ইসলামের নামে মামুনুল হক যে ভাষায় উসকানি দিয়ে আসছিলেন, তার সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক ছিল না। মামুনুল হক যে ভণ্ড, প্রতারক, মিথ্যুক সেটা আমি অনেক আগে থেকেই বলে আসছিলাম। তবে সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে অভিসারের পর মামুনুল হকের সব জারিজুরি ফাঁস হয়ে গেছে।
রিসোর্টে মিথ্যা দিয়ে তার শুরু। তারপর একের পর এক মিথ্যার জালে জড়িয়ে পড়েছেন নিজে, সঙ্গে জড়িয়েছেন ইসলামকেও। এত দিন মামুনুল যা বলতেন তাই বিশ্বাস করতে হতো মানুষকে। কিন্তু এখন ধরা পড়ার পর তার বাকি আবরুটাও খসে গেছে। এখন সবাই বুঝে গেছে, মামুনুল একটা লম্পট ছাড়া আর কিছুই নয়। মামুনুলের মিথ্যার শুরু তার রিসোর্ট বুকিং থেকে। রিসোর্ট বুকিংয়ের সময় তার ওপর কোনো চাপ ছিল না।
সেখানে তিনি সঙ্গে থাকা নারীর নাম লেখেন আমেনা তৈয়েবা, এই নামটা তার প্রথম স্ত্রীর। অথচ তার সঙ্গে ছিল কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা। স্থানীয় লোকজন মামুনুলকে আটক করার পরও তিনি দাবি করেন, তার সঙ্গে থাকা নারীর নাম আমেনা তৈয়েবা। অথচ পরে তিনি নিজেই জানিয়েছেন, তার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা।
প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোন আলাপের সময়ও তিনি দাবি করেছেন, সঙ্গে থাকা নারী ‘আমগোর শহীদুল ভাইয়ের ওয়াইফ’। স্ত্রীকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য তিনি বলেছিলেন, তুমি আবার মাঝখান দিয়া কিছু মনে কইরো না। প্রথম স্ত্রী কিছুই মনে করেননি। টেলিফোনে কিছুই বলেননি। খালি বলেছেন, ‘বাসায় আসেন, কথা হবে’। প্রথম স্ত্রীর এই হুমকি মামুনুল হক নিতে পারেননি। রয়্যাল রিসোর্ট কেলেঙ্কারির পর মামুনুল আর বাসায় ফেরার সাহস পাননি। পুলিশের কাছে ধরা দেবেন, তবু প্রথম স্ত্রীর কাছে যাবেন না।
প্রথম স্ত্রী তেমন কিছুই করেননি, শুধু সন্তানদের নিয়ে বাসা ছেড়ে চলে গেছেন। রয়্যাল রিসোর্টে ধরা খাওয়ার পর ফেসবুক লাইভে দ্বিতীয় স্ত্রীর কথা স্বীকার করেছিলেন মামুনুল, সঙ্গে স্বীকার করে নিয়েছিলেন ফাঁস হওয়া ফোনালাপ সবই সত্যি। তিনি বরং তার ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব করে টেলিফোন কথোপকথন ফাঁস করার প্রতিবাদ করেছিলেন। বিভিন্ন পর্যায়ের ফাঁস হওয়া টেলিফোন সংলাপে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, মামুনুল আসলে দ্বিতীয় বিয়ে করেননি। করলেও সেটা তার প্রথম স্ত্রী এবং পরিবারের কেউ জানতেন না।
মামুনুল দাবি করেছিলেন, জান্নাত আরা ঝর্ণার সঙ্গে তার স্বামীর ছাড়াছাড়ির পর ‘মানবিক কারণে’ শরিয়তসম্মতভাবে তাকে তিনি বিয়ে করেছিলেন। এর মধ্যেই ফাঁস হয়ে যায় তার তৃতীয় বিয়ের খবর। যদিও সেটা স্বীকার করার মতো সময় তিনি পাননি।
মামুনুলের পিতা শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক একজন স্বঘোষিত স্বাধীনতাবিরোধী। তবে তিনি ইসলাম বিষয়ে একজন আলেম ছিলেন। আর মামুনুল হক হলেন সেই আলেমের ঘরে জালেম। মুখে ইসলামের কথা বললেও তার চালচলন, কথাবার্তা, আচার-আচরণ, জীবনযাপন সব ইসলামবিরোধী। ইসলাম শান্তির কথা বলে। মামুনুল সহিংসতার কথা বলেন। ইসলাম নিয়মতান্ত্রিক জীবন বিধানের কথা বললেও, মামুনুলের পুরোটাই ছিল উচ্ছৃঙ্খল আর ইসলামবিরোধী।
ইসলামে চার বিয়ের অনুমোদন আছে বটে। তবে অবশ্যই দ্বিতীয় বিয়ের আগে প্রথম স্ত্রীর অনুমোদন নিতে হবে এবং সব স্ত্রীকে সমান মর্যাদা দিতে হবে। কিন্তু মামুনুল ধরা খেয়ে স্বীকার করা দ্বিতীয় স্ত্রীকে মর্যাদা তো দূরের কথা কোনো সামাজিক স্বীকৃতিই দেননি।
একটা মজার কথা বলে নিই। মামুনুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা। আর ফাঁস হওয়া তৃতীয় স্ত্রীর নাম জান্নাতুল ফেরদৌস লিপি। তার মানে জান্নাতের প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ ছিল। ইসলামে বলা আছে, পুণ্যবানরা মৃত্যুর পর জান্নাতে যাবেন এবং সেখানে তাদের জন্য ৭২ জন হুর অপেক্ষা করছে। কিন্তু মামুনুলের মনে হয় ধৈর্য একটু কম। মৃত্যুর পর জান্নাতে গিয়ে হুরের জন্য অপেক্ষা করার চেয়ে দুনিয়াকেই জান্নাত বানিয়ে ফেলার প্রকল্প নিয়েছিলেন। তাই জান্নাত নামের নারীদেরই যেন তিনি টার্গেট করেছিলেন।
সাধারণ নৈতিকতায় দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে যা ইচ্ছা তাই করার অধিকার আছে। কেউ কারো ওপর জোর খাটালেই সেটা অন্যায়। কিন্তু ইসলামে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কোনো বৈধতা নেই। মামুনুল হক মুখে ইসলামের কথা বললেও যাপন করেছেন এক ইসলামবিরোধী জীবন। রিসোর্ট কেলেঙ্কারির পর থেকেই আমি মামুনুলের মিথ্যাচার নিয়ে বলে আসছি। তার ‘রুহানী পুত্র’রা সেটা বিশ্বাস করেনি। তারা বরং আমাকে মিথ্যাবাদী বলে আসছিলেন।
মামুনুল যখন নিজের সব মিথ্যার দায় স্বীকার করে নিলেন এবং ‘স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে সীমিত পরিসরে সত্য গোপন করার’ ফতোয়া জারি করলেন, তখন তাদের কারও কারও টনক নড়লেও সবার নয়। বাকি অন্ধরা বলতে চেষ্টা করল, ইসলামে চার বিয়ে করার অনুমোদন আছে। মামুনুলও হুঙ্কার দিলেন, আমি একাধিক বিয়ে করলে কার কী? মামুনুলের কথাবার্তার ধরন এবং কসম আর অভিশাপের বাহার দেখে আমি তখনই নিশ্চিত ছিলাম লম্পট মামুনুল আসলে দ্বিতীয় বা তৃতীয় কোনো বিয়েই করেনি। কারণ, বারবার বলার পরও মামুনুল বিয়ের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। তখন তার রুহানী পুত্ররা দাবি করছিলেন, তিনি শরিয়তসম্মতভাবে বিয়ে করেছিলেন। অথচ এই মামুনুলই আগে বলেছিলেন, ইসলামে গোপন বিয়ের কোনো বৈধতা নেই। মামুনুলরা নিজেদের লাম্পট্য জায়েজ করার জন্য ইসলামকে নিজেদের মতো করে কাস্টমাইজ করে নেন।
পুলিশ রিমান্ডে যাওয়ার পর এখন মামুনুল স্বীকার করছেন, সকলি গরলে ভেল। তিনি বিয়েশাদি কিচ্ছু করেননি। জান্নাত আরা ঝর্ণা এবং জান্নাতুল ফেরদৌস লিপির অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়েছিলেন তিনি। নামকাওয়াস্তে ভরণপোষণের বিনিময়ে তিনি তাদের দিনের পর দিন ভোগ করেছেন। মামুনুলের দাবি তিনি দুই জান্নাতের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। এখন বোঝা যাচ্ছে, জান্নাত আরা ঝর্ণার ডায়েরিই সত্য। ডায়েরিতে বিয়ের কোনো কথা নেই, আছে কন্টাক্টের কথা। এক লম্পট মামুনুল যে আমাদের কত কিছু শেখালেন। এখন তিনি দাবি করছেন, ‘কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ’। হে আল্লাহ, এই লম্পটদের কবল থেকে তুমি ইসলামকে হেফাজত কর।
মামুনুলের ভাগ্য ভালো, তারা যে বাংলাদেশ কায়েম করতে চান, সেটা এখনও হয়নি। হলে এত গ্রেপ্তার, রিমান্ডের সুযোগ তিনি পেতেন না। এত দিনে পাথর ছুড়ে এই জেনাকারীকে হত্যা করা হতো।
লেখক: সাংবাদিক, কলাম লেখক
আরও পড়ুন:৩৩ প্রকার অত্যাবশ্যকীয় ওষুদের দাম কমিয়েছে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে (ইডিসিএল)। গতকাল বুধবার কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামাদ মৃধা। তিনি জানান, সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য কমানো হয়েছে।
সামাদ মৃধা বলেন, সিন্ডিকেট ভেঙে র-ম্যাটেরিয়াল যৌক্তিক মূল্যে কেনার ব্যবস্থা করায় ব্যয় কমেছে। ফলে ৩৩টি ওষুধের দাম ১০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো গেছে।
দাম কমেছে অ্যান্টিবায়োটিক, নিউমোনিয়া, সর্দি-জ্বর, উচ্চরক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিক আলসার, কৃমিনাশক, ব্যথানাশক, হাঁপানি ও ভিটামিন সংক্রান্ত ওষুধের, দাম কমিয়েছে বলে জানান তিনি।
ইডিসিএল জানায়, ওমিপ্রাজল ক্যাপসুল, কেটোরোলাক ইনজেকশন, অনডানসেট্রন ইনজেকশন, সেফট্রিয়াক্সোন ও সেফটাজিডিম ইনজেকশনের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো হয়েছে। মেরোপেন ওমিপ্রাজল ইনজেকশনের দামও হ্রাস পেয়েছে।
এছাড়া মনটিলুকাস্ট ট্যাবলেটের দাম ১০ টাকা ৬৭ পয়সা থেকে পাঁচ টাকা করা হয়েছে।
গ্রামীণ ক্লিনিকে তালিকাভুক্ত ৩২টি ওষুধের মধ্যে ২২টির দামও কমানো হয়েছে। গ্যাস্ট্রিকের অ্যান্টাসিড, প্যারাসিটামল, সালবিউটামল, অ্যালবেনডাজল, ক্লোরামফেনিকল আই ড্রপ, মেটফর্মিনসহ বিভিন্ন ওষুধের দাম কমানো হয়েছে।
কর্মী ছাঁটাই প্রসঙ্গে সামাদ মৃধা বলেন, ‘ইডিসিএলের উৎপাদনক্ষমতা অনুযায়ী দুই হাজারের বেশি অতিরিক্ত জনবল ছিল।
তারা সবাই অদক্ষ কর্মী, অনেকের জাল সনদ পাওয়া গেছে। তারা কোনো কাজ করত না। এই অদক্ষ জনবলের মধ্যে ৭২২ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির স্বার্থে আরও ১ হাজারের বেশি জনবল ছাঁটাই করতে হবে। যাদের ছাঁটাই করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মীর মুগ্ধ সরোবর ঘিরে পূবালী ব্যাংকের উদ্যােগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে পূবালী ব্যাংক পিএলসি কুষ্টিয়া শাখার উদ্যোগে এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আওতায় নারকেল, মৌচন্দ্রা, রঙ্গন, চেরি, পবনঝাউ, রাধাচূড়া, চন্দ্রপ্রভা ইত্যাদি গাছের মোট ১৫০টি চারা রোপন করা হয়।
অফিস সূত্র, ব্যাংকিং কার্যক্রমের-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সাদ্দাম হোসেন হলে টিভি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যাত্রী ছাউনি ও পানীয় সুব্যবস্থা করবে। একই সাথে আইটি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করার প্রস্তাবনা দিয়েছে বলে জানা যায়।
এসময় পূবালী ব্যাংক পিএলসি’র ফরিদপুর অঞ্চলপ্রধান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জহিরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া শাখার প্রধান মো. ইসমাইল হাওলাদার, বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ অফিসের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. সাহেদ হাসান, ইবি উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু, ব্যাংকের কুষ্টিয়া শাখার কর্মকর্তা নাজমুল হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মাগুরায় জুলাই পূনর্জাগরণে সবুজ উৎসবে বৃক্ষরোপন পদক-২০২৫ প্রদান করা হয়েছে। বুধবার মাগুরা জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মাগুরা ও ‘পরিবর্তনে আমরাই’ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সার্বিক মোঃ হুসাইন শওকত প্রধান অতিথি হিসেবে সবুজ উৎসব-২০২৫ এর বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলাম । এ সময় আরও ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল কাদের, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব মাহবুবুল হক,জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার শামীম কবির, মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী অফিসার হাসিবুল হাসান, জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আলমগীর হোসেন, মাগুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক ও 'পরিবর্তনে আমরাই ' সংগঠনের পরিচসলক নাহিদুর রহমান দুর্জয় প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সাতটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। সেরা প্রতিষ্ঠান সরকারি সিভিল সার্জন অফিস, সেরা প্রতিষ্ঠান বেসরকারি মাগুরা প্রেস ক্লাব, সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (প্রাথমিক) কুমার কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাধ্যমিক) আড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়,সেরা সংগঠন প্রতিশ্রুতি উন্নয়ন সংস্থা,ব্যক্তি পর্যায়ে সেরা বৃক্ষপ্রেমী আশীষ কুমার দে মন্ডল ও সেরা কন্টেন্ট ক্রিয়েটার মোঃ সাজ্জাদ হোসেন কে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এ অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সবাইকে বেশি বেশি গাছ লাগানোর প্রতি উদ্বুদ্ধ করা।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় মাদরাসা পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও শিক্ষক মাওলানা জসিম উদ্দিন (৩৫) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৩ আগস্ট) অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে ময়মনসিংহ বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, লম্পট ওই নারীলোভী শিক্ষক উপজেলার রঘুনাথপুর মধ্যেপাড়া এলাকায় রঘুনাথপুর জামিয়া খাদিজাতুল কুবরা (রাঃ) মহিলা মাদ্রাসা নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। সেখানে মেয়েদের ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব বুজিয়ে অভিভাবকদের আকৃষ্ট করে তার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসায় মেয়েকে ভর্তি নেন।
এমতাবস্থায় মাদরাসা আসা যাওয়ার পথে একা পেলেই ওই শিক্ষার্থীকে কুপ্রস্তাব দেন মাওলানা জসিম উদ্দিন। পরে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার প্রতিষ্ঠানে চাকুরি নেওয়া আরেক নারীর সহায়তায় ওই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সময় মাদরাসার অফিস কক্ষে ডেকে এনে ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন।
স্থানীয়রা জানান, জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিকবার যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের অভিযোগ উঠে, যা গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়। তবে এবার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেন ও তার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মোহাম্মদ রুকনুজ্জামান বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
স্বাধীনতা ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত অধ্যাপক যতীন সরকার মারা গেছেন। বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেল পৌনে ৩টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। যতীন সরকার (৯৯) দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন এর মধ্যে গত জুন মাসে পড়ে গিয়ে উরুর হাড়ে আঘাত পান পরে তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।গত সপ্তাহে ময়মনসিংহে নেয়ার পর সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। যতীন সরকার দুই মেয়াদে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ উদীচীর ময়মনসিংহ কার্যালয়ে নেয়া হবে। তবে শেষকৃত্যের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন সিপিবির ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সভাপতি এমদাদুল হক মিল্লাত। প্রসঙ্গত,যতীন সরকার ১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট নেত্রকোণার কেন্দুয়ার চন্দপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক এই শিক্ষক সুদীর্ঘকাল ধরে মননশীল সাহিত্যচর্চা, বাম রাজনীতি এবং প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। লেখক হিসেবে যতীন সরকার ২০১০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার, ২০০৭ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পদক, ২০০৫ সালে পাকিস্তানের জন্ম-মৃত্যু দর্শন গ্রন্থের জন্য প্রথম আলো বর্ষসেরা গ্রন্থপুরস্কার,ড. এনামুল হক স্বর্ণপদক, খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার, মনিরুদ্দীন ইউসুফ সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেন।
৪২ বছরের বেশি সময় শিক্ষকতা পেশায় থেকে ২০০২ সালে অবসর গ্রহণের পর যতীন সরকার স্ত্রী কানন সরকারকে নিয়ে শিকড়ের টানে চলে যান নিজ জেলা নেত্রকোণায়। তার প্রথম গ্রন্থ সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে। এরপর একে একে প্রকাশিত হয় বাংলাদেশের কবিগান বাঙালির সমাজ তান্ত্রিক ঐতিহ্য সংস্কৃতির সংগ্রাম মানবমন,মানবধর্ম ও সমাজবিপ্লব। এ প্রবন্ধ গ্রন্থগুলোর পাশাপাশি শিশুদের জন্য সুপাঠ্য একটি ব্যাকরণ গ্রন্থও রচনা করেন তিনি। বাংলা একাডেমি থেকে ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত গল্পে গল্পে ব্যাকরণ’ বাংলাদেশের শিশুসাহিত্যে এবং ব্যাকরণ গ্রন্থের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। বাংলা একাডেমির জীবনী গ্রন্থমালার মধ্যে চারটি গ্রন্থ রচনা করেন তিনি। যথাক্রমে-কেদারনাথ মজুমদার চন্দ্রকুমার দেহরিচরণ আচার্য সিরাজউদ্দিন কাসিমপুরী। তার সম্পাদিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে রবীন্দ্রনাথের সোনার তরী প্রসঙ্গ মৌলবাদ ও জালাল গীতিকা সমগ্র। এ ছাড়া তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে আরও রয়েছে পাকিস্তানের জন্মমৃত্যু দর্শন দ্বিজাতিতত্ত্ব, নিয়তিবাদ ও বিজ্ঞান-চেতনা সংস্কৃতি ও বুদ্ধিজীবী সমাচার সাহিত্য নিয়ে নানাকথা।
কুমিল্লা নগরীতে প্রবেশ পথের প্রধান সড়কগুলো যেন এখন মরণফাঁদে রূপ নিয়েছে। কান্দিরপাড়-আলেখারচর, টমছমব্রিজ-বাখরাবাদ, কান্দিরপাড়-ধর্মপুর এবং টমছমব্রিজ-কোটবাড়ি,
সড়কে জায়গায় জায়গায় বিশাল গর্ত, উঠে যাওয়া কার্পেটিং, ভাঙাচোরা পিচ ও জলাবদ্ধতা জনদুর্ভোগের নতুন নাম হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন হাজারো যাত্রী, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, অটোরিকশা ও ভারী যানবাহন এসব ঝুঁকিপূর্ণ পথে চলাচল করছে চরম ঝুঁকি নিয়ে। বৃষ্টির পানিতে গর্ত ঢেকে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বাড়ছে। স্থানীয়রা বলছেন, এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর এমন করুণ দশা কর্তৃপক্ষের অবহেলারই প্রমাণ। দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন জনসাধারণ। যদিও বর্ষার দোহাই দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সড়কগুলোর সংস্কার নিয়ে দায়সারা কথা বলছেন।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় থেকে শহরতলীর শাসনগাছা হয়ে আলেখারচর বিশ্বরোডের অন্তত এক কিলোমিটার জুড়ে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত, উঠে যাওয়া পিচ ঢালাই, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পাথর সব মিলিয়ে সড়ক নয়, যেন মরণফাঁদে রূপ নিয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গণপরিবহনের চালক ও যাত্রীরা। মাঝেমধ্যে ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও। অথচ এই সড়কটি নগরের অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক। এখানে রয়েছে কুমিল্লা নগরের বৃহত্তম বাসস্ট্যান্ড 'শাসনগাছা বাস স্ট্যান্ড'। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় হাজার হাজার মানুষের চলাচল৷
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, কুমিল্লা নগরে প্রবেশের অন্যতম এই ব্যস্ত সড়কটির কথা ভুলেই গিয়েছেন প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে এই গর্তগুলো সড়কে ভোগান্তি ও দুর্ঘটনার সৃষ্টি করছে। এক সময় গর্তগুলো ছোট ছোট থাকলেও এখন সেগুলো বড় হয়ে রূপ নিয়েছে ভয়ংকর।
দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কের সর্বত্র সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। বর্ষার পানিতে সেই ক্ষত আরও বেড়ে ভয়াবহ রূপ নেয়। পানিতে গর্তগুলো ঢেকে যাওয়ায় না বুঝে গাড়ি সেখান দিয়ে চলাচল করলেই ঘটে দূর্ঘটনা।
বুধবার সকালে সরেজমিনে কুমিল্লা নগরী থেকে শহরতলীর শাসনগাছা হয়ে দুর্গাপুর এলাকার দিঘীরপাড় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারটির প্রবেশমুখেই সড়কের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্তই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা,
দুরবস্থার কারণে চালকরা গর্ত এড়িয়ে এঁকেবেঁকে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়াও, গর্ত থাকায় হেলে দুলে চলছে গাড়িগুলো। এতে গাড়ির ভিতরে থাকা যাত্রীরা পোহাচ্ছেন ভোগান্তি। রোগী বহনের ক্ষেত্রেও এই সড়ক প্রায় অচল। অথচ এটি কুমিল্লার উত্তরাঞ্চলের প্রায় ৩০ লাখ মানুষের অন্যতম যোগাযোগপথ।
এই সড়কের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পাসপোর্ট অফিস পার হয়ে ওষুধ মার্কেট এলাকা, শাসনগাছা ফ্লাইওভারের দুই পাশে, দুর্গাপুর দিঘিরপার বাজার ও আলেখারচর এলাকায়। প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, শত শত বাস, ট্রাক, পণ্যবাহী গাড়ি ও তেলের লরি এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
যাত্রীদের অভিযোগ, এত গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় বর্ষায় তা মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এতে কর্মজীবীদের কর্মস্থলে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এই সড়ক দিয়ে চলাচলে ভোগান্তির শিকার হওয়া অন্তত পাঁচজন পথচারী ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, বড় যানবাহন কষ্ট করে চললেও অটোরিকশা নিয়ে চলা প্রায় অসম্ভব। অধিকাংশ সময় অটোরিকশা হেলে পড়ে, এতে যাত্রীরা আহত হন। কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। মালামাল নিয়ে যাতায়াত এখন অনেকটাই অসম্ভব। এগুলো দেখার কি কেউ নেই?
স্থানীয়দের দাবি, যাত্রী ও যানবাহনের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত সড়কটির সংস্কার করা। টমসমব্রীজ-বাখরাবাদ সড়ক। বড় বড় গর্তে জমে থাকা পানি দেখে মনে হয় সড়ক নয়, যেন জলাশয়। প্রতিদিন অসংখ্য অ্যাম্বুলেন্স, রোগীবাহী যান, পোশাককর্মী ও শিক্ষার্থী এ পথে চলাচল করেন। পথে রয়েছে ইবনে তাইমিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইপিজেড, পিবিআই, সদর উপজেলা পরিষদ, বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড,সহ বহু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এই সড়ককে নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বলা চলে।
এই সড়কে কাজ শুরু হয়েছে এমন আশার দৃশ্য সিটি কর্পোরেশন থেকে দেখানো হলেও বর্ষার দোহাই দিয়ে সেটিও বন্ধ হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে। এতে খানাখন্দ যেন আরো বেড়ে গিয়েছে। যদিও সিটি কর্পোরেশন বলছে আগের তুলনায় এই সড়ক অনেক বেশি চলাচল উপযোগী হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।
বুধবার সকালে সরেজমিনে এই সড়কে গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুল এন্ড কলেজের সামনে থেকে শুরু হয়ে ইপিজেড ১ নং গেইট পর্যন্ত সড়ক যেন দাঁড়িয়েছে মরণফাঁদ হয়ে। এই সড়ক দিয়ে গাড়িগুলো চলছে একপ্রকার বাধ্য হয়ে। বড় বড় গর্তে পড়ে মাঝে মাঝে বন্ধ হয়ে যায় গাড়ির ইঞ্জিন। এতে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। এছাড়াও রোগীবাহী এম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়েও সঠিক সময়ে রোগী নিয়ে পৌঁছাতে পারেন না মেডিকেলের জরুরী বিভাগের সামনে। এতে অনেক সময় রোগীর জীবনের ঝুঁকির কারণও হয়ে দাঁড়ায়।
টমসমব্রীজ-মেডিকেল সড়কে প্রতিদিন চলাচল করা অন্তত ১০ জন যাত্রী এই বলেন, এই সড়কে রোগী নিয়ে গেলে গর্তে ধাক্কা খেয়ে অনেক সময় রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। বৃষ্টির সময় তো গর্ত দেখা যায় না, তখন দুর্ঘটনার ঝুঁকি দ্বিগুণ। পানি ময়লা, আবার সড়ক পিচ্ছিল। এতে যাত্রীদের অনেক সময় পড়ে যাওয়ারও ভয় থাকে। এই সড়ক দিয়ে মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে রোগী আসলে রোগীর সাথে যারা আসে তারাও অসুস্থ হয়ে যায়। দ্রুত এই সড়ক পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রয়োজন।
হেলে দুলে গাড়ি চলছে নগরীর কান্দিরপাড়-ধর্মপুর সড়কে
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ভোগান্তী চরমে কুমিল্লা নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় থেকে রাণীর বাজার হয়ে ধর্মপুর সড়ক। নগর বাসীর দাবি দ্রুত সড়ক গুলো মেরামত করা হোক, এবং অবৈধ দখল, পার্কিং,অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে স্বস্তি দেওয়া হোক।
মন্তব্য