কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) গবেষক টিমনিত গেবরুকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে সার্চ ইঞ্জিন গুগল থেকে পদত্যাগ করেছেন দুই প্রকৌশলী।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই জনের মধ্যে গ্রাহক নিরাপত্তাবিষয়ক পরিচালক ডেভিড বেকার গত মাসে পদত্যাগ করেন। তিনি ১৬ বছর প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করেছেন।
এক চিঠিতে বেকার জানান, গেবরু চলে যাওয়ায় তার গুগলে থাকার ইচ্ছা শেষ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বৈচিত্র্যে বিশ্বাস করি বলার পর নিজেদের চৌহদ্দির মধ্যে অনেকের স্পষ্ট নীরবতার বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারি না।’
অন্যদিকে সফটওয়্যার প্রকৌশলী বিনেশ কন্নন বুধবার এক টুইটে বলেন, গত মঙ্গলবার তিনি গুগল ছেড়েছেন। কারণ গুগল গেবরু ও এপ্রিল ক্রিস্টিনা কার্লির সঙ্গে অন্যায্য আচরণ করেছে।
গুগলের কৃষ্ণাঙ্গ দুই নারী সহকর্মী ছিলেন গেবরু ও কার্লি। তাদের মধ্যে কার্লি ছিলেন নিয়োগকর্তা। তার অভিযোগ, গুগল তাকে অনিয়মের মাধ্যমে বহিষ্কার করেছে।
কন্নন বলেন, ‘তাদের সঙ্গে যথাযথ আচরণ করা হয়নি।’
দুই প্রকৌশলীর পদত্যাগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি গুগল। সার্চ ইঞ্জিনটির ভাষ্য, গেবরু চলে যাওয়ার পর কর্মীদের মধ্যে আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করছে তারা। একই সঙ্গে কার্লির অভিযোগ নাকচ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
গেবরুর ঘটনাটা কী
ড. গেবরু কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার নৈতিকতা ও ব্যবহারবিষয়ক নামী গবেষক। ফেশিয়াল রিকগনিশনের মতো প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বর্ণবাদী পক্ষপাত নিয়ে কাজ করায় তার সুখ্যাতি আছে।
তিনি কৃষ্ণাঙ্গদের মুখ চিহ্নিত করতে না পারার ব্যবস্থাগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
গুগলের সঙ্গে তার ঝামেলার শুরু একটি গবেষণাকে ঘিরে। গেবরুর অভিযোগ, তিনি ছুটিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। সে সময়েই যৌথভাবে লেখা একটি গবেষণাপত্র নিয়ে তাকে বৈঠকে ডাকা হয়।
তিনি বলেন, তাকে গবেষণাপত্রটি প্রত্যাহার করতে বলা হয় এবং জানানো হয় যে, এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় সম্পৃক্ত হতে চায় না গুগল।
গেবরুর দাবি, ওই বৈঠকের পর ‘ব্রেইন উইমেন অ্যান্ড অ্যালাইজ’ নামের ইন্টারনাল গ্রুপে একটি ইমেইল পাঠিয়েছিলেন তিনি। এতে তিনি গুগলের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন।
তার পাঠানো সে ইমেইলের একটি কপি আছে ‘প্ল্যাটফরমার’ নামের ওয়েবসাইটের কাছে।
গুগলের ভাষ্য উদ্ধৃত করে ইমেইলে গেবরু বলেন, ‘আপনি বরং আপনার লেখা বন্ধ করুন, কেননা এতে কোনো পার্থক্য তৈরি হবে না।’
এদিকে গবেষণা থেকে কেন তার নাম সরিয়ে নেয়া হবে, সে সংক্রান্ত কারণ জানাতে ড. গেবরু গুগল কর্তৃপক্ষকে মেইল পাঠান। এতে তিনি বলেন, যদি তারা কারণ জানাতে না পারে, তবে তিনি চাকরি থেকে ইস্তফার তারিখ খুঁজবেন।
গেবরুর ভাষ্য অনুযায়ী গুগল উত্তরে বলেছে, ‘আপনার গুগল ছাড়ার সিদ্ধান্তের প্রতি আমরা সম্মান জানাই…এবং আমরা আপনার পদত্যাগ গ্রহণ করছি।’
গেবরুর দাবি, তিনি পদত্যাগ করেননি। তাকে বরখাস্ত করেছেন গুগলের এআই গবেষণাবিষয়ক জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক জেফ ডিন।