চার সাথে যুক্ত হন। শুরু থেকে যুক্ত থাকেন আরণ্যক নাট্যদলের সঙ্গে।
মান্নান হীরা কেবলই নাটক করার জন্য নাটক করেন নি। তিনি নাটক করতেন মানুষের জন্য, বিশ্বাস করতেন ‘শিল্প কেবল বিনোদনের জন্য না, মানুষের জন্য।’ তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মানুষে মানুষে সাম্য প্রতিষ্ঠায় মেধা, মনন ও কলমে লড়েছেন।
প্রধানত তিনি নাট্যকার হলেও অভিনয়, নির্দেশনাসহ অন্যান্য শাখার সঙ্গেও তার নিবিড় সম্পর্ক ছিল। সব সময় তিনি নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন মঞ্চনাটক, টেলিভিশন ও পথনাটক রচনায়।
তার নাটকের প্রধান উপাদান নিরন্ন মানুষ ও দরিদ্র জনপদ। প্রাণ-প্রকৃতিও সমাধিক গুরুত্ব পেয়েছে তার নাটকে। বিশেষ করে মান্নান হীরার নাটকসমূহ কৃষিজীবী মানুষ, তাদের উৎপাদন ও উপকরণ কেন্দ্র করে লেখা। তীক্ষ্ণ সংলাপের ঘাত-প্রতিঘাতে মান্নান হীরার নাটক যেমন অভিনয় উপযোগী, তেমনি সুখপাঠ্য।
তার লেখা উল্লেখযোগ্য নাটকগুলোর মধ্যে ময়ূর সিংহাসন, ভাগের মানুষ, ‘লাল জমিন’, ‘সাদাকালো’, ‘মুর্খ লোকের মুর্খ কথা’, ‘আদাব’, ‘বৌ’, ‘ফেরারী’ ‘নিশান’, ‘ঘুমের মানুষ’, ‘শেকল’, ‘জননী বীরাঙ্গনা’, ‘একাত্তরের রাজকন্যা’, ‘মেহেরজান’, ‘ফুটপাত’, ‘রেফারী’, ‘বাংলার বাদশা’ ও ‘সুখদৈত্য’ অন্যতম।
তিনি নির্মাণ করেছেন শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘একাত্তরের ক্ষুদিরাম’। নির্মাণ করেছেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘গরম ভাতের গল্প’ এবং ‘একাত্তরের রঙ পেন্সিল’।
মান্নান হীরা রাজনৈতিকভাবে সমাজতান্ত্রিক দর্শনে বিশ্বাস করতেন। সে দর্শনকে ভালোবেসেই তিনি মঞ্চে, পথে বা টেলিভিশনের জন্য নাটক নির্মাণ করেছেন। তাই তার নাটকে প্রচ্ছন্ন রাজনীতিকে কেন্দ্রে রেখে প্রেম ও অন্যান্য সামাজিক সম্পর্কগুলি আবর্তিত হয়েছে। প্রথাগত সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামো ভেঙে ফেলতে অনুপ্রেরণা জোগায় তার লেখা নাটক।
তার রচিত রাজনীতি আশ্রয়ী পথনাটক প্রশংসিত হয়েছে দেশ-বিদেশে। তার একাধিক নাটক অনূদিত হয়ে দিল্লি, হংকং, পাকিস্তান, নেপালসহ অনেক দেশে প্রদর্শিত হয়েছে।
মান্নান হীরা বাংলাদেশের পথনাটক অঙ্গনে এক অনন্য নাম। যে কজন নাট্যকার বা নাট্যব্যক্তিত্ব এ দেশের পথনাটককে সমৃদ্ধ করেছেন, মান্নান হীরা তাদের অন্যতম।
বাংলাদেশে পথনাটক আন্দোলনকে গতিশীল করতে তিনি একাধারে নাটক লিখেছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন। ১৯৯৯ সাল থেকে আমৃত্যু পথনাটক নিয়ে চর্চারত দলসমূহের মোর্চা ‘বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের’ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনিই পথনাটক পরিষদের প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন।
২০০১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পথনাটক পরিষদের বিভিন্ন পদে থেকে তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। এ সময় দেখেছি এক অসাধারণ ধীশক্তি সম্পন্ন মানুষ তিনি। পথনাটক পরিষদের সমবেত বিভিন্ন চিন্তার মানুষদের মতামতকে ধারণ করে সময়ের বিবেচনায় অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে দেখেছি। অনেকেই সরকারের সঙ্গে থাকতে চেয়েছেন, অনেকে বিপক্ষে যেতে চেয়েছেন, কেউ রেখে-ঢেকে বলতে চেয়েছেন। কিন্তু হীরা ভাই টলে যান নি কখনো। যেটা বলা সমীচীন সেটাই বলেছেন।
হীরা ভাই শুধু নিজের দলে নাটক করে বা দলের কর্মীদের প্রশিক্ষিত করে থেমে থাকেন নি। অন্যদের গড়ে তুলতে বা পথনাটক আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে যা যা করা দরকার তাই করেছেন।
উদীচীর প্রয়োজনে যখনই বলেছি হীরা ভাই আপনার নেতৃত্বে একটি প্রশিক্ষণ আয়োজন করতে চাই বা অমুক জেলায় উদীচীর সম্মেলন আছে আপনাকে অতিথি হিসেবে যেতে হবে। সাধারণত উনি ফিরিয়ে দেন নি। মাটির মানুষের জন্য মাটি কামড়ে থাকা এই মানুষটি ২০০৬ সালে নাটক শ্রেণিতে ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন।
চাকরি, উদীচী সব দায়িত্ব মিলিয়ে ২০১৬ থেকে আমি পথনাটক পরিষদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেই। কিন্তু হীরা ভাই তাতে খুশী হতে পারেন নি। দেখা হলেই তার কথায় সেটা প্রকাশ পেত। এই গতবছরও পানুপালের জন্ম শতবার্ষিকীতে তার নাতনী মধুমিতা পাল আসলে তার সামনে শিল্পকলা একাডেমির ভিতরে স্বভাবসুলভ ভাবেই তার বহি:প্রকাশ ঘটালেন।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের দৌরাত্বে গত কয়েকমাস কারোর সঙ্গেই তেমন দেখা সাক্ষাৎ হয় না। সবশেষ দেখা হলো ২৪ অক্টোবর পিআইবি’র অডিটোরিয়ামে। সেখানে প্রদীপ ঘোষ পরিচালিত ‘ভালোবাসা প্রীতিলতা’ ছবির মহরত অনুষ্ঠানে। কথা ছিল আমরা দুজনেই প্রীতিলতা চলচ্চিত্রে অভিনয় করব। কিন্তু তা হলো না। যেন অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো সে প্রত্যশা।
অসম্ভব মেধা আর সৃজনে সমৃদ্ধ। মৃত্যুর আগে বাংলাদেশ টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমানের শাসন আমলে বিচারপতি আবু সায়েম যে ইনডেমনিটি বিল পাশ করে তা নিয়ে নাটক ‘ইনডেমিনিটি’ করলে তিনি মামলার শিকার হন। বিএনপি তার নামে মামলা করে। কিন্তু তিনি তার প্রত্যয়ে অনড় ছিলেন। বলতেন, এসব মামলা দিয়ে আমাদের কেউ থামাতে পারবে না। আমরা রাজপথে লড়াই করে বেঁচে থাকি। মহামান্য আদালত তার নামে মামলা খারিজ করে দেয়। সময়ে এই দুঃসাহসী মানুষটির প্রতি আনত শ্রদ্ধা।
লেখক: সহ-সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
আরও পড়ুন:শেরপুরের নকলায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের বসতবাড়ি ও মাঠে চাষযোগ্য জমিতে আগাম শীতকালীন শাক-সবজি আবাদের জন্য বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদ চত্বরে বীজ ও সার বিতরণের উদ্বোধন করেন নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম।
অনুষ্ঠানে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মুরসালিন মেহেদী বলেন, বীজ ও সার মাঠে আবাদ না করে যদি কোনো কৃষক বিক্রির উদ্দেশ্যে অসদুপায় অবলম্বন করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২৩০ কৃষকের মাঝে জনপ্রতি ৯ প্যাকেট করে মোট ২ হাজার ৭০ প্যাকেট সবজির বীজ এবং ৪০৫ কৃষকের মাঝে মাঠে চাষযোগ্য ২০ শতাংশ জমির জন্য লাউ, বেগুন, শসা, মিষ্টিকুমড়াসহ যেকোনো সবজির ১ প্যাকেট করে বীজসহ ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় যৌথ অভিযানে প্রায় ১৪ কোটি টাকার অবৈধ চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল জব্দ করেছে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন।
গত সোমবার সন্ধ্যায় বিজিবি জানায়, গত ১১ ও ১২ অক্টোবর উপজেলার সীমান্তবর্তী আশ্রায়ণ বিওপির আওতাধীন এলাকায় অভিযানকালে উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চল্লিশপাড়া ও মদনের ঘাট এলাকায় ৩৫ হাজার কেজি অবৈধ চায়না দুয়ারি ও কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৪ কোটি টাকা। পরে গত সোমবার দুপুরে এসব অবৈধ জাল ধ্বংস করেন পরিচালক (অপারেশন) যশোর সদর দপ্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিয়ন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান শিকদারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ।
রাঙামাটির বিলাইছড়িতে নদীতে পড়ে অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল নয়টায় এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ হওয়ার দুঘণ্টা পর স্থানয়ীরা মাছের জাল দিয়ে নিহত নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। নিহত নারী হলেন লতা মার্মা (৩৩)। তিনি কেংড়াছড়ি গ্রামের মিলন কান্তি চাকমার স্ত্রী। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বিলাইছড়ি থানার অফিসার ভারপ্রাপ্ত মানস বড়ুয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন লাশ উদ্ধার করা হয়েছে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে কেংড়াছড়ি থেকে নৌকাযোগে বিলাইছড়ি বাজার আসার পথে কেরণছড়ি এলাকায় এসে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন। পরবর্তীতে স্থানীয়রা মাছের জাল দিয়ে তল্লাশির পর বেলা সারে এগারটায় তার মরদেহ উদ্ধার হয়। নিহতের স্বামী মিলন কান্তি চাকমা জানিয়েছেন তার স্ত্রী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। তাদের সংসারে দুই মেয়ে এক ছেলে রয়েছে।
টেকসই ও উন্নত বিশ্ব গঠনে মানের গুরুত্ব অনস্বীকার্য-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রংপুরে উদযাপিত হয়েছে ৫৬তম বিশ্ব মান দিবস।
“সমন্বিত উদ্যোগে টেকসই উন্নত বিশ্ব বিনির্মাণে—মান” এই স্লোগানকে ধারণ করে দিবসটি পালন করে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) ও রংপুর জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম এনডিসি।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ মজিদ আলী, রংপুর ক্যাবের সভাপতি মোঃ আব্দুর রহমান, রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মোঃ রশিদুস সুলতান বাবলু, রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোঃ গোলাম জাকারিয়া পিন্টু, এবং জেলা হোটেল-রেস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল হক মুন্না। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। স্বাগত বক্তব্য ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসটিআই রংপুর বিভাগীয় অফিসের উপপরিচালক ও অফিস প্রধান (প্রকৌশলী) মুবিন-উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে আইএসও’র সদস্যপদ লাভের পর থেকে নিয়মিতভাবে বিশ্ব মান দিবস পালন করে আসছে। বর্তমানে আইএসও’র ১৭৭টি সদস্য দেশের সঙ্গে একযোগে বাংলাদেশও এবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করছে।
তিনি আরও জানান, গত এক বছরে রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় সচেতনতা বৃদ্ধি, মান নিয়ন্ত্রণ এবং শিল্পখাতের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিএসটিআই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।
বক্তারা বলেন, পণ্য ও সেবার মান বজায় রাখা শুধু শিল্পোন্নয়নের জন্য নয়, বরং ভোক্তা নিরাপত্তা ও জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতির পূর্বশর্ত।
তাঁরা মনে করেন, রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি উভয় পর্যায়ে মান সচেতনতা বিস্তার এবং উৎপাদন ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণই টেকসই উন্নয়নের মূল ভিত্তি হতে পারে।
অনুষ্ঠানে সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, শিল্প উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আল্টিমেটাম ছাড়া কোনো কাজ হয় না বলে মন্তব্য করেছেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ। মঙ্গলবার পূর্বের আল্টিমেটাম দেওয়া দাবির অগ্রগতি জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (রুটিন ভিসি) অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলীর সাথে সাক্ষাৎ এর পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
সাহেদ আহম্মেদ বলেন, আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত ভিসির কাছে দুই দফা দাবি দিয়েছিলাম। তার আপডেট জানতে আজ স্যারের সাথে আবারও দেখা করেছি। আমাদের দাবিগুলো হলো, ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়ক দ্রুত সংস্কার করার ব্যবস্থা করা এবং কুষ্টিয়া থেকে ঝিনাইদহ পর্যন্ত রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা চালু করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
তিনি বলেন, আমাদের কিছু মৌখিক দাবি ছিল। যেমন, ক্যাম্পাসে একটি ফায়ার সার্ভিস স্থাপন এবং ক্যাম্পাস সংলগ্ন শেখপাড়া-শান্তিডাঙ্গা এলাকায় যে বিদ্যুৎ সমস্যা আছে তার সমাধানের উদ্যোগ নেয়া। কারণ এখানে প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ভোগান্তির শিকার হয়। আমরা আশাবাদী যে প্রশাসন আমাদের দাবিগুলো দ্রুত পূরণ করবেন। তবে আমরা ইতোপূর্বে দেখেছি যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে আল্টিমেটাম ছাড়া কোনো কাজ হয় না বা বাস্তবায়ন দেখি না।
সাক্ষাৎকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (রুটিন ভিসি) অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, ছাত্রদল যে দাবিগুলো করেছে সেগুলো প্রায় কাজ শুরু হয়ে গেছে। কিছু কাজ চলমান। আর কিছু নীতি নির্ধারনী কাজ আছে যেগুলো মাননীয় উপাচার্য আসলে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিবেন।
“রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় না থেকেও জামায়াত জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে”- এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও গাজীপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মো. খায়রুল হাসান।
তিনি বলেন, “মানুষের কষ্ট লাঘব করা আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা না থাকলেও দলীয়ভাবে সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে জামায়াত একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোনপাড়ায় জামায়াতে ইসলামীর নিজস্ব অর্থায়নে সড়ক সংস্কার কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী এ সড়ক সংস্কার হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয়রা জানান, জামায়াতের উদ্যোগে সড়ক সংস্কার হওয়ায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি অনেকটাই কমে যাবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. আফতাব উদ্দিন, পৌর আমীর মাওলানা আমিমুল এহসান, পৌর নায়েবে আমীর মাওলানা আনোয়ার হোসেন, থানা কর্মপরিষদ সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম, জামায়াত নেতা ও সাংবাদিক হুমায়ুন কবির, মো. আরিফ, মো. আবু তাহের, মনির হোসেনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
উপস্থিত নেতারা বলেন, “জামায়াত সবসময় আর্তমানবতার সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সামাজিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে জননেতা মো. খায়রুল হাসান সরকারি কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজ ও কালীগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখার আহ্বান জানান এবং শিক্ষার প্রসারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এলাকার বাসিন্দারা বলেন, জামায়াতের এ ধরনের অংশগ্রহণমূলক উদ্যোগ স্থানীয় উন্নয়নে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও দেশবরেণ্য সাংবাদিক মরহুম মুহাম্মদ আলতাফ হোসেনের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার মাদারীপুর পৌরসভার ডিজিটাল সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সাংগাঠনিক সম্পাদক ও মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি শরীফ মোঃ ফায়েজুল কবীর। সঞ্চালনা করেন সংগঠনিটির জেলা শাখার সেক্রেটারী সাংবাদিক ইমদাদুল হক মিলন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব ও মাদারীপুর পৌরসভা প্রশাসক হাবিবুল আলম, বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব, জেলা তথ্য কর্মকর্তা বেনজীর আহম্মেদ, মাদারীপুর পৌরসভা সচিব খন্দকার আবু আহম্মেদ ফিরোজ, সংস্থাটির উপদেষ্টা এবং জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সুবল বিশ্বাস, নবনির্বাচিত উপদেষ্টা মিজানুর রহমান পিন্টু, সিনিয়র সাংবাদিক আহসান কাজল, জাতীয় রিপোর্টার্স ক্লাব মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি তাজুল মাতুব্বর, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, বিশিষ্ট ঠিকাদার ব্যবসায়ী শরীফ মহিউদ্দিন হাফিজ, জেলা কিন্ডারগার্টেন এর সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট এফ,এইচ কিন্ডারগার্টেন প্রধান শিক্ষক মাহাববুর রহমান রিপন মুন্সী, মানবাধিকার প্রতিনিধি ও সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট (অবঃ) আঃ কুদ্দুস পান্না হাওলাদারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সহ বিশেষ অতিথিবৃন্দ ও আমন্ত্রিত অতিথিরা মরহুম মুহাম্মদ আলতাফ হোসেনের মতো এমন একজন দেশবরেণ্য সিনিয়র সাংবাদিকের ১ম মৃত্যু বার্ষিকীতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজনের জন্য জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা, মাদারীপুর জেলা শাখার নেতারাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবন্দকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। পরে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিসহ নবনির্বাচিত উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ মিজানুর রহমান পিন্টুকে ফুলের শুভেচ্ছা প্রদানের পাশাপাশি সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
মন্তব্য