বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অনলাইনে ‘অবিশ্বাস্য কমে’ স্মার্টফোন কিনতে গিয়ে ধরা

  •    
  • ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৯:৪৪

ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ কমিশনার রাজিব আল মাসুদ বলেন, ‘অনলাইনে বিশ্বস্ত পেজ বা সাইটে চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে ফাঁদে পড়া যাবে না। বাজরমূল্যের তুলনায় অবিশ্বাস্য কম দামে পণ্য কিনতে গেলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সাধারণ মানুষের সরল বিশ্বাসকে পুঁজি করে প্রতারকরা এগুলো করে যাচ্ছে।’

অনলাইন যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এসএমশপডটকম নামে একটি ইকমার্স পেজের চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে ভিভোর দুটি স্মার্টফোনের অর্ডার দিয়েছিলেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রাকিব হাসান। দুই দিনেই ডেলিভারিও পেয়ে যান তিনি। কিন্তু সুন্দর প্যাকেট খুলতেই তার যেন ‘মাথায় হাত’ অবস্থা। কারণ ভিতর ছিল নকিয়া কোম্পানির অকেজো দুটি ফিচার ফোন।

পেজটিতে ভিভোর ওয়াই১৫ মডেলের দুটি ফোন মাত্র ৭ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রির বিজ্ঞাপন দেয়া ছিল; যেখানে একেকটি ফোনের বাজারমূল্য ১৫,৯৯০ টাকা। এমন দুটি ফোন নামমাত্র মূল্যে কেনার বিজ্ঞাপন দেখে প্রলোভনে পড়েন রাকিব।

মিরপুরের একটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ফোন দুটি গ্রহণের পর প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পারেন রাকিব। এ ঘটনায় ১৩ ডিসেম্বর রোববার মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন তিনি। মামলায় চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে সোমবার কামরাঙ্গীচরের পশ্চিম রসুলপুর থেকে তিনটি চক্রের ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগ।

তারা হলেন- রকি বিশ্বাস, হেকমত আলী, কচিবুর রহমান, শিমুল মন্ডল, আনিসুর রহমান শেখ ও মাজহারুল ইসলাম।

সোমবারই বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

অনলাইনে জালিয়াতির অভিযোগে ডিবির হাতে গ্রেফতার ছয়জন।

সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, আসামিদের দেয়া তথ্যে ২০২টি বুকিং মেমো, ১১৭টি ক্যাশমেমো, ৪৬ জোড়া ব্যবহার অযোগ্য জুতা, বিভিন্ন মডেলের ১২টি ভাঙা ফোন, ১০টি চার্জার ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, ফেসবুকে বিভিন্ন নামে ২৪টি পেজ চালান এই তিন চক্রের সদস্যরা। ভালোমানের মোবাইল, জুতা, ঘড়ি, থ্রিপিচ, শাড়িসহ দামি পণ্যের বিজ্ঞাপন দেন তারা। কোনো ব্যক্তি তাদের চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে অর্ডার করলে, অর্ডার নিশ্চিত হওয়ার পর তারা নকল, ভাঙাচোরা, নষ্ট ও অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের সামগ্রী প্যাকেটিং করে এসএ পরিবহন এন্ড কুরিয়ার সার্ভিসে বুকিং দিয়ে প্রতারণা করে থাকে।

এই প্রতারকরা অর্ডার কনফার্ম হওয়ার পর ১৫০ টাকা বুকিং মানি নিতেন। বাকি টাকা কুরিয়ার থেকে পণ্য বুঝে নেয়ার সময় দিতে হতো। কিন্তু কুরিয়ার থেকে পণ্য দেখে নেয়ার কোনো সুযোগ পান না ক্রেতারা। তার আগেই টাকা পরিশোধ করতে হয়।

কেউ হোম ডেলিভারি চাইলে তাকে পার্সেলের ১৫০ টাকাসহ পণ্যের পুরো টাকা বিকাশে দিতে হতো। এমনও হয়েছে টাকা পাওয়ার পর কোনো পণ্য না পাঠিয়ে যোগাযোগ বিছিন্ন দিয়েছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে ক্রেতা অন্য কোনো মাধ্যমে যোগাযোগ করলে তারা তাকে গালিগালাজ করতেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান ডিবি লালবাগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার হাসান আরাফাত।

ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার জানান, চক্রগুলো পণ্য সরবরাহের জন্য এসএ পরিবহনকে ব্যবহার করতো। প্রতারণায় এসএ পরিবহনের কেউ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।

তিনি বলেন, ‘ই-কমার্স তদারকির জন্য নিয়ন্ত্রণকারী কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। কুরিয়ার সার্ভিস সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অবহেলা রয়েছে। তারা অনেক ক্ষেত্রে চেক না করে বুকিং নেয় এবং পণ্যের দাম আগে নিলেও কোনো দায়ভার নেয় না। আমরা এই দুর্বলতাগুলো নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অবহিত করব। প্রতারণায় অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে।

ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ কমিশনার রাজিব আল মাসুদ বলেন, ‘অনলাইনে বিশ্বস্ত পেজ বা সাইটে চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে ফাঁদে পড়া যাবে না। বাজরমূল্যের তুলনায় অবিশ্বাস্য কম দামে পণ্য কিনতে গেলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সাধারণ মানুষের সরল বিশ্বাসকে পুঁজি করে প্রতারকরা এগুলো করে যাচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর