লেনদেন শুরুর মাত্র আধা ঘণ্টায় পুঁজিবাজারে সদ্য তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর বেড়েছে ৪৪০ শতাংশ।
গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটি ২০২০ সালের জন্য শেয়ারধারীদের ১০ শতাংশ নগদ ও ২০২১ সালের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করছে। দুটি ঘোষণার রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৪ আগস্ট।
করপোরেট ঘোষণার কারণে সোমবার কোম্পানিটির শেয়ারদরে কোনো সীমা বা সার্কিট ব্রেকার ছিল না। ফলে লেনদেনের শুরুতেই দামের উল্লম্ফন দেখা যায়।
পুঁজিবাজারের প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি ও কমার ক্ষেত্রে একটি সীমা দেয়া থাকে, যা সার্কিট ব্রেকার হিসেবে পরিচিত। কিন্তু কোনো কোম্পানি যখন তার কোনো করপোরেট ঘোষণা প্রকাশ করে, তারপর প্রথম লেনদেনে সেই কোম্পানির শেয়ারদরে কোনো সার্কিট ব্রেকার থাকে না। ফলে শেয়ারের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোচ্চ দাম বাড়তে বা কমতে পারবে।
সোমবার লেনদেনের শুরুতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৬ থেকে এক লাফে উঠে আসে ৬০ টাকায় পরে তা বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে ছাড়ায় ৯৩ টাকা। দিনের শেষ বেলায় আবার খানিকটা কমে এসে স্থির হয় ৮৬ টাকা ৫০ পয়সায়।
কোম্পানিটি অভিহিত মূল্য ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়েছে পুঁজিবাজারে। এটিই প্রথম কোম্পানি, যেটির শেয়ার যারা আবেদন করেছেন, তাদের সবাই পেয়েছেন।
যারা ১০ হাজার টাকা জমা দিয়ে শেয়ারের আবেদন করেছেন, তারা পেয়েছেন ১৭টি শেয়ার, ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন ২২ বা ২৩টি করে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন ৩৩টি করে। আর যারা ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন, তারা পেয়েছেন এর ১০ গুণ শেয়ার।
এর আগ পর্যন্ত শেয়ার বণ্টন হতো লটারির মাধ্যমে। আর একেকজন পেতেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শেয়ার। সেটি ২০০ থেকে ৫০০ পর্যন্ত হয়েছে।
আবার এই শেয়ারটি প্রথম দিন থেকেই স্বাভাবিক সার্কিটব্রেকারে লেনদেন হয়েছে। অর্থাৎ দিনে ১০ শতাংশের বেশি দাম বাড়া বা কমা সম্ভব ছিল না।
কোম্পানিটি গত ৩০ জুন পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করে। এরপর ৫ কর্মদিবস সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে দাম হয়েছিল ১৬ টাকা।
তবে এর মধ্যে কোম্পানিটি ২০২০ সালের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণার কারণে অন্য কোম্পানির মতোই কোনো প্রান্তসীমা ছাড়াই লেনদেন হয়েছে। তবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পুরনো কোম্পানিগুলোর যেগুলো নিয়মিত লভ্যাংশ ঘোষণা করে, সেগুলোর দাম সোনালী লাইফের চেয়ে বেশ কম। এ কারণে এত পরিমাণ দাম বাড়ায় নানা কথাও হচ্ছে।
এদিনই মূলত কোম্পানিটির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ার হাতবদল হয়েছে। তালিকাভুক্তির পর গত ৭ জুলাই ২০ হাজার ৬৮৮টি শেয়ার হাতবদল হয়েছিল। তবে মূল্যসীমা না থাকার দিন হাতবদল হয়েছে ৭০ লাখ ৭৯ হাজার ৮৭৯টি শেয়ার।
সোনালী লাইফ পুঁজিবাজারে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ১ কোটি ৯০ লাখ সাধারণ শেয়ার ছেড়ে ১৯ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এই টাকায় সরকারি ট্রেজারি বন্ড, ফিক্সড ডিপোজিট ও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ ছাড়াও কোম্পানিটির আইপিওর ব্যয়ে ব্যবহার করা হয়েছে।