বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকগুলোর মুনাফায় উল্লম্ফনের খবর আগেই এসেছে গণমাধ্যমে। এবার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দুটি ব্যাংকের আয় ব্যয়ের প্রকাশিত হিসাবেও দেখা গেল আয় বাড়ার এই চিত্র।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক এই ছয় মাসে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৭২ পয়সা আয় করেছে যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি।
এই আয়ের মধ্যে দ্বিতীয় প্রান্তিকে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত হয়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৪২ পয়সা।
২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ব্যাংকটি শেয়ার প্রতি এক টাকা আয় করেছিল বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে প্রকাশিত তথ্যে বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে।
তালিকাভুক্ত অন্য ব্যাংক ইউনাইটেড কমার্শিয়াল বা ইউসিবি পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক হয়েছে বিকেলে। এই হিসাব অনুযায়ী ব্যাংকটি বছরের প্রথম ছয় মাসে শেয়ার প্রতি আয় করেছে ১ টাকা ২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে এই আয় ছিল ৭২ পয়সা ছিল।
অর্থাৎ ব্যাংকটির আয় বেড়েছে ৪১ শতাংশ।
এর মধ্যে দ্বিতীয় প্রান্তিকে আয় হয়েছে ৬৩ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪০ পয়সা।
এই হিসাব রোববার ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে প্রকাশ করা হবে। আর আয় বাড়ার একটি ব্যাখ্যা তখন দেবে ব্যাংকটি।
ব্যাংকে আয় বৃদ্ধির এই চমক অবশ্য গত বছর করোনাকালেও দেখা গেছে। ২০২০ সালের মার্চে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর সাধারণ ছুটিতে ৬৬ দিন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে যাওয়ার পর ব্যাংকগুলোর আয়ে ধস নামে কি না, তা নিয়ে কথা উঠে।
তবে শেষ পর্যন্ত মহামারির বছরে আগের বছরের চেয়ে বেশি আয় করে চমক দেখায় ব্যাংকিং খাত। আর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো এবার বিনিয়োগকারীদেরকে লভ্যাংশ দিয়েছে অনেকটাই আশাতীত।
চলতি বছর পুঁজিবাজারে প্রথম প্রান্তিকের যে ঘোষণা এসেছে, সেখানেও দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্যাংকের আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। এর হিসাব এখনও প্রকাশ করেনি ব্যাংকগুলো। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তগুলো এই হিসাব প্রকাশ করার জন্য ৩০ কার্যদিবস সময় নেবে। আর বেশ কয়েকটি ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের তারিখ ঘোষণা করেছে।
আয় বৃদ্ধির ব্যাখ্যা হিসেবে শাহজালাল ব্যাংক বলেছে, করোনাকালে বাংলাদেশ সঞ্চিতি সংরক্ষণে ছাড় দেয়ার কারণের পাশাপাশি নানা খাতে তাদের আয় বেড়েছে।
লোকসানেই আইসিবি ইসলামী ব্যাংক
তবে এই ভালো সময়েও লোকসানের বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। তবে তাদের লোকসান দ্বিতীয় প্রান্তিকে কমেছে খানিকটা।
তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে এই কোম্পানিটিই প্রথম হিসাব প্রকাশ করে। তারা চলতি বছর এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত শেয়ার প্রতি ১৭ পয়সা লোকসান দিয়েছে, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৩ পয়সা।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান কমিয়ে আনতে পারলেও প্রথম প্রান্তিকে গত বছরের চেয়ে বেশি লোকসানের কারণে অর্ধবার্ষিকীর হিসাবে কোনো উন্নতি হয়নি।
গত বছরের মতোই চলতি বছরও অর্ধবার্ষিকীতে শেয়ার প্রতি ৩২ পয়সা লোকসান দিয়েছে ব্যাংকটি।