বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টাইগারদের সিরিজ জয়

  • ক্রীড়া ডেস্ক   
  • ২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ২৩:০৩

জয় দিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে সুপার ওভারে হেরে যায় টাইগাররা। ফলে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ছিল অলিখিত ফাইনাল। এমন ম্যাচ দাপুটে জয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিল বাংলাদেশ।

তৃতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৭৯ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে রান বিবেচনায় দ্বিতীয় ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় জয় বাংলাদেশের। ওয়ানডেতে রানের হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়টা ১৮৩ রানের। ২০২৩ সালে সিলেটে আয়ারল্যান্ডকে এই ব্যবধানে হারিয়েছিল টাইগাররা।

দীর্ঘ ১৯ মাস আগে ২০২৪ সালের মার্চে ঘরের মাঠে সর্বশেষ শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর আফগানিস্তানের কাছে দুবার, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলংকার কাছে একবার করে সিরিজ হারে টাইগাররা।

সিরিজের প্রথমে ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭৪ রানে হারায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচ সুপার ওভারে জিতে সিরিজে সমতা আনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ ম্যাচ জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতল মেহেদি হাসান মিরাজের দল। টানা চার সিরিজ হারের পর দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। ব্যাট হাতে নেমে দলকে দারুণ সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার। পাওয়ার প্লেতে ৭৪ রান যোগ করেন তারা। ১৬তম ওভারে দলের রান ১ শতে নেন সাইফ-সৌম্য। এরমধ্যে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১৪তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান সৌম্য। কিছুক্ষণ পর ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ওয়ানডে ম্যাচে সাইফ পান প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা।

সাইফ-সৌম্যর জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ২২তম ওভারে দলীয় রান দেড়শ স্পর্শ করে বাংলাদেশ। ২৬তম ওভারে দলীয় ১৭৬ রানে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনার রোস্টন চেজ। ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে জাস্টিন গ্রেভসকে ক্যাচ দেন সাইফ। ৬টি করে চার-ছক্কায় ৭২ বলে ৮০ রান করেন তিনি। ব্যক্তিগত ২৮ রানে লেগ বিফোর আউট হলেও, রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান সাইফ।

উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭৬ রানের জুটি গড়েছেন সাইফ ও সৌম্য।

২৯তম ওভারের প্রথম বলে সাজঘরে ফিরেন সৌম্য। স্পিনার আকিল হোসেনের বলে আকিম আগস্তেকে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৮৬ বলে ৯১ রান করেন ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া সৌম্য।

১৮১ রানের মধ্যে দুই ওপেনার ফেরার পর বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন তাওহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তৃতীয় উইকেটে ৭০ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েন তারা। ২ চারে ২৮ রান করে থামেন হৃদয়।

হাফ-সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ৪৪ রানে বিদায় নেন শান্ত। ৩২ ও ৪১ রানে ক্যাচ দিয়ে দুবার জীবন পাওয়া শান্তর ৫৫ বলের ইনিংসে ৩টি ছক্কা মারেন। হৃদয় ও শান্ত উভয়েই শিকার হন স্পিনার অ্যালিক আথানাজের।

দলীয় ২৫২ রানে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে শান্ত ফেরার পর ৪৬তম ওভারেই তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মিডল অর্ডারে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে ৬, রিশাদ হোসেনকে ৩ ও নাসুম আহমেদকে ১ রানে শিকার করেন স্পিনার আকিল হোসেন। এতে ২৬১ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়ে দলীয় ৩শ রানের কোটা স্পর্শ অনিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের।

অষ্টম উইকেটে শেষ ২৪ বলে ৩৫ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহ এনে দেন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান ও অধিনায়ক মিরাজ। ৩শ রান না হলেও ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৯৬ রান করে বাংলাদেশ।

১টি করে চার-ছক্কায় ৮ বলে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন সোহান। ১টি বাউন্ডারিতে ১৭ বলে ১৭ রান করে ইনিংসের শেষ বলে আউট হন মিরাজ।

বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আকিল ৪১ রানে ৪টি ও আথানাজে ৩৭ রানে ২ উইকেট নেন।

২৯৭ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের তিন স্পিনার নাসুম আহমেদ, সিরিজ সেরা নির্বাচিত হওয়া রিশাদ হোসেন ও তানভীর ইসলামের ঘূর্ণিতে পড়ে ৮২ রানেই ৮ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ টপঅর্ডারে অ্যালিক আথানাজেকে ১৫, ব্রান্ডন কিংকে ১৮ এবং আকিম আগস্তেকে খালি হাতে বিদায় করেন নাসুম।

মিডল অর্ডারে দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আরও চাপে ফেলেন তানভীর। কেসি কার্টি ১৫ ও অধিনায়ক শাই হোপ ৪ রান করে তানভীরের শিকার হলে ৬৩ রানে ৫ উইকেটে পরিণত হয় ক্যারিবীয়রা।

এরপর তিন উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারের মুখে ছিটকে দেন রিশাদ হোসেন। ৮২ রানে অষ্টম উইকেট পতনে দ্রুত গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে সফরকারীরা। এমন অবস্থায় নিজেদের ওয়ানডেতে রেকর্ড জয়ের স্বপ্নও দেখতে শুরু করে। কিন্তু শেষদিকে আকিল হোসেনের ১৫ বলে ২৭ রানের ঝড়ো ইনিংসে ১শ পার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রেকর্ড জয়ের সুযোগও হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের।

২৯ ও ৩১তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ ২ উইকেট শিকার করে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন অধিনায়ক মিরাজ। ৩০ দশমিক ১ ওভারে ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮ রান করেন কিং। বাংলাদেশের নাসুম ও রিশাদ ৩টি করে এবং মিরাজ ও তানভীর ২টি করে উইকেট নেন।

ওয়ানডে শেষে আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজের শেষ দুই ম্যাচ হবে যথাক্রমে- ২৯ ও ৩১ অক্টোবর।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২৯৬/৮, ৫০ ওভার (সৌম্য ৯১, সাইফ ৮০, আকিল ৪/৪১)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১১৭/১০, ৩০.১ ওভার (আকিল ২৭, কিং ১৮, নাসুম ৩/১১)।

ফল: বাংলাদেশ ১৭৯ রানে জয়ী।

এ বিভাগের আরো খবর