প্রাচ্যনাট স্কুল অব অ্যাকটিং অ্যান্ড ডিজাইনের ৩৮তম ব্যাচের সমাপনী প্রযোজনা হিসেবে মঞ্চায়িত হলো গ্রিক নাট্যকার সফোক্লিসের ‘আন্তিগোনে’।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে নাটকটি মঞ্চায়িত হয়।
নাটকটির অনুবাদ করেছেন ও নির্দেশনা দিয়েছেন নীল কামরুল।
নাকটটির গল্প এগিয়েছে আড়াই হাজার বছর আগে সত্যাগ্রহের পথ দেখানো ও ‘আইন অমান্য’র বিরুদ্ধে আন্দোলনের এক অনন্য মানবী আন্তিগোনেকে ঘিরে।
ইডিপাসের কন্যা আন্তিগোনে। রাজশক্তির অন্যায় আদেশের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়ানো এক ‘অরাজনৈতিক’ শক্তির নাম আন্তিগোনে।
আন্তিগোনের ভাই পলিনিসেস। পলিনিসেসের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের দায়ে মৃত্যুর পরে তার শেষকৃত্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্বেচ্ছাচারি রাজা ক্রেয়ন। পলিনিসেসের মৃতদেহ শেয়াল-শকুনের খাদ্য হোক; এই শাস্তি ধার্য করে রাজা ক্রেয়ন।
ভাইয়ের মৃতদেহের প্রতি এই অসম্মানকে প্রচণ্ড এক অন্যায় বলে মনে হয় আন্তিগোনের। তাই রাজ আদেশ অমান্য করে পলিনিসেসের মৃতদেহ সসম্মানে সমাধিস্থ করেন তিনি।
এই সংবাদ রাজার কানে পৌঁছালে আন্তিগোনেকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে রাজা ক্রেয়ন। ক্ষমাপ্রার্থনা করলে হয়তো প্রাণ-ভিক্ষা পেয়ে যেত আন্তিগোনে; কিন্তু না আন্তিগোনে তার আদর্শে অটল।
রাজা তাকে বন্দি রাখেন শহর থেকে দূরে এক নির্জন গুহায়। রাজপরিবারের সদস্যদের অনুরোধ এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের উপদেশে শেষ পর্যন্ত মত পরিবর্তন করেন রাজা ক্রেয়ন। কিন্তু ততক্ষণে কি অনেক দেরি হয়ে গেছে?
হল ভর্তি দর্শক, পিনপতন নীরবতা। আসলেই কী অনেক দেরি হয়ে গেছে! এ মুহুর্তে দর্শক সারিতেও সেই উৎকণ্ঠা। এভাবেই এগোতে থাকে ‘আন্তিগোনে’র কাহিনী।
বেশিরভাগ দর্শকের মনে আবারও নাকটটির দ্বিতীয় কোনো প্রযোজনা দেখার ইচ্ছে নিয়ে শেষ হয় নাটক ‘আন্তিগোনে’।
নাটক দেখে হল থেকে বেরিয়েছেন একজন দর্শক জেসমিন আক্তার মৌলি। নাটকটি কেমন লাগলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ন্যায়ের পক্ষে আন্তিগোনে অসাধারণ এক প্রতিবাদী চরিত্র। নাটকটি দেখতে দেখতে আন্তিগোনের জন্য গলা ভার হয়ে উঠেছিল। এক কথায় নাটকটি অসাধারণ। সুযোগ পেলে এই নাটকটি আবারও দেখব।’
নির্দেশক নীল কামরুল বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাকে ন্যায়প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত বলে মনে করা হয়। কিন্তু আইন নিজেই যদি অন্যায় হয়? ‘সার্বভৌমের আদেশ-ই আইন’ এটিই আইনের সবচেয়ে স্বীকৃত সংজ্ঞা। রাজনৈতিক পালাবদলে সার্বভৌম শক্তির পরিবর্তন হলে আইনও পরিবর্তন হয়।
কিন্তু ‘ন্যায়’তো রাজশক্তির মতো পরিবর্তনশীল নয়! ন্যায় এর সিংহাসন রাজ সিংহাসনের অনেক ওপরে! এই সহজ সত্যটাকে আন্তিগোনে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেছেন। আন্তিগোনে কোনো রাজনৈতিক চরিত্র নয়। একজন সাধারণ নাগরিক হয়েও জীবনের ঝুঁকি উপেক্ষা করে এই বিশ্বাসকে অটল রাখেন আন্তিগোনে।
নির্দেশকের ভাষায়, মহাত্মা গান্ধীর সত্যাগ্রহেরও আড়াই হাজার বছর আগে লেখা নাটকের একজন নারী চরিত্র ‘আইন অমান্য’র বিরুদ্ধে আন্দোলনের পথ দেখিয়েছেন। একজন অরাজনৈতিক নারীর এই দৃপ্ত অবস্থান, তার সত্যনির্ভর সাহস তখনকার রাজশক্তি সহ্য করতে পারেনি।
প্রশ্ন রেখে নির্দেশক নীল কামরুল বলেন, আড়াই হাজার বছর পরে এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও, কতটুকু বদলেছে আমাদের বাস্তবতা?
নাটকটিতে অভিনয় করেছেন- শেগুফতা আহমেদ, নাজিফা আনজুম তুষি, মালিহা তানজিম পূর্ণি, সুপ্তি দাস চৈতি, সালমান আরাফাত, শাহানাজ পারভীন জোনাকি, লিহাজুল আহ্সান, মো. তুহিন, আলভী নোমান ও সাদমান অলীভ প্রমুখ।
ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়ে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, নানামুখী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও তাদের দোসররা নতুন রূপে ফিরে আসতে চাইছে। তাদের প্রতিহত করতে প্রয়োজনে ছাত্র-জনতা আবারও সড়কে নামবে।
শনিবার চট্টগ্রামের মাদারবাড়ী প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে গণঅভ্যুত্থানে নিহত চট্টগ্রামের ১০৫ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সারজিস আলম এসব কথা বলেন।
জুলাই আন্দোলনে নৃশংসতার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া কীট রয়েছে। তাদের পাখা গজালে পাঁচ বছর পর তারা শহীদ পরিবারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। তাই খুনিরা যেন কোনোভাবেই পুনর্বাসনের সুযোগ না পায় সেজন্য সচেতন থাকতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন সারজিস আলম। প্রতিটি পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তার চেক প্রদান করা হয়।
নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, রাষ্ট্রীয় সংস্কারের আড়ালে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় থাকা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
জাতীয় প্রেসক্লাবে শনিবার এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. মোশররফ বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অঙ্গীকার ছিল বৈষম্যবিরোধী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু সংস্কারের নামে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।’
‘স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনের বিকল্প নেই’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত নির্বাচন ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়া সংস্কারকে অগ্রাধিকার দেয়া। এই সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা রয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় সংস্কার বাস্তবায়নেও তাদের অঙ্গীকার রয়েছে।
‘এসব সংস্কার দ্রুত করা দরকার। কোনো একটি সরকার একবারে সুর্নিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করে সব সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারে না। এই প্রক্রিয়া এখনই শুরু করতে হবে এবং আগামী নির্বাচিত সরকার তা অব্যাহত রাখবে।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। তারা সেই অধিকার প্রয়োগের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’
বিএনপির এই বর্ষীয়াণ নেতা বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর সমালোচনা করেন।
সংস্কারের নামে সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে থাকলে ষড়যন্ত্র ও অস্থিতিশীলতা বাড়বে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘জনগণকে সুস্পষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপের মাধ্যমে নির্বাচনের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। তবেই সব ষড়যন্ত্রমূলক প্রচেষ্টা ব্যর্থ করা যাবে।’
আরও পড়ুন:‘জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদের’ ব্যানারে সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত একদল কর্মকর্তা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে শনিবার আয়োজিত এক সমাবেশে এই আহ্বান জানানো হয়েছে। সমাবেশে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠনের আহ্বায়ক কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) আহসান উল্লাহ।
সাবেক সেনা কর্মকর্তারা মহাখালীর রাওয়া (অবসরপ্রাপ্ত আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন) কমপ্লেক্স থেকে সকাল ১০টার দিকে একটি শোভাযাত্রা বের করেন। শোভাযাত্রাটি বিজয় সরণি এলাকা প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।
ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সমাবেশে বক্তারা বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা ভারতের আধিপত্য ও আগ্রাসন নীতির বহিঃপ্রকাশ।
ভারতকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে স্বাধীন দেশের ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার কোনো প্রচেষ্টা বাংলাদেশের জনগণ সহ্য করবে না।
পরিষদের সদস্যরা ভারত সরকারকে দুই দেশের মধ্যে সই করা সব চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশের আহ্বান জানান।
ভিয়েনা কনভেনশনের উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, একটি মিশনের ওপর হামলা সংশ্লিষ্ট দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হামলার সমতুল্য।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) মনীশ দেওয়ান ও কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) লুৎফুল হক।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১২ আগস্ট থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত অন্তত ১৩টি ভুয়া খবর পাওয়া গেছে। এমন ভুয়া খবর/গুজব প্রচারের তালিকায় দেশটির অন্তত ৪৯টি গণমাধ্যমের নাম এসেছে।
রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। দেখা গেছে, বাংলাদেশ নিয়ে ভুয়া খবর প্রচারে এগিয়ে আছে ‘রিপাবলিক বাংলা’। এই গণমাধ্যমটি সর্বাধিক পাঁচটি গুজব প্রচার করেছে।
পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস, জি নিউজ এবং লাইভ মিন্ট। এরা প্রত্যেকে অন্তত তিনটি করে গুজব প্রচার করেছে। এছাড়া রিপাবলিক, ইন্ডিয়া টুডে, এবিপি আনন্দ এবং আজতক অন্তত দুটি করে গুজব প্রচার করেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রচার করা এসব গুজবের মধ্যে ছিল- শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তার নামে ভুয়া খোলা চিঠি, মুসলিম ব্যক্তির নিখোঁজ পুত্রের সন্ধানে মানববন্ধন করার ভিডিওকে হিন্দু ব্যক্তির দাবিতে প্রচার, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার ভুয়া খবর, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার ভিত্তিহীন দাবি, ট্রাম্পের বিজয়ের পর ড. ইউনূস ফ্রান্সে পালিয়ে যাওয়ার ভুয়া দাবি, পাকিস্তানি জাহাজের মাধ্যমে অস্ত্র আনার মিথ্যা দাবি, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী হিসেবে প্রচার, বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ হওয়া গুজব, বাংলাদেশে মুসলিমদের হামলায় হিন্দু মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের দাবিতে ভারতের প্রতিমা বিসর্জনের ভিডিও প্রচার, শ্যামলী পরিবহনের বাসে হামলার মিথ্যা তথ্য, চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবীর ওপর হামলার ভুয়া দাবি এবং বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা হতে পারে জানিয়ে যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ সতর্কতা জারির বিভ্রান্তিকর খবর।
৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর শেখ হাসিনা দিল্লি থেকে জনগণের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন এবং ওই চিঠিতে তার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন দাবিতে ভারতীয় গণমাধ্যমে একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়ে।
যদিও জানা যায়, শেখ হাসিনা এমন কোনো চিঠি দেননি। রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে উঠে আসে, এই চিঠিটি প্রথমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে ভারতের আগরতলাভিত্তিক দৈনিক ‘ত্রিপুরা ভবিষ্যত’ পত্রিকার প্রিন্ট সংস্করণে তারিখসহ প্রকাশিত হয়। এরপর, ওই পত্রিকার স্ক্রিনশটটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার হতে থাকে এবং পরবর্তীতে ভারতের ও বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমেও এটি প্রচারিত হয়।
৫ আগস্টের পর ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দাবি করা হয়, একজন হিন্দু ব্যক্তি তার নিখোঁজ পুত্রের সন্ধান দাবিতে মানববন্ধন করছেন।
তবে রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই ব্যক্তি আসলে মুসলিম এবং তার নাম বাবুল হাওলাদার। ২০১৩ সালে নিখোঁজ হওয়া ছেলের সন্ধানে মানববন্ধন করেছিলেন তিনি।
শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়। ভারতীয় গণমাধ্যম দাবি করে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে ভর্তি হয়েছেন। এ দাবির সঙ্গে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তির ছবিও প্রকাশিত হয়।
রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি ড. ইউনূসের নয়। ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের কিংবা বাংলাদেশেরও কোনো ছবি নয়। প্রকৃতপক্ষে ড. ইউনূস সুস্থ রয়েছেন।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে বেশ কিছু নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে বলে দাবি করে ভারতীয় গণমাধ্যম।
তবে, রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে এই দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। কোনো প্রকার নির্ভরযোগ্য তথ্য ও প্রমাণ ছাড়া ভারতীয় গণমাধ্যমে এই মিথ্যা দাবি প্রচারিত হয়।
৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হন। ট্রাম্পের বিজয়ের পর ভারতীয় গণমাধ্যমে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফ্রান্সে পালিয়ে গেছেন।
তবে রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবি মিথ্যা। পালানোর প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত বিমানের ছবিটি ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে ফেরার সময়ের।
স্বাধীনতার পর গত ১৩ নভেম্বর প্রথমবারের মতো সরাসরি পাকিস্তানের করাচি থেকে কনটেইনার বহনকারী একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে। এ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের ‘সোয়াত’ নামের যে সামরিক জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে এসেছিল, সেই জাহাজ আবারও চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। আরও দাবি করা হয়, ওই জাহাজে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র আনা হচ্ছে।
তবে, রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে এসব দাবির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। জাহাজটির নাম ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’। এটি একটি বাণিজ্যিক জাহাজ এবং এর মাধ্যমে শিল্পের কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য আনা হয়েছে।
জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে ২৫ নভেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে জামিন না-মঞ্জুর করা হয়। এর পর আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে চিন্ময়কে প্রিজন ভ্যানে তুলে কারাগারে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। এ সময় তার অনুসারীরা বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিপেটা এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে।
সংঘর্ষের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন। ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয় যে, সাইফুল ইসলাম চিন্ময়ের আইনজীবী হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এই দাবি সঠিক নয়। চিন্ময়ের আইনজীবী শুভাশীষ শর্মা, সাইফুল ইসলাম নন।
ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। তবে রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে চ্যানেলগুলো এখনও সচল থাকতে দেখা যায়। একইসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ক্যাবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ বিষয়টি গুজব বলে রিউমার স্ক্যানারকে নিশ্চিত করে।
ভারতীয় কতিপয় গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় চিকেন নেকের কাছে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানঘাঁটি নির্মাণ করবে। তবে রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবি পুরোপুরি মিথ্যা।
লালমনিরহাটের বিমানবন্দর দীর্ঘ ছয় দশক ধরে বন্ধ রয়েছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে এর কার্যক্রম পুনরায় চালুর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
সম্প্রতি, বাংলাদেশে মুসলিমদের দ্বারা হিন্দু মন্দিরে হামলা করে প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগে একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। এই দাবি ভারতের কিছু গণমাধ্যমেও প্রচার হয়।
তবে রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিডিওটি বাংলাদেশে নয়, বরং ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ সুলতানপুর গ্রামে প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্য। ভিডিওটি বাংলাদেশের হিন্দু মন্দিরে হামলার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-আগরতলা-ঢাকা রুটে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে বাংলাদেশি ট্রাকের সংঘর্ষ ঘটানোর দাবি করে ভারতের কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়। আরও দাবি করা হয়, শ্যামলী পরিবহনের বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীদের স্থানীয়রা প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং ভারতবিরোধী স্লোগান দেয়।
তবে রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, এই দাবিগুলোর কোনো সত্যতা নেই। ইচ্ছাকৃতভাবে নয়, দুর্ঘটনাটি মূলত ওভারটেকিংয়ের কারণে ঘটেছিল।
চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক ব্যক্তির ছবি নিয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হয়। দাবি করা হয়, ওই ব্যক্তি রমেন রায়, যিনি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী। আরও বলা হয়, মুসলিমরা তার বাড়ি ভাঙচুর করে এবং হামলা চালিয়ে তাকে আইসিইউতে ভর্তি করেছে।
তবে রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা গেছে, রমেন রায় চিন্ময় দাসের আইনজীবী নন এবং তার মামলার সঙ্গেও কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রকৃতপক্ষে ২৫ নভেম্বর শাহবাগে চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার-বিরোধী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কর্মসূচিতে দুর্বৃত্তদের হামলায় রমেন রায় আহত হন। তবে তার বাড়ি ভাঙচুরের খবর বা কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশে যেকোনো সময় জঙ্গি হামলা হতে পারে জানিয়ে যুক্তরাজ্য ভ্রমণ সতর্কতা দিয়েছে দাবিতে একটি তথ্য ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমমে প্রচার করা হয়েছে।
তবে যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ সতর্কতা কেবল বাংলাদেশে নয়; বরং ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জার্মানি, স্পেন, শ্রীলঙ্কা, ফ্রান্সসহ বিশ্বের অনেক দেশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন পরিকল্পিতভাবে অতিরঞ্জিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, ‘এই অতিরঞ্জিত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশকে অন্যায়ভাবে চিত্রিত করছে।’
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শনিবার করা এক পোস্টে এসব কথা বলেন শফিকুল আলম।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও অধিকার গোষ্ঠীগুলোকে তিনি বাংলাদেশে এসে এ বিষয়ে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানান।
শফিকুল বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেভাবে অপপ্রচার করা হচ্ছে, তা অত্যন্ত গুরুতর। আমরা আশা করি, শীর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ এবং উদারপন্থি সংবাদপত্রগুলো কাউন্সিল দ্বারা প্রকাশিত বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনকে বিশ্বাস না করে তারা নিজেরা তদন্ত করবেন।’
তিনি বলেন, ‘এসব মিথ্যা রিপোর্টের ভিত্তিতে কেউ কেউ বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পাঠানোর বা বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা এ ধরনের বার্তার প্রতিবাদ জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’
শফিকুল বলেন, ‘আমরা আশা করি আন্তর্জাতিক অধিকার গোষ্ঠী, যেমন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ স্বাধীনভাবে তদন্ত করবে; যেভাবে তারা তদন্ত করেছিলেন ২০১৩ সালে হেফাজত কর্মীদের গণহত্যার বিষয়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিপ্লব-পরবর্তী দিনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিষয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন যে অতিরঞ্জিত, তা প্রমাণিত হয়েছে নেত্র নিউজের একটি প্রতিবেদনে।’
নেত্র নিউজ একটি শীর্ষ অনুসন্ধানী ওয়েবসাইট এবং নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশের জন্য তাদের খ্যাতি রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম নেত্র নিউজের প্রতিবেদনের পর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অন্তত একটি বিবৃতি দেবে। কারণ, তাদের প্রকাশিত অতিরঞ্জিত প্রতিবেদনকে চ্যালেঞ্জ করেছে একটি শীর্ষ অনুসন্ধানী ওয়েবসাইট, কিন্তু দুঃখজনক বিষয় তারা কোনো বিবৃতিও দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনে নয়জন হিন্দু সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, কিন্তু এটা কোনোভাবেই সত্য নয়। তারা কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত হয়নি, বরং তাদের প্রত্যেকের মৃত্যুর পেছনে রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত এবং অন্যান্য কারণ ছিল।
‘এই একই সময়ে একই কারণে আরও বহু মানুষও নিহত হয়, যারা হিন্দুও নয়, সংখ্যালঘু নয়, বরং সংখ্যাগরিষ্ঠ।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘হিন্দুদের ওপর বিপ্লব-পরবর্তী হামলার প্রতিবেদনটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ১১ মিলিয়নেরও বেশি বার উদ্ধৃত করা হয়েছে। বিশেষ করে এটা প্রচার করছে শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী একটি হিন্দু আমেরিকান গোষ্ঠী, ভারতীয় মিডিয়া এবং ভারতীয় ভাষ্যকাররা।
‘তারা বাংলাদেশ নিয়ে ভুল মেসেজ তৈরি করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।’
আরও পড়ুন:ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তবর্তী এলাকায় বাংলাদেশ ড্রোন মোতায়েন করেছে মর্মে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর মিথ্যা ও বানোয়াট বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শনিবার এ তথ্য জানানো হয়।
ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, সীমান্তে ড্রোন মোতায়েন নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর ভুয়া ও বানোয়াট।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশ তার রুটিন কার্যক্রম ছাড়া দেশের কোনো অংশে কোনো ড্রোন মোতায়েন করেনি। খবরটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি সাজানো অভিযানের অংশ।’
এর আগে সূত্রের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কাছে তুরস্ক নির্মিত ড্রোন মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ। এমন খবরের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি জোরদার করছে ভারত।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কে উত্তেজনার পারদ এখন তুঙ্গে। হাসিনার পতনের পর সীমান্তজুড়ে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, এমন গোয়েন্দা তথ্যের পটভূমিতে নড়েচড়ে বসেছে ভারত।
গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়া টুডে বলেছে, ভারত সীমান্তের কাছে তুরস্ক নির্মিত বায়রাক্তার টিবি-২ নামের ড্রোন মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ, যা যাচাই করে দেখছে দিল্লি।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, সীমান্তে মোতায়েন করা এসব ড্রোন গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং নজরদারি মিশনের জন্য পরিচালনা করে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী।
আরও পড়ুন:নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তার ও গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষে নারীসহ দুই ইউপি সদস্য নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।
উপজেলার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের নজরপুর এলাকায় শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন চান্দেরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মানিক মিয়া (৫৫) ও সাবেক নারী ইউপি সদস্য কল্পনা বেগম (৩২)। তারা উভয়ই রুবেল গ্রুপের সদস্য।
আহত দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে, যারা হলেন আমির হোসেন (২১) ও রাব্বি মিয়া (২৪)।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জব্বার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার ও গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের জেরে উপজেলা যুবলীগ নেতা আবিদ হাসান রুবেল ও রায়পুরা পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হারুন অর রশিদের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে সংঘর্ষে রুবেলের চাচা মানিক মিয়া পার্শ্ববর্তী চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বশির উদ্দিনের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
‘এ সময় হারুন অর রশিদের সমর্থকরা তাকে বশির উদ্দিনের উঠানে কুপিয়ে হত্যা করে বলে জানা যায়।’
নিহত মানিক মিয়া চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য। কল্পনা বেগম একই ইউনিয়নের সাবেক নারী ইউপি সদস্য।
ওসি জব্বার বলেন, ‘দুই গ্রুপের গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের জেরে ভোর থেকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে নারীসহ দুইজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনার বিস্তারিত পরে জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য