বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ‘বঙ্গবন্ধু- এ যুগের রাষ্ট্রনায়ক’ শিরোনামে চিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদনে শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় ‘ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ এবং ভারতীয় হাই কমিশনের উদ্যোগে এই চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি অনলাইনে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডা: দীপু মনি বলেন, ‘আজকের প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুকে জানবার যে সুযোগ পাচ্ছে তা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নতুন প্রজন্ম যদি আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভাষা, সাহিত্য না জানে তাহলে বিশ্ব নাগরিক হবার যে স্বপ্ন আমরা দেখি তা সম্ভব নয়।’
ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন আসাদুজ্জামান নূর এমপি এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
প্রদর্শনীতে ১২ জন চিত্রশিল্পীর শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছেন আবদুল মান্নান, মো. মুনিরুজ্জামান, সৈয়দা মাহবুবা করিম মিনি, কাদের ভূঁইয়া, সঞ্জীব দাস অপু, কিরীটী রঞ্জন বিশ্বাস, প্রশান্ত কর্মকার বুদ্ধ, এস এম মিজানুর রহমান, মো. জাকির হোসেন পুলক, মনজুর রশিদ, সৌরভ চৌধুরী ও মানিক বণিক।
প্রদর্শনীটি শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার ৪ নং গ্যালারিতে আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবার জন্য প্রদর্শনীর গ্যালারি খোলা থাকবে।
এছাড়াও প্রদর্শনীটি রাজশাহী, সিলেট, যশোর ও চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিসহ দেশের অন্যান্য জেলায়ও অনুষ্ঠিত হবে।
দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় এক মেয়র প্রার্থী ও ৪০ কাউন্সিলর প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে বিএনপি।
শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাক্ষরিত নোটিশ সিলেট বিএনপির ওই নেতাদের পাঠানো হয়।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ব্যক্তি স্বার্থে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দিতে হবে।
প্রদানের তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী নোটিশ বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত দলের। এই সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নগরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সালাউদ্দিন রিমনকে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ তৌফিকুল হাদি, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য নজরুল ইসলাম মুনিম, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জল, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট রুকসানা বেগম শাহনাজ, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক উসমান হারুন পনির, সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা গোলাম মোস্তফা কামাল, গউছ উদ্দিন পাখি, সিলেট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন নাদিম, ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুফতি কমর উদ্দিন কামু, ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিঠু, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. কামাল মিয়া, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন, শাহেদ সিরাজ, ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান জুবের, ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আব্দুর রহিম মতছির ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুজিবুর রহমানকে শোকজ করা হয়েছে।
কারণ দর্শানোর নোটিশপ্রাপ্ত অন্যান্যরা হলেন- সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সালমান চৌধুরী শাম্মী, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি মামুনুর রহমান মামুন, এমসি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বদরুল আজাদ রানা, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য হুমায়ুন কবির সুহিন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি সেলিম আহমদ রনি, সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলী আব্বাস, বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক জাবেদ আমিন সেলিম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু মিয়া, বরইকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সানর মিয়া, টুলটিকর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মুকিত, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট হেদায়েত হোসেন তানভীর, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য দুলাল আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপি নেতা দেলওয়ার হোসেন জয়, সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আব্দুল হাছিব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহ-ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক সুমন আহমদ সিকদার, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপি নেতা সাহেদ খান স্বপন ও বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক নেতা নুরুল ইসলাম মাসুম।
এ ছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেট জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সহ-সভাপতি রুহেনা বেগম মুক্তা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, সিলেট ইউনিটের সদস্য অ্যাডভোকেট জহুরা জেসমিন ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি কামরুন নাহার তান্নি।
তবে এখন পর্যন্ত কোনো নোটিশ হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন মেয়র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিমন। তিনি বলেন, ‘আমি বর্তমানে গণসংযোগে ব্যস্ত, এসব নোটিশ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না।’
এসময় তিনি দলীয় পরিচয়ে প্রার্থী হননি বলেও জানান।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর বিএনপি সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘আজ রাতের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হোয়াটসঅ্যাপে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হবে। যাদের হোয়াটসঅ্যাপে পাওয়া যাবে না, তাদের সশরীর রোববার চিঠি পৌঁছে দেয়া হবে।’
যাদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে জবাব পাওয়ার পর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি বলে জানান তিনি।
২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন:দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৯ নেতাকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠি পাঠিয়ে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়। শনিবার রাতে স্ব স্ব নেতাদের নামে বহিষ্কারের চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন।
বহিষ্কৃত নেতারা হলেন- খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ সাজ্জাদ হোসেন তোতন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশফাকুর রহমান কাকন, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুব কায়সার, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী ও সাবেক কাউন্সিলর আমান উল্লাহ আমান, সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ড মহানগর বিএনপির সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাজেদা খাতুন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী ফজলুল কবির টিটো ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মুশফিকুস সালেহীন পাইলট, মহানগর তাঁতী দলের যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার মাতুব্বর, সাবেক ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন। তারা কেসিসির বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন।
চিঠিতে পাঠানো বহিষ্কারাদেশে বলা হয়েছে, বিএনপি এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অথচ আপনি দলের একজন সদস্য হয়ে ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে এ সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেছেন। ১ জুন আপনাদের কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করা হলে নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলেও নোটিশের জবাব দেননি, যা গুরুতর অসাদাচারণ। এহেন অবজ্ঞা ও ঔদ্ধাত্যের জন্য বিএনপির গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সকল পদ থেকে আপনাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হল।’
সৌদি আরবে গৃহকর্মীর কাজে গিয়ে সেখানে নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অনুসন্ধান ও প্রচেষ্টায় দেশে ফিরেছেন ভুক্তভোগী ১২ নারী কর্মী।
বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক শনিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত মাসে একজন নারী ভুক্তভোগীর স্বামী বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কাছে অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী ৬ মাস আগে এম এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে গৃহকর্মীর কাজ করতে সৌদি আরবে যান। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর থেকে তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। লোকমুখে তিনি জানতে পারেন তার স্ত্রী শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।
তিনি তার স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে এপিবিএনের সহযোগিতা চান। একইসঙ্গে যে ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে তার স্ত্রী সৌদিতে গেছেন সেই এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। এরপর এয়ারপোর্ট এপিবিএনের গোয়েন্দা দল বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করে।
জিয়াউল হক আরও জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। ভুক্তভোগী নারী কোথায় কী অবস্থায় আছেন সে বিষয়েও তথ্য জানতে চাওয়া হয়। এরপর অভিযুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সি সৌদি থেকে নির্যাতনের শিকার হওয়া ১২ নারী ভুক্তভোগীকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়।
অভিযোগ জানানো ব্যক্তির স্ত্রীসহ নির্যাতনের শিকার ১২ নারী ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শনিবার বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন।
জিয়াউল হক আরও জানান, বিমানবন্দরে পৌঁছলে এপিবিএন তাদেরকে রিসিভ করে। এ সময় ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রকল্পের প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন। দেশে ফিরে আসা নারীদের কাছ থেকে এপিবিএনের তদন্ত দল বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান যে তারা প্রত্যেকেই বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাভেল এজেন্সিসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এপিবিএন-এর এই কর্মকর্তা।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বধ্যভূমি (বুদ্ধিজীবী) স্মৃতিসৌধের লেক থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার বিকেল ৫টার দিকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শনিবার বিকেল ৫টার দিকে খবর পেয়ে লেক থেকে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে এখনও তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। দুজনেরই বয়স ৭ থেকে ৮ বছর। আমরা তাদের পরিবারকে খুঁজছি। ধারণা করা হচ্ছে, তারা গোসল করতে নেমেছিল। শিশু দুটির মরদেহ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।’
বিরোধী দলের রাজনীতিকদের মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার চক্রান্ত শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার মাধ্যমে। উদ্দেশ্য, আদালতকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাদের সরিয়ে দিতে পারলে সরকারি দল নির্বাচনে ফাঁকা মাঠ পেয়ে যাবে।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শনিবার বিকেলে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে মামলার রায়ে সাজা প্রদানের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।
সরকারি দলকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতাদের সরিয়ে দিয়ে নির্বাচনে ফাঁকা মাঠ পাওয়ার সেই আশার গুঁড়ে বালি, সেটা হবে না। এ দেশের মানুষ সেটা কখনোই হতে দেবে না। মানুষ জেগে উঠেছে। যতই অত্যাচার-নির্যাতন চালানো হোক, জনগণ সবরকম ত্যাগ স্বীকার তাদের অধিকার আদায় করে নেবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা (সরকার) বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে ১ হাজার ২৭৫টি মামলা নির্ধারণ করেছে। সেই মামলাগুলোতে দ্রুত সাজা দিয়ে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। ইকবাল হাসান মাহমুদ ও আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে সাজার রায় তারই প্রথম পদক্ষেপ।’
বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ইকবাল হাসান মাহমুদ ও আমান উল্লাহ আমান এই হাইকোর্ট থেকেই বেকসুর খালাস পেয়েছিলেন। সেই রায় বাতিল করে পুনরায় সে মামলা পুনরুজ্জীবিত করে অতি দ্রুত তাদের আবার সাজা দেয়া হয়েছে। অথচ একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, মোহাম্মদ নাসিম বেকসুর খালাস হয়ে গেছেন।’
‘গরিব মারার বাজেট’
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার বাজেটের নামে জনগণের সঙ্গে মশকরা করেছে। এই বাজেটে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ মানুষ, গরিব মানুষ। এটা গরিব মারার বাজেট।
‘বাজেটে গরিব মানুষের চাল, ডাল, তেল ও কৃষকের সারের দাম কমানোর কথা নেই। যারা আওয়ামী লীগের লোক, যারা চুরি-ডাকাতি করে টাকা বানিয়েছে তাদের কতটা রেয়াত দেয়া যাবে, কী করে সুবিধা দেয়া যাবে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা ব্যাপারে তাদের মাথা বেশ গরম হয়েছে। বিভিন্নভাবে বলার চেষ্টা করছে, এটা নাকি তাদের (সরকার) কোনো সমস্যা না। তাদের যদি সমস্যা না হয় তাহলে এল কেন? যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসা নীতি দিয়েছে, তা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য মর্যাদাকর নয়।’
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এখনও সময় আছে, ক্ষমতা ছেড়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। পেছনে আজরাইল দাঁড়িয়ে গেছে, আপনাদের সময় শেষ।’
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার মরণ কামড় দেবে। আর আমরাও মরণ কামড় দেবো তাদের বিদায় করতে। আগামী ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা আসবে।’
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আন্দোলন এবং নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার ও জেলে পাঠানো হচ্ছে।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম।
আরও পড়ুন:বিএনপির ভোট বর্জনের সিদ্ধান্তের পরও সিটি নির্বাচনে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করার কারণ জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন। দলটির দেয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে তিনি তা জানিয়েছেন।
এসময় মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দকে দোষারোপ করেছেন রুপন। মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া ও প্রত্যাহারের বিষয়ে কেউ কখনও যোগাযোগ করেনি বলে অভিযোগ তার।
তিনি জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বেঁধে দেয়া সময়সীমা শুক্রবার রাত ১০টার মধ্যেই শোকজের জবাব দিয়েছেন তিনি।
নোটিশের জবাবে রুপন উল্লেখ করেন, ‘বরিশাল সিটি নির্বাচনের প্রার্থীতা ঘোষণার পর গণমাধ্যমে এই মর্মে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয় যে আমি বিএনপির কেউ নই। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় বলে উল্লেখ করা হয়। তারপরও আমি সবসময় মিডিয়ায় বক্তব্য দিয়েছি, বিএনপির পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা আসলে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করব।’
বর্তমানে তিনি কোনো সাংগঠনিক পদে নেই জানিয়ে বলেন, ‘এখন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তবে দল যে সিদ্বান্ত দেবে, তা মেনে নেব।’
বরিশাল সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে মেয়র পদের রুপনসহ সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের ১৯ জনকে শোকজ দেয় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি।
২৪ ঘন্টার মধ্যে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত ওই নোটিশের জবাব দিতে নির্দেশ দেয়া হয়।
নোটিশের জবাবে রুপনকে দায়ী করা প্রসঙ্গে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, ‘সে বিএনপি পরিবারের সন্তান। সারা দেশের মানুষ জানে নিশিরাতে ভোটের এ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির কেউ অংশ নেবে না। সে যদি বিএনপিকে ভালবাসত, তাহলে নির্বাচনে অংশ নিত না।’
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, ‘নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্বান্ত। বিএনপির সবাই এটা জানে। ঘরে ঘরে গিয়ে তো বলার কিছু নেই।’
আরও পড়ুন:চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তে এক লাখ ৪৩ হাজার ১০০ ডলার ও ১০ হাজার ইউরোসহ এক পাচারকারীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মাদ জাহিদুর রহমান।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার করা হচ্ছে- এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সকাল ১০টায় সেখানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় শেখ তপন নামে এক যাত্রীর ব্যাগ তল্লাশি করে অভিনব কায়দায় লুকানো এক লাখ ৪৩ হাজার ১০০ ইউএস ডলার ও ১০ হাজার ইউরো উদ্ধার করা হয়। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর মূল্য প্রায় এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আটক তপন ঢাকার যাত্রাবাড়ী ভাঙ্গা প্রেস এলাকার শেখ জালাল উদ্দিনের ছেলে।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মাদ জাহিদুর রহমান জানান, ওই ঘটনায় আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের ও উদ্ধারকৃত বৈদেশিক মুদ্রা চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারি অফিসে জমা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
মন্তব্য