ড্যানি, লেনর ও বেল্লাকে আলাদা করা যে কারো পক্ষে খুব কঠিন। তারা সবাই ফ্যাশনেবল বাদামি রঙের কোট পরে থাকে। হিমশীতল পানিতে খেলতে ভালোবাসে। মাঝে মধ্যে শিকার করার পরপরই মাছকে টেনে ছিঁড়ে ফেলে।
এ ধরনের ভাল্লুকের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেন মেলানি ক্ল্যাপহ্যাম। তিনি কোনো গড়পরতা ব্যক্তি নন।
ভাল্লুক জীববিজ্ঞানী হিসেবে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাদামি রঙা ভাল্লুকদের নিয়ে গবেষণা করছেন ক্ল্যাপহ্যাম। থাকেন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের নাইট ইনলেটে।
প্রাণীদের নিয়ে কাজ করতে করতে নিজের মধ্যে এক ধরনের বোধ গড়ে তুলেছেন ক্ল্যাপহ্যাম।
সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘আমি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের দিকে নজর দেই। এই যেমন কোনো একটি ভাল্লুকের কানে খাঁজ আছে তো অন্যটির নাকে দাগ আছে।’
বেশির ভাগ মানুষের দেখার দৃষ্টি তার মতো নয় বলে জানেন ক্ল্যাপহ্যাম। তিনি জানান, এক বছরের মধ্যেই ভাল্লুকের চেহারার মধ্যে কয়েকবার নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। যেমন শীতের সময় বাড়তি লোম ও গুহায় ঢোকার আগে মোটা হয়ে যাওয়া তাদের চেহারার মধ্যে পরিবর্তন আনে।
ভাল্লুকদের আলাদা করে চেনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন ক্ল্যাপহ্যাম। এটি গবেষণা ও প্রজাতি সংরক্ষণে সহায়তা করে। এ ছাড়া ময়লার ঝুড়িতে কোন ভাল্লুক পড়ল বা কৃষকের গবাদিপশুর খামারে আক্রমণ করল, এসব সমস্যা সমাধান করতেও ভাল্লুকদের চেনার দরকার আছে বলে মত দিয়েছেন তিনি।
মানুষের চেহারা চিনতে ফেশিয়াল-রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। প্রযুক্তিটি ভাল্লুকদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যায় কি না, এ নিয়ে কয়েক বছর আগে চিন্তাভাবনা শুরু করেন ক্ল্যাপহ্যাম।
সিলিকন ভ্যালিভিত্তিক দুজন প্রযুক্তিকর্মীর সঙ্গে মিলে একটি দল গঠন করেন তিনি। ‘বেয়ারআইডি’ নামে বাদামি ভাল্লুকের চেহারা চিনতে সক্ষম এমন একটি সফটওয়্যার উদ্ভাবন করেন তারা। এ সফটওয়্যার এখন পর্যন্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে ১৩২টি ভাল্লুক আলাদা করে চিনতে পেরেছে।
বনে ও খামারে ভাল্লুকদের চিনতে সহায়তা করবে বেয়ারআইডি সফটওয়্যার। এ নিয়ে ক্ল্যাপহ্যাম বলেন, এই প্রযুক্তি সস্তা, দীর্ঘস্থায়ী। পাশাপাশি প্রাণীদের কোনো শারীরিক আঘাত না করেও প্রযুক্তিটি ব্যবহার করা যায়।