পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগের তথ্য প্রতিদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানোর আদেশ নিয়ে নেতিবাচক প্রভাবের যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল, তা সত্য হয়নি। টানা উত্থানে থাকা পুঁজিবাজার সূচক বেড়ে সাড়ে দশ বছর আগের অবস্থান ছাড়িয়ে গেছে।
লেনদেনও হয়েছে ব্যাপক। আর এক পর্যায়ে ২০১০ সালের ২৮ অক্টোবরের ২ হাজার ৯৪৬ কোটি ৩৭ লাখ ১৪ হাজার টাকার লেনদেনকে ছাড়িয়ে যায়।
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে যে লেনদেন হয়েছে, এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে কেবল তিন কর্মদিবস। সেটিও ২০১০ সালের চাঙাভাবের সময়।
শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক আর রোববার জাতীয় শোক দিবসে পুঁজিবাজার বন্ধ ছিল। জুলাই থেকে টানা বাড়তে থাকা পুঁজিবাজার সংশোধনে যেতে পারে, এমন ধারণার মধ্যে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সার্কুলার আলোচনা তৈরি করে।
সেই সার্কুলারে বলা হয়, পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানিসহ কোন খাতে অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে, সে তথ্য দৈনিক ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করতে হবে। প্রতিদিন বিকাল ৫টার মধ্যে ব্যাংকগুলোকে এ তথ্য জানাতে বলা হয়।
অতীতে দেখা গেছে, এই ধরনের আদেশের পর পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আর এ কারণেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের উৎকণ্ঠা ছিল।
এই আদেশটি আবার ৯ বছর আগে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ‘পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত/বক্তব্য দেয়ার ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সঙ্গে আলোচনা, পরামর্শ ও সমন্বয়’সংক্রান্ত সার্কুলারের পরিপন্থি।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আদেশটিকে ভালো চোখে নেয়নি, তা রোববার জাতীয় শোক দিবসে তাদের একটি পদক্ষেপেই বোঝা যায়। পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করেন, এমন গণমাধ্যমকর্মীদেরকে ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারির সেই আদেশের কপি আবার পাঠানো হয়।
তবে কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি সেই আদেশের সঙ্গে। পরে যোগাযোগ করলে বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, ‘বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে অভিজ্ঞজনরা মতামত দিয়ে থাকেন। অনেক সময় কমিশন যে উদ্দেশ্যে নির্দেশনা জারি করে তার ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়।
‘এমন অবস্থায় পুঁজিবাজার অভিজ্ঞজনের মতামতের পাশাপাশি কমিশনের মতামত নেয়া হলে তা বাজারের জন্য ইতিবাচক হবে এবং এবং এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনাও আছে, যেখানে কমিশনের সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়টি বলা আছে।’
আবার জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, কেউ কেউ পুঁজিবাজারকে অতিমূল্যায়িত বললেও, সেটি অতিমূল্যায়িত নয় মোটেও। বরং পুঁজিবাজার আরও ভালো হবে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে এই ধরনের বক্তব্য আসার পর অবশ্য শঙ্কা কাটতে শুরু করে বিনিয়োগকারীদের মনে। এর প্রভাব দেখা গেছে লেনদেনের শুরুতেই।
সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র
বেলা ১০টায় লেনদেন শুরু হলেও তার আগের ১৫ মিনিট প্রি অর্ডার দেয়া যায়। আর বিনিয়োগকারীরা আগের দিনের চেয়ে শেয়ারের দর বেশি হেঁকেছেন তাতে। ফলে লেনদেন শুরু হতে ৫ মিনিটেই সূচক বেড়ে যায় ৩৭ পয়েন্ট। তবে কিছুক্ষণ পর সূচক আগের দিনের চেয়ে ১ পয়েন্ট কমে যায়। কিন্তু ক্রয়চাপে এরপর আবার ঘুরে দাঁড়ায়।
দীর্ঘদিনের হতাশা ব্যাংক খাতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো দাম বেড়েছে দিনের শেষ ভাগে। তবে সবচেয়ে বেশি উত্থান দেখা গেছে ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক খাতে। চাঙা ছিল বস্ত্র খাতও। অন্য প্রধান খাতগুলোর মধ্যে প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। তবে জ্বালানি খাতে কেপিসিএলের শেয়ার দর দিনের সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করার পর প্রমাণ হয় যে, এই কোম্পানির দুই কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয় নিয়ে শঙ্কা কেটেছে। গত কয়েক দিন ধরে টানা দর হারানো মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতও ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
তবে সব শঙ্কা উবে গিয়ে আগের দিনের তুলনায় সূচক যেমন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে লেনদেন। টানা ৮ কর্মদিবস লেনদেন হলো দুই হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে আবার ৫ দিন লেনদেন ছাড়াল আড়াই হাজার কোটি টাকা।
আজকের এই লেনদেন ২০১০ সালের মহাধসের পর সর্বোচ্চ। গত ৯ আগস্ট ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ আর মহাধসের পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছিল পুঁজিবাজারে। সেদিন হাতবদল হয় ২ হাজার ৯৩৯ কোটি ৪৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
লেনদেন যখন দিনের অর্ধেক সময়ে, তখন ধারণা করা হচ্ছিল, সেই লেনদেনকেও ছাড়িয়ে যাবে পুঁজিবাজার। তবে শেষ এক ঘণ্টায় লেনদেনের গতি কিছুটা কমে আসায় সেটি হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়, তবে শেষ ২০ মিনিটে লেনদেন আবার গতি পায় আর ছাড়িয়ে যায় এক সপ্তাহ আগের লেনদেন।
দিন শেষে লেনদেন হয় ২ হাজার ৯৫৩ কোটি ৯২ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।
এর আগে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর ২ হাজার ৯৪৬ কোটি ৩৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা। এরচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে মোট তিনটি দিন। ইতিহাসের সর্বোচ্চ লেনদেন ছিল ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর। সেদিন হাতবদল হয় ৩ হাজার ২৪৯ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
সূচকের অবস্থান এখন ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। সেদিন ডিএসই সূচক ছিল ৬ হাজার ৮২২ পয়েন্ট।
আর্থিক খাতে ব্যাপক দর বৃদ্ধি
ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক খাতের শেয়ারধারীদের দারুণ একটি দিন গেল। এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকি ২২টির সব কটির দাম বেড়েছে।এর মধ্যে আটটি কোম্পানির দাম একদিনে দাম বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে যায়। সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে তিনটি আর ২০টি কোম্পানির মধ্যে সাতটি ছিল এই খাতের।
সোমবার সবচেয়ে বেশি চাঙা ছিল আর্থিক খাত, দ্বিতীয় অবস্থানে বস্ত্র আর ব্যাংক খাতে মন্দা কাটার আভাস দেখা গেছে
সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ করে বেড়েছে ফার্স্ট ফিনান্স, বিআইএফসি ও ন্যাশনাল হাউজিং ফিনান্সের দর। ১০ শতাংশের আশেপাশে বেড়েছে ইউনাইটেড, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, ফাস ফিনান্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ফারইস্ট ফিনান্সের দর। এসব কোম্পানির দর যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বাড়া সম্ভব ছিল না এক দিনে।
এছাড়া বিডি ফিনান্সের ৭.৭৫ শতাংশ, উত্তরা ফিনান্সের ৭.৪৯ শতাংশ, প্রাইম ফিনান্সের ৬.৯৯ শতাংশ, ফিনিক্স ফিনান্সের ৬.১৮ শতাংশ, মাইডাস ফিনান্সের ৫.৯৫ শতাংশ, আইপিসিডির ৫.১৭ শতাংশ, বে লিজিংয়ের ৪.৯০ শতাংশ, ইসলামিক ফিনান্সের ৪.৪২ শতাংশ, আইডিএলসির ৪.৩২ শতাংশ, ডিবিএইচের দর বেড়েছে ৩.২৯ শতাংশ।
সব মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ৪২৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা যা আগের কর্মদিবসে ছিল ৩৫০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
হতাশা কাটার আভাস ব্যাংক খাতেও
গত বৃহস্পতিবারের মতো ব্যাংক খাতে আবারও দিন শেষে ঝলক দেখা গেছে। চাঙা পুঁজিবাজারেও সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা, চলতি বছর আরও বেশি মুনাফা করায় আগামীতে লভ্যাংশ বৃদ্ধির সম্ভাবনার মধ্যেও এই খাতে খুব একটা নড়চড় না হওয়া নিয়ে তুমুল আলোচনা আছে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে।
চলতি মাসে অবশ্য যে কয়দিন লেনদেন হয়েছে, তাতে বেশিরভাগ দিনেই ব্যাংকের শেয়ারদর অল্প অল্প করে বাড়ছে। তবে এক দিনে সব কোম্পানির শেয়ারদর আর্থিক খাতের মতো এত বেশি হারে না বাড়লেও একেকদিন একেকটির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
টানা তৃতীয় দিন দিনের সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে নতুন তালিকাভুক্ত সাউথ বাংলা ব্যাংক। আগের দিন দাম ছিল ১২ টাকা ১০ পয়সা। বাড়ার সুযোগ ছিল ১ টাকা ২০ পয়সা। বেড়েছেও ততটাই।
এই খাতের অন্য কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আল আরফাহ ইসলামী ব্যাংকের। ২ টাকা ২০ পয়সা বেড়ে ২৬ টাকা ১০ পয়সার শেয়ার হয়েছে ২৮ টাকা ৩০ পয়সা। শতকরা হিসেবে বেড়েছে ৮.৪২ শতাংশ।
আইসিবি ইসলামি ব্যাংকের শেয়ারদর বেড়েছে ৮.১৬ শতাংশ। ৪ টাকা ৯০ পয়সার শেয়ার বেড়ে হয়েছে ৫ টাকা ৩০ পয়সা। এক দিনে ৪০ পয়সার বেশি বাড়া সম্ভব ছিল না, বেড়েছেও ততটাই।
এ ছাড়া শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ৪.৭১ শতাংশ, এসআইবিএলের ৪.২৫ শতাংশ, এ বি ব্যাংকের ৩.৮২ শতাংশ, যমুনা ব্যাংকের ৩.২২ শতাংশ, রূপালী ব্যাংকের ৩.১১ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংকের ২.৯৮ শতাংশ দাম বেড়েছে।
সব মিলিয়ে ৩২টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩টির, কমেছে ৫টির আর অপরিবর্তিত ছির ৪টির।
লেনদেন হয়েছে ২৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা যা আগের কর্মদিবসে ছিল ২২০ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
লেনদেন সবচেয়ে বেশি বস্ত্রের
আগের কর্মদিসের ধারাবাহিকতায় এদিনও সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বস্ত্র খাতে। ৫৮টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে মোট ৪৮০ কোটি ১৭ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৪৬১ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৭টির, কমেছে ১১টির।
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির ৩টি আর ২০টি কোম্পানির ৫টি ছিল এই খাতের।
এসব কোম্পানির মধ্যে শ্রমিক অসন্তোষের সমস্যা কাটিয়ে উৎপাদন শুরুর ঘোষণা দেয়া স্টাইলক্রাফট, জাহিন টেক্স, সাফকো স্পিনিং, জাহিন স্পিনিং, রিং সাইন, আর এন স্পিনিং, তাল্লু স্পিনিং, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, ফ্যামিলি টেক্সটাইলের দাম বেড়েছে একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই।
এ ছাড়া নুরানী ডায়িং, ইভিন্স টেক্সটাইল, জেনারেশন নেক্সট, রহিম টেক্সটাইল, রিজেন্ট টেক্সটাইল, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, দুলামিয়া কটন, আরগন ডেনিম, ডেল্টা স্পিনার্স, আমান কটনের শেয়ারদর বেড়েছে ৫ শতাংশের বেশি।
কেপিসিএলের হাত ধরে আগাল জ্বালানি খাতও
খুলনা পাওয়ার কোম্পানি বা কেপিসিএলের মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নতুন করে অনুমোদন পাওয়া সংক্রান্ত জটিলতা অবসানের আভাস পাওয়ার পর এই কোম্পানির শেয়ারদর দিনের সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়েছে। আগের দিন শেয়ার দর ছিল ৩৮ টাকা ৪০ পয়সা, সেখান থেকে বের হয়েছে ৪২ টাকা ২০ পয়সা।
এই কোম্পানির মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদনের ফাইল অনুমোদনের জন্য যে কোনো দিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে-এমন খবর প্রকাশ হয়েছে গণমাধ্যমে। তাছাড়া চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জের হিসাব বলছে, গত জুলাই মাসে কোম্পানির তিন কোটি ২৩ লাখের বেশি শেয়ার কিনেছে প্রতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা।
মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে দরপতন থামলেও বিমাতে পতন থামার কোনো আভাস নেই
এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৭টির। লেনদেন হয়েছে ১৭৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগের কর্মদিবসে এই খাতে লেনদেন ছিল ১১৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
চার বছর পর উৎপাদন শুরুর সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পর টানা বাড়তে থাকা সিভিও পেট্রোক্যামিকেলের শেয়ারদর আরও বেড়ে হয়েছে ১৬৬ টাকা। আগের দিন শেয়ার দর ছিল ১৫৫ টাকা ৫০ পয়সা।
বারাকা পাওয়ার, ডনের পাওয়ার, সামিট পাওয়ার, শাহজিবাজার পাওয়ার, যমুনা অয়েলের দামও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
ঘুরে দাঁড়াল মিউচ্যুয়াল ফান্ড
দারুণ লভ্যাংশ ঘোষণা করতে থাকা ফান্ডগুলোর টানা দরপতন নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে আলোচনা চলছে পুঁজিবাজারে।
তবে ইউনিট প্রতি দেড় টাকা লভ্যাংশ ঘোষণার পর এই খাতের শেয়ার দর বেড়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা বা ৯.০১ শতাংশ।
একই পরিমাণ লভ্যাংশ ঘোষণা করা সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ডেরও দাম বেড়েছে ৫০ পয়সা।
আবার সিএপিএম আইবিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ডও ইউনিটপ্রতি দেড় টাকা লভ্যাংশ ঘোষণার পর দর হারিয়েছে ৯০ পয়সা। এই ইউনিটটির মূল্য অবশ্য তার সম্পদ মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি।
বাকি যেগুলোর দাম বেড়েছে সেগুলোর বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ পয়সা। আর যে কয়টির কমেছে, সেগুলোর দমেছে ১০ পয়সা করে।
সব মিলিয়ে ৩৭টি ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৮টির। কমেছে ৭টির। আর অপরিবর্তিত ছিল বাকি ১২টির। লেনদেন হয়েছে ৬৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৭৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
আজ সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে একটি এই খাতের এয়িশান টাইগার ধরে কমতে থাকা এই খাতটির বেশিরভাগ ফান্ডের দর বৃদ্ধি
অন্যান্য খাতের চিত্র
৪২টি কোম্পানির মধ্যে ২৩টির দাম বৃদ্ধি পাওয়া প্রকৌশল খাত এদিন লেনদেনের তৃতীয় স্থানে ছিল। মোট হাতবদল হয়েছে ৩০৮ কোটি ৮ লাখ টাকা। আগের কর্মদিবসে লেনদেন ছিল ২৮৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
ওষুধ-রসায়ন খাতে ৩১টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে ৯টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৯টির দর। লেনদেন হয়েছে ২৪৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ২৪৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
বিবিধ খাতের বেক্সিমকো লিমিটেডের দর হারানো আর লেনদেন কমে আসার পরিপ্রেক্ষিতে এই খাতে লেনদেনও কমেছে। ১৪টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫টির, কমেছে ৭টির। হাতবদল হয়েছে ২১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। বৃহস্পতিবার এই খাতের বেক্মিমকোতেই লেনদেন ছিল ২৫৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আর গোটা খাতে লেনদেন ছিল ৩২৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১১টির, কমেছে ৯টির। লেনদেন হয়েছে ৭৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
এ ছাড়া তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৬টির, কমেছে ৫টির। লেনদেন হয়েছে ৪৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আগের দিন এই খাতে লেনদেন ছিল ৫৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা।