কোম্পানি বন্ধ, লোকসান, লভ্যাংশ না দেয়া, পুঁজিবাজারের আইন অমান্যের কারণে মূল বাজার থেকে ওভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসি মার্কেট থেকে ফেরার পর শেয়ার দরে উল্লম্ফনের যে প্রবণতা, তা দেখা গেল আবার।
গত ১৩ জুন ওটিসি থেকে ফেরার পর চারটি কোম্পানির মধ্যে তিনটির দর বেড়েছে ব্যাপক হারে। এর মধ্যে একটির দর ছয় গুণ হয়ে গেছে।
এর আগেও এই প্রবণতা দেখা গেছে। আর দাম বাড়তে বাড়তে আকাশচুম্বী হয়ে যাওয়ার পর একপর্যায়ে যখন দাম কমে আসে, তখন শেয়ারধারীরা বিপুল লোকসান করেছেন।
যে চারটি কোম্পানি এবার মূল মার্কেটে এসেছে, তার মধ্যে একটি শেয়ারের দর সাড়ে তিন গুণের বেশি বেড়ে যাওয়ার পর আরও বাড়বে ভেবে কিনে ব্যাপক লোকসানে আছেন বিনিয়োগকারীরা।
- আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে থাকছে না ওটিসি মার্কেট
মুন্নু ফেব্রিক্স, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, মনোস্পুল পেপার ও পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড ওটিসি মার্কেট থেকে ফিরে জেড ক্যাটাগরিতে লেনদেন শুরুর পর বেশ কয়েক দিন প্রতিদিনই আগের দিনের তুলনায় ১০ শতাংশ করে বেড়েছে।
কোম্পানিগুলোর সম্পদমূল্য বেশ ভালো থাকলেও তিনটির আয় একেবারেই নগণ্য। আর শেয়ার দরের সঙ্গে আয়ের তুলনা করে যে মূল্য আয় অনুপাত দেখানো হয়, সেটি অনেক বেড়ে গেছে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওটিসি থেকে যে কোম্পানি ফিরে আসে সেটি আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে ভালো করছে। কিন্তু সেটি কি মূল মার্কেটে আগে থেকে আছে, সেসব কোম্পানির চেয়ে ভালো?’
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বিষয়টি দেখা উচিত বলে মনে করেন তিনি। বলেন, ‘বিমার শেয়রের দাম যখন হু হু করে বেড়েছে, তখনও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে সেখানে কোনো কারসাজি হয়নি। এখন কিন্তু অনেক বিনিয়োগকারীর টাকা বিমা খাতের শেয়ারে আটকে গেছে। আর ওটিসি মার্কেট থেকে ফিরে ছয় গুণ দর বৃদ্ধি পাওয়ার পরও সেখানে যদি কারসাজির কিছু না পাওয়া যায়, তাহলে সেটি হতাশাজনক।’
দুর্বল কোম্পানি, জেড ক্যাটাগরি থেকে ভালো ক্যাটাগরিতে যাচ্ছে, কিংবা ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে আসছে এমন কোম্পানির শেয়ার দরে বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করেন পুঁজিবাজারের এই বিশ্লেষক।
সবচেয়ে বেশি বেড়েছে তমিজউদ্দিনের দর
ওটিসিতে ফিরে দর বৃদ্ধির শীর্ষে আছে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল। দেড় মাসেরও কম সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৬২৫ শতাংশ।
শেয়ার দর ১২ টাকা নিয়ে ফেরা তজিমউদ্দিনের শেয়ার প্রথম দিনই ১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ টাকা ২০ পয়সা। ঈদের আগে তা দাঁড়ায় ৮৭ টাকায়। তবে এটিই সর্বোচ্চ দর নয়। ৯৪ টাকা ৭০ পয়সাও উঠেছিল দাম।
১৩ জুন থেকে টানা ২১ কর্মদিবস দিনের সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে কোম্পানিটির শেয়ার। ২২তম কর্মদিবসেও আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ দাম বেড়ে গিয়েছিল। পরে কিছুটা কমে।
সম্প্রতি যে চারটি কোম্পানি ওটিসি থেকে ফিরেছে, তার মধ্যে তমিজউদ্দিনেরই শেয়ারপ্রতি আয় সবচেয়ে বেশি। গত জুন থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৯৮ পয়সা।
তবে এই আয়ের বিপরীতে কোম্পানিটির মূল্য আয় অনুপাত বা পিই ঝুঁকিপূর্ণ। বর্তমানে তা ৬৬.৫৮। অর্থাৎ এই হারে আয় করে গেলে শেয়ার দর ৮৭ টাকা আয় করতে এত বছর লাগবে।
পুঁজিবাজারে ২৫ পর্যন্ত পিইকে গ্রহণযোগ্য ধরা হয়। আর ৪০ পিইর বেশি কোম্পানিগুলোর শেয়ার কিনতে ঋণ সুবিধাও পাওয়া যায় না।
১৯৯২ সালে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটি ২০০৯ সালে ওটিসিতে পাঠানোর পর সুশাসনে উন্নতি হয়। ২০১১ সালে ১০ শতাংশ, ২০১৭ সালে ২০ শতাংশ, ২০১৮ সালে ২৫ শতাংশ, ২০১৯ সালে ২৭ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ আর আর ২০২০ সালে ১০ শতাংশ অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি ১ টাকা নগদ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে তারা।
এই কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য বেশ আকর্ষণীয়; ৮০ টাকা। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে শেয়ার সম্পদমূল্যের দিক দিয়ে এরা এগিয়ে।
ছয় গুণ বাড়ল পেপার প্রসেসিংয়ের দরও
চারটি কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাগজ খাতের কোম্পানি পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের দাম। ১৩ জুন থেকে এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৬০৩.৭৫ শতাংশ।
টাকা ২২ কর্মদিবস এই কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে এক দিনে যত বাড়া সম্ভব ততই। দেশের পুঁজিবাজারের ক্ষেত্রে এটি রেকর্ড। এর আগের রেকর্ড ছিল রবির, যেটি বাড়ে ১৩ কর্মদিবস।
১৬ টাকা দিয়ে মূল মার্কেটে ফেরা কোম্পানিটির শেয়ার প্রথম দিন ১০ শতাংশ বেড়ে হয় ১৭ টাকা ৬০ পয়সা। সর্বশেষ কার্যদিবস সোমবার শেয়ারপ্রতি দর দাঁড়িয়েছে ১১২ টাকা ৬০ পয়সা।
এর মধ্যে ১৩ জুন থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিনই দিনের সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে দাম দাঁড়ায় ১২৭ টাকা ৩০ পয়সা। পরে একপর্যায়ে ১৩৬ টাকা ৮০ পয়সাও হয়েছিল। এরপর দাম কিছুটা কমে হয় ১৩০ টাকা ২০ পয়সা।
১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ার কেবল ১৩ গুণ নয়, এর চেয়ে বেশি দামও আছে। তবে এই শেয়ারটির আয়ের বিপরীতে দাম যে বেশি, সেটি মূল্য আয় অনুপাত বা পিই দিয়েই বোঝা যায়।
জুন ক্লোজিংয়ের এই কোম্পানিটির সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী গত মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি আয় আছে ৪৪ পয়সা। এই হারে আয় করতে থাকলে বর্তমান শেয়ার দর ওঠাতে সময় লাগবে ২২১.৯৩ বছর।
পুঁজিবাজারে নিয়মিত লভ্যাংশ দেয়, এমন কোম্পানিরও এই পিই আছে ৩-এর নিচে।
কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য অবশ্য আকর্ষণীয়; গত বছরের নিরীক্ষিত হিসাব অনুযায়ী একেকটি শেয়ারের বিরপীতে সম্পদ আছে ৮৩ টাকা ৯৫ পয়সা।
৩৭ লাখ ২৯ হাজার ৬০০টি শেয়ারে বিভক্ত কোম্পানিটির রিজার্ভে আছে ২৪ কোটি টাকা।
মনোস্পুলের দর তিন গুণ
কাগজ খাতের বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডও তিন গুণের বেশি দামে লেনদেন হচ্ছে এখন।
শেয়ারপ্রতি ৫০ টাকা দর নিয়ে লেনদেন শুরুর করার প্রথম দিনই ১০ শতাংশ বেড়ে হয় ৫৫ টাকা। এরপর আরও ১২ কর্মদিবস শেয়ার দর বেড়েছে দিনে যত বাড়া সম্ভব ততই, অর্থাৎ ১০ শতাংশের আশপাশে।
টানা ১৩ কর্মদিবস হলট্রেড হয়ে ২৯ জুন দাম হয় ১৭১ টাকা ৯০ পয়সা। এরপর তা ১৮৯ জনে পৌঁছায় একপর্যায়ে। কিন্তু এরপর কমে যায়। ৩০ জুন থেকে ওঠানামা করে এখন দাম ১৬৯ টাকা ১০ পয়সা।
এই কয় দিনে দাম বেড়েছে ১১৯ টাকা ১০ পয়সা বা ২৩৮ দশমিক ২০ শতাংশ।
চলতি বছর প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় মাত্র ২৯ পয়সা। আয় বাড়াতে না পারলে বর্তমান শেয়ারমূল্য তুলতে সময় লাগবে ৪৫২.৯৫ বছর।
৯২ হাজার ১৮৬টি শেয়ারে বিভক্ত কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য বেশ ভালো; ১২৫ টাকা ৬১ পয়সা। তবে আর্থিক ভিত্তির অন্য সূচকগুলো খুব একটা ভালো নয়।
কোম্পানিটির রিজার্ভে আছে ৩৫ কোটি টাকা। গত বছর শেয়ারপ্রতি ৯০ পয়সা নগদের পাশাপাশি ৮ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছে তারা।
মুন্নু ফেব্রিক্সে এরই মধ্যে লোকসান
তিন প্রান্তিকে মাত্র ৪ পয়সা আয় নিয়ে মূল মার্কেটে লেনদেন শুরু করা মুন্নু ফেব্রিক্সও পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে ছুটতে এরই মধ্যে লোকসানে ফেলেছে বিনিয়োগকারীদের।
টানা ১৫ কর্মদিবস টানা প্রায় ১০ শতাংশ করে বেড়ে ১০ টাকার শেয়ার ৩০ জুন একপর্যায়ে ৩৭ টাকা ২০ পয়সা উঠে যায়। তবে সেদিনই আবার ৩৩ টাকা ৯০ পয়সা থেকে সকালে প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে আবার প্রায় ১০ শতাংশ কমে ৩০ টাকা ৬০ পয়সায় নেমে আসে।
অর্থাৎ সেদিন যারা সর্বোচ্চ দামে শেয়ারটি কিনেছিলেন, এক দিনেই প্রায় ২০ শতাংশ লোকসানে পড়েন। এরপর এই লোকসান কেবল বেড়েছেই।
সেদিনের পর আরও টানা ছয় কর্মদিবস কমে ১৩ জুলাই দাম দাঁড়ায় ২৩ টাকা ৫০ পয়সায়। এরপর দুই দিন কিছুটা বেড়ে ২৬ টাকা ১০ পয়সায় উঠলেও ঈদের ছুটির আগে আবার দুই দিন কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৮০ পয়সা। শতকরা হিসেবে দাম বেড়েছে ১৪৮ শতাংশ।
কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ২৭ টাকা ৩০ পয়সা হলেও এর যে আয় সেটি বাড়াতে না পারলে বর্তমান শেয়ার দরের সমান আয় করতে সময় লাগবে ৪৬৫ বছর।
ওটিসি থেকে ফেরা কোম্পানির আগের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়
এর আগেও যেসব কোম্পানি ওটিসি থেকে ফিরেছে, তার প্রতিটির দর এবারের চারটির মতোই বেড়েছে। মুন্নু যেসব তার শেয়ারধারীদের বিপুল লোকসানে ফেলেছে, একইভাবে লোকসানে ফেলেছে আগের সবগুলো।
ইউসিবিএল
২০০৯ সালে ওভার দ্য কাউন্টার বা ওটিসি থেকে ফেরার পর ব্যাংক খাতের এই কোম্পানিটি ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। শেয়ার দর একপর্যায়ে ছাড়ায় সাড়ে তিন হাজার টাকা।
সে সময় শেয়ারের ফেসভ্যালু ছিল ১০০ টাকা। এখন ১০ টাকা। এই হিসাবেও দাম ছাড়ায় ৩৫০ টাকা।
তখন ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ছিল কম, শেয়ারসংখ্যা ছিল সীমিত। পরে বোনাস শেয়ার নিয়ে শেয়ার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
তবে সেই হিসাব ধরলেও এখন শেয়ার দর ৮ ভাগের ১ ভাগ মাত্র। ঈদের ছুটির আগে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে হয়েছে ১৬ টাকা ১০ পয়সা।
ওয়াটা কেমিক্যালস
২০১৪ সালে ওটিসি থেকে মূল বাজারে আসে ওয়াটা কেমিক্যালস লিমিটেড। মূল মার্কেটে আসার আগে শেয়ার মূল্য ছিল ৫০ টাকার আশপাশে। মার্কেটে আসার পর ১২ কর্মদিবসে লেনদেন হয় কেবল দুই দিন। পরে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ মে কোনো মূল্যসীমা না থাকার সুযোগে সেদিন দাম বেড়ে হয় ৪৮৫ টাকা। এক দিনেই বাড়ে ৭৩৫ শতাংশ। আগের দিন দাম ছিল ৫৯ টাকা।
সেখানেই থেমে থাকেনি। একপর্যায়ে তা এক হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়।
এর পরের বছর ২৫ শতাংশ, পরের বছর ১০ শতাংশ, ২০১৭ সালে ৫ শতাংশ, পরের বছর ৩০ শতাংশ, ২০১৯ সালে ২০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়া কোম্পানিটির শেয়ার দর এখন ২৯৯ টাকা ৭০ পয়সা। সব বোনাস শেয়ার হিসেবে নিলেও এখন দাম ৮২৫ টাকা দাঁড়ায়। অর্থাৎ সাত বছর রেখেও কোনো মুনাফা পাননি বিনিয়োগকারীরা।
ওটিসি থেকে ফেরা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর আকাশচুম্বী হয়ে পরে ধসের কারণে ব্যাপক লোকসান হয়েছে বিনিয়োগকারীদের।
কোম্পানিটি গত ৩১ জানুয়ারি তাদের দ্বিতীয় প্রান্তিক প্রকাশ করেছে। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৩ টাকা ৩১ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪ টাকা ১১ পয়সা।
গত দুই বছরের মধ্যে কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর ওঠে ২০১৯ সালে ১০ অক্টোবর ৬৯১ টাকা ৬০ পয়সা। এরপর এই সময়ে আর কখনও এই দরে লেনদেন হয়নি।
আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ
২০১৮ সালে ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে আসার পরই আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার দর ১৩০ টাকায় শুরু হয়ে ১৪৩ টাকায় লেনদেন হয়। এরপর আরও বেড়ে ১৮০ টাকাও ছাড়িয়ে যায়।
কোম্পানিটির বর্তমান শেয়ার দর ৩৬ টাকা ৯০ পয়সা। তাও কিছুটা ভদ্রস্ত দেখাচ্ছে। এক মাসে সর্বনিম্ন দাম ছিল ২২ টাকা ৯০ পয়সা।
গত দুই বছরে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৬৩ টাকা ২০ পয়সা।
মূল মার্কেটে ফেরার পর একবার ১০ শতাংশ এবং একবার ৭ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছে আলিফ। অর্থাৎ বোনাস শেয়ার পেয়েও বিনিয়োগকারীরা তাদের লোকসান কাটাতে পারেননি।
সোনালী পেপার
সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ডমিল ২০১৯ সালের ২ জুলাই থেকে মূল মার্কেটে লেনদেন হচ্ছে। মূল বাজারে ফিরিয়ে আনতে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ধরা হয় ২৭৩ টাকা। পরে বাড়তে বাড়তে দাম দাঁড়ায় ৩৫০ টাকায়।
এক বছরের মধ্যে দাম কমে গত ২৭ জুন দাঁড়ায় ১৯৭ টাকা ৪০ পয়সায়। অবশ্য এর পরে তিন সপ্তাহে অবিশ্বাস্য উত্থান ঘটে শেয়ারটির। ঈদের ছুটির আগে দাম দাঁড়ায় ২৯৭ টাকা ১০ পয়সা। এই কয় দিনে দাম প্রায় ১০০ টাকা বেড়েছে।
আর মূল মার্কেটে আসার পর দুবারে ১০ শতাংশ করে বোনাস শেয়ার দিয়েছে তারা।
গত ২৫ এপ্রিল কোম্পানিটি চলতি অর্থবছরে তৃতীয় প্রান্তিকের যে হিসাব প্রকাশ করেছে, তাতে শেয়ার দর যে অতিমূল্যায়িত, তা বোঝাই যায়।
বছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ২৯ পয়সা।
এই হারে আয় করলে কোম্পানিটির বর্তমান মূল্য তুলতে সময় লাগবে ৬৮ বছর।
অবশ্য এটাও ঠিক যে, এর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য অনেক। সব শেষ নিরীক্ষিত হিসাব অনুযায়ী ১০ টাকার শেয়ারে সম্পদমূল্য আছে ৩০৭ টাকা ৮৮ পয়সা।
কোম্পানিটি তাদের নতুন প্রোডাকশন লাইন চালুর ঘোষণা দিয়েছে। জানানো হয়েছে, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপার বক্স তৈরির এই নতুন লাইনের উৎপাদনক্ষমতা প্রতিদিন এক লাখ পিস এবং তারা এও জানিয়েছে যে, নতুন উৎপাদন লাইনের যে উৎপাদনক্ষমতা তার পুরোটাই ব্যবহার করা সম্ভব হবে।