মহাকাশ আবর্জনা কমাতে বিশ্বের প্রথম কাঠের স্যাটেলাইট তৈরি করতে যাচ্ছে জাপান।
দেশটির কিয়োটো ইউনিভার্সিটি ও নির্মাণ কোম্পানি সুমিটোমো ফরেস্ট্রি যৌথভাবে এ উদ্যোগ নিয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
সুমিটোমো ফরেস্ট্রির পক্ষ থেকে বলা হয়, গাছের বৃদ্ধি এবং মহাকাশে কাঠের জিনিসপত্র ব্যবহার নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে তারা। ধীরে ধীরে তাপমাত্রা পরিবর্তন ও সূর্যালোকে উচ্চমাত্রায় প্রতিরোধী কাঠের উপাদান উন্নত করা নিয়েও কাজ শুরু হবে।
পৃথিবীর চরম প্রতিকূল পরিবেশে থাকা নানা জাতের কাঠ পরীক্ষা করবে সুমিটোমো ও কিয়োটো ইউনিভার্সিটি।
সম্প্রতি স্যাটেলাইটের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় মহাকাশ আবর্জনাসৃষ্ট সমস্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বায়ুমণ্ডলে ক্ষতিকর পদার্থ নির্গমন না করে বা পৃথিবীতে ফেরার সময় মাটিতে ভগ্নাবশেষ না ফেলেই কাঠ দিয়ে নির্মিত স্যাটেলাইট পুরোপুরি পুড়ে যাবে।
কিয়োটো ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও জাপানের নভোচর টাকাও ডই বলেন, ‘সব স্যাটেলাইট পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ফেরার পর পুড়ে যায় এবং ক্ষুদ্র অ্যালুমিনা কণা সৃষ্টি করে, যা অনেক বছর ধরে বায়ুমণ্ডলের উপরের অংশে ভেসে বেড়ায়। পুরো বিষয়টিই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এ নিয়ে আমরা বেশ উদ্বিগ্ন।
‘আমাদের গবেষণার পরের ধাপ হবে কাঠের স্যাটেলাইটের ইঞ্জিনিয়ারিং মডেল উন্নত করা। এরপর আমরা ফ্লাইট মডেল প্রস্তুত করব।’
যোগাযোগ, টেলিভিশন, নৌচলাচল ও আবহাওয়া পূর্বাভাসে স্যাটেলাইটের ব্যবহার বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, আগের চেয়ে মহাকাশযান ও স্যাটেলাইটের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ায় এসব থেকে সৃষ্ট মহাকাশ আবর্জনা পৃথিবীর জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মহাকাশ আবর্জনা সরানো বা কমানোর বিভিন্ন উপায় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে আসছেন মহাকাশ বিশেষজ্ঞ ও গবেষকরা।
ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর চারদিকে প্রায় ছয় হাজার স্যাটেলাইট রয়েছে। এগুলোর প্রায় ৬০ শতাংশই মহাকাশ আবর্জনা।
গবেষণা সংস্থা ইউরোকনসাল্টের হিসাব অনুযায়ী, চলতি দশকে প্রতি বছর ৯৯০টি স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানো হবে। এর অর্থ ২০২৯ সালের মধ্যে কক্ষপথে ১৫ হাজার স্যাটেলাইট থাকতে পারে।