করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা নিয়ে সম্প্রতি ফেসুবক ও টুইটারে বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
নীতিমালার অংশ হিসেবে পোস্টটি আর দেখায়নি টুইটার। অন্যদিকে এটি মুছে ফেলে ফেসবুক। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দুটির ওপর ক্ষিপ্ত হন ট্রাম্প।
এক টুইটবার্তায় তিনি লেখেন, ‘২৩০ ধারা বাতিল!!!’
ট্রাম্প যে ধারাটি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি ব্যবহারকারীদের পোস্টের জন্য দায়মুক্তি দেয় ফেসবুক, টুইটারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এই এক ধারার বলে নিজেদের পাবলিশারের পরিবর্তে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে জাহির করতে পেরেছে মাধ্যমগুলো।
ধারাটি না থাকলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাৎক্ষণিকভাবে সব কনটেন্ট (লেখা, ছবি ও ভিডিও) যাচাই করতে হবে। পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেও এটি সম্ভব হবে না।
ট্রাম্প হয়তো ২৩০ ধারা বাতিল করবেন না। কিন্তু তার এ বক্তব্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণের প্রচ্ছন্ন হুমকি।
শুধু ট্রাম্প নন, অনেক রিপাবলিকানও মনে করেন, বেশিরভাগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তাদের বিরোধী। নিজ দলের এ সমর্থন ট্রাম্পের ইচ্ছার প্রতিফলনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের চিন্তাও খুব একটা আলাদা নয়। গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের বিচারিক কমিটি ব্যবসায়িক একচেটিয়াত্ব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন কমিটির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সহজে বলতে গেলে ছোট আকারে শুরু হওয়া অনেকেই এখন একসময়কার তেল ও রেল ধনকুবেরদের মতো একচেটিয়া ব্যবসায়ী হয়ে গেছে।
প্রতিবেদনটিতে ‘একচেটিয়া’ শব্দটি ১২০ বার ব্যবহার করা হয়েছে। এতে ডেমোক্র্যাটদের প্রথম প্রস্তাব ছিল প্রভাবশালী প্ল্যাটফর্মগুলো একই ধরনের ব্যবসায় যুক্ত হতে পারবে না। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, ইনস্টাগ্রাম ও মেসেঞ্জারের মতো প্ল্যাটফর্ম কিনতে পারবে না ফেসবুক।
প্রতিবেদনটি দ্বিপক্ষীয় ছিল না। এর সবকিছুর সঙ্গে একমতও নয় রিপাবলিকানরা। এরপরও দলগুলোর মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে ঐকমত্য দেখা গেছে।
২৩০ ধারা বাতিলের বিষয়ে আগ্রহ আছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনেরও। ট্রাম্পের সঙ্গে ভিন্ন মত থাকলেও তিনি এ ধারা দেখতে চান না। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে তার মনোভাবের প্রভাব পড়তে পারে ধারাটির ওপর।
যুক্তরাষ্ট্রে ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ নির্বাচনের প্রচারে করোনাভাইরাস মহামারি, কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার, অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলা ঘুরেফিরে এসেছে। তবে এত ইস্যুর মধ্যেও চাপা পড়েনি বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ। যেকোনো আঙ্গিক থেকে এ নির্বাচন তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।