পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নতুন ব্যাংক এনআরবি কমার্শিয়াল চলতি বছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি আয় করেছে।
গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ১১ পয়সা আয় করেছে ব্যাংকটি। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আগে ২০২০ সালে একই সময়ে এই আয় ছিল ৪৯ পয়সা। শতকরা হিসেবে আয় বেড়েছে ১২৬ শতাংশ।
এই আয়ের সিংহভাগই হয়েছে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে। এই তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৬৭ পয়সা, যা গত বছর একই সময়ে ২০ পয়সার কিছু বেশি ছিল।
মঙ্গলবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এই প্রতিবেদন তোলার পর তা অনুমোদন করা হয়।
করোনার দ্বিতীয় বছরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো এখন পর্যন্ত যে হিসাব প্রকাশ করেছে, তাতে শতকরা হিসেবে আয় বাড়ার দিক থেকে এনআরবিসির অবস্থান তৃতীয়তে।
চলতি বছর শতকরা হিসেবে আয় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের। এই ব্যংকটি গত বছরের তুলনায় ৩৮৩ শতাংশ আয় করেছে। যদিও টাকার অঙ্কে এটি খুব বেশি এমন নয়।
গত বছর করোনার প্রাদুর্ভাবের পর ব্যাংকের আয় কমে যাওয়ার যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, বছর শেষে তা সত্য প্রমাণ হয়নি। আগের বছরের চেয়ে বেশি আয় করে কোম্পানিগুলো অপ্রত্যাশিত মুনাফা দেয়।
এরপর চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও ব্যাংকগুলোর বেশি মুনাফা করার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। জুন শেষে তা বাড়ে আরও।
কোন ব্যাংকের কত আয়
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক চলতি বছরের অর্ধবার্ষিকে গত বছরের প্রায় চার গুণ আয় করেছে। গত বছরের প্রথম ৬ মাসে শেয়ারপ্রতি ৬ পয়সা আয় করলেও এবার তারা আয় করেছে ২৩ পয়সা।
প্রাইম ব্যাংক এবার অর্ধবার্ষিকীতে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় তিন গুণের বেশি আয় করেছে।
ব্যাংকটি গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৮১ পয়সা। আগের বছর এই আয় ছিল ৫৫ পয়সা ছিল।
মার্কেন্টাইল ব্যাংকে মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ১০৮ শতাংশ। অর্ধবার্ষিকীতে এই ব্যাংকে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ২ পয়সা, যা গত বছর একই সময় ছিল ৯৯ পয়সা।
সিটি ব্যাংকে আয় বেড়েছে ১০৬ শতাংশ। অর্ধবার্ষিকীতে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২ টাকা ৬ পয়সা। গত বছর এই আয় ছিল ১ টাকা।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক এই ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৭২ পয়সা আয় করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি।
ইস্টার্ন ব্যাংক এবার ৬ মাসে গত বছরের তুলনায় ৫৫ শতাংশ বেশি আয় করেছে। অর্ধবার্ষিকীতে তাদের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৫৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ১ টাকা ৬৫ পয়সা।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল বা ইউসিবি ব্যাংক বছরের প্রথম ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে এই আয় ছিল ৭২ পয়সা। অর্থাৎ ব্যাংকটির আয় বেড়েছে ৪১ শতাংশ।
উত্তরা ব্যাংক ব্যাংকটি বছরের প্রথম ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৭৯ পয়সা। গত বছর একই সময়ে এই আয় ছিল ১ টাকা ৪৪ পয়সা। শতকরা হিসেবে আয় বেড়েছে ২৪ শতাংশের কিছু বেশি।
এনসিসি ব্যাংক এই ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৪৩ পয়সা আয় করেছে, যা আগের বছরের একই সময় ছিল ১ টাকা ১৭ পয়সা। শতকরা হিসেবে বেড়েছে ২২ শতাংশের কিছু বেশি।
মহামারির বছরে আগের বছরের চেয়ে বেশি আয় করে চমক দেখায় ব্যাংকিং খাত। আর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো এবার বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে অনেকটাই আশাতীত। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা নগদে দিয়েছে তারা বিনিয়োগকারীদের।
ব্যাংক খাতে সুবাতাসের মধ্যে ভালো করতে পারেনি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৫৪ পয়সা। আগের বছর এই আয় ছিল ৮২ পয়সা ছিল। অর্থাৎ এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৩৪ শতাংশ।
হতাশার বৃত্তেই আইসিবি ইসলামী ব্যাংকও। লোকসানি ব্যাংকটি এবারও তার বৃত্ত ভাঙতে পারেনি। গত বছরের মতোই চলতি বছরও অর্ধবার্ষিকীতে শেয়ারপ্রতি ৩২ পয়সা লোকসান দিয়েছে ব্যাংকটি।