একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত কবি ওমর আলীর ৮১তম জন্মদিন আজ।
১৯৩৯ সালের ২০ অক্টোবর পাবনা শহরের দক্ষিণের চরশিবরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
ষাট দশকের রোমান্টিক কবি হিসেবে পরিচিত ওমর আলী। তার কবিতার মূলে ছিল শাশ্বত বাংলার ঐতিহ্য। তিনি প্রেমের কবিতাগুলোর জন্য বিখ্যাত।
১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘এ দেশের শ্যামল রঙ রমণীর সুনাম শুনেছি’। ওই গ্রন্থে শ্যামবর্ণা বাঙালি নারীদের সুনিপুণ বর্ণনা রয়েছে।
ওমর আলীর কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ২৯টি। উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘কুতুবপুরের হাসনা হেনা’ (১৯৮২) ও ‘খান ম্যানসনের মেয়ে’ (১৯৬২)।
তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো ‘অরণ্যে একটি লোক’ (১৯৬৬), ‘আত্মার দিকে’ (১৯৬৭), ‘সোনালি বিকেল’ (১৯৬৫), ‘নদী’ (১৯৬৯), ‘নরকে বা স্বর্গে’ (১৯৭৫), ‘প্রস্তর যুগ তাম্র যুগ’ (১৯৭৪), ‘তেমাথার শেষে নদী’ (১৯৭৪), ‘স্বদেশে ফিরছি’ (১৯৭৯), ‘স্থায়ী দুর্ভিক্ষ সম্ভাব্য প্লাবন’ (১৯৭৫), ‘গ্রামে ফিরে যাই’ (১৯৯৮)।
১৯৬৫ পাবনার এডওয়ার্ড কলেজ থেকে স্নাতক ও ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করেন ওমর। পরে ১৯৭৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরও একটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
তিনি পাবনার সরকারি শহিদ বুলবুল কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। সেখান থেকে ১৯৯৭ সালে অবসর নেন।
ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৭ সালে মরণোত্তর একুশে পদক পান এ কবি। এ ছাড়া তিনি ১৯৮১ বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৮৮ সালে বন্দে আলী মিয়া পুরস্কার ও ১৯৯১ সালে পান আলাওল সাহিত্য পুরস্কার।
২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর পাবনা সদর উপজেলার কোমরপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে মৃত্যু হয় তার।
মাদারীপুরের কালকিনিতে স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিতে স্বামীর কর্মস্থল মাদ্রায় অবস্থান নিয়েছেন এক গৃহবধু।
রোববার দুপুরে উপজেলার ডিক্রিরচর ফাজিল মাদ্রাসায় অবস্থান নেন ওই গৃহবধু। মাদ্রাসা অধ্যক্ষের ছত্রছায়ায় ওই প্রভাষক এ ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলে এলাকায় অভিযোগ রয়েছে।
স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন ওই গৃহবধু। বিচারের দাবিতে এখন বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।
ভূক্তভোগী দাবি করা ওই নারীর অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার ডিক্রিরচর ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে অনার্স পড়াকালিন ওই নারীর পরিচয় হয়। পরে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সুবাদে প্রায় সাত বছর আগে শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের এক পরিচিত লোকের মাধ্যমে কাবিননামা তৈরি করে বিভিন্ন স্থানে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে ওই শিক্ষক তার (ভুক্তভোগী) খোঁজখবর নেয়া বন্ধ করে দেন। পরে তার (শিক্ষক) সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানান প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান। স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেয়ে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন ওই গৃহবধু। অভিযোগ পেয়ে প্রভাষকের বেতন বন্ধ করে তাকে পুনরায় ভুক্তভোগী নারীকে কাবিন করে বিয়ে করার জন্য নির্দেশনা দেয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা। কিন্তু তাতেও কর্ণপাত করেননি ওই প্রভাষক। এখন বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভুক্তভোগী।
তবে মাদ্রাসার অধ্যক্ষের ছত্রছায়ায় থেকে ওই প্রভাষক অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভূক্তভোগী দাবি করা ওই নারী বলেন, ‘সরলতার সুযোগ নিয়ে মোস্তাফিজ আমার সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। আমি তার স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি চাই। এর আগেও বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছে মোস্তাফিজ।’
একাধিক বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করে প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ওর যা মন চায় করুক। আমি কাউকে ভয় পাই না।’
এ বিষয়ে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. ফজুলর রহমান বলেন, ‘আমরা ওই শিক্ষককের বেতন বন্ধ করে দিয়েছিলাম। তবে বিষয়টি উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে বসে সমাধানের জন্য সভাপতি নির্দেশনা প্রদান করেছেন।’
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এনামুল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা কয়েকবার বসেছিলাম। কিন্তু এখনও কোনো সমাধানে পৌঁছতে পারিনি।’
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম বলেন, ‘এতবড় অপরাধ করে শিক্ষক কী করে পার পাওয়ার চিন্তা করেন? এটা সত্যিই দুঃখজনক ঘটনা।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পিংকি সাহা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ওই মাদ্রাসার সভাপতির সঙ্গে আমি কথা বলব।’
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জে দেড় কোটি টাকার মালামালসহ একটি বাল্কহেড ডাকাতি করে পালানোর সময় ছয় ডাকাতকে আটক করেছে স্থানীয় জেলেরা। আটকদের কাছ থেকে তিনটি রামদা এবং লুট করা নগদ তিন হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
মেঘনা নদীর গজারিয়া অংশের বঘুরচর এলাকায় রোববার ওই ডাকাতদের আটক করা হয়। এসময় আরও তিন ডাকাত কৌশলে পালিয়ে গেছে।
আটক ছয়জন হলেন- আব্দুল কাদির, সুজন, সাদ্দাম হোসেন ওরফে সবুজ, নান্নু মিয়া, শাহীন হাওলাদার ও রুবেল মোল্লা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জেলে আলী মিয়া জানান, ভোরে মাছ ধরার সময় তাদের জালের ওপর দিয়ে একটি বাল্কহেড দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছিল। এসময় কয়েকজন জেলে তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তারা না থেমে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। জাল ছেড়ার ক্ষতিপূরণ আদায় করার জন্য কয়েকজন জেলে তাদের ট্রলার নিয়ে বাল্কহেডটিকে পেছন থেকে ধাওয়া করে। জেলেদের ধাওয়া খেয়ে দিক পরিবর্তন করে চালক বাল্কহেডটি হোসেন্দী বড় ব্রিজ এলাকার দিকে নিয়ে যেতে থাকে। সেখানে পানির গভীরতা কম থাকায় বাল্কহেডটি মাটিতে আটকে গেলে কয়েকজন জেলে বাল্কহেডের উপরে উঠে দেখতে পান ভেতরের কেবিন চেম্বারে তিনজন লোককে হাত-পা বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখা হয়েছে।
এ সময় তারা আশপাশের লোকজনকে খবর দিলে তারা ছয় ডাকাতকে আটক করে তিন বাল্কহেড শ্রমিককে উদ্ধার করেন। পরে খবর পেয়ে নৌ পুলিশ সদস্যরা এসে ৬ ডাকাত ও বাল্কহেড তাদের হেফাজতে নেয়।
বাল্কহেড মালিক হযরত আলী ফকির বলেন, ‘মালগুলো বরগুনার জেলার কয়েকজন ব্যবসায়ীর। তার দায়িত্ব মালগুলো নির্ধারিত স্থান থেকে সংগ্রহ করে তার বাল্কহেডের মাধ্যমে বরগুনাতে মালিকদের কাছে পৌঁছে দেয়া। নারায়ণগঞ্জ থেকে দেড় কোটি টাকার (তেল, আটা ও চিনি) মালামাল বাল্কহেডে লোড করা হয়েছিল আরও প্রায় ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার মালামাল নেয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে টাকা না দেয়ায় তারা মাল নিতে পারছিলেন না। সেজন্য গত দুইদিন যাবত মেঘনা নদীর গজারিয়া অংশের তেতৈতলা পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় বাল্কহেড নোঙ্গর করে তারা টাকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।’
তিনি জানান, রোববার সকালে তারা খবর পান বাল্কহেডের স্টাফদের জিম্মি করে ডাকাত চক্র সেটি ছিনতাই করে নেয়ার পথে স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে। মালামাল অক্ষত রয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি গজারিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
গজারিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রাশেদুল হক বলেন, ‘ডাকাত দল মালভর্তি একটি বাল্কহেডে নিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় জেলেরা তাদের আটক করে। খবর পাওয়ার পর আমরা সেখানে ছুটে যাই। বাল্কহেড বর্তমানে আমাদের হেফাজতে রয়েছে।’
বিষয়টি সম্পর্কে নৌ পুলিশের নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি, তবে গজারিয়া নৌ পুলিশ থেকে একটি ডাকাতির তথ্য পেয়েছি। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে শুনেছি সেখানে দেড় কোটি টাকার মতো মালামাল ছিল তবে তারা কোন চালানের কপি দেখাতে পারেননি।’
আরও পড়ুন:‘খবরের সব দিক, সব দিকের খবর’ স্লোগানকে সামনে রেখে ঝালকাঠিতে নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোরের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপতি হয়েছে। ১ অক্টোবর অগ্রযাত্রার তৃতীয় বর্ষ শেষ করে চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করেছে দেশের স্বনামধন্য এ নিউজ পোর্টালটি।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঝালকাঠি টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের কার্যালয়ে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এসময় কেক কাটেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী খলিলুর রহমান।
নিউজবাংলার ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি হাসনাইন তালুকদার দিবসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্য থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি একুশে টিভির জেলা প্রতিনিধি আজমীর হোসেন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক বৈশাখী টিভির প্রতিনিধি শফিউল আজম টুটুল, আরটিভির জেলা প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম জলিল, বিজয় টিভির মো. মাসুম খান, দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিনিধি শফিউল ইসলাম সৈকত, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার কামরুজ্জামান সুইট এবং ডিএনএন সম্পাদক খাইরুল ইসলাম।
শুভেচ্ছা বক্তেব্যে বক্তারা বলেন, “‘খবরের সব দিক, সব দিকের খবর’ স্লোগানকে ধারণ করে নিউজবাংলার যে আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল, তা থেকে কখনোই বিচ্যুত হয়নি পোর্টালটি। হাজারো খবরের ভেতর থেকে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদটি বের করে সবার আগে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেয়ার কাজটি অত্যন্ত দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে করে চলেছেন প্রতিষ্ঠানের সংবাদকর্মীরা।’
রাজশাহীতে ৯৩ হাজার টাকার ইস্যু করা একটি চেক জালিয়াতি করে ৫ লাখ ৯৩ হাজার উত্তোলন চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রোববার দুপুরে অগ্রণী ব্যাংকের কেশরহাট বাজার শাখায় টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে এই ঘটনা সামনে আসে।
অভিযুক্ত কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম।
এ বিষয়ে স্কুল কমিটির সভাপতির দাবি, ৯৩ হাজার টাকা উত্তোলনের জন্য তিনি চেকে সাক্ষর করেছিলেন। পরে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আরও ৫ লাখ টাকা যোগ করে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেন।
তবে স্কুল কমিটির সভাপতির এ অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন, টাকা উত্তোলনের সকল জায়গাতেই ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা লেখা রয়েছে। সভাপতি সাহেব সবখানে সাক্ষরও করেছেন। এখন তিনি অস্বীকার করছেন।
স্কুলটির সভাপতি রুস্তম আলী প্রামানিক বলেন, “কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম তার দোকানের এক কর্মচারী দেবাশীষকে টাকা উত্তোলনের জন্য রোববার দুপুরে ব্যাংকে পাঠান। ছেলেটি ব্যাংকে যাওয়ার পর ব্যাংক থেকে আমাকে ফোন করে নিশ্চিত হওয়ার জন্য। ব্যাংক থেকে আমাকে জানানো হয়, প্রধান শিক্ষক ও আমার স্বাক্ষর করা একটি ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকার একটি চেক ব্যাংকে দেয়া হয়েছে। তখন আমি ‘শুধু ৯৩ হাজার টাকার চেকে সাক্ষর করেছি’ বলে তাদের জানাই। এর পরই ব্যাংক ওই চেক আটকে দেয়।
“ঘটনা শুনে দ্রুত আমি ব্যাংকে যাই। আমি তাৎক্ষণিক প্রধান শিক্ষকেও ব্যাংকে আসতে বলি।’
তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম ব্যাংকে মোট ৯৪ হাজার টাকা আছে। তবে ছুটির মধ্যে ব্যাংকে অনুদান হিসেবে আরও ৫ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এই টাকা সরাতেই প্রধান শিক্ষক এভাবে চেক জালিয়াতি করতে চেয়েছিলেন। এ বিষয়ে আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আপাতত চেকটি ব্যাংকেই ম্যানেজারের কাছে আছে।’
এই ঘটনায় প্রধান শিক্ষক ক্ষমা চেয়েছেন বলেও জানান রুস্তম আলী প্রামানিক।
তবে কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একটি অনুদান এসেছে। এক চেকেই উত্তলনের জন্য আমি পাঠিয়েছিলাম। সভাপতি সাহেব সব জায়গাতেই কাগজে-কলমে ৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা লিখেছেন এবং সাক্ষরও করেছেন। এখন তিনি অস্বীকার করছেন। এখানে আমার কোনো দোষ নেই। আমি কোনো চেক জালিয়াতি করিনি।’
এদিকে প্রধান শিক্ষক ব্যাংকে উপস্থিত হলে সভাপতির সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে ঘুষিও মারেন সভাপতি। পরে উপস্থিত লোকজন তাদের শান্ত করেন।
আগ্রণী ব্যাংক কেশরহাট শাখার ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান খান বলেন, ‘চেকটির মুড়িতে ৯৩ হাজার টাকা লেখা ছিল। তবে মেইন চেকে ৫ লাখ ৯৩ হাজার লেখা দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে আমরা স্কুলের সভাপতিকে ফোন দেই।
‘দুই পক্ষ আসার পর থেকেই আমরা এটি নিয়ে সমাধানের জন্য বলেছি। এ বিষয়ে আমরা একটি চিঠিও দিয়েছি। তবে সমাধান না হাওয়া পর্যন্ত সবাই চেকটি আমাদের হেফাজতেই রাখতে বলেছেন। এজন্য চেকটি আমাদের হেফাজতেই রাখা হয়েছে।’
সফররত যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলার বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেনা বিটার বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কনস্যুলার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রোববার হওয়া এ বৈঠকে আলম বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করে এমন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যক্তিদের ভিসা পেতে বিলম্বের বিষয়টি উত্থাপন করেন। খবর বাসসের
বৈঠকের পর ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ প্রক্রিয়াটি আরও ত্বরান্বিত করার বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
আলম বলেন, সম্প্রতি ঘোষিত যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি।
নতুন ভিসা নীতি যুক্তরাষ্ট্রের বিষয় হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার তা জানার কোনো আগ্রহ দেখায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে আপনাদের বলতে পারি যে, তারা ভিসা নীতি নিয়ে কোনো আলোচনার সূচনা করেনি।’
আলম বলেন, সফরটি নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনার জন্য আসেননি।
ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) জানিয়েছে, সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিবের আলোচনার কয়েকটি বিষয় ছিল স্টুডেন্ট ভিসা, আমেরিকান নাগরিকদের কনস্যুলার সহায়তা এবং ভিসা ইন্টারভিউ-এর জন্য অপেক্ষার সময় কমানো।
বৈঠকে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার রাতে ঢাকায় আসার আগে এই মার্কিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইসলামাবাদ ও করাচি সফর করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেছেন, ‘তার সফর বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সুরক্ষা এবং যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ ভ্রমণ ও অভিবাসনের সুবিধার প্রতি আমাদের গভীর এবং টেকসই প্রতিশ্রুতির গুরুত্বকে তুলে ধরে।’
গত বুধবার চোরাইপথে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের গহীন অরণ্যের খালে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন ২২ বছর বয়সী শিপার হাওলাদার। সেদিন থেকেই তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর আজ তার খণ্ডিত মাথা ও পরনের রক্তাক্ত প্যান্ট উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বাঘের মুখে পড়েছিলেন তিনি।
রোববার সকাল ৮টার দিকে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের তুলাতলা এলাকার গহীন অরণ্য থেকে শিপারের দেহাবশেষ ও পোশাক উদ্ধার করে গ্রামবাসী।
শিপার হাওলাদার বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের জেলে ফারুক হাওলাদারের ছেলে। তার এমন নৃশংস মৃত্যুতে সুন্দরবন ও আশপাশের গ্রামগুলোর বনজীবীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যার আগেই তার (শিপার) বাড়ি ফিরে আসার কথা। কিন্তু রাতের মধ্যেও সে না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা দুশ্চিন্তায় পড়েন। প্রথমে তারা নিজেরাই সুন্দরবনে তল্লাশি করেন। কিন্তু তার কোনো সন্ধান না পেয়ে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে রোববার ভোরে পরিবারের লোকজনসহ অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী লাঠিসোটা নিয়ে সুন্দরবনে তল্লাশিতে যায়। তল্লাশির এক পর্যায়ে নিখোঁজের শুধু মাথা ও পরনের রক্তাক্ত প্যান্ট খুঁজে পায় গ্রামবাসী। তার দেহাবশেষের পাশে দেখা মেলে বাঘের পায়ের অসংখ্য ছাপ।
তারা জানান, বাঘটি শিপারের পুরো দেহই খেয়ে ফেলেছে। ওই জেলের দেহাবশেষ নিয়ে বাড়ি ফিরলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্বজনরা। রোববার বিকেলে তার বাড়িতেই শিপারের দেহাবশেষ দাফন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সুন্দরবনের বন বিভাগ জানায়, কোনো বৈধ অনুমতিপত্র (পাশ-পারমিট) ছাড়াই চোরাইপথে সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন জেলে শিপার। তার বনে প্রবেশের বিষয়টি বন বিভাগের জানা ছিল না। সুন্দরবনের বিপজ্জনক এলাকা দিয়ে মাছ শিকারের সময় তিনি বাঘের মুখে পড়ে থাকতে পারেন।
শরণখোলা উপজেলার ধানসাগরর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য কামাল হোসেন তালুকদার বলেন, ‘গত বুধবার সকালে শিপার হাওলাদার একাই সুন্দরবনের তুলাতলা খালে ঝাঁকি জাল দিয়ে মাছ ধরতে যান। সারা দিনেও সে ফিরে না আসলে উৎকণ্ঠায় পড়েন পরিবারের লোকজন। পরে বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে গ্রামবাসী সুন্দরবনে তল্লাশি চালিয়ে আজ সকাল ৮টার দিকে তুলাতলা এলাকার গহীন অরণ্য থেকে দেহাবশেষ উদ্ধার করে।’
সুন্দরবনের চাঁপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ধানসাগর স্টেশনের তুলাতলা এলাকার গহীন অরণ্য থেকে নিখোঁজের পাঁচদিন পর রোববার সকালে জেলে শিপার হাওলাদারের শুধু মাথা ও রক্তাক্ত পরনের প্যান্ট উদ্ধার করা হয়েছে।
‘বাঘের আক্রমণে জেলে শিপারের মৃত্যু হয়েছে। শিপার কোনো পাস-পারমিট ছাড়াই অবৈধভাবে সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পর সুন্দরবন-সংলগ্ন লোকালয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন বা কোনো জেলে যাতে অবৈধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ না করে, সেজন্য বন বিভাগ থেকে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:হবিগঞ্জের বাহুবলে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় পিকআপের ধাক্কায় মা ও ছেলে নিহত হয়েছে। এতে আরও তিনজন আহত হয়েছেন।
উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দৌলতপুর ব্রিজে রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউরা গ্রামের দারা মিয়ার স্ত্রী ৪৫ বছর বয়সী ফরিদা বেগম ও ২২ বছর বয়সী ছেলে মতিউর রহমান।
শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মাঈনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘৫ জন যাত্রী নিয়ে অটোরিক্সাটি ছন্দ্রচড়ি মাজারে যাচ্ছিল। দৌলতপুর ব্রিজে পৌছলে পেছন দিক থেকে দ্রতগামী একটি পিকআপ অটোরিক্সাটিকে ধাক্কা দিলে এটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই ফরিদা বেগম মারা যান।
উপস্থিত লোকজন আহতদের উদ্ধার করে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মতিউর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্য তিনজন ওই হাসপাতালে ভর্তি আছেন। খবর পেয়ে শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ফরিদা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে।’
মন্তব্য