বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এ বছরই সবার জন্য ইন্টারনেট: আইসিটি প্রতিমন্ত্রী

  •    
  • ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ ১৭:১৫

২০০৮ সালে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে কাজ করত ৫০ হাজার মানুষ। এখন তা পৌঁছেছে ১৫ লাখে। এক যুগ আগে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৫৬ লাখের মতো। আর এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি। ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে এ সময়ের মধ্যে তৈরি হয়েছে ৫১ হাজারের বেশি সরকারি ওয়েবসাইট। ২০০৮ সালে যার সংখ্যা ছিল ৫০টিরও কম।

ফাঁকা মঞ্চ। সামনেই বসে আছেন অতিথিরা। হঠাৎ সবাইকে অবাক করে দিয়ে সেখানে হাজির হলো এক মানবীয় রোবট। রিনরিনে কণ্ঠে সে মঞ্চে ডেকে নিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে।

শনিবার আগারগাঁওয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের যুগপূর্তি উপলক্ষ্যে আইসিটি বিভাগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের শুরুটা ছিল এমনই চমক জাগানিয়া।

মঞ্চে উঠার পর প্রতিমন্ত্রী জানালেন, এই রোবটের নাম মাঈশা। তৈরি করেছেন এ দেশের উদ্ভাবকেরা; পুরোপুরি দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে।

এর ভেতর দিয়ে প্রতিমন্ত্রী যেন গত এক যুগে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতির আভাস দিতে চাইলেন।

এর পর প্রতিমন্ত্রী পলকের বক্তব্যে উঠে এলো ২০০৮ সাল ও ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি খাতের তুলনামূলক চিত্র।

তিনি জানালেন, ২০০৮ সালে এই খাতে কাজ করত ৫০ হাজার মানুষ। এখন তা পৌঁছেছে ১৫ লাখে। এক যুগ আগে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৫৬ লাখের মতো। আর এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি। ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে এ সময়ের মধ্যে তৈরি হয়েছে ৫১ হাজারের বেশি সরকারি ওয়েবসাইট। ২০০৮ সালে যার সংখ্যা ছিল ৫০টিরও কম।

আর ২০০৮ সালের ২৬ মিলিয়ন ডলারের আইসিটি শিল্প এখন উন্নীত হয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলারে।

জুনাইদ আহমেদ পলক আরও বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ৯০ শতাংশ সরকারি সেবা ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। এ সময়ের মধ্যে আইসিটি খাতে আরও অন্তত পাঁচ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

এ ছাড়া চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও করোনাকালীন পরিস্থিতিতে পরিবর্তিত পৃথিবীর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য প্রতিটি খাতের সঙ্গে আইসিটিকে সম্পৃক্ত করার তাগিদ দেন তিনি।

এ জন্য অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আলোকে নেয়া কিছু উদ্যোগের কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। এগুলো হলো মানসম্মত শিক্ষা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, গবেষণা ও উদ্ভাবনের পরিবেশ সৃষ্টি, তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইসিটি অবকাঠামো তৈরি, বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি, তথ্য-প্রযুক্তি খাতে ব্র্যান্ডিং ও গ্রামীণ অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবা।

এই পরিকল্পনা সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি বিভাগের নেয়া ১২টি উদ্যোগের কথা জানান তিনি। এগুলো হলো সেন্টার অব এক্সিলেন্স, অ্যাজেন্সি টু ইনোভেট, স্টাবলিশিং ডিজিটাল কানেকটিভিটি, শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি, ডিজিটাল লিডারশিপ অ্যাকাডেমি, এনহান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি প্রজেক্ট, ইন্টার অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজাকশন প্ল্যাটফর্ম, সাইবার সিকিউরিটি হেল্প ডেস্ক, ওপেন ডেটা অ্যানালিটিক্স প্লাটফর্ম (জনতার সরকার), ভার্চুয়াল কোর্ট, ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ ও ন্যাশনাল ডিজিটাল লাইব্রেরি স্থাপন।

প্রতিমন্ত্রীর ভাষ্য, গত ১২ বছরে দেশে একটি শক্তশালী আইসিটি ব্যাকবোন তৈরি হয়েছে। যা গ্রাম এলাকা পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। দেশের ৩ হাজার ৮০০ ইউনিয়ন এখন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেকটিভিটির আওতায়।

তার মতে, বিস্তৃত এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণেই করোনাকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অফিস-আদালত, চিকিৎসা সেবা ও শিক্ষাসহ সব ধরনের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে। যে কারণে বাংলাদেশে বৈশ্বিক এই মহামারীর অভিঘাত তুলনামূলক কম।

এ ছাড়া এই খাতের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী নানা কর্মপরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী। বলেন, এই খাতকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তোলার জন্য সারা দেশে মোট ৩৯টি হাইটেক ও আইটি পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। যার মধ্যে পাঁচটি নির্মাণ শেষ হয়েছে। সেখানে কার্যক্রম শুরু করেছে বিভিন্ন ব্যবসায়িকপ্রতিষ্ঠান।

এদিকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ওপর জোর দিয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এর মধ্যে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্লকচেইন, রোবটিকস, এআই, এআর, ভিআর ও ক্লাউড কম্পিউটিংসহ থ্রিডি প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ শুরু করেছে সরকার।

তিনি আশা করেন, এমন নানাবিধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আইসিটি খাতে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদের সংখ্যা চলতি বছরেই ১৫ লাখ থেকে ২০ লাখে পৌঁছাবে।

সংবাদ সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে গণমাধ্যমকর্মীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন প্রতিমন্ত্রী পলকসহ সংশ্লিষ্ট অনেকে।

এলআইসিটি প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার সামি আহমেদের সঞ্চালনায় এই পর্বে কথা বলেন আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলমসহ খাতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা।

এ বিভাগের আরো খবর