চাঙা পুঁজিবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের আয়ে যে জোয়ার দেখা গেছে, সেটি প্রকাশ পেল আরও তিনটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রান্তিক প্রকাশে। তিনটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডই অর্ধবার্ষিকীতে আগের বছরের একই সময়ে লোকসানে থাকলেও এখন মুনাফায় ফিরেছে।
সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ইউনিটি প্রতি আয় প্রকাশ করা ফান্ডগুলোর মধ্যে একটির অর্থবছর ডিসেম্বর ও দুটির সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীক।
গত বছরের জুলাই থেকে পুঁজিবাজারে যে উত্থান দেখা দিয়েছে, তাতে ফুলেফেঁপে উঠছে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোও। চলতি বছর এখন পর্যন্ত যে কয়টি ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, সেগুলো এর আগে কখনও এত বেশি আয় করতে পারেনি। আর ৩০টি ফান্ডের অর্থবছর শেষ হয়েছে জুনে। এখন হিসাব-নিকাশ করে ঘোষণা হবে লভ্যাংশ।
কেবল তালিকাভুক্ত নয়, অতালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোও আকর্ষণীয় মুনাফা ঘোষণা করেছে ইউনিটধারীদের জন্য। তারা যে হারে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, সেগুলো বাজার মূল্যের তুলনায় ১৫ শতাংশেরও বেশি কোনো কোনো ক্ষেত্রে।
এনসিসিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান এর দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে ফান্ডটি এপ্রিল থেকে জুন সময়ে ইউনিটপ্রতি প্রতি আয় করেছে ৬ পয়সা। আগের বছর যেখানে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি লোকসান ছিল দশমিক ৪ পয়সা।
অর্ধবার্ষিকে জানুয়ারি থেকে জুন সময়ে ফান্ডটির ইউনিট প্রতি আয় করেছে ৪০ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে যেখানে ইউনিট প্রতি লোকসান ছিল ৫ পয়সা।
ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফিন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান এর তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ফান্ডটি এপ্রিল থেকে জুন সময়ে ইউনিট প্রতি আয় কছে ৭৫ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৯ পয়সা।
ফান্ডটির অক্টোবর থেকে জুন সময়ে ইউনিট প্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৬৮ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে যেখানে লোকসান ছিল ১ টাকা ৩৬ পয়সা। ফান্ডের অর্থবছর শেষ হবে সেপ্টেম্বরে।
এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান এপ্রিল থেকে জুন সময়ে ইউনিট প্রতি আয় করেছে ১২ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে যেখানে আয় ছিল ৫ পয়সা।
ফান্ডটির অক্টোবর থেকে জুন সময়ে ইউনিট প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৪৪ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ৭২ পয়সা। এ ফান্ডটিরও অর্থবছর শেষ হবে সেপ্টেম্বরে।
২০২০ সালের জুন থেকে প্রথম প্রান্তিকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুঁজিবাজারে সূচক বাড়ে ৯৭৭ পয়েন্ট। সে সময় দুই-একটি ফান্ড ইউনিটপ্রতি ২ টাকারও বেশি আয় করেছে। বেশ কয়েকটির আয় দেড় টাকার বেশি বা আশপাশে দেখা গেছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সূচক বাড়ে আরও ৫৪০ পয়েন্ট। এই সময়েও ফান্ডগুলো ইউনিটপ্রতি বেশ ভালো মুনাফা করে। আগের প্রান্তিকের চেয়ে কম হলেও এই সময়েও কোনো কোনো ফান্ড ইউনিটপ্রতি দেড় বা দুই টাকা মুনাফা করে।
তবে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বাজারে ছন্দপতন ঘটে। এই প্রান্তিকে সূচক পড়ে ৩৪০ পয়েন্ট। আর তৃতীয় প্রান্তিক তথা এপ্রিল থেকে জুন সময়ে পুঁজিবাজারে সূচকের যে উত্থান হয়েছে তা এই সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ১ হাজার পয়েন্টের বেশি। যার সুফল পেতে যাচ্ছে ইউনিটধারীরা।