পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর গণহত্যা শুরুর সপ্তাহ যেতে না যেতেই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন এবং তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ্যে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় বাংলাদেশ টিকে থাকতেই এসেছে।
১৭ এপ্রিল শপথ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল মেহেরপুরের আমবাগানে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপরাষ্ট্রপতি ও অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রী এবং কর্নেল (অব.) এমএজি ওসমানী প্রধান সেনাপতি।
শপথ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়, জাতীয় পতাকা ওড়ানো হয়, গাওয়া হয় জাতীয় সংগীত। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দলের গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন। বঙ্গভবনে আমরা এখন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যা দেখি, ১৭ এপ্রিল কোনো কিছু বাদ ছিল না।
শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার (অব.) আর পি সিং। ১৯৬৯ সালে তিনি ভারতের সেনাবাহিনীতে অফিসার হিসেবে যোগ দেন, অবসর নেন ২০০৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরাসরি যুক্ত ছিলেন। মেহেরপুরের আমবাগানে শপথ অনুষ্ঠানে ছিলেন বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে। তার সঙ্গে ঢাকায় আমার কয়েকবার কথা হয়। প্রথম সাক্ষাতেই বলেছিলেন, শিখ সম্প্রদায়ের সদস্য আমি। আমাদের ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী লম্বা চুল ও দাড়ি রাখতে হয়, পাগড়ি পরতে হয় এবং কৃপাণ থাকে সর্বক্ষণ। কিন্তু এ সব থাকলে তো মুক্তি বাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা যাবে না।
পাকিস্তানি সামরিক শাসকরা শিখ যুবকের ছবিও হয়ত পেয়ে যাবে এবং এটা দেখিয়ে প্রচার করবে- মুক্তিবাহিনীর নামে লড়াই করছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকার প্রবল আকাঙ্ক্ষা থেকে তিনি শিখ ধর্মের সব চিহ্ন বিসর্জন দেন। ক্লিন শেভড আর পি সিংকে কখনও দেখা যায় বাঙালি কৃষকের লুঙ্গি-গেঞ্জি পোশাকে, কখনওবা ছাত্রদের মতো প্যান্ট-শার্টে।
১৯৭১ সালের জুলাই মাসে ক্যাপ্টেন আর পি সিংয়ের ওপর বিশেষ দায়িত্ব অর্পিত হয়- বাংলাদেশের ১৩২ জন তরুণকে সেনাবাহিনীর অফিসার হিসেবে গড়ে তোলার ইন্সট্রাক্টর। এই দলে ছিলেন বঙ্গবন্ধুপুত্র শেখ কামাল। এর কিছুদিন পর বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় পুত্র শেখ জামালও ধানমন্ডির গৃহবন্দিদশা থেকে পালিয়ে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন। বয়স কেবলই ১৬ বছর পূর্ণ হয়েছে। পাকিস্তান আর্মি পাহারায় ছিল। কিন্তু কখন যে শেখ জামাল মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যোগ দিতে উধাও হয়ে গেছে, বুঝতেই পারেনি অনেকে।
পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুর কাছে ক্ষমতা দেবে না, এমন ধারণা থেকে ২০ মার্চ বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় ভারত কয়েকটি ইউনিট মোতায়েন করে। এর মধ্যে আর পি সিংয়ের ইউনিটও ছিল। তিনি বলেন, ৩০ মার্চ চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত থেকে খবর আসে, বঙ্গবন্ধুর পর আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা তাজউদ্দীন আহমদ ও তরুণ ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম বানপুর সীমান্ত চৌকিতে খবর পাঠিয়েছেন যে, তারা ভারতে প্রবেশ করতে চান।
এ খবর পেয়ে বিএসএফ-এর আইজি গোলক মজুমদার নিজে গিয়ে তাদের স্বাগত জানিয়ে কলকাতা নিয়ে আসেন। নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দফতরেও এ খবর পৌঁছায় এবং তাদের দু’জনকে ১ এপ্রিল রাতে বিশেষ বিমানে গোপনে দিল্লি পাঠানো হয়। ৩ এপ্রিল ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তাজউদ্দীন আহমদের আলোচনা হয়। এ সময় বাংলাদেশকে সার্বভৌম ও স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি তিনি উত্থাপন করেন।
দিল্লি থেকে কলকাতা ফিরে তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশ থেকে আসা আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্যদের একত্রিত করার গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করেন। আলোচনার বিষয় ছিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন ও শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন। বিএসএফ-এর রুস্তমজী ও গোলম মজুমদার এ কাজে তাকে সহায়তা করেন। ১১ এপ্রিল আমরা প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের আগে ধারণকৃত জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণ শুনতে পাই। ভাষণটি ছিল উদ্দীপনা-অনুপ্রেরণায় পূর্ণ।
আর পি সিং বলেন, ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম কুষ্টিয়ার অধিবাসী ছিলেন। তিনি আরও কয়েকজনের সঙ্গে শপথ গ্রহণের স্থান হিসেবে বৈদ্যনাথতলার নাম প্রস্তাব করেন।
শপথ গ্রহণের স্থান চূড়ান্ত করার বিষয়ে দুটি বিষয় বিশেষ বিবেচনায় ছিল- স্থানটি হতে হবে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভেতরে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় সমস্যা হবে না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী গোটা ঘটনা নিজে তদারক করেন। বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বেসামরিক পোশাকে বিএসএফ-এর সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং তারা সফল হয়। তদুপরি ভারতীয় সেনাবাহিনীর কিছু সদস্যকেও এ কাজে বেসামরিক পোশাকে যুক্ত করা হয়।
পাকিস্তানি আর্মি ও তাদের চররা এ সময়ে পার্শ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গায় সক্রিয় ছিল। তিনদিন আগে তারা চুয়াডাঙ্গায় বোমাবর্ষণ করে। তাদের কাছে খবর ছিল- ওই মহকুমা শহরে শপথ অনুষ্ঠান হতে পারে। মেহেরপুরে ক্যাপ্টেন আর পিং সিংকে আরও কয়েকজনের সঙ্গে নিরাপত্তার দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
আর পি সিং জানান, ১৫ এপ্রিল ইস্টার্ন কমান্ডের জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার নির্দেশনায় ভারতের সেনাবাহিনীর একটি দল আসে সীমান্ত এলাকায়। পরদিন প্রয়োজনে স্থলবাহিনীকে সহায়তা প্রদানের জন্য ভারতীয় বিমান বাহিনী ও আর্টিলারির সহায়তার বিষয়টি আলোচনা হয়।
১৬ এপ্রিল মধ্য রাতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে একটি ফিল্ড রেজিমেন্ট মোতায়েন করা হয়। মুক্তিবাহিনী ও বিএসএফ সদস্যরা বৈদ্যনাথতলা ও আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজটি দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করেন অতি গোপনে, কেউ তাদের উপস্থিতি বুঝতে পারেনি। আর পি সিং ভারতীয় এক গোয়েন্দা অফিসারের মোটর সাইকেলে নিরাপত্তার সার্বিক আয়োজন তদারকি করেন।
ভারতীয় বিমান বাহিনী ও আর্টিলারি অফিসাররা আশপাশের উঁচু ভবন ও বড় গাছে অবস্থান নিয়ে চারদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখেন। ওয়্যারলেস সেটগুলো ছিল সর্বোচ্চ মাত্রায় সক্রিয়। তবে এতে কেবল শত্রুর তথ্য আদান-প্রদানের খবরই ধরা পড়ার ব্যবস্থা রাখা হয়। যেকোনো আকস্মিক পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছিল তিনটি কুইক রিঅ্যাকশন টিম। তাদের হাতে পর্যাপ্ত যানবাহন ও অস্ত্র মজুদ ছিল। ভারতীয় বিমান বাহিনীর কমব্যাট এয়ার প্যাট্রোলও নিশ্চিত করা হয়।
সকাল থেকেই জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ নেতারা অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হতে শুরু করেন। বিপুলসংখ্যক সাংবাদিক আসেন কলকাতা থেকে। এ দলে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়ার সংবাদপত্র, বেতার ও টেলিভিশন-কর্মীরা ছিল। তারা কলকাতা প্রেসক্লাব থেকে রওনা দেয়ার সময় কিংবা পথেও জানতেন না- কোথায় যাচ্ছেন এবং কেন যাচ্ছেন। অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে বুঝতে পারেন- পেশাগত জীবনে রোমাঞ্চকর এক ঘটনার মুখোমুখি তারা, কেউ চাইলেই এমন সুযোগ জীবনে আসে না। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে অনুষ্ঠান শুরু হলে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী, যাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষণা অনুযায়ী স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ২৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশের যাত্রা শুরুর উল্লেখ ছিল। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম তেজোদীপ্ত ও উদ্দীপনাপূর্ণ ভাষণ দেন। যখন তিনি জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা...’ পরিবেশনের সময় লাল-সবুজ-সোনালি রঙের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন, অনেকেই ছিলেন অশ্রুসিক্ত। সমস্বরে স্লোগান ওঠে ‘জয় বাংলা’।
বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছেন, তা এভাবে বাস্তবে রূপ নেয়। শপথের স্থানটি পরিচিত হয় মুজিবনগর হিসেবে, বাংলাদেশের প্রথম সরকারের নাম মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে- মুজিবনগর সরকার।
কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সংবাদপত্র, বেতার ও টেলিভিশন সংবাদ সূত্রে গোটা বিশ্ব জেনে যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম নতুন পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ-এর ভাষণে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ উচ্চারণের সময় আরও বলেছিলেন- আমি যদি হুকুম দেবার না পারি, তোমাদের যার যা আছে তাই দিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। বাস্তবে তিনি হুকুম দিয়েছিলেন এবং জনগণ সেটা অনুসরণ করে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীকে হারিয়ে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণে বাধ্য করেছিল।
মুজিবনগর সরকারের শপথের ঐতিহাসিক দিনটির আজ সুবর্ণজয়ন্তী। বাংলাদেশ চিরজীবী হবে, এ দিনটিও থাকবে প্রেরণা হয়ে।
লেখক: মুক্তিযোদ্ধা, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের দৃঢ়তার সাথে গবেষণায় সম্পৃক্ত হতে হবে। এ গবেষণার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও সহযোগিতা করব।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের গগন হরকরা গ্যালারিতে ইবি গবেষণা সংসদ আয়োজিত দ্য আনভেইলিং: গবেষণা অন্তর্দৃষ্টি ও নেতৃত্বের রূপান্তর" শীর্ষক সেমিনার ও প্যানেল ডিসকাশন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানের মা। উৎপাদনের জন্য দরকার গবেষণা, ভাবনা ও আবিষ্কার। গবেষণা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পর্যায়ে থেকে যায়। রাষ্ট্রের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তার সমাধান খুঁজে বের করাই গবেষণার মূল কাজ।
এ অনুষ্ঠানে আলোচনার মূল বিষয় ছিল — “Navigating the Research and Higher Study Landscape: A Multi-Disciplinary Perspective”। এ অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ বিভাগের প্রভাষক হাবিবুর রহমান স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া, চারটি ভিন্ন ডিসিপ্লিনের আলোচনায় অংশ নেন — বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মনজুর রহমান, ফার্মেসি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান, অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. গাজী মো. আরিফুজ্জামান খান এবং চারুকলা বিভাগের সভাপতি ও আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান।
এসময় ইবি গবেষণা সংসদের সভাপতি সানোয়ার হোসেন বলেন, আজকের কর্মশালাটি আমাদের সংগঠনের জন্য একটি স্মরণীয় মাইলফলক হয়ে থাকবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, গবেষণার মৌলিক বিষয়গুলো আয়ত্ত করা তরুণ গবেষকদের দেশ ও জাতির বৃহত্তর উন্নয়নে সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম করবে। সদিচ্ছা ও সহায়তা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণার প্রতি গভীর আগ্রহ সৃষ্টি করবে।
চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান বলেন, যখন মানুষ গবেষণাকে ভয় পায়, তখনও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল যুবক সেই কাজটি করে যাচ্ছে। গবেষণা ছাড়া একটি দেশ সামনে এগোতে পারে না। ধারণার দাম পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি।
উল্লেখ্য, আলোচনায় প্যানেলিস্টরা গবেষণার সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ, কার্যকর নেতৃত্বের গুরুত্ব, ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং সৃজনশীলতাকে বাস্তব প্রভাবের রূপ দেওয়ার উপায় নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।প্যানেল ডিসকাশন, শ্রোতাদের প্রশ্নোত্তর পর্ব, শিক্ষার্থীদের গবেষণা, নেতৃত্ব ও সৃজনশীলতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ শেষে সংগঠনপর ২০২৫-২০২৬ সেশনের কমিটি গঠন করা হয় এবং সেমিনারে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়।
চাঁদাবাজির অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তার লিখিত ব্যাখ্যা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দলকে জানানো কথা বলা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো নোটিশ ও বহিষ্কারের এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমের বরাতে আপনার বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারি ও গুরুতর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, যা দলের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে। এমতাবস্থায়, আপনার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় আপনাকে দলের সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে এতদ্ধারা সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো। এই বহিষ্কার আদেশ ১২ আগস্ট তারিখ হতে কার্যকর হবে। একই সঙ্গে, আপনাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তার লিখিত ব্যাখ্যা কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান জনাব, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল-আমিনের নিকট আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রদান করার জন্য এতদ্ধারা নির্দেশ দেওয়া হলো।
এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক আন্দোলন বন্ধ করতে পাঁচ লাখ টাকা চাঁঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠে নিজামের বিরুদ্ধে। গত রোববার সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনার আরেক ব্যক্তির সঙ্গে তার কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আন্দোলন বন্ধে টাকা চাইতে শোনা যায় তাকে (নিজাম উদ্দিন)। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দেড় মিনিটের ওই ভিডিওতে আফতাব হোসেন রিফাত নামে একজনকে নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে মেসেঞ্জারে কলে কথা বলতে দেখা যায়, যেটি অন্য আরেকটি ফোনে ভিডিও করা হয়। শুরুতে আফতাব হোসেন বলেন, ‘যদি মীর ভাইয়েরা আন্দোলন বন্ধ না করে তখন কী করব?’ জবাবে নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আন্দোলন বন্ধ করাব। তোমারে দিছে, টাকা দিছে?’ এ পাশ থেকে ‘হ্যাঁ’ জবাব দেন আফতাব।
কত লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নে আফতাব বলেন, ‘পাঁচ’। এরপর নিজাম উদ্দিনকে বলতে শোনা যায় ‘আরও বেশি নিতা প্রেশার দিয়ে তোমরা দেখো ওর থেকে আরও পাঁচ লাখ নিতে পারো কি না, নিতে পারলে ওদের আমি এনে, রোহান, মীরদের এসে কিছু দিয়ে দিলাম।’
ওই ঘটনার পর গত সোমবার এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার যুগ্ম সমন্বয়কারী (দপ্তর) আরিফ মঈনুদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
নিজামের বিরুদ্ধে চাঁদাবজির অভিযোগ নতুন নয়। গত ৫ জুলাই নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দেন এক নারী। চিঠিতে ওই নারী উল্লেখ করেন, দুই কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে তার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় পুলিশে দিয়েছেন নিজাম উদ্দিন। নিজাম তখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগর শাখার সদস্য সচিব ছিলেন। অভিযোগের পর তার পদও স্থগিত করা হয়। পরে তাকে পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নিষিদ্ধ মাছ ধরার সরঞ্জাম ‘আর্টিসনাল’ ট্রলিং তৈরির অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল সোমবার গভীর রাতে উপজেলার শেখেরখীল এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। আটককৃতদের মধ্যে একজন ভারতীয় নাগরিক, যিনি এ ট্রলিং তৈরির মূল কারিগর বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বাসিন্দা পণ্ডিত বিশ্বাস (৩৮), বরগুনার অমল চন্দ্র (৪৫), মোংলার নাথন বিশ্বাস (৬০) এবং সাতক্ষীরার আকাশ বিশ্বাস (৩৮)।
কোস্টগার্ডের তথ্য অনুযায়ী, শেখেরখীল এলাকার একটি গুদামে অবৈধ ট্রলিং তৈরির গোপন কার্যক্রম চলছে—এমন খবর পেয়ে কোস্টগার্ড ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় চারজনকে আটক ছাড়াও গুদাম থেকে ২৫ লাখ টাকা মূল্যের সাতটি অবৈধ জাল, ৩৪টি ইয়াবা, ১০ গ্রাম গাঁজা এবং ৭৩ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট রাফিদ-আস-সামি জানান, আটক ভারতীয় নাগরিক পণ্ডিত বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ট্রলিং তৈরি করে আসছিলেন এবং ভারত থেকে নিয়মিত বাংলাদেশের বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় এসে এই কাজ করতেন। জব্দকৃত আলামতসহ আটক ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য, কাঠের তৈরি ছোট ট্রলারকে অবৈধভাবে যান্ত্রিক ‘ট্রলিং ট্রলারে’ রূপান্তর করে তাতে ছোট ফাঁসের ‘বেহুন্দি জাল’ যুক্ত করা হয়, যা আর্টিসনাল ট্রলিং নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিতে গভীর ও অগভীর সাগরের রেণু, ডিমওয়ালা মা মাছ এবং মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য ধ্বংস হয়। এজন্য বাংলাদেশে এ ধরনের ট্রলিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
‘প্রযুক্তি নির্ভর যুবশক্তি, বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বে অগ্রগতি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা দেশের মতো সুনামগঞ্জে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসন ও জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভা, সনদপত্র, যুব ঋণের চেক ও ক্রেস্ট বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। সঞ্চালনায় ছিলেন রূপান্তর আস্থা প্রকল্পের জেলা সমন্বয়কারী লাভলী সরকার লাবণ্য এবং সদর উপজেলা যুব ফোরামের আহ্বায়ক স্বর্ণালি আক্তার রিমা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহনুর আলম।
জেলা প্রশাসক ড. ইলিয়াস মিয়া বলেন, যুব সমাজই দেশের অগ্রগতির প্রধান চালিকাশক্তি। দক্ষতা, উদ্ভাবনী শক্তি ও প্রযুক্তি জ্ঞানের মাধ্যমে তারা নিজেদের আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি অন্যদেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের যুবদের প্রযুক্তি নির্ভর হতেই হবে। এ লক্ষ্যে সরকার নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে কিভাবে উদ্যোক্তা তৈরি করা যায়, সে উদ্দেশ্যে লার্নিং, আর্নিং, মোবাইল অ্যাপসসহ নানা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা শুধু প্রযুক্তি ব্যবহার করব তা নয়, বরং প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন করতে পারি এমন দিকেও কাজ করছে সরকার।
সভা শেষে ৭ জন প্রশিক্ষিত যুবদের মাঝে ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার ঋণের চেক বিতরণ করা হয়। জেলায় সফল সংগঠন নির্বাচিত হয়েছে ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের যুব ও সমাজকল্যাণ সংগঠন, সফল উদ্যোক্তা জামালগঞ্জের আরিফ বাদশা এবং সফল সংগঠক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন শহরের বড়পাড়া এলাকার এনামুল হক। উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মঞ্জুর আলী, শেষ্ঠ যুব সংগঠন স্বপ্ন সিড়ি যুব সংঘ, শ্রেষ্ঠ যুব উদ্যোক্তা শাহানা আক্তার এবং শ্রেষ্ঠ যুব আত্মকর্মী হয়েছেন রিনা আক্তার।
এছাড়া প্রশিক্ষিত ও সফল যুব উদোক্তাদের ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়। এর আগে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনের সামনে এসে শেষ হয়। র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ প্রমুখ।
এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং যুব প্রশিক্ষণের সফল উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পাম অয়েলের দাম প্রতি লিটারে ১৯ টাকা কমালো সরকার। এতে করে এখন থেকে প্রতিলিটার পামঅয়েল বিক্রি হবে ১৫০ ঢাকায়, যা আগে ছিল ১৬৯ টাকা।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় স্থানীয় বাজারেও এই দাম সমন্বয় করা হয়।
আজ মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পামঅয়েলের নতুন দাম ঘোষণা করেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজারের সরবরাহ ও চাহিদা পর্যবেক্ষণ করে থাকে।সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে পামঅয়েলের দাম নিম্নমুখী হওয়ায় কমিশনের সুপারিশে প্রতি লিটার খোলা পামঅয়েলের দাম ১৬৯ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভোক্তারা লিটারে ১৯ টাকা কমে পামওয়েল কিনতে পারবেন। তবে সয়াবিনতেল পূর্বের মতো লিটার ১৮৯ টাকা (বোতল) অপরিবর্তিত থাকবে।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের ভোজ্য তেলের বাজারে ৬০ ভাগ দখল হচ্ছে পাম অয়েলের। আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের দাম কমায় এই দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে সয়াবিনের মূল্য অপরিবর্তিত থাকায় স্থানীয় বাজারে দাম আগের মতই রয়েছে।
সর্বশেষ গত ১৫ এপ্রিল সয়াবিন ও পামঅয়েলের দাম নির্ধারণ করা হয়।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সাথে আজ মঙ্গলবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত এইচ.ই. মি. সাইদা শিনিচি সাক্ষাৎ করেছেন।
সাক্ষাৎকালে শ্রম খাতের সংস্কার, শিশুশ্রম ও জবরদস্তিমূলক শ্রম নিষিদ্ধ, জাহাজ ভাঙা শিল্পের উন্নয়ন ও পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
উপদেষ্টা বলেন, শ্রম আইন সংশোধনে আইএলওর পরামর্শ ও ইউরোপীয় অ্যাকশন প্ল্যান অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। শিশুশ্রম বন্ধে ILO কনভেনশন ১৩৮ ও ১৮২ অনুস্বাক্ষর করা হয়েছে। পেশাগত নিরাপত্তার জন্য কনভেনশন ১৫৫, ১৮৭ ও ১৯০ অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে। জবরদস্তিমূলক শ্রম নিষিদ্ধ করতে সংশোধিত আইনে কঠোর বিধান রাখা হচ্ছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত বলেন, সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপভুক্ত (এএসপিএজি) দেশগুলোর শ্রমমন্ত্রীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাদেশ নতুন করে এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপভুক্ত (এএসপিএজি) দেশগুলোর নতুন সমন্বয়কারী দেশ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছে। জাপান থেকে এ দায়িত্ব পাওয়াকে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে উপদেষ্টা এ বছরের মধ্যে এএসপিএজি শ্রমমন্ত্রীদের আঞ্চলিক সম্মেলন আয়োজনের ঘোষণা দেন। এছাড়া, রাজশাহীর জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে জাপানের সহায়তা কামনা করা হয়।
জাহাজ ভাঙা শিল্প ও আইএমও প্রার্থিতা বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, "হংকং কনভেনশন" মেনে বেশ কিছু শিপইয়ার্ড "গ্রিন সার্টিফিকেট" পেয়েছে। অবশিষ্ট ইয়ার্ডগুলোকেও আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে আসতে সরকার সহায়তা করবে। এছাড়া, ২০২৬-২৭ মেয়াদের জন্য IMO কাউন্সিলের ক্যাটাগরি ‘সি’তে বাংলাদেশের প্রার্থিতায় জাপানের সমর্থন কামনা করা হয়।
সাক্ষাৎকালে জাপানের রাষ্ট্রদূত শ্রম আইন সংশোধনে ন্যাশনাল অ্যাকশন প্লান, জবরদস্তিমূলক শ্রম নিষিদ্ধে ব্যবস্থা, মাতারবাড়িতে ডকইয়ার্ড নির্মান, চট্টগ্রাম বন্দরে ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্রাটেজি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। জাপানের সাবেক শ্রমমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য এর নেতৃত্বে একটি দল শীঘ্রই বাংলাদেশ সফর করবে মর্মে জাপানের রাষ্ট্রদূত উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। উক্ত দলটি শ্রমিক অধিকার, শোভন কর্মপরিবেশ ও সরকারি উদ্যোগ পরিদর্শন করবেন। পারস্পরিক আস্থা ও জাপান সরকারের সহযোগিতা সবসময় অব্যাহত থাকবে বলে রাষ্ট্রদূত জানান।
সাক্ষাৎকালে জাপান দূতাবাসের দুই সচিব এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ভুষন হাওলাদার। তিনি একজন গ্রাম পুলিশ। চাকুরী করেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদে।
ঠাট্টা করে তাকে অনেকে ভুষন চেয়ারম্যান বলেও ডাকেন। কারন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স দেয়া, নাগরিক সনদ দেয়া এবং গুরুত্বপুর্ন কাজ তিনি করিয়ে দেন। বিনিময়ে হাতিয়ে নেয় অর্থ।
সম্প্রতী "সরকারী গভীর নলকুপ" পাইয়ে দেয়ার জন্য ১২ জনের কাছ থেকে ১ হাজার ৭৫০ টাকা করে মোট ২১ হাজার টাকা নিয়েছেন গ্রাম পুলিশ ভৃষন হাওলাদার। ভুক্তভুগিরা জানিয়েছেন, 'জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ থেকে ১২ টি গভীর নলকুপ বরাদ্ধ দেয়া ভৈরবপাশা ইউনিয়েনে। এরজন্য প্রতিটি নলকুপের জন্য অফিস খরচ বাবদ ১৭৫০ টাকা করে দিতে হবে। একথা বলে ভুষন হাওলাদার ১২ জনের কাছ থেকে ২১ হাজার টাকা বিকাশ একাউন্টে নেয়।'
একপর্যায়ে ভুক্তভুগিরা জানতে পারে নলকুপ বরাদ্ধের বিষয়টি ভুয়া। এরপর তারা টিউবওয়েল দেয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ প্রসংগে গত ১১ আগষ্ট ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
টাকা ফেরত চেয়ে অভিযোগ পত্রে তারা লিখেছেন, "আমরা নিম্ন ঈশ্বরকাঠী গ্রামের বাসিন্দা। আমাদের কাছ থেকে টিউবওয়েল দেয়ার কথা বলে ১২জনের কাছ থেকে ১৭৫০ টাকা করে নগদ অর্থ নিয়েছে গ্রাম পুলিশ ভুষন হাওলাদার।
ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক নলছিটি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. অহিদুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, 'ঘটনাটি আমি অবগত হয়েছি। ভুষন টাকাটা নিজে গ্রহন করেছে নাকি ভুষন অন্যের প্রতারনার স্বিকার হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর ঐ টাকাগুলো সবাই একটা বিকাশ নাম্বারে দিয়েছে। সেই নাম্বারটি সন্ধানের জন্য থানায় সাধারন ডায়েরী করা হবে।
মন্তব্য