প্রাইভেসি নিয়ে বিতর্কিত নীতির কারণে মেসেজ আদান-প্রদানের অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়ছেন ব্যবহারকারীরা। অনলাইনে নিরাপদ যোগাযোগের বিকল্প উৎস হিসেবে তারা ঝুঁকছেন সিগন্যাল ও টেলিগ্রাম নামের দুটি অ্যাপের দিকে।
গত সপ্তাহে ফেসবুকের সঙ্গে তথ্য বিনিময় নীতি মেনে নিতে ইউরোপের বাইরে থাকা ২০০ কোটি ব্যবহারকারীকে নোটিশ দেয় হোয়াটসঅ্যাপ। এতে বলা হয়, নতুন প্রাইভেসি নীতির সঙ্গে একমত না হলে ৮ ফেব্রুয়ারির পর আর হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা যাবে না।
এরপরই এর প্রতিবাদ জানিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়তে শুরু করেন ব্যবহারকারীরা।
হোয়াটসঅ্যাপের তুলনায় প্রাইভেসি সুবিধা ভালো হওয়ায় সিগন্যাল ও টেলিগ্রাম নামে দুটি অ্যাপ ইনস্টল করতে শুরু করেন তারা।
এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশনের (প্রেরক ও প্রাপক ছাড়া আর কেউ মেসেজে দেখতে পারবে না) মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের প্রাইভেসির সুরক্ষা দেয়ার দাবি করে হোয়াটস অ্যাপ।
তবে এর বাইরেও প্রাইভেসি নিয়ে অন্য সমস্যার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল ব্যারিয়ার্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জাক ডফম্যান।
তিনি জানান, দুই প্রান্তের ব্যবহারকারীর মেসেজের তথ্য সংগ্রহ না করলেও হোয়াটস অ্যাপ আরও এমন অনেক তথ্য সংগ্রহ করে যেগুলো সংবেদনশীল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
গত সপ্তাহে ইউরোপের বাইরের ব্যবহারকারীদের এমন নোটিশ পাঠিয়েছিল হোয়াটস অ্যাপ
এর মধ্যে রয়েছে একজন ব্যক্তি কী ধরনের স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন, কন্টাক্ট লিস্ট, লোকেশন ও তিনি কী ধরনের কেনাকাটা করছেন ইত্যাদি।
হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, নতুন প্রাইভেসি নীতি তাদের এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। তবে ব্যবসার কাজে ব্যবহার করা অ্যাকাউন্টের তথ্য ফেসবুকের সঙ্গে শেয়ার করা হবে।
হোয়াটসঅ্যাপের এমন পরিস্থিতিতে লাভবান হচ্ছে সিগন্যাল ও টেলিগ্রামের মতো ওপেনসোর্স মেসেজিং প্ল্যাটফর্মগুলো।
মঙ্গলবার টেলিগ্রাম তাদের অফিশিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে জানিয়েছে, তিন দিনে প্রায় আড়াই কোটি নতুন ব্যবহারকারী তাদের অ্যাপ ইনস্টল করেছেন। একই দিনে আরেকটি মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম সিগন্যালের ব্যবহারকারী পৌঁছেছে পাঁচ কোটিতে।
এমন বাস্তবতায় ফেসবুকের সঙ্গে তথ্য বিনিময় নিয়ে স্বর নরম করেছে হোয়াটসঅ্যাপও।
শনিবার এক ব্লগ পোস্টে তারা জানিয়েছে, নতুন নীতি না মানলেও ৮ ফেব্রুয়ারি কোনো ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হবে না। এটি পর্যালোচনার জন্য ব্যবহারকারীদের কাছে মে মাস পর্যন্ত সময় চেয়েছে ফেসবুকের মালিকানাধীন মেসেজিং প্ল্যাটফর্মটি।