× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

google_news print-icon

বাংলাদেশ: উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি

বাংলাদেশ-উদীয়মান-অর্থনৈতিক-শক্তি
বাংলাদেশের অর্থনীতির এই চিত্তাকর্ষক সাফল্য ভারত ও এর বাইরের সংবাদ মাধ্যমে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারী শিল্পোন্নতসহ অনেক দেশের অর্থনীতিতে যেখানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ঘটনা বাংলাদেশের জন্য সত্যি একটি উদ্‌যাপনের ব্যাপার।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) অক্টোবরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাথাপিছু জিডিপির দিক থেকে ভারতকে টপকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক আউটুলক: আ লং অ্যান্ড ডিফিকাল্ট অ্যাসেন্ট’ শিরোনামের এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি এক হাজার ৮৮৮ ডলার। অথচ মাত্র পাঁচ বছর আগেও ভারতের মাথাপিছু জিডিপি ছিল বাংলাদেশের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি। বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু বলেছেন, যে কোনো উদীয়মান অর্থনীতি ভালো করছে, এমন সংবাদ সুখকর।

শেখ হাসিনা সরকার ও দেশের জনগণের দূরদর্শী পরিকল্পনা, তা বাস্তয়নে পদক্ষেপ ও কঠোর পরিশ্রম বাংলাদেশের জন্য এ ধরনের সাফল্য এনে দিয়েছে, অসম্ভবকে করেছে সম্ভব।

যদিও এ লেখার শুরু হয়েছে ভারত-বাংলাদেশের তুলনা দিয়ে, তবে বাংলাদেশ ভারতকে প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং বন্ধুপ্রতিম দেশ বলেই গণ্য করে। প্রতিবেশী এই দেশসহ অন্যান্য ক্ষমতাধর দেশগুলোর সঙ্গে গঠনমূলক সুসম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে বাংলাদেশ আস্থাশীল। দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এই দেশগুলোকে অংশীদার হিসেবে মনে করে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির এই চিত্তাকর্ষক সাফল্য ভারত ও এর বাইরের সংবাদ মাধ্যমে আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারী শিল্পোন্নতসহ অনেক দেশের অর্থনীতিতে যেখানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ঘটনা বাংলাদেশের জন্য সত্যি একটি উদ্‌যাপনের ব্যাপার। এমন প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশের এই উত্থানের কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা জরুরি হয়ে পড়েছে। সাধারণত, বাংলাদেশের ইতিবাচক উন্নয়নের অনেক খবর উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম কেবল নেতিবাচক সংবাদেই জোর দিয়ে থাকে।

অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশের এই উত্থানকে বুঝতে হলে পেছন ফিরে তাকাতে হবে। দশকের পর দশক পশ্চিম পাকিস্তানের নিপীড়ন, নির্যাতন, বৈষম্যমূলক আচরণ ও অন্যায় অবিচারের শিকার হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান, যার ফল ছিল পূর্ব পাকিস্তানে তীব্র দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতা । ১৯৬০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে মাথাপিছু বার্ষিক গড় আয় ছিল মাত্র ৪৫০ টাকা (বর্তমানের হিসাবে ৫.৩০ ডলার)। জনগোষ্ঠী একটা বিশাল অংশ অপুষ্টিতে ভুগছিল। শিক্ষিতের হার ছিল মাত্র ১৭। ১৯৪৯-৫০ এবং ১৯৬৯-৭০ অর্থবছর পর্যন্ত মাথাপিছু গড় আয় ০.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারত। কিন্তু, পঞ্চাশের দশকে বাংলাদেশের মাথাপিছু বার্ষিক গড় আয় কমে ০.৩ শতাংশ নেমে যায়।

বাংলাদেশে মাথাপিছু দুধ, স্নেহ, তেল, মাছ ও অন্যান্য প্রোটিন গ্রহণের হার ছিল অনেক কম। ১৯৭২ সালের মার্চে, পিসি ভেরমা ইকোনমিক অ্যান্ড পলিটিকাল উইকলি জার্নালে লিখেছিলেন, ‘গত ২৪ বছরে, বাংলাদেশ যখন পাকিস্তানের অংশ ছিল, তখন এর অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছিল। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সররকারের নীতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ছিল পশ্চাদমুখী (পৃষ্ঠা ৫৮০)।’ তখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সূচক ছিল ভয়ানক কম। তা ছাড়া পাকিস্তানের কেন্দ্রীর সরকারের বৈশ্বিক বাণিজ্য, সহায়তা এবং আঞ্চলিক বাণিজ্যনীতির নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর।

পশ্চিম পাকিস্তানিদের এই নিপীড়ন, নির্যাতন, অর্থনৈতিক শোষণ ও বৈষম্যের শিকার পূর্ব পাকিস্তানিদের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুখে ঠেলে দেয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। একাত্তরের যুদ্ধ সংকটকে আরো ঘণীভূত করে। জাতিসংঘের হিসাবে, ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো সংস্কারে দরকার ছিল অন্তত ৯৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

এই পরিস্থিতিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ পুনর্গঠনে হাত দেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে সোনার বাংলায় পরিণত করার কাজ শুরু করেন।

বাস্তবে কাজটি ছিল সত্যিই দুঃসাধ্য। এমনকি তখন অনেকেই বাংলাদেশকে স্থিতিশীল দেশ হিসেবে গড়ে তোলার সম্ভাব্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ১৯৭৪ সালে ঢাকা সফরে আসেন। তখন তিনি বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। আর রাষ্ট্রদূত ইউ অ্যালিক্স জনসন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে বলেছিলন ‘আন্তর্জাতিক ঝুলি’। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর দূরদৃষ্টি ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে এ ধরনের পূর্বাভাসকে ছাপিয়ে যেতে সক্ষম হন।

বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ৪ অক্টোবর দ্য প্রিন্ট-এ এক নিবন্ধে বলেছিলেন, ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ছাড়াও, সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ধান উৎপাদনে আমরা এখন চতুর্থ স্থানে, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, আমে চতুর্থ, শাকসবজি উৎপাদনে পঞ্চম ও অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে মৎস্য উৎপাদনে চতুর্থ স্থানে রয়েছি।’

বাংলাদেশ ২০০৯ সাল থেকে ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত আছে। বাংলাদেশ ২০১৫ সালে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের স্বীকৃতি পায়। এছাড়া ২০২৪ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেতে জাতিসংঘের বেঁধে দেয়া শর্ত ২০১৮ সালে পূরণ করেছে দেশটি। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রফতানিতে শীর্ষ দেশগুলোর একটি।

এগুলো সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশের বিস্ময়কর অর্জন। এই অগ্রগতির পেছনে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি পরিকল্পনা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব। একইসঙ্গে লাখো কৃষক, কারখানা শ্রমিক, পোশাক শ্রমিক ও দেশের নানা শ্রেণিপেশার মানুষ কঠোর পরিশ্রম করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছে।

দারিদ্র্য দূর করায় তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতির স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ ২০১৩ সালে ‘সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্’ পেয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান পিডব্লিউসির পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাংলাদেশ ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৩তম বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হবে। এছাড়া, দ্য গোল্ডম্যান স্যাচ পূর্বাভাস দিয়েছে, ব্রিকসের পর যে ১১টি দেশ (এন ১১) আগামীর পৃথিবীর অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করবে বাংলাদেশ তার একটি।

দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক হাব হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বাংলাদেশের রয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বড় বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর ফলে লাখো মানুষের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অর্থনীতির উন্নতি হবে। এতে বদলে যাবে দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক অবস্থা। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে ২০১৮ সালে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস আইন প্রণীত হয়েছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা একই পয়েন্ট থেকে সব ধরনের সেবা পাবে।

তা ছাড়া বিনিয়োগের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি উদার ও অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। বাংলাদেশের জিডিপি ২০০৯ সালে ছিল ১০২ বিলিয়ন ডলার। তা ২০১৯ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৩০২ বিলিয়ন ডলার। সরাসরি বিদেশি নিয়োগও বেড়েছে। ২০০৯ সালে তা ছিল ৭০০ মিলিয়ন ডলার; ২০১৮ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬১৩ মিলিয়ন ডলার।

শেখ হাসিনার সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর দেশের উন্নয়নের জন্য নানান লক্ষ্য ঠিক করেছে। এর মধ্যে আছে ২০২১ সালে মধ্য-আয়ের দেশের স্বীকৃতি লাভ, ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হওয়া, ২০৭১ সালের মধ্যে যাদুকরী দেশে রূপান্তর এবং ২১০০ সালের মধ্যে বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, এটি সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ধারণ করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।

অনেকেই মনে করেন, শেখ হাসিনার শাসনামলের বর্তমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং প্রধান উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশের জন্য একটি বড় শক্তি হল, ১৭ কোটি জনগণ যাদের ৬০ ভাগের বেশি তরুণ। কর্মশক্তিতে পরিপূর্ণ এই তরুণেরা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে বিপুল ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

বিশ্বের জানা দরকার বাংলাদেশ আর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বা ‘আন্তর্জাতিক ঝুলি’ নয়। এবং বাংলাদেশ ও এর জনগণ দেশের এই উন্নতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতার বিষয়টিকে আন্তরিকভাবে প্রশংসা করে।

মো. শরীফুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। বর্তমানে ভারতের নয়াদিল্লির সাউথ এশিয়া ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর পিএইচডি করছেন। মডার্নডিপ্লমেসি-তে তার লেখা নিবন্ধটির ভাষান্তর করেছেন মিজান মল্লিক।

আরও পড়ুন

বিশ্লেষণ
Special prayer at Janata Bank for the sake of martyrs soul in the mass uprising in July

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনায় জনতা ব্যাংকে বিশেষ দোয়া

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনায় জনতা ব্যাংকে বিশেষ দোয়া

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের রুহের মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করে গতকাল মঙ্গলবার বাদ যোহর জনতা ব্যাংক পিএলসির প্রধান কার্যালয়ের নামাজ ঘরে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে নামাজ ঘরে এক আলোচনা সভায় ব্যাংকের পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান মুহ. ফজলুর রহমান প্রধান অতিথি এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এ সময় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক ও উপমহাব্যবস্থাপকরা, জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতি ও জাতীয়তাবাদী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃরাসহ সব স্তরের নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বিশ্লেষণ
Traders want to withdraw additional tariffs on cosmetics

প্রসাধনীর ওপর থেকে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার চায় ব্যবসায়ীরা

প্রসাধনীর ওপর থেকে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার চায় ব্যবসায়ীরা প্রসাধনী সামগ্রীর উপর স্বাভাবিক শুল্কায়ন মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে মঙ্গলবার (০১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিজ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। ছবি: ফোকাস বাংলা

আমদানি করা প্রসাধনী সামগ্রীর ওপর থেকে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার না করলে আগামী ৭ জুলাই এনবিআর ভবন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কসমেটিকস ও টয়লেট্রিজ আমদানিকারকরা।

মঙ্গলবার (০১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নতুন বাজেটে প্রসাধনী সামগ্রীর ওপর দেড়শ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত এক মানববন্ধনে ব্যবসায়ীরা এই হুঁশিয়ারি দেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে লিপ কেয়ার, ফেস ক্রিম, পাউডারসহ বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রীর দাম কম হলেও শুল্ক বৃদ্ধির কারণে দেশের বাজারে বেড়েছে দাম। এতে বাজারে বাড়ছে অবৈধ পথে আসা প্রসাধনীর সরবরাহ। এতে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারানোর শঙ্কাও প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ীরা।

বাজেটে প্রসাধনী পণ্যের ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানোর প্রস্তাব বৈধ আমদানিকে নিরুৎসাহিত করবে বলে আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিজ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিটিআইএ)। তাদের মতে, শুল্ক বাড়ায় বৈদেশিক মুদ্রা পাচার বাড়াবে, বাজারে নকল ও মানহীন পণ্যের দৌরাত্ম্য তৈরি করবে এবং ২৫ লাখের বেশি মানুষ বেকার হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

সংগঠনটির দাবি, এই শুল্ক কাঠামো বাস্তবায়নের ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে এবং দেশের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের উপর সরাসরি অর্থনৈতিক চাপ বাড়াবে।

বাংলাদেশ কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিজ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘বর্তমানে আমদানিকৃত প্রসাধনী সামগ্রীর ওপর যে ন্যূনতম শুল্কহার বাস্তবায়ন করা হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক বাজারদরের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। এটি দেশের বৈধ আমদানির পথকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেবে, যা পরিণামে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাবে। বাজার ভরে যাবে নকল ও নিম্নমানের পণ্যে, যা শুধু ভোক্তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে ফেলবে না, বরং হাজার হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী এবং তাদের কর্মচারীরা জীবিকা হারাবেন।’

সাধারণ সম্পাদক মো. সাহিদ হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টার অন্যতম লক্ষ্য হলো নতুন নতুন ব্যবসা সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। তবে, চলতি বাজেটে আমদানিকৃত প্রসাধনী পণ্যের উপর ১৫০% পর্যন্ত ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য বৃদ্ধি বাংলাদেশ ২.০-এর লক্ষ্য এবং প্রধান উপদেষ্টার অভিন্ন লক্ষ্যের সম্পূর্ণ বিরোধী।

এরপরও চলতি বাজেটে এসব পণ্যের ন্যূনতম শুল্কায়ন মূল্য ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, যা দেশের প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান ঘিরে থাকা এই খাতের ওপর এক সরাসরি আঘাত। এই বৈষম্যমূলক করনীতি কেবল বৈধ ব্যবসার পরিপন্থী নয়, বরং দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের স্বার্থের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক—যারা আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।

সাহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিপুলসংখ্যক মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে। চোরাচালান, ভুল ঘোষণা (misdeclaration) ও রাজস্ব ফাঁকির ঝুঁকি বহুগুণে বাড়বে। বেকারত্ব বাড়ায় সামাজিক অস্থিরতা বাড়বে।’

চোরাচালান বাড়ার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি সিলেটে প্রসাধনীসহ শুল্ক বেড়েছে এমন সাত কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি। যা আমাদের আশঙ্কাকে সত্য প্রমাণিত করে। মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রসাধনী ব্যবসায়ী, অ্যাসোসিয়েশনের অন্যান্য নেতা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বিশ্লেষণ
OPEC is increasing oil prices in the world market

বিশ্ববাজারে আরও কমেছে তেলের দাম, উৎপাদন বাড়াচ্ছে ওপেক

বিশ্ববাজারে আরও কমেছে তেলের দাম, উৎপাদন বাড়াচ্ছে ওপেক বিশ্ববাজারে আরও কমেছে তেলের দাম, উৎপাদন বাড়াচ্ছে ওপেক

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ঝুঁকি কমে এসেছে। সেই সঙ্গে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক তেল উৎপাদন বৃদ্ধি করবে—মন খবর বাজারে আসায় তেলের বাজারে স্বস্তি ফিরেছে। এ পরিস্থিতিতে আজ সোমবার (৩০ জুন) বিশ্ববাজারে তেলের দাম প্রায় ১ শতাংশ কমেছে।

আগস্ট মাসের জন্য ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৬৬ সেন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ব্যারেলপ্রতি ৬৭ দশমিক ১১ ডলার। সেপ্টেম্বর মাসের জন্য দাম আরও কমেছে। সে ক্ষেত্রে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮৩ সেন্ট কমে গিয়ে ৬৫ দশমিক ৯৭ ডলার হয়েছে। সেই সঙ্গে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড বা ডব্লিউটিও ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯৪ সেন্ট বা ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ কমে ৬৪ দশমিক ৫৮ ডলারে নেমে এসেছে।

গত সপ্তাহে বড় ধরনের দরপতনের মুখে পড়েছিল তেলের বাজার। সাপ্তাহিক দরপতনের দিক থেকে ২০২৩ সালের মার্চ মাসের পর গত সপ্তাহে দাম কমেছে সবচেয়ে বেশি। তবে সামগ্রিকভাবে জুন মাসে তেলের দাম বেড়েছে। আজ সোমবার (৩০ জুন) শেষ দিনের দামের পূর্বাভাসসহ ধারণা করা হচ্ছে, জুন মাসে তেলের দাম ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর তেলের দাম বাড়তে থাকে। শেষ পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করলে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পর তা দ্রুত নেমে আসে ৬৭ ডলারে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইজি মার্কেটসের বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেন, বাজারে যে আতঙ্কজনিত বাড়তি মূল্য ছিল, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পর তা অনেকটাই মুছে গেছে।’

এদিকে ওপেক ও সহযোগী জোটের চারজন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তারা আগস্ট মাসে প্রতিদিন ৪ লাখ ১১ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন বাড়াতে যাচ্ছেন। মে, জুন ও জুলাই মাসেও একই পরিমাণে উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। আগামী ৬ জুলাই ওপেক ও সহযোগী দেশগুলোর বৈঠকে বসার কথা। এপ্রিল মাসে উৎপাদন হ্রাসের ধারার থেকে বের হওয়ার পর এটি হবে পঞ্চম দফায় উৎপাদন বৃদ্ধি।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় তেল খনির সংখ্যা আরও ছয়টি কমে দাঁড়িয়েছে ৪৩২-এ, অক্টোবর ২০২১ সালের পর যা সর্বনিম্ন। এ তথ্য দিয়েছে খনিজ খাতের প্রতিষ্ঠান বেকার হিউজ।

মন্তব্য

বিশ্লেষণ
All banks will be open till 7pm today

আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সব ব্যাংক খোলা থাকবে

আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সব ব্যাংক খোলা থাকবে

রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে অর্থবছরের শেষ দিন আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের সব ব্যাংকের শাখাগুলোতে ব্যাংকিং লেনদেন চলবে।

সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সমকালকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৩০ জুন সকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯২২ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেন, গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বেশি রাজস্ব আদায় হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে।

মন্তব্য

বিশ্লেষণ
Expatriate income records come in and 1 billion in the current fiscal year

প্রবাসী আয়ে রেকর্ড, চলতি অর্থবছরে এলো ৩০ বিলিয়ন ডলার

জুনের প্রথম ২৮ দিনে এলো আড়াই বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স
প্রবাসী আয়ে রেকর্ড, চলতি অর্থবছরে এলো ৩০ বিলিয়ন ডলার

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি রেমিট্যান্স খাতে এক নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে দেশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষ হতে এখনো দুদিন বাকি থাকলেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ ইতোমধ্যে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে। টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা ধরে)। এটি দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৪.৭৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, যা এবার ছাপিয়ে গেছে। ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গতকাল রোববার এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

চলতি জুন মাসের প্রথম ২৮ দিনেই প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২.৫৪ বিলিয়ন ডলার (২৫৪ কোটি), যা প্রায় ৩১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। মাসের বাকি দিনগুলোতেও একই ধারা বজায় থাকলে জুন শেষে মোট রেমিট্যান্স ২.৭০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হুন্ডি প্রতিরোধে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা, বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রণোদনা, প্রবাসীদের জন্য ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার সম্প্রসারণ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি—এসবই এই রেকর্ড প্রবাহে সহায়ক হয়েছে। চলতি বছর প্রাপ্ত পুরো রেমিট্যান্স এসেছে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে।

মাসভিত্তিক প্রবাহের চিত্র

প্রবাসী আয়ে রেকর্ড, চলতি অর্থবছরে এলো ৩০ বিলিয়ন ডলার

২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জুলাই মাসে এসেছে ১৯১ কোটি ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি, নভেম্বরে ২২০ কোটি এবং ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স। নতুন বছরের শুরুতে জানুয়ারিতে এসেছে ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২৫২ কোটি, মার্চে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি এবং মে মাসে এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, মার্চ মাসে ৩৩০ কোটির বেশি ডলার এসেছে, যা দেশের ইতিহাসে একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।

চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের রিসার্চ ফেলো ও অর্থনীতিবিদ এম হেলাল আহমেদ বলেন, ‘এটি শুধু সংখ্যাগত সাফল্য নয়, বরং দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার প্রতিফলন। সঠিক নীতিমালা, প্রযুক্তি-সমৃদ্ধ ব্যাংকিং অবকাঠামো এবং আইনগত পদক্ষেপ একত্রে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়িয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও এই অর্থপ্রবাহ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্বস্তি দিয়েছে, ডলারের বাজারে চাপ কমিয়েছে এবং আমদানি ব্যয় মেটাতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। তবে এই ধারা টিকিয়ে রাখতে হলে বহুমুখী শ্রমবাজার, স্বচ্ছ অভিবাসন প্রক্রিয়া ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুসারে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের (জুলাই থেকে ২৮ জুন) মধ্যে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৩০.০৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬.৫ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরে এই পরিমাণ ছিল ২৩.৭৪ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের রেমিট্যান্সবান্ধব নীতিমালা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের আস্থা ও সহযোগিতাই এই সাফল্যের পেছনে মূল চালিকা শক্তি।

২০২৪-২৫ অর্থবছর বাংলাদেশের রেমিট্যান্স খাতে এক নতুন ইতিহাস রচনা করেছে। এই গতি ধরে রাখতে হলে হুন্ডি প্রতিরোধ কার্যক্রম আরও জোরদার করা, প্রবাসীদের আস্থার জায়গা সুসংহত রাখা এবং বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিবেশ আরও সহজতর করা অপরিহার্য। রেমিট্যান্স এখন শুধু অর্থপ্রবাহ নয়, বরং অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার অন্যতম কৌশলগত হাতিয়ার।

বিশ্লেষণ
IDE Bangladeshs Private Sector Engagement Strategy Unveiled

আইডিই বাংলাদেশ এর প্রাইভেট সেক্টর এনগেজমেন্ট  স্ট্র্যাটেজি উন্মোচিত

আইডিই বাংলাদেশ এর প্রাইভেট সেক্টর এনগেজমেন্ট  স্ট্র্যাটেজি উন্মোচিত

ঢাকা, ২৯ জুন ২০২৫ – অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বাজারভিত্তিক উন্নয়নের প্রতি প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে আইডিই বাংলাদেশ ঢাকার লো মেরিডিয়ান হোটেলে আয়োজিত “Catalyzing Markets: iDE Bangladesh Private Sector Engagement Summit 2025”-এ তাদের প্রাইভেট সেক্টর এনগেজমেন্ট স্ট্র্যাটেজি ২০২৫–২০৩০ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে।

সামিটে সরকারি প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, উন্নয়ন সহযোগী এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি খাতের ২০০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য: প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, এসিআই, এসএমসি, লাল তীর সিড লিমিটেড, এনআরবিসি ব্যাংক, রুরাল সার্ভিসেস ফাউন্ডেশন, রহিম আফরোজ, ইসপাহানি এগ্রো, ব্র্যাক, গ্রামীণ ড্যানন ফুডস লিমিটেড। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংক, এফসিডিও, ইউনিসেফ, জিআইজেড, ইউএনডিপি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইতালীয় ও ডেনিশ দূতাবাস-এর প্রতিনিধিরা।

সামিটে ১৪টি প্রাইভেট সেক্টর প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয় এবং একটি প্রদর্শনী আয়োজন করা হয় যেখানে কৃষি, ওয়াশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পুষ্টি ও ফিনটেক খাতের উদ্ভাবনী সমাধান তুলে ধরা হয়।

প্রধান অতিথি ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, নির্বাহী চেয়ারম্যান, পিপিআরসি ও চেয়ারপারসন, ব্র্যাক বলেন, “আইডিইর এই স্ট্র্যাটেজি একটি সময়োপযোগী ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন উদ্যোগ, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য একটি কার্যকর কাঠামো তৈরি করবে।”

বিশিষ্ট বক্তাদের মধ্যে ছিলেন:

উজমা চৌধুরী, পরিচালক (ফাইন্যান্স), প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ

মোহাম্মদ মোহিউদ্দিন আহমেদ, অ্যাডিশনাল জেনারেল ম্যানেজার, এসএমসি

কাজি মো. সাফায়েত কবির, সিনিয়র EVP, এনআরবিসি ব্যাংক

ইঞ্জিনিয়ার সাদিদ জামিল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দি মেটাল প্রাইভেট লিমিটেড

নিতাই পদ সাহা, সিইও, রুরাল সার্ভিসেস ফাউন্ডেশন (RSF)

সামীর কার্কি, কান্ট্রি ডিরেক্টর, আইডিই বাংলাদেশ বলেন, “এই স্ট্র্যাটেজি কেবল একটি নীতি-নির্ধারণী দলিল নয়; এটি একটি যৌথ ভিশন—যেখানে ব্যবসা ও উন্নয়ন একসাথে কাজ করে টেকসই সমাধান তৈরি করে যা সকলের জন্য কার্যকর বাজার গড়ে তোলে।”

এই নতুন কৌশলগত রোডম্যাপ আইডিইর চার দশকের অভিজ্ঞতাকে ভিত্তি করে গঠিত, যার লক্ষ্য হলো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা থেকে বৃহৎ কর্পোরেশন পর্যন্ত সকলের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে উদ্ভাবনী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজারব্যবস্থা তৈরি।

মন্তব্য

বিশ্লেষণ
Padma Bridge crossing two crore vehicles for two and a half billion crore
উদ্বোধনের তিন বছর

পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার দুই কোটি যানবাহন, আয় আড়াই হাজার কোটি টাকা

পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার দুই কোটি যানবাহন, আয় আড়াই হাজার কোটি টাকা

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনকারী অবকাঠামো পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর ৩ বছরপূর্তি ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। ২০২২ সালের ২৬ জুনের এই দিনে বহু প্রতিক্ষিত পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। এরপর এক মুহুর্তের জন্য সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হয়নি। আর এই তিন বছরে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৯২টি যান পারাপারে টোল আদায় হয়েছে ২ হাজার ৫ শ’ ৪ কোটি ৬৭ লাখ ৬২ হাজার ৮শ’ টাকা।

পদ্মা সেতু দক্ষিণের মানুষের বিড়ম্বনা লাঘব করে এগিয়ে যাওয়ার প্রতীক এখন। উত্তাল নদী পারপারের ভোগান্তি থেকে শুধু মুক্তিই দেয়নি এই সেতু পাল্টে দিয়েছে দক্ষিণের আর্থ সামাজিক অবস্থাও। উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত, শিল্প কারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্যেও যুগান্তকারী পরিবর্তন। খুলে গেছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার।

সেতুর উপর তলায় সড়ক পথ ও আর নিচ দিয়ে ছুটছে ট্রেন। রাতদিন দ্রত বেগে পদ্মার উপর দিয়ে চলছে ট্রেন ও সড়ক পথের যাত্রা। পদ্মা সেতুর ২০২২ সালের ২৫ জুন উদ্বোধন হলেও পরদিন ২৬ জুন এই দিনে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হয়। পরের বছর ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতুর রেলপথ উদ্বোধন হয়। পদ্মা সেতু হয়ে চালু হয় ঢাকা-ভাঙ্গা নতুন রেল নেটওয়ার্ক। আর ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর রেল লিঙ্ক প্রকল্প পুরোপুরি চালু হয়। এদিন রাজধানী থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে ভাঙ্গা হয়ে নতুন পথে নড়াইল ও যশোর অতিক্রম করে খুলনা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। রাজধানী থেকে মাত্র সাড়ে ৩ ঘন্টায় খুলনা ও বেনাপোল পৌছানো যাচ্ছে। তাই এখন দক্ষিণের মানুষ সড়ক ও ট্রেন পথের সুফল পাচ্ছে।

এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পায়রা ও রামপালের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হয় পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা খুঁটি ব্যবহার করে। সেতু উপর দিয়ে যাওয়া উচ্চ ক্ষমতার ইন্টারনেট লাইন ব্যবহার হচ্ছে। সেতুতে নির্মাণ করে রাখা গ্যাস লাইন ব্যবহারে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে দক্ষিণের জনপদ, এখন অপেক্ষা এখন। তাই খুশি সবাই।

পদ্মা সেতুর দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ বলেন, কোন হেসেল ছাড়াই টানা দিন বছর সেতুতে নিরবিচ্ছিন্নভাবর যান পারাপার করা হয়। এটি একটি বড় মাইলফলক। পদ্মা সেতুর দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) যুগ্ম সচিব আলতাফ হোসেন সেখ বলেন, দেশের এই অবকাঠামো যেমন মানুষের উপকারে লাগছে, আবার রাজস্ব আয়ও হচ্ছে। সেতু ব্যবহারে টোল আদায় আরও সহজ করা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যেই চলন্ত অবস্থায়ই টোল পরিশোধ করা যাবে।

স্বপ্নের সেতু চালুর তিন বছরে পারাপার হয়েছে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৯২টি। এর মধ্যে মাওয়া দিয়ে প্রবেশ করে ৯৬ লাখ ৭১ হাজার ১১২টি যান। আর ৯৮ লাখ ৫৮০টি যান জাজিরা প্রান্ত দিয়ে পদ্মা সেতুতে প্রবেশ করে। মাওয়া থেকে ১ লাখ ২৯ হাজার ৪শ’৬৮ বেশি যান জাজিরা প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করে পদ্মা সেতু অতিক্রম করে।

গত ৫ জুন পদ্মা সেতুতে এক দিনে রেকর্ড পরিমান ৫ কোটি ৪৩ লাখ ২৮ হাজার টাকার টোল আদায় হয়েছে। এই ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫২ হাজার ৪৮৭টি যানবাহন পারাপার হয়। পদ্মা সেতুতে একদিনে সর্বোচ্চ টোল আদায় ও যানবাহন পারাপারের নতুন রেকর্ড এটি। এর আগে ২০২২ সালের ২৬ জুন পদ্মা সেতুর যান চলাচলের শুরুর দিনে সর্বোচ্চ ৫১ হাজর ৩১৬টি যানবাহন পারাপারের রেকর্ড ছিল। আর ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল ইদুল ফতরের আগে সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড ছিল ৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ৭শ' টাকা।

নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়াদ বলেন, সেতু চালুর প্রথম বছর ৫৬ লাখ ৯৪ হাজার ৮৯৯টি যানবাহন পারাপারে টোল আদায় হয়েছে ৭৯৮ কোটি ৬০ লাখ ৯৩ হাজার ৭শ’ টাকা। দ্বিতীয় বছর ৬৮ লাখ ১ হাজার ৩৭৪টি যানের বিপরীতে টোল পাওয়া যায় ৮৫০ কোটি ৪৩ লাখ ৫৬ হাজার ৩শ’ ৫০ টাকা। আর তৃতীয় বছর ২৫ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত ৬৯ লাখ ৯৫ হাজার ২২৯টি যান পারাপারে টোল আদায় হয় ৮৬১ কোটি ২২ লাখ ১৮ হাজার ৮৫৯ টাকা। মূল পদ্মা সেতু ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের দীর্ঘ। তবে অ্যাপ্রোচসহ প্রায় ১০ কিলোমিটার। সেতু নিরাপত্তাসহ ট্রাফিক আইন মেনে পদ্মা সেতুতে যানাবাহানের নির্বিঘ্ন চলাচলে সেতু এবং দুই প্রান্তের সড়ক জুড়ে অত্যাধুনিক ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সেতুতে যানবাহানের গতিও বৃদ্ধি করে দুই পারের এক্সপ্রেসওয়ের মতই ঘন্টায় সর্বোচ্চ গতি করা হয়েছে ৮০ কিলোমিটার।

মন্তব্য

p
উপরে