তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভের মধ্যে ২১ অক্টোবর রাজধানীর মিরপুরে শুরু হতে যাওয়া শেষ টেস্ট খেলতে দেশে ফিরবেন তিনি।
তবে গত আগস্টে নজিরবিহীন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পূর্ববর্তী সরকারের সঙ্গে সাকিবের সম্পৃক্ততার জন্য তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
সম্প্রতি একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভকারী জুলাই ও আগস্টের আন্দোলনের সময় সাকিবের কর্মকাণ্ডের জন্য তার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে গ্রাফিতি প্রদর্শন করেছে। মিরপুরের ক্রিকেট স্টেডিয়াম এলাকায় সাকিবের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে দেয়াল লিখনও করেছেন তারা।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, আন্দোলনের সময় দেড় হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। তারা বলছেন, আমরা চাই না সাকিব আবার বাংলাদেশের জার্সি গায়ে জড়ান। কারণ, তার সঙ্গে ফ্যাসিবাদী সরকারের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
এদিকে সাকিবের দেশে ফিরে আসা কিংবা টেস্ট ম্যাচে অংশগ্রহণে কোনো বাধা দেখছেন না ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া। রোববার গণমাধ্যেমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন অভিমত জানান।
সাকিবের উল্লেখ করে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘তিনি একজন ক্রিকেটার, তিনি খেলবেন এবং তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে কোনো বাধা দেখছি না। ক্রিকেট দলসহ প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমরা সেটা নিশ্চিত করব।’
মিরপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সাকিব ও বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার জার্সি পোড়ানোর বিষয়ে আসিফ মাহমুদ এই ক্ষোভকে আবেগের বহিঃপ্রকাশ’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এই দুই ক্রিকেটার শেখ হাসিনা সরকারের সংসদ সদস্য ছিলেন।
সাকিব ফ্যাসিবাদী সরকারের সদস্য ছিলেন উল্লেখ করে আসিফ মাহমুদ বলেন, 'আমরা অনেক বড় আন্দোলনের পর এখানে এসেছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। তবে এখনও কিছু আবেগ জড়িত রয়েছে।’
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে সাকিব আন্দোলনের সময় নিশ্চুপ থাকার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘নিজ শহর মাগুরার অগ্রগতির জন্য আমি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি এবং কেবল অল্প সময়ের জন্য সংসদ সদস্য ছিলাম।’
আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে এবং সাকিবসহ তার দল আওয়ামী লীগের আরও অনেকের বিরুদ্ধে বেশকিছু হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
তবে ক্রীড়া উপদেষ্টা জানিয়েছেন, সাকিব জড়িত না থাকলে মামলার ফাইল থেকে তার নাম বাদ দেয়া হবে।