২০১৮ সালে দেশে প্রথম স্মার্টফোন আনার পর গ্রাহকপ্রিয় হয় পোকোফোন। দীর্ঘ বিরতি দিয়ে গত বছর বেশ কয়েকটি মডেলের স্মার্টফোন এনেছে পোকো। যার মধ্যে একটি পোকো ‘এম৩’। বাজেট ক্যাটাগরির পোকো এম৩ ফোনের ভালো-মন্দ দেখা যাক।
ডিজাইন ও ডিসপ্লে
সাধারণত বাজেট ফোনের ডিজাইনে অনেক প্রতিষ্ঠান খুব বেশি গুরুত্ব দেয় না। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখা গেছে পোকোর ক্ষেত্রে। পোকো এম৩ যে কেউ প্রথম দেখায় ফ্ল্যাগশিপ মনে করতে বাধ্য। ৬.৫৩ ইঞ্চির ফুল এইচডিপ্লাস ডটড্রপ ডিসপ্লের ফোনটির রেজুলেশন ২৩৪০*১০৮০ পিক্সেল, সঙ্গে রয়েছে ইমপ্রেসিভ ১৫০০:১ কনট্রাস রেশিও এবং ১৯.৫:৯ অ্যাসপেক্ট রেশিও।
ডিভাইসটির পিছনে রয়েছে ট্রিপল ক্যামেরা যা উপর নিচে লম্বলম্বি দেয়া, পাশে ফ্ল্যাশ লাইট। ক্যামেরার ডান পাশে একটু বড় আকারে পোকোর লোগো।
ফোনটির ডান সাইডে দেয়া হয়েছে ভলিউম রকার, পাওয়ারবাটন/ফিঙ্গরপ্রিন্ট সেন্সর। ফোনের উপরের দেয়া হয়েছে ৩.৫ মিমি হেডফোন জ্যাক, নিচের দিকে আছে স্পিকার, টাইপসি চার্জিং পোর্ট।
ডিসপ্লের ভিউয়িংয়ে টিইউভি রাইনল্যান্ড ব্লু লাইট সার্টিফিকেশন দেয়া হয়েছে। এই সার্টিফিকেশনে দীর্ঘ সময় পর্দায় তাকিয়ে থাকলেও চোখের ক্ষতি হয় না। নিচের দিকে দেয়া স্পিকারে উন্নতমানের ও লাউড সাউন্ড পাওয়া যায়। ডিসপ্লেকে দুর্ঘটনা থেকে সুরক্ষা দিতে রয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস ৩ প্রযুক্তি। পিছনে অ্যান্টি ফিঙ্গারপ্রিন্ট টেক্সাচরড থাকায় সহজেই হাতে রাখা যায়।
ব্যাটারি লাইফ
এমন প্রাইস রেঞ্জে ৬০০০ এমএএইচের শক্তিশালী ব্যাটারি ফোন কোম্পানিগুলো দেয় না বলা যায়। সেদিন থেকে এটি ব্যতিক্রম। একবার চার্জে ব্রাউজিং ও সারাদিন স্ট্রিমিং পাওয়া যায়। সর্বোচ্চ ব্যবহারে নিশ্চিন্তে দেড় দিন কাটিয়ে দেয়া যায়। ফাস্ট চার্জিং থাকায় অল্প সময়ে দ্রুত ফুল চার্জ করা যাবে। ১৮ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং সুবিধা রয়েছে। বক্সে ২২.৫ ওয়াটের চার্জার। রিভার্স ওয়্যার চার্জিংও সাপোর্ট করবে পোকো৩।
পোকো এম৩ ফোনের পিছনের ডিজাইন
ক্যামেরা
ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপের প্রাথমিক ক্যামেরা ৪৮ মেগাপিক্সেলের। রয়েছে একটি দুই মেগাপিক্সেলের ম্যাক্রো ও আরেকটি দুই মেগাপিক্সেলের ডেফথ সেন্সর। সেলফি নিতে রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। পিছনের ক্যামেরার ছবির মান খুব ভালো বলা যাবে না। বাজেট ফোন হিসেবে মানানসই। দিনের আলো এমনকি নাইট মোডেও ছবি হয় ঝকঝকে। তবে অনেকক্ষেত্রে কালার কনট্রাস সঠিক মনে হয়নি। অবশ্য কনট্রাস নিজের মতো করে সেট করে নেয়া যায়। অবশ্য ক্যামেরায় থাকা মুভি ফ্রেম ছবিকে সিনেম্যাটিক ফ্লেভার দেয়।
পারফরম্যান্স
১১ ন্যানোমিটার প্রযুক্তির কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন ৬৬২ চিপসেটের সঙ্গে রয়েছে অ্যাড্রেনো ৬১০ জিপিইউ। এতে ব্যবহারকারীরা পাবেন স্মুথ ভিডিও দেখা ও গেইমিং করার অভিজ্ঞতা। এই জিপিইউ ব্যবহারে উন্নতমানের ছবি প্রায় অর্ধেক মেমোরিতে সংরক্ষণের সুবিধা পাওয়া যাবে। ফোনটি খুব কম গরম হয় ও কম ব্যাটারি শক্তি খরচ করে। ডিভাইসটির ইউএফএস স্টোরেজ উচ্চ পারফরম্যান্স, উচ্চগতি ও মাল্টিটাস্কিং সুবিধা দেয়। তাই অ্যাপ ওপেন কার যায় আরও দ্রুত।
অ্যান্ড্রয়েড ১০ এর উপর শাওমির ইন্টারফেইস এমআইইউআই ১২-তে চলবে ফোনটি। এমআইইউআই গেইম বুস্টার আপনাকে রিয়েল টাইমে সিপিইউ এবং জিপিইউ ট্র্যাক করতে দেয়। চাইলে মোবাইল স্ক্রিনটি অন্য কোনো মনিটরে সংযুক্ত করা যায়।
দাম
৪ জিবি র্যাম ও ৬৪ জিবি রম এবং ৪ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি রম সংস্করণে দেশে ফোনটির দাম যথাক্রমে ১৪ হাজার ৯৯৯ টাকা ও ১৬ হাজার ৪৯৯ টাকায়।