সমাজসেবায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সোমবার একুশে পদক হাতে পাওয়া বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান স্বেচ্ছাসেবক কিশোর কুমার দাশ বলেছেন, এ স্বীকৃতি মানুষের ভালো কাজের।
একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আগের দিন রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পদক নেন কিশোর।
বিদ্যানন্দের পক্ষে এবারই প্রথম কোনো পদক গ্রহণ করেন প্রধান স্বেচ্ছাসেবক।
পদকপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিষ্ঠাতা হলেও আজ প্রথম কোনো পদক গ্রহণ করলাম। অবশ্যই ভালো লেগেছে, তবে আরও বেশি ভালো লাগত সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে পদক নিতে পারলে। আমি উদ্যোক্তা হলেও এই প্রতিষ্ঠানে সারা দেশের মানুষ অনুদান দেয়। আর অনেকে শ্রম ও মেধা দেয় নিঃস্বার্থভাবে।
‘তাই পদক প্রাপ্তির আনন্দ তাদের স্পর্শ করলে এই স্বীকৃতি স্বার্থক হবে। আর এই পদকের অর্থ পুরোটাই যাবে বঞ্চিত সমাজের জন্য। যাদের জন্য এই অর্জন, তাদের পেছনেই ব্যয় হবে পদক প্রাপ্তির অর্থ।’
কিশোর কুমার আরও বলেন, ‘মানুষের জন্য কাজ করার জন্যই পদক দেয়া হয়েছে। তাই মানুষের কাজের মাঝেই থাকতে চাই। যে মানুষগুলো দিনের পর দিন নানা কটূক্তি আর সমালোচনা সহ্য করে কাজ করে গেছে গরিবের জন্য, যে মানুষগুলো মাসের শুরুতে আয়ের একটি অংশ পাঠিয়ে দিয়েছেন গরিব মানুষের জন্য, সে মানুষগুলোর কাজ আজ স্বীকৃতি পেয়েছে রাষ্ট্র থেকে।
‘সরকার বিদ্যানন্দকে নয়, আমি মনে করি মানুষের ভালো কাজগুলোকেই সম্মানিত করেছে এই পদকের মাধ্যমে।’
একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যদের মতো বিদ্যানন্দকে ১৮ ক্যারেট মানের ৩৫ গ্রাম সোনার পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্রের সঙ্গে চার লাখ টাকা দেয়া হয়।
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থানসহ মৌলিক চাহিদা পূরণে কাজ করছে।
‘এক টাকায় আহার’, ‘এক টাকায় চিকিৎসা’, বিদ্যানন্দ অনাথালয়, বিদ্যানন্দ মা ও শিশু হাসপাতাল, ‘এক টাকায় রেস্টুরেন্ট’, বিদ্যানন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবনখেয়া’, আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্প ‘সম্বল’, প্লাস্টিক একচেঞ্জ স্টোর, হ্যাপিনেস স্টোর, বিদ্যানন্দ প্রকাশনীর মতো বিভিন্ন প্রকল্প, কর্মসূচি ও প্রতিষ্ঠান চালু রেখেছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।