বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কাপড় নয়, ডিজিটাল পোশাকই কি ভবিষ্যৎ?

  •    
  • ৬ নভেম্বর, ২০২১ ১৭:৪৪

সুতা কিংবা কাপড়ের পরিবর্তে পিক্সেল ও প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হয় ডিজিটাল ক্লথ বা ডিজিটাল পোশাক। বাস্তবের শার্ট, প্যান্ট, টপস, টুপি, জুতাসহ সব ধরনের পরিধেয় বানানো যায় এ প্ল্যাটফর্মে। গ্রাহকরা অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এআর) কিংবা রূপ পরিবর্তিত ছবির মাধ্যমে এ পোশাক পরে থাকেন।

বর্ণিল পোশাকে ভবন বা স্থাপনের সামনে দাঁড়িয়ে বা বসে আছেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। দেখে মনে হতে পারে কোনো ব্র্যান্ডের মডেল তারা, কিন্তু আদতে তা নয়। তাদের সবার গায়ে ডিজিটাল পোশাক।

এটি এমন এক পোশাক যাকে ধরা বা ছোঁয়া যায় না। দেখতে হুবহু বাস্তবের জামা-কাপড়ের মতো। এর মাধ্যমে কল্পনার রঙে মনকে রাঙানো যায়; কল্পিত সাজে নিজেকে সাজানো যায়।

ভাইস নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সুতা কিংবা কাপড়ের পরিবর্তে পিক্সেল ও প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হয় ডিজিটাল ক্লথ বা ডিজিটাল পোশাক। বাস্তবের শার্ট, প্যান্ট, টপস, টুপি, জুতাসহ সব ধরনের পরিধেয় বানানো যায় এ প্ল্যাটফর্মে। গ্রাহকরা অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এআর) কিংবা রূপ পরিবর্তিত ছবির মাধ্যমে এ পোশাক পরে থাকেন।

গত কয়েক বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে লোকজন গায়ে চড়াচ্ছেন ডিজিটাল পোশাক। ধারণা করা হচ্ছে, বিলিয়ন ডলারের শিল্প হতে যাচ্ছে এই গেমিং স্কিন মার্কেট (যেখান থেকে ফোর্টনাইটের মতো গেমের খেলোয়াড়রা কোনো চরিত্রের আদলে নিজেদের পোশাক বা অবয়ব কেনেন)।

এতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে মেটাভার্স (ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট, এআর চশমা, স্মার্টফোন, ব্যক্তিগত কম্পিউটারের মতো ডিভাইস দিয়ে কল্পিত থ্রিডি ভার্চুয়াল পরিবেশ) নিয়ে ফেসবুকের পরিকল্পনার সাম্প্রতিক ঘোষণা।

কিছুটা অদ্ভুত ও দূরের বিষয় মনে হলেও বর্তমানে ডিজিটালের সঙ্গে বাস্তব মিলেমিশে এক হয়ে যাচ্ছে। আর এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাস্তবের মতো অনুভূতি দেয়া অনেক ধরনের ডিজিটাল পোশাক বানাতে মনোযোগী হচ্ছেন ডিজাইনাররা। ফলে আগের চেয়ে বেশি বাস্তব হয়ে উঠছে ডিজিটাল ফ্যাশন।

ডিজিটাল পোশাক কেনায় আগ্রহ কেন

যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক ২২ বছর বয়সী প্রোডাক্ট ম্যানেজার দানুশ শেঠি বলেন, শুরুতে ডিজিটাল পোশাক কেনার বিষয়টি অদ্ভুতুড়ে মনে হতে পারে, তবে এটি পরা সহজ; দামও কম। এ ছাড়া বাস্তবে জামা-কাপড় পরার ক্ষেত্রে সমাজ আরোপিত যে নীতি-নৈতিকতার বিষয় আছে, এ পোশাকে তা নেই।

তিনি বলেন, সাধারণত কোনো জামা কিনতে গেলে সেটি শরীরের সঙ্গে খাপ খাবে কি না, ছবিতে কেমন দেখাবে বা এ ধরনের পোশাক কেনা কতটা নৈতিক হবে, এমন অনেক দিক নিয়ে ভাবতে হয়। তবে ডিজিটাল পোশাকের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা নেই।

দানুশ জানান, তিনি প্রথম কিছু ডিজিটাল পরিধেয় কিনেছেন ড্রেসএক্স নামের কোম্পানি থেকে। গত বছরের আগস্টে যাত্রা শুরু করা এই কোম্পানি নিজস্ব ডিজাইনের পাশাপাশি অন্যদের তৈরি ডিজিটাল পোশাকও বিক্রি করছে।

এআরের মাধ্যমে ড্রেসএক্সের গ্রাহকরা ডিজিটাল পোশাক পরতে পারেন। এ ধরনের পোশাক কিনতে চাইলে গ্রাহক শুরুতে প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট বা অ্যাপে গিয়ে নিজেদের ছবি আপলোড করেন। এরপর ডিজিটাল পোশাক পরিয়ে দেহের মাপ মতো এডিট করে সে ছবি এক থেকে দুই দিনের মধ্যে গ্রাহকের কাছে পাঠানো হয়। ডিজিটাল পোশাকের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেয়ার উপযোগী করা থাকে।

ড্রেসএক্সের সহপ্রতিষ্ঠাতা নাটালিয়া মডেনোভা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য প্রত্যেককে তাদের ডিজিটাল পোশাক সম্ভার দেয়া।’

নাটালিয়া ও ডারিয়া শাপোভালোভা যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসভিত্তিক উদ্যোক্তা। এর আগে তারা প্রচলিত পোশাক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের অধীন ইউনাইটেড নেশনস ইকোনোমিক কমিশন ফর ইউরোপের মতে, পোশাক শিল্প পরিবেশগত ও সামাজিক জরুরি অবস্থায় আছে।

কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, বৈশ্বিক বর্জ্যপূর্ণ পানির ২০ শতাংশ আসে পোশাক শিল্প থেকে। একই সঙ্গে বৈশ্বিক কার্বন নির্গমনের ১০ শতাংশও হয় এ শিল্পের মাধ্যমে।

সমুদ্রে প্লাস্টিক বর্জ্যের অন্যতম জোগানদাতা মনে করা হয় বস্ত্র শিল্পকে। জনপ্রিয় পোশাক তৈরির কারখানাগুলোতে বাজে কর্মপরিবেশ নিয়েও আছে নানা সমালোচনা।

ডিজিটাল পোশাকে সে ধরনের ঝামেলা থাকবে কি না, তা জানতে চাওয়া হয় মোডেনোভা ও শাপোভালোভার কাছে। তারা দাবি করেন, ডিজিটাল ফ্যাশনের মাধ্যমে বস্ত্র বা পোশাক শিল্পের অনেক সংকটের সমাধান সম্ভব।

এ দুই উদ্যোক্তা জানান, ডিজিটাল জগতে লোকজন চাইলেই পছন্দের কোনো পোশাক পরতে পারবে, কিন্তু সে পোশাকগুলো বাস্তবে তৈরি করতে হবে না।

শাপোভালোভা মনে করছেন, ভবিষ্যতে প্রত্যেকেরই ডিজিটাল পরিধেয় থাকবে, যা তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, স্থির ছবি, ভিডিও কলের সময়, অনলাইন কনফারেন্স কিংবা গেমিং ও অন্য মাল্টিভার্সে পরতে পারবে।

তার মতে, ডিজিটাল পোশাকের আরেকটি উপকারিতা হলো এগুলো তৈরির উদ্যোগ নিতে বাস্তব জামা-কাপড়ের মতো খুব বেশি বিনিয়োগ লাগে না। ফলে অনেক ডিজাইনারই এ খাতে অপেক্ষাকৃত কম অর্থ খাটিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।

এ বিভাগের আরো খবর