মহামারির দ্বিতীয় বছরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর অর্ধবার্ষিকীর আয়ে চমক অব্যাহত আছে। এবার হিসাব প্রকাশ হয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক যার আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দেড় গুণেরও বেশি বেড়েছে।
গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি শেয়ার প্রতি ২ টাকা ৫৬ পয়সা আয় করেছে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৬৫ পয়সা। শতকরা হিসেবে আয় বেড়েছে ৫৫ শতাংশের কিছুটা বেশি।
মঙ্গলবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এই প্রতিবেদন তোলার পর তা অনুমোদন করে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকটির আয়ের এই সিংহভাগ এসেছে গত মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে। এই সময়ে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৪৭ পয়সা। গত বছর একই সময়ে যা ছিল ৭৮ পয়সা।
করোনাকালে ইস্টার্ন ব্যাংক যেটি করে দেখিয়েছে, সেটি অভিনব নয়। গত বছর করোনার প্রাদুর্ভাবের পর ব্যাংকের আয় কমে যাওয়ার যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, বছর শেষে তা সত্য প্রমাণ হয়নি। আগের বছরের চেয়ে বেশি আয় করে কোম্পানিগুলো অপ্রত্যাশিত মুনাফা দেয়।
এরপর চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকেও ব্যাংকগুলোর বেশি মুনাফা করার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। জুন শেষে তা বাড়ে আরও।
কোন ব্যাংকের কত আয়
প্রাইম ব্যাংক এবার অর্ধবার্ষিকীতে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় তিনগুণেরও বেশি আয় করেছে।
ব্যাংকটি গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত শেয়ার প্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৮১ পয়সা। আগের বছর এই আয় ছিল ৫৫ পয়সা ছিল।
মার্কেন্টাইল ব্যাংকে মুনাফায় প্রবৃদ্ধি ১০৮ শতাংশ। অর্ধবার্ষিকীতে এই ব্যাংকে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ২ পয়সা, যা গত বছর একই সময় ছিল ৯৯ পয়সা।
সিটি ব্যাংকে আয় বেড়েছে ১০৬ শতাংশ। অর্ধবার্ষিকীতে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছে ২ টাকা ৬ পয়সা। গত বছর এই আয় ছিল ১ টাকা।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক এই ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৭২ পয়সা আয় করেছে যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল বা ইউসিবি ব্যাংক বছরের প্রথম ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে এই আয় ছিল ৭২ পয়সা। অর্থাৎ ব্যাংকটির আয় বেড়েছে ৪১ শতাংশ।
উত্তরা ব্যাংক ব্যাংকটি বছরের প্রথম ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৭৯ পয়সা। গত বছর একই সময়ে এই আয় ছিল ১ টাকা ৪৪ পয়সা। শতকরা হিসেবে আয় বেড়েছে ২৪ শতাংশের কিছু বেশি।
এনসিসি ব্যাংক এই ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৪৩ পয়সা আয় করেছে যা আগের বছরের একই সময় ছিল ১ টাকা ১৭ পয়সা। শতকরা হিসেবে বেড়েছে ২২ শতাংশের কিছু বেশি।
মহামারির বছরে আগের বছরের চেয়ে বেশি আয় করে চমক দেখায় ব্যাংকিং খাত। আর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো এবার বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে অনেকটাই আশাতীত। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা নগদে দিয়েছে তারা বিনিয়োগকারীদের।
ব্যাংক খাতে সুবাতাসের মধ্যে ভালো করতে পারেনি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ব্যাংকের শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৫৪ পয়সা। আগের বছর এই আয় ছিল ৮২ পয়সা ছিল। অর্থাৎ এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৩৪ শতাংশ।
হতাশার বৃত্তেই আইসিবি ইসলামী ব্যাংকও। লোকসানি ব্যাংকটি এবারও তার বৃত্ত ভাঙতে পারেনি। গত বছরের মতোই চলতি বছরও অর্ধবার্ষিকীতে শেয়ারপ্রতি ৩২ পয়সা লোকসান দিয়েছে ব্যাংকটি।