কোনো দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয় ওই দেশের জাতীয় দলে পাইপলাইন তৈরি কিংবা নতুন প্রতিভা অন্বেষণের জন্য। বিপিএলের এবারের আসরে খুব বেশি নতুন মুখ না দেখা গেলেও পারফর্ম করছে অফফর্মে থাকা খেলোয়াড়রা। বিশেষ করে- খুলনা টাইগার্সের এনামুল হক বিজয়, ফরচুন বরিশালের মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, দুর্দান্ত ঢাকার নাঈম শেখ। তবে, ব্যর্থ টি-টোয়েন্টি দলের নিয়মিত ২ ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার। তাই আগামী শ্রীলঙ্কা সিরিজে দলে ঢুকতে তাদের ঘারে নিশ্বাস ফেলছে নাঈম শেখ আর এনামুল বিজয়। সিলেটের নাজমুল শান্তর অফফর্ম জায়গা করে দিতে পারে সৌম্য সরকারকে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমছে না শামীম পাটোয়ারির। তাই আগামী শ্রীলঙ্কা সিরিজে বড় পরিবর্তন আসতে পারে টি-টোয়েন্টি দলে।
বিপিএলের মাঝের সময়টাতে রান খরা দেখা দিলেও আশা জাগাচ্ছে শেষ কয়টি ম্যাচ। দেখা মিলছে টি-টোয়েন্টির আসল বিনোদন চার-ছক্কার। বিদেশিদের ছাপিয়ে ঝলক দেখাচ্ছে দেশি ক্রিকেটাররা। আসরের প্রথম সেঞ্চুরিটিও এসেছে দেশের স্টারবয় তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাট থেকে। এবারের বিপিএলের সেরা ১০ রান সংগ্রাহকের তালিকার ৮ জনই বাংলাদেশি ক্রিকেটার।
বিপিএলের এবারের আসরের শুরু থেকেই শঙ্কা তৈরি হয়েছিল বিদেশি খেলোয়ার পাওয়া নিয়ে। কারণ একই সাথে চলছে ৩টি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। যার কারণে শুরুর দিকে দলগুলোকে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে ভালো মানের বিদেশি খেলোয়ার পাওয়া নিয়ে। তবে, এবার অবসান হচ্ছে সেই শঙ্কারও। ইতোমধ্যে টি-টোয়েন্টির পোস্টারবয়দের দলে ভিড়িয়েছে রংপুর রাইডারস, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স, ফরচুন বরিশাল। রংপুরে যোগ দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার ২ তারকা ক্রিকেটার রেজা হেন্ডরিকস আর ইমরান তাহির। মাঠ মাতাতে এসেছে নিউজিল্যন্ডের অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। আগামী ১৩ তারিখ ওয়েস্ট ইন্ডিজ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ শেষে যোগ দিবে রাসেল, পোরান, কাইল মাইয়ার্সসহ ৯ জন ক্যারিবিয়ান তারকা। আরও বেশকিছু তারকার দেখা মিলবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি আরব আমিরাতরে আইএল টি-টোয়েন্টি শেষে।
এই বিদেশি খেলোয়াড়দের আগমণে বদলে যেতে পারে বিপিএলের পয়েন্ট টেবিলের হিসাব-নিকাশ। টেবিলের শুরুর ৫ দলেই যোগ দিচ্ছে টি-টোয়েন্টির তারকারা। বিশেষ করে ফরচুন বরিশাল আর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা রংডুর রাইডারসের প্লে-অফ খেলা এক রকম নিশ্চিতই। ৮ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত নিরাপদে থাকলেও শেস ২ ম্যাচের হার শঙ্কা তৈরি করছে চট্টগ্রামকে নিয়ে। কারণ পুরোনো সেই ছন্দ ফিরে পাচ্ছে না দলটি। একই অবস্থা খুলনা টাইগার্সেরও। তবে খুলনার ছন্দপতনের শুরু মুলত বিদেশি খেলোয়াড়দের বিদায়ের পর। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা পাকিস্তানের অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নাওয়াজ, ফাহিম আশরাফদের বিদায় খুব করে ভাবাচ্ছে খুলনাকে। তবে, দ্রুত আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকারা দলের সাথে যোগ দেবে, যেটা স্বস্তির কারণ হবে খুলনার জন্য।
অন্যদিকে ঢাকা ছেড়ে বিপিএল এবার পাড়ি জমিয়েছে সাগরকন্যা চট্টগ্রামে। যেখানে প্রতি বিপিএলেই দেখা মেলে রানের ফুলঝুড়ি। এই বিদেশি খেলোয়ারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতভাবেই সেটার মাত্রা বাড়িয়ে দিবে আরও বহুগুণ।