বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভারতের ‘মেটাকোভেন’ যেভাবে হলেন বিটকয়েন বিলিয়নিয়ার

  •    
  • ১৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ১১:৫৭

একজন সাধারণ সফটওয়্যার প্রকৌশলী থেকে মেটাকোভেন আজ  ক্রিপ্টো বিলিয়নিয়ার। কিন্তু তার জীবনযাত্রায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। কারণ, বাস্তব জীবনে তিনি কিছুরই মালিক নন।

ভিনে্স সুন্দরসেন একজন ভারতীয়। যিনি অনলাইনে মেটাকোভেন নামে পরিচিত। এই বিটকয়েন বিলিয়নিয়ার পরিচিতি পান যখন তিনি ক্রিস্টির নিলামে অংশগ্রহণ করে ৬৯ মিলিয়ন ডলারে ‘দ্য ফার্স্ট ফাইভ থাউজেন্ড ডেজ’ শিরোনামে ডিজিটাল আর্টিস্ট মাইক উইঙ্কল ম্যানের একটি এনএফটি প্রকল্প কিনে নেন। যিনি অনলাইনে বিপল নামে পরিচিত।

দক্ষিণ ভারত থেকে উঠে আসা মেটাকোভেন হলেন বিটকয়েনের প্রথম দিকের একজন ব্যক্তি, যিনি বিটকয়েন থেকে ব্যাপক লাভ করতে সক্ষম হন। প্রাথমিক অবস্থায় তিনি বিটকয়েনে ৫ হাজার ডলার বিনিয়োগ করেন, অথচ এখন তিনি একজন বিলিয়নিয়ার । নাসের হুসেনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আমরা তার সাফল্যের ঘটনা জানতে পারি।

নাসেরকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মেটাকোভেন বলেন, আমার ল্যাপটপ কেনার সামর্থ্য ছিল না। তাই যখন আমার বন্ধুরা রাতের বেলা ঘুমাত, আমি তখন তাদের ল্যাপটপ ধার করতাম, কোডিং শেখার জন্য। আমি শুধু একটি পেনড্রাইভ ব্যবহার করতাম। আমি তখন একদম প্রাথমিক স্তরের ওয়েবসাইট বানাতাম। আমার জীবনের অধিকাংশ সময়েই আমি একটি ল্যাপটপ জোগাড় করতে পারিনি।

তিনি ৫৪টি ওয়েবসাইট বানিয়েছিলেন, যার মধ্যে ৫১টি ওয়েবসাইটই ব্যর্থ হয়। এর মাঝে প্রথম ওয়েবসাইট ছিল আপনি চাইলে সেখান থেকে ১০ ডলারে একজন ফ্রিল্যান্সার ভাড়া করতে পারবেন। তার এই ওয়েবসাইটটি গ্রাহক টানতে ব্যর্থ হয়।

যাই হোক, একসময় তিনি বিটকয়েনের সঙ্গে পরিচিত হন। (বিটকয়েন হচ্ছে ব্লকচেইন প্রযুক্তিতে তৈরি একটি ডিসেন্ট্রালাইজড মুদ্রা। যা মাইনিংয়ের মাধ্যমে উৎপন্ন হয়। কোনো ব্যক্তিবিশেষ, প্রতিষ্ঠান কিংবা রাষ্ট্র এর ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারে না।)

তিনি বুঝতে পারেন এই প্রযুক্তি বড় কিছু হতে যাচ্ছে।

মেটাকোভেন বলেন, এই প্রযুক্তি ছিল একেবারে বৈশ্বিক চিন্তাভাবনা, সারা বিশ্বে এর পেছনের লোকগুলো ছিল এই প্রযুক্তিকে এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বুঝতে পারেন, বিটকয়েনে খুব বড় কিছু হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক অবস্থায় যেকোনো নতুন কিছু সাধারণ মানুষ বাতিল করে দেয়। শুরুতে তারা এগুলো নিয়ে হাসাহাসি করে। যেমন বিটকয়েনের প্রথম দিকেও লোকে হাসাহাসি করেছিল। কিন্তু যখনই কেউ কিছু নিয়ে হাসে, আমার তখনই মনে হয় বিষয়টা আমার চেষ্টা করে দেখা উচিত।‘

তিনি বলেন, ‘তাই আমি আমার সমস্ত সময় বিটকয়েনে বিনিয়োগ করি। সেখানেই কিছু করার চেষ্টা করি। এই বিষয়ে যতটুকু সম্ভব আমি জানতে থাকি।‘

এটা সত্যি যে একজন সাধারণ সফটওয়্যার প্রকৌশলী থেকে মেটাকোভেন আজ ক্রিপ্টো বিলিয়নিয়ার। কিন্তু তার জীবনযাত্রায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। কারণ, বাস্তব জীবনে তিনি কিছুরই মালিক নন। তার কোনো বাড়ি নেই, গাড়ি নেই এমনকি শেয়ারবাজারে কোনো বিনিয়োগও নেই। তবে ভার্চুয়াল পৃথিবীতে তার অনেক কিছু আছে। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন, সবকিছুই এখন ভার্চুয়াল।

তাকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়, নিলামে ৬৯ মিলিয়ন ডলারের এনএফটি কেনার সময় তার অনূভুতির কথা, তিনি সাফ জানিয়ে দেন, কোনো বিশেষ কিছুই তার মনের মধ্যে ছিল না।

বিপলের ৬৯ মিলিয়ন ডলারের এনএফটি প্রজেক্ট

তিনি বলেন, ‘অনেকেই ভেবেছিল যে আমি নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আসলে আমি তা হইনি। আমি বুঝতে পারছিলাম সবকিছুই। আমাকে নিলামটা জিততে হতো। আমি জিতেছি।‘

তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, মেটাভার্সে তারা একটি বিশাল মনুমেন্ট গড়তে যাচ্ছেন। যেখানে নিলামে কেনা বিপলের আর্টওয়ার্কটি প্রদর্শনীর জন্য রাখা হবে। যাতে লোকজন এই ডিজিটাল নেটিভ পিকচারটি উপভোগ করতে পারেন।

তাই, তার জন্য ৭০ মিলিয়ন ডলারে আর্টওয়ার্কটি কেনা কোনো বিনিয়োগ নয়। এটা একধরনের সমর্থন। চিত্রশিল্পী, গায়কদের মতো সৃজনশীল কাজ যারা করছেন। তারা হতে পারেন যেকোনো গোত্রের, বর্ণের ও লিঙ্গের।

লক্ষ্য হলো সম্পদ সবকিছু বিকেন্দ্রীকরণ করে ফেলা। এটি টাকা-পয়সার বিষয় নয়। এটি সম্পদ বিকেন্দ্রীকরণ করে ফেলার বিষয়।

এ বিভাগের আরো খবর