বাংলাদেশি শিক্ষা বিষয়ক স্টার্টআপ শিখো ডটটেক আবারও বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছে। ব্যবসা শুরুর পর প্রাথমিকভাবে দ্বিতীয় দফায় প্রতিষ্ঠানটি ১৩ লাখ ডলারের এই বিনিয়োগ পেয়েছে।
শিক্ষা ব্যবস্থাকে দেশের মানুষের কাছে সহজলভ্য করতে বুধবার প্রাথমিক সেই বিনিয়োগ পাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে শিখো ডটটেক।
শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন স্টার্টআপে বিনিয়োগকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান লার্নস্টার্ট ও দেশিও প্রতিষ্ঠান অ্যাঙ্করলেস বাংলাদেশ এই বিনিয়োগ করেছে।
প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট টেকক্র্যাঞ্চ জানায়, বিনিয়োগের এই রাউন্ডে আরও জড়িত রয়েছেন ওভেমেকার পার্টনার এবং অনলাইন কোর্স প্লাটফর্ম টিচটেবিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অঙ্কুর নাগপাল।
শেষ রাউন্ডে গত অর্থবছরে লার্নস্টার্ট অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক থেকে ২ লাখ ৭৫ হাজার ডলার বিনিয়োগ পেয়েছিল শিখো।
শিখো ডটটেক প্রতিষ্ঠা হয় ২০১৯ সালে। প্রতিষ্ঠানটি নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী, এমনকি ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে।
দেশের জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুযায়ী অভিজ্ঞ শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপাদান তৈরি করে শিখো।
শিক্ষার্থীদের বিষয়গুলোর সঙ্গে একাত্ম রাখতে গ্যামিফিকেশন কৌশল, লাইক পয়েন্ট, লিডারবোর্ড এবং ভার্চুয়াল পুরস্কারের ব্যবস্থা করে।
২০১৯ সালে তরুণ উদ্যোক্তা শাহির চৌধুরী শিখো ডটটেক প্রতিষ্ঠা করেন। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা শাহির চৌধুরী এর আগে কাজ করেছেন আর্থিক ব্যবস্থা ও ব্যবসা নিয়ে। তিনি এইচএসবিসি ইউকে প্রাইভেট ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন।
প্রতিষ্ঠানটি প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) হিসেবে কাজ করছেন জিসান জাকারিয়া। তিনি এক সময় গণিতের শিক্ষক ছিলেন।
দুজনেই বেড়ে উঠেছেন ঢাকায়। এরপর তারা পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যে।
দেশে ফিনটেক জনপ্রিয় হলে তিনি তার ক্যারিয়ার সেদিকেই গড়বেন বলে মনস্থির করেন। বিকাশের মতো সেবা আনতে কাজ করার কথাও জানান তিনি।
চৌধুরী বলেন, ‘আমি বোঝার চেষ্টা করছি বাংলাদেশে প্রযুক্তি শিক্ষা ব্যবস্থার বাজার কেমন। এটা কেমন করে কাজ করে।‘
তিনি বলেন, আমি একটা সময় দেখলাম, বাংলাদেশে এটি না থাকার কোনো কারণই নেই। সামষ্টিক অর্থনীতির দিক থেকে দেখলে বোঝা যায়, প্রয়োজনীয় সব উপাদান এখানে আছে। আপনার বড় একটা জনসংখ্যা আছে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি। যার অধিকাংশই ২৫ বছরের নিচে।’
সেই ধারণা এবং নতুন করে এই খাতে একটা বাজার তৈরির জন্যই এমন উদ্যোগ নেয়ার কথাও জানান তিনি।
শিখো প্লাটফর্মটি ব্যবহার করতে হলে অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। প্রথম সাত দিন অ্যাপটি ব্যবহার সম্পূর্ণ ফ্রি।
অ্যাপটিতে বেশ কিছু প্রিমিয়াম ফিচার আনার কথা জানিয়েছে শিখো ডটটেক।
এক বিবৃতিতে অ্যাঙ্করলেস বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সহযোগী এবং সিইও রাহাত আহমেদ বলেন, ‘বিশ্বে আয়ের শতকরা হিসাবে বেসরকারি শিক্ষা ব্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বরাদ্দ রয়েছে, কিন্তু এডটেক ফান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে ভারত এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ পিছিয়ে আছে। বাজারটি আসলে এই খাতের জন্য প্রস্তুত। আমরা বিশ্বাস করি, শিখোর দলটি নেতৃত্ব দেয়া ও শিক্ষাকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত।’