ইউভাল নোয়া হারারি সম্পর্কে প্রথম শুনি তার বই স্যাপিয়েন্স প্রকাশের পর। পরিচিত মহলের অনেকেই বইটির প্রশংসা করেছেন। আমার স্যাপিয়েন্স পড়া হতে হতে হারারির পরের দুই বই হোমো ডিউস ও টুয়েন্টি ওয়ান লেসনস ফর টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি-ও প্রকাশিত হয়ে গিয়েছিল। অর্থাৎ স্যাপিয়েন্স পড়ার ক্ষেত্রে আমি সম্ভবত পিছিয়ে পড়াদের অন্তর্ভুক্ত। তবে স্যাপিয়েন্স বইটি আমাকে দারুণভাবে নাড়া দিয়েছিল। ৭০ হাজার বছর আগে কীভাবে নানা প্রজাতির মানুষের ভেতর থেকে হোমো স্যাপিয়েন্স তথা আমরাই টিকে গেলাম কিংবা কীভাবেই বা এই পৃথিবী আসলে মানুষের পৃথিবীতে পরিণত হলো, তার এক দারুণ ও ভিন্নরূপী ধারাবর্ণনা করেছেন হারারি তার এই বইতে।
পৃথিবী কিংবা মানুষের ইতিহাস বর্ণনার প্রচলিত পদ্ধতিগুলোর বাইরে গিয়ে ৭০ হাজার বছর আগের বুদ্ধিবৃত্তিক বিপ্লব, ১২ হাজার বছর আগের কৃষি বিপ্লব ও ৫০০ বছর আগের বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের মাধ্যমে মানুষের ইতিহাস সাজিয়ে হারারি স্যাপিয়েন্সের অগ্রযাত্রার মূল বাঁকগুলো অনেকটাই নিখুঁতভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন বলে মনে হয়। ফলে হারারির একটা প্রভাব নিশ্চিতভাবেই তার পাঠকদের ওপর পড়ার কথা ও তা দীর্ঘদিন বিদ্যমানও থাকার কথা। হাজার হাজার বছরের মানুষের ইতিহাস বা মানুষকে বোঝার জন্যে এই বইটি পড়া বেশ জরুরি। যদিও হারারির লেখনীর কিছু অংশ থেকে তার পশ্চিমমুখীনতা খুব সহজেই ধরা পড়ে।
তবে হারারির এই পশ্চিমমুখীনতা কি আসলে খুব বড় কোনো সমস্যা? হারারি যদি ইসরায়েল তথা মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ না হতেন তাহলে হয়তো বিষয়টা নিয়ে আলোচনারও কিছু থাকতো না। কারণ পশ্চিমের কয়জন তাত্ত্বিক পশ্চিম তথা ইউরোপের বাইরের বিশ্ব নিয়ে ভেবেছেন বা ভাবলেও প্রচলিত ধারণার বাইরে এসে ভাবার চেষ্টা করেছেন? সেই সংখ্যা খুব বেশি হওয়ার কথা না। আবার এ কথাও সত্য যে যদি ৫০০ বছর আগের যে বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের ফলে স্যাপিয়েন্সের মূল অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে বলে হারারি বলতে চান, সেই বৈজ্ঞানিক অগ্রযাত্রা তো আসলে ইউরোপেরই অগ্রযাত্রা।
চার্চের কর্তৃত্ব থেকে বের হয়ে কিংবা উপনিবেশের গোড়াপত্তন কিংবা পুঁজিবাদের উত্থান, সবকিছুর পেছনে হারারির ভাষায় ছিল মানুষের ‘অজ্ঞতা আবিষ্কার’, প্রাচ্যের মানুষেরা একে বলতে পারেন ইউরোপের মানুষের ‘অজ্ঞতা আবিষ্কার’। তাই সেই সময়ের বৈজ্ঞানিক অগ্রযাত্রাকে ধরে মানুষের ইতিহাস বর্ণনা করতে হলে সম্ভবত হারারির ইউরোপকেন্দ্রিক হওয়া ছাড়া উপায়ও খুব বেশি ছিল না।
কিন্তু আপাত দৃষ্টিতে যা যতটা সরল, তা সম্ভবত ততটা সরল আদৌ নয়। তাই স্যাপিয়েন্স পড়ে হারারির ভূয়সী প্রশংসা করলেও হারারিকে ক্রিটিক্যালি পড়ার একটা প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় দৃঢ়ভাবে। হারারির দ্বিতীয় বই হোমো ডিউস পড়ার পর তাকে ক্রিটিক্যালি ভাবা ছাড়া রেহাই দিলে আদতে কিছু বিপদের শঙ্কা হয়তো থেকে যায়। স্যাপিয়েন্স-এর উপশিরোনাম ছিল ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব হিউম্যানকাইন্ড’, আর হোমো ডিউস-এর উপশিরোনাম হলো ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টুমরো’। হোমো ডিউস-এর এই উপশিরোনাম থেকেই বুঝতে পারা যায় যে এই বইতে হারারি আসলে আলোচনা করতে চাচ্ছেন আগামী দিনগুলোতে আমাদের সাথে কী হতে যাচ্ছে তা নিয়ে।
যেহেতু হারারি হোমো ডিউস-এ ভবিষ্যত সময়ের চিত্র আঁকতে চেয়েছেন, তাই বলতেই হয়, এই বইয়ের অনেক কিছুই হারারির এক ধরনের অনুমান, যা তিনি বর্তমান বাস্তবতা থেকে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন। বইটির কোনো কোনো অংশে হারারি তা স্বীকার করেও নিয়েছেন, যা করাই স্বাভাবিক।
কিন্তু বিপদ হলো, অতীত ও বর্তমানের আলোকে যে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা বা শঙ্কা হারারি করছেন, তাকে একেবারে নিষ্পাপ চিন্তা বা কল্পনা বলে ছেড়ে দিলে বিপদের সম্ভাবনা আছে।
তো হারারি আসলে কী বলেছেন? মোটাদাগে যদি হোমো ডিউস-এ হারারির উপসংহার বলতে হয়, তাহলে বলতে হবে যে প্রাযুক্তিক উন্নয়নের একটি পর্যায়ে রক্তমাংসের মানুষের অনেক কাজই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে সম্পাদিত হবে এবং ডেটা বা তথ্য হয়ে উঠবে আগামী দিনের ধর্মের মতো একটি বিষয়, কিংবা বলা যেতে পারে ডেটা বা তথ্যই হয়ে উঠবে সবচেয়ে বড় সম্পদ।
এই উপসংহারে পৌঁছানোর আগে হারারি বলেছেন যে গত ৫০০ বছরে, অর্থাৎ বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের ফলে মানুষ দুর্ভিক্ষ, মহামারী ও যুদ্ধের মতো বিপর্যয়গুলোতে এখন আর আগের মতো ভুক্তভোগী নয়। স্যাপিয়েন্স-এও তিনি যুদ্ধের ক্ষেত্রে একই আলোচনা করেছিলেন। কিন্তু হারারি যে হিসাবে যুদ্ধ কমে যাওয়ার কথা বলেন, সেই হিসাব কিংবা তথ্য ত্রুটিপূর্ণ মনে হয় এই কারণে যে, আগে কতজন মানুষ যুদ্ধবিগ্রহে মারা গিয়েছে আর এখন কতজন মারা যাচ্ছে কিংবা যুদ্ধের পরিমাণ কমে যাওয়ার হিসাব দিয়ে যুদ্ধের বিচার করা যায় কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থেকে যাওয়া স্বাভাবিক।
যাই হোক, এই দাবির পর হোমো ডিউস-এ হারারি বলছেন, আগামী দিনগুলোতে মানুষ তিনটি বিষয় বা ক্ষমতা অর্জনের জন্যে কাজ করবে। এগুলো হলো সুখ, অমরত্ব ও ঈশ্বরত্ব বা ঈশ্বরে পরিণত হওয়া। আর্থ-রাজনীতিক ও স্বাস্থ্যগত উন্নয়নের মাধ্যমে প্রথম দুইটি ক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব হলেও মানুষ কীভাবে নিজেদের ঈশ্বরে পরিণত করবে?
হারারি বলতে চান, প্রাযুক্তিক উন্নয়নের কারণে মানুষের কাছে আগামী দিনগুলোতে এমন সব ক্ষমতা থাকবে যার কারণে প্রতিটি মানুষ আসলে ঈশ্বরের মতোই ক্ষমতাবান হয়ে উঠবে। আর সামষ্টিক পর্যাতে ডেটা বা তথ্য এই কাজটি করে দেবে। তিনি বলতে চান, মানুষের সম্পর্কে যত বেশি তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে এক জায়গায় জমা করে রাখা যাবে, তত সহজ হবে মানুষের দৈনন্দিন জীবন, নিরাপত্তাপ্রদান ও স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা। এক্ষেত্রে তিনি কেন্দ্রীয় কোনো প্রশাসনের কাছে আপনার-আমার সব তথ্য দিয়ে নিশ্চিন্তে জীবন পার করার পক্ষপাতী ও আমাদেরকে তাই হতে বলেন।
হারারি যেসব সুবিধা বা ক্ষমতার কথা বলেছেন, তার সবই হয়তো আমরা অনেকেই চাই, কিন্তু নিজের একান্ত গোপনীয়তা আরেকজনের হাতে তুলে দিয়ে এটা চাই কিনা তা নিয়ে আসলে ভাবার আছে। যদিও আমাদের হাতে হাতে থাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গুগল ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলো ইতোমধ্যেই আমাদেরকে আমাদের চেয়েও বেশি জেনে ফেলেছে ও প্রতিনিয়ত আরো বেশি করে জেনে নিয়ে তার মুনাফা বৃদ্ধি করছে। অর্থাৎ পুঁজিবাদের মুনাফা গোটাকয়েক কোম্পানি আর করপোরেশনের হাতে জমা হচ্ছে। তবে হারারি যেভাবে তথ্য দিতে বলছেন, তার ভেতর স্বপ্রণোদিত হওয়ার একটা ব্যাপার আছে, যা সম্ভবত এই গুগলগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে আমরা হচ্ছি না। কিন্তু হারারি তার হোমো ডিউস-এ পাঠকদের যে পথে যেতে বলেন, সেখানে একচেটিয়া পুঁজিবাদের জয়জয়কার ছাড়া খুব বেশি কিছু আদৌ দেখা যায় না। তার ওপর হারারি বলতে চান যে পশ্চিমা মানবতাবাদ যেখানে প্রায় ৫০০ বছর ধরে মানুষের বিভিন্ন কার্যক্রমের কেন্দ্রীয় চিন্তার বিষয় হিসেবে আবর্তিত হয়ে এসেছে, সেগুলো আসলে মানুষের মস্তিষ্কের কিছু ইলেক্ট্রনের কম্পন ছাড়া তেমন কিছু নয়। তিনি জোর দিয়ে বলতে চান, মানুষ সামনের দিনগুলোতে বুঝে যাবে আত্মা, সততা, নৈতিকতা আসলে তেমন কোনো অস্তিত্বশীল বিষয় নয়।
সমস্যাটা হচ্ছে, হারারিকে পুরোপুরি বাতিল করা সম্ভব নয়। হারারি দারুণ দারুণ সত্য তথ্যের ভেতর সূক্ষ্মভাবে এমন সব বিষয়ের পক্ষে কথা বলেন, যার ফলাফল হিসেবে মানুষের নিজেদের ভেতরের সম্পর্কের স্পর্শকাতরতা, গোপনীয়তা, আবেগ কমে যাবে কিন্তু বৃদ্ধি পাবে নিরাপত্তা, কেটে যাবে রোগ-শোকে মৃত্যুর ভয় কিংবা পাওয়া যাবে অমরত্ব। কিন্তু এই অমরত্বের জন্যে জীবনের যে দর্শন ত্যাগ করার দিকে হারারি আমাদের সূক্ষ্মভাবে ইঙ্গিত দিয়ে যান, সেদিকে যদি আমরা এগিয়ে যাই, তাহলে যে জীবন মানুষের জন্যে অপেক্ষা করে আছে, তা কি আদৌ মানুষের জীবন হতে যাচ্ছে? নাকি এতক্ষণ যা বলা হলো সেগুলোই আসলে সেকেলে কথা?
শিবলী নোমান: শিক্ষক, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ঝালকাঠির রাজাপুরে নদীর তীর থেকে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো যুবকের মামুন হোসেন, যার বয়স ২৫ বছর। তিনি রাজাপুরের পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে।
ভ্যানচালক মামুন দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন জানিয়ে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকায় কচা নদীর তীর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। লাশের ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেটি তদন্তে বের হবে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব পূয়ালী গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে রাব্বি হাওলাদার।
২৫ বছর বয়সী রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শ তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রাব্বির কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য এতো টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তার কৃষক বাবা সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের কাছে। কেন না তার সবকিছুই বিক্রি করে দিলেও এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ্য হচ্ছে না।
রাব্বি বর্তমানে ঢাকার মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন অবস্থায় কৃষক বাবা তার সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়ত বেঁচে যাবে তার সন্তান।
রাব্বির পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বি হাওলাদার কয়েক মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (সেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল রাব্বির, কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওপরে শুধু হাসপাতাল ও ওষুধের বিল দিতে হয়েছে। দরিদ্র এই পরিবারটি আত্মীয়স্বজনসহ সবার সহায়তায় ওই বিল দেয়া সম্ভব হয়।
রাব্বির মা রেভা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এভাবে আর কয়দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। কারণ আমাদের সামর্থ্য শেষ হয়ে এসেছে। শুধু টাকার অভাবে তাকে ভালো কোনো হাসপাতালেও নিতে পারছি না, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশনের ধকল সহ্য করার মতো সুস্থ অবস্থায় আনা খুব জরুরি।’
রাব্বির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনাদের ভালোবাসা ও সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন। কারণ শুধু টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার একমাত্র ছেলে অকালে ঝরে যাবে তা আমার জীবন থাকতে মানতে পারছি না।’
তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৯৭-২২৮৯৭৫ ও ০১৯৮৭-৩৬৬৫৬৮ (বিকাশ-পার্সোনাল) নাম্বারে পাঠাতে পারেন ও যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন।
এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার উজানপাড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ত্রিশাল থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, বেলা ১১টার দিকে মাদানী সিএনজি পাম্প সংলগ্ন উজানপাড়ায় একটি বাস ইউটার্ন নেয়ার সময় অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই বছর বয়সী এক মেয়ের মৃত্যু হয়। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে ৩৩ বছর বয়সী অটোরিকশার চালক শরিফুল ইসলাম ও অন্য একজনের মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, এ দুর্ঘটনায় আহত চারজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে, যারা হলেন ত্রিশালের রুদ্র গ্রামের জালাল উদ্দিনের ৪৫ বছর বয়সী স্ত্রী মনি আক্তার ও একই গ্রামের শামীম আহমেদের ৪৫ বছর বয়সী স্ত্রী সাহিদা আক্তার।
আগামী মাসে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বাংলাদেশ সফরে কিছু বিষয়ে গুরুত্ব পাবে বলে ইউএনবিকে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।
ওই সূত্র বার্তা সংস্থাটিকে জানায়, শেখ তামিমের সফরে জনশক্তি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় উভয় দেশ।
কাতারের আমিরের সফরে দুই দেশের মধ্যে প্রায় ডজনখানেক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে সূত্রটি বলেছে, সফরকালে এসব এমওইউ ও চুক্তি সই করা হবে।
ইউএনবির প্রতিবেদনে বলা হয়, কাতারের আমিরের দুই দিনের সফরটি হতে পারে আগামী ২১ থেকে ২২ এপ্রিল।
বার্তা সংস্থাটি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমিরের বৈঠকের পর যেসব এমওইউ ও চুক্তি সই হবে, সেগুলো নিয়ে দুই পক্ষ এখন কাজ করছে। সফরের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে আন্তমন্ত্রণালয় সভা করেছে।
গত বছরের মার্চে কাতারের রাজধানী দোহায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বিষয়ে জাতিসংঘের সম্মেলন এলডিসি-৫-এর পার্শ্ববৈঠকে কাতারের আমির শেখ তামিমের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওই বৈঠকে কাতারের কাছে বিশেষ করে এলএনজি সরবরাহে সহযোগিতার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের পর একই বছরের ৪ মার্চ বাংলাদেশকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় কাতার।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দোহায় বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক মিশন চালু করে। ১৯৮২ সালে ঢাকায় কূটনৈতিক মিশন খোলে কাতার।
আরও পড়ুন:ফরিদপুর সদরে যৌনপল্লি থেকে দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই পল্লির এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) জেলার রথখোলা যৌনপল্লির বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আপন (৩০), জহির (৩০) ও ববি (৩৮)।
গ্রেপ্তার না হওয়া এ তিনজনের মধ্যে ববি যৌনপল্লির সর্দারনি হিসেবে পরিচিত। আপন ও জহিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানা এলাকা থেকে এক তরুণীকে গত ১০ মার্চ ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন। দুই দিন সেখানে রেখে তাকে (তরুণী) তিন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন তিনি। ওই তিন ব্যক্তি ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় তরুণীকে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরের দিন একটি সাদা কাগজে তরুণীর স্বাক্ষর নিয়ে জানানো হয়, এখন থেকে তিনি যৌনপল্লির লাইসেন্সধারী সদস্য।
এতে আরও বলা হয়, মেয়েটিকে পারুর বাসায় রেখে ববি ও অন্যদের মাধ্যমে জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এর মাঝে মেয়েটি বাড়িতে যোগাযোগের জন্য একজন খদ্দেরকে তার ছোট বোনের মোবাইল নম্বর দেন। পরে ওই খদ্দেরের মোবাইল কলের মাধ্যমে মেয়েটির সন্ধান পায় তার পরিবার। এরপর তার মা ও ফুফা রথখোলায় এসে তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ যৌনপল্লিতে অভিযান চালানোর পর ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেক তরুণীও তাকে উদ্ধারে পুলিশের সাহায্য চান। ওই তরুণী জানান, তাকেও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় এক রাত রেখে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান জানান, যৌনপল্লিতে তরুণীকে নেয়ার ঘটনায় তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
দেশের সাত বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে আজকের বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা আছে, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সিনপটিক অবস্থান নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আজকের তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা আছে, সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা সোমবার সকালে ছিল ৮৫%।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর কবিরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে সহোদর দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের ছর আলী মাঝি বাড়ির পুকুরে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুই শিশু হলো সাত বছর বয়সী বিবি ফাতেমা বেগম ও তার চার বছরের ভাই আবিদ হোসেন। শিশুদ্বয় ছর আলী মাঝি বাড়ির আবদুল হাইয়ের সন্তান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হুমায়ন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই ভাই-বোন সকালে ঘরের পাশে পুকুরে দাঁত ব্রাশ করতে যায়। এ সময় হাত-মুখ ধোয়ার সময় একজন পুকুরে পড়ে গেলে আরেকজন উদ্ধার করতে পানিতে নামে।
‘পরে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য