বিপিএলের চলতি আসরের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৪৯ রান করেছে রংপুর রাইডার্স। ফলে ফাইনালে উঠতে নির্ধারিত বিশ ওভারে এ লক্ষ্য টপকাতে হবে বরিশাল ভিক্টোরিয়ান্সকে।
বুধবার টস জিতে শুরুতে রংপুরকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ভিক্টোরিয়ান্স অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এদিন শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেটের পতনে একসময় মনে হচ্ছিল, ১০০ পেরোতে পারবে না রংপুর। তবে শেষ দিকে শামীম হাসানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দেড়শ’র দ্বারপ্রান্তে গিয়ে থামে টিম রাইডার্স।
প্রথম ইনিংসে কাইল মেয়ার্সের প্রথম ওভারে ৭ রান নিলেও দ্বিতীয় ওভারে জোড়া উইকেটের দেখা পান সাইফউদ্দিন।
দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে সাইফউদ্দিনের ফুলার লেংথ ডেলিভারিটি অফ-স্ট্যাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ব্যাট চালান রংপুরের ওপেনার শেখ মাহেদী। বলটি লেগ সাইড দিয়ে ক্লিন করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে ধরা পড়েন তিনি। শুরুতে বলটি ধরার আগে মাটি ছুঁয়েছে বলে মনে হলেও রিপ্লেতে আউট হয়ে গেছেন দেখা যায়। ফলে পাঁচ বলে ২ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় তরুণ এ বাংলাদেশি ব্যাটারকে।
জোড়া উইকেট পেয়ে সাইফউদ্দিনের উল্লাস। ছবি: ফরচুন বরিশাল
ওভারের শেষ বলে আবারও উইকেটের দেখা পান সাইফউদ্দিন। এবার তার শিকার সাকিব আল হাসান। মাহেদীর মতো একইভাবে মুশফিকের হাতে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরতে হয় চার বলে এক রান করা সাকিবকে।
ইনিংসের পঞ্চম ও নিজের তৃতীয় ওভারে সাফল্যের দেখা পান কাইল মেয়ার্সও। ওভারের চতু্র্থ বলে আরেক ওপেনার রনি তালুকদারকে মাঠছাড়া করেন তিনি। চাপ কমাতে মেয়ার্সের মিডল লেংথ ডেলিভারিটি উড়িয়ে মেরেছিলেন রনি, কিন্তু মারে জোর না থাকায় ডিপ-মিড উইকেটে ডেভিড মিলারের তালুবন্দি হন তিনি। ফিরে যাওয়ার আগে ১২ বল মোকাবিলা করে ৮ রান করেন তিনি।
পাওয়ার প্লের আগেই মাত্র ১৮ রান তুলতে গিয়ে তিন উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে রংপুর। এখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন দুই বিদেশি রাইডার জিমি নিশাম ও নিকোলাস পুরান।
নিশাম রানের চাকা সচল রাখলেও ধীরে খেলে উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন পুরান। তবে কিছুক্ষণ পরই ধৈর্যহারা হয়ে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। নবম ওভারের শেষ বলে ১২ বলে রান করা পুরানকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। পরের ওভারের প্রথম বলেই টপ এজ হয়ে আউট হয়ে যান জিমি নিশাম। জেমস ফুলারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে ক্রস ব্যাট চালিয়ে কট বিহাইন্ড হয়ে যান নিশাম। ২২ বলে নিশাম চারটি চারের সাহায্যে ২৮ রান করে ফিরলে ৪৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় রংপুর।
উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন নিকোলাস পুরান ও জিমি নিশাম। ছবি: ফরচুন বরিশাল
সেখান থেকে মোহাম্মদ নবী ও অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান উইকেটের রক্তক্ষরণ ঠেকানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। ১৫.২ ওভারে জেমস ফুলারের বাউন্সারে ব্যাট চালিয়ে টপ এজ হয়ে সাজঘরে ফেরেন নবী (১২)। দুই বল পরেই বোল্ড হয়ে যান সোহান (১৪)।
শেষের দিকে শামীম হোসেন ও আবু হায়দার রনি ইনিংস বড় করার চেষ্টা করলে ১৪৯ রান তুলতে সমর্থ হয় রংপুর। মাত্র ২৪ বলে পাঁচটি করে চার ও ছক্কায় শামীমের ৫৯ রানের ইনিংসটিই লড়াকু সংগ্রহ দিয়েছে রংপুরকে। অন্যপ্রান্তে ৯ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন রনি।
বরিশালের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন জেমস ফুলার। এছাড়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন দুটি এবং কাইল মেয়ার্স ও মেহেদী হাসান মিরাজ পান একটি করে উইকেটের দেখা।
ফাইনালে পৌঁছাতে হলে কুমিল্লাকে করতে হবে ১৫০ রান।