পুঁজিবাজারে যেসব ব্যাংক সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে এনবিএলের আয়ই সবচেয়ে বেশি। আর বেশির ভাগ ব্যাংক আকর্ষণীয় লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিশোধিত মূলধনের এই ব্যাংকটির ঘোষণায় হতাশ পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা।
শেয়ার মূল্য ৮ টাকা, শেয়ারপ্রতি আয় ১ টাকা ১৮ পয়সা, নেহাত মন্দ নয়। তবে ৫ শতাংশ বা প্রতি ২০টি শেয়ারে একটি বোনাস হিসেবে দেয়ার সিদ্ধান্ত যে বিনিয়োগকারীদের মনঃপূত হয়নি তা লভ্যাংশ ঘোষণার পর লেনদেনের চিত্রেই বোঝা যায়।
সোমবার ব্যাংক খাতের বেশির ভাগ কোম্পানির দাম বাড়লেও এনবিএলের দাম কমেছে ১০ পয়সা বা ১ দশমিক ২৫ শতাংশ। তবে একপর্যায়ে দাম ৩০ পয়সা বা ৩.৭৫ শতাংশ কমে গিয়েছিল।
দিন শেষে শেয়ার দর ৮ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৭ টাকা ৯০ পয়সা। যদিও লেনদেনের এই সময়ে শেয়ার দর ৭ টাকা ৭০ পয়সা পর্যন্ত নেমেছিল।
ব্যাংকটি তাদের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ করেছে। যেখানে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১৩ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩০ পয়সা।
বেশি মুনাফায় কম লভ্যাংশ
গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরে এবার ২৪টি ব্যাংকই বোনাসের পাশাপাশি নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। কেবল নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে একটি ব্যাংক। আর কেবল বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে ৫টি। আর একটি ব্যাংক কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি।
এর মধ্যে আইএফআইসি, স্ট্যান্ডার্ড, এবির পর কেবল এনবিএল ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এই তিনটি ব্যাংকের মধ্যে এনবিএলের আয় সবচেয়ে বেশি হয়েছে। এমনকি ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করা রূপালী ব্যাংকের দ্বিগুণের বেশি আয় করেছে এই ব্যাংকটি।
এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে ২০২০ সালে এনবিএল শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ১৪ পয়সা আয় করেছে।
সমপরিমাণ বোনাস লভ্যাংশ দেয়া এবি ব্যাংকে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৫০ পয়সা, আইএফআইসির ৭০ পয়সা আর স্ট্যান্ডার্ডের ১ টাকা ৮ পয়সা।
এই তিনটির মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড আড়াই শতাংশ বোনাসের পাশাপাশি শেয়ারপ্রতি ২৫ পয়সা নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্যদিকে ১০ শতাংশ বোনাস ঘোষণা করা রূপালী ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৪৯ পয়সা আর মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১ টাকা ৩১ পয়সা।
ন্যাশনাল ব্যাংকের আগের বছরের তুলনায় পরিচালন মুনাফা বেশি করলেও চূড়ান্ত মুনাফা কমেছে ব্যাংকটির। ৩০ কোটি টাকার মতো মুনাফা কমায় যেকোনো সময়ের তুলনায় সবচেয়ে কম লভ্যাংশ দিল ব্যাংকটি।
এবার এনবিএল চূড়ান্ত মুনাফা করেছে ৩৬১ কোটি ৮৩ লাখ টাকার বেশি। আগের বছর ব্যাংকটি ৩৯১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার কিছু বেশি মুনাফা করেছিল।
২০১৯ সালে ব্যাংকটি ৫ শতাংশ বোনাসের পাশাপাশি শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা নগদ দিয়েছিল। এবার ৩০ কোটি টাকা মুনাফা করায় তারা লভ্যাংশ কমিয়ে অর্ধেক করল।
১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকটি এর আগে কখনও এত কম লভ্যাংশ ঘোষণার তথ্য নেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইটে।