চট্টগ্রামে দেশের সবচেয়ে বড় ছাদ সৌরবিদ্যুৎ (রুফটপ সোলার পাওয়ার) প্রকল্পের প্রথম কেন্দ্রটি চালু হয়েছে, যার উৎপাদনক্ষমতা ১৬ মেগাওয়াট।
দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি ইয়াংওয়ান করপোরেশনের অর্থায়নে জেলার আনোয়ারায় কেইপিজেডে রোববার এই কেন্দ্রটি চালু হয়েছে।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে ইয়াংওয়ান করপোরেশন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের (প্রায় ৩৪০ কোটি টাকা) এই পরিবেশবান্ধব জ্বালানি প্রকল্পে উৎপাদিত হবে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দেশের বৃহত্তম এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সংযুক্ত থাকবে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে। নেট মিটারিং পদ্ধতির মাধ্যমে এই কেন্দ্র থেকে গ্রিডে চলে যাবে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ।
তিন ধাপে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির প্রথম ধাপে স্থাপিত ১৬ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র রোববার চালু হয়েছে।
সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং গুন এবং ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাঙ।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান সামিনা বানু বলেন, দেশে এটিই প্রথম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বা ইপিজেড, যেখানে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। প্রথম ধাপে এই কেন্দ্র চালু হয়েছে। আরও দুটি কেন্দ্র চালুর পর এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলে আশপাশের এলাকায় অন্তত ১২ হাজার নতুন সংযোগ দেয়া সম্ভব হবে।
ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাঙ জানান, ১৬ মেগাওয়াটের প্রথম সৌর ফটোভোলটাইক (পিভি) বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপনে খরচ হয়েছে ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটির কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে আট মাস। দ্বিতীয় ধাপে স্থাপিত হবে ৪ দশমিক ৩ মেগাওয়াটের সৌর প্যানেল।
তিনি আরও জানান, আগামী অক্টোবরে এই প্যানেল স্থাপনের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর তৃতীয় ধাপে ২০ মেগাওয়াটের অপর একটি কেন্দ্র স্থাপিত হবে ইনডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট (আইপিপি) হিসেবে। সৌরশক্তির সব প্যানেলই কোরিয়া থেকে আমদানি করা।
১৯৯৬ সালে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক ইয়াংওয়ান করপোরেশন চট্টগ্রামে বেসরকারি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল স্থাপন করে, যা কেইপিজেড নামে পরিচিত। ২০১১ সালের ২ অক্টোবর প্রথম কারখানা হিসেবে কর্ণফুলী শুজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোরিয়ান ইপিজেডে উৎপাদন শুরু করে। সেখানে বর্তমানে ৩৪টি বিশ্বমানের কারখানায় ফুটওয়্যার, পোশাকশিল্প এবং টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে।