বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জয়ের ভান্ডার কি ৯ শূন্যই হবে

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১২ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০৯

আমি চাই, লিগ পর্বে দুদলের শেষ ম্যাচটি জমে উঠুক এবং রোমাঞ্চ ছড়িয়ে দিক ক্রিকেটামোদীদের মাঝে।

বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট শেষের দিকে চলে এসেছে। আজ লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এই ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ভারত। তাদের জন্য লিগ পর্বের শেষ ম্যাচটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতার।

গুরুত্বহীন ম্যাচ হলেও ডাচদের ছেড়ে কথা বলবে না তারা। কারণ- লিগ পর্বে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে টানা যে আটটি জয় তুলে নিয়ে একটি মোমেন্টাম পেয়েছে দলটি, সেখানে কোনোভাবেই মরিচা ধরতে দেবে না। নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে লিগ পর্বে ‘নাইন টু নাইন উইন’ নিয়েই সেমিফাইনালে খেলতে যেতে চাইবে তারা।

এ ছাড়া গত আসরে দেখেছি, লিগ পর্বে খুবই ভালো খেলেছিল ভারত। কিন্তু সেমিফাইনালে গিয়ে ছন্দপতন হয় দলটির। আশা করি, তারা অতীত থেকে শিক্ষা নেবে। জয়ের ছন্দ কোনোভাবেই হারাতে চাইবে না রোহিতরা।

আমি মনে করি, আজ ডাচদের ব্যাপারে বেশ সতর্ক থাকবে তারা। কারণ- একটি বাজে দিন অনেক কিছুই বদলে দিতে পারে। কোনো অঘটন যাতে না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রেখেই খেলবে টিম ইন্ডিয়া। মাঠে তাদের জয়ের ক্ষুধা থাকবে। তবে এই ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের বিশ্রামে রাখতে পারে দল। যাতে করে পুরোপুরি সতেজ হয়ে সেমিফাইনালের জন্য প্রস্তুত হতে পারে।

হার্দিক পান্ডিয়ার বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যাওয়ায় ব্যালান্সড একাদশ গড়তে গিয়ে কিছুটা বিপাকেই পড়তে হচ্ছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে। ছয় ব্যাটার ও পাঁচ বোলারকে নিয়ে খেলছে দলটি। পান্ডিয়ার জায়গায় ফেরা সূর্যকুমার যাদব কিন্তু সেভাবে রান পাচ্ছেন না। এ ছাড়া ভারতের ব্যাটিং লাইনআপে আর কোনো দুর্বলতা আমি দেখছি না। আজকের ম্যাচে যাদবের সঙ্গে সাইড বেঞ্চের খেলোয়াড়দের বাজিয়ে দেখার সুযোগ নিতে পারে ভারত।

এই বিশ্বকাপে অবিশ্বাস্য রকমের ফর্মে আছেন রোহিতরা। অপ্রতিরোধ্য ক্রিকেট খেলছেন তারা। কোনো দলকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। সেই অর্থে ভারত দলকে কোনো দল চাপের মধ্যেও ফেলতে পারেনি। যে কটি ম্যাচে চাপ তৈরি হয়েছে, সেখান থেকে বেশ দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দলটি। এ পর্যন্ত ভারতকে হারানোর মতো দল বিশ্বকাপে দেখিনি। অন্য দলগুলোর সঙ্গে যে ভারতের অনেক পার্থক্য- সেটি মাঠে প্রমাণ হয়েছে। দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাওয়া এমন একটি দুরন্ত দলকে কি লিগ পর্বে শেষ পর্যন্ত আটকাতে পারবে নেদারল্যান্ডস?

আমার মতে, ডাচদের জন্য এই ভারতকে হারানোর ব্যাপারটি হবে অনেক কঠিন একটি ব্যাপার। তবে ক্রিকেট চরম অনিশ্চয়তার খেলা। এখানে কখন কী ঘটে যায়, সেটা আগে থেকে শতভাগ নিশ্চিত করে বলা যায় না। যেমন- দক্ষিণ আফ্রিকাকে যে ম্যাচে হারাল নেদারল্যান্ডস, সেটি কিন্তু অনেকের ধারণার বাইরে ছিল। যদি বলি আফগানিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটির কথা, সেখানে অতিমানবীয় ও অকল্পনীয় এক ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংস খেলে দলকে জেতান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এ ছাড়া আফগানিস্তান দলটি তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাই ডাচদের ছোট দল বলে হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই।

কোনো কিছু হারানোর ভয় নেই ডাচদের। তারা সম্পূর্ণ চাপমুক্ত ও নির্ভার হয়ে খেলবে। আমি মনে করি, লিগ পর্বের অন্য একটি ম্যাচের মতো সমান গুরুত্ব দিয়েই নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলবে ভারত। এ ম্যাচে কোনো অঘটন ঘটে গেলে সেটির প্রভাব কিন্তু সেমিফাইনালে পড়তে পারে। এ ব্যাপারটিও চিন্তায় থাকবে তাদের।

এই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে যে ব্যাপারটি বেশি চোখে পড়েছে, সেটি হলো- এবার ঘরের মাঠে নতুন ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলছে রোহিত অ্যান্ড কোং। বিশেষ করে পাওয়ার প্লেতে ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ বদলে গেছে তাদের। গত আসরে দেখেছি- দলগুলো পাওয়ার প্লেতে ‘ওয়াচফুল স্টার্ট’-এর প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। কিন্তু এবার ভারত দলটি ‘পাওয়ারফুল স্টার্ট’ চালু করেছে। ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারে রোহিত শর্মাকে যেভাবে আক্রমণাত্মকভাবে ব্যাট চালাতে দেখা যায়, এটি তাদের নতুন কৌশল হতে পারে। পাওয়ার প্লেতে দ্রুত স্কোর বোর্ডে রান জমা করতে পারলে মাঝের ওভারগুলোতে খেলা সহজ হয়। অবশ্য বিরাট কোহলির মতো নির্ভরযোগ্য ব্যাটার দলে থাকায় ব্যাটিংয়ে সেই সাহস দেখাতে পারছেন রোহিতরা। টপ অর্ডার ঠিকঠাক মতো ক্লিক করায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না ভারতের। তাদের মিডল অর্ডারও শক্তিশালী। এখন পর্যন্ত লোয়ার অর্ডারকে চাপে পড়তে হয়নি।

শুধু ব্যাটিং নয়, বোলিংয়েও অনন্য দেখা যাচ্ছে ভারতকে। পাওয়ার প্লেতে দ্রুত উইকেট শিকার করে প্রতিপক্ষকে খুবই চাপে ফেলছে তারা। জাসপ্রিত বুমরাহর কথা আলাদা করে বলতেই হবে। এমন বোলার যেকোনো দলের জন্য মূল্যবান সম্পদ। তার বল সামলাতে হিমশিম খেতে হয় ব্যাটারদের। সাইড বেঞ্চ থেকে উঠে এসে মোহাম্মদ শামি এখন দলের অন্যতম সেরা বোলার। মোহাম্মদ সিরাজের বল খেলাও বিপজ্জনক। ভারতের পেস ইউনিট যেকোনো দলের জন্য বড় হুমকি হতে পারে। কুলদীপ, অশ্বিন ও জাদেজা মিলে স্পিন শক্তিতেও বলীয়ান ভারত। ফিল্ডিংয়েও সমান গুরুত্ব দিয়েছে দলটি। ফলে সব দিক থেকে অপ্রতিরোধ্য দল হয়ে উঠেছে তারা। আমার মতে, এই দলটিকে আটকাতে হলে অবিশ্বাস্য কিছু করে দেখাতে হবে নেদারল্যান্ডসকে।

ভারত অপ্রতিরোধ্য বলে মনোবল হারাবে না ডাচরা। তারাও পাল্টা জবাব দেয়ার চেষ্টা করবে। ভারতের সামনে ডাচ দলটি আত্মবিশ্বাসী হওয়ার কারণ আছে। বিভিন্ন দেশের বংশোদ্ভূত ক্রিকেটারদের সমন্বয়ে গড়া তাদের দলটি। অধিনায়ক স্কট অ্যাডওয়ার্ডস অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার অনেক অভিজ্ঞতা আছে তার। এ ছাড়া তাদের বেশ কিছু ক্রিকেটার আফ্রিকান বংশোদ্ভূত। তাদেরও সাউথ আফ্রিকার ক্রিকেটে বিভিন্ন পর্যায়ে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়ও রয়েছে ডাচ দলে। সব মিলিয়ে ১২ বছর পর বিশ্বকাপে খেলতে আসা নেদারল্যান্ডস দলটি কিন্তু লড়াকু। এই বিশ্বকাপে দুটি বড় জয়ও পেয়েছে তারা। স্পিন ভালো খেলায় বেশ দক্ষতা আছে তাদের। এটি তাদের ইতিবাচক দিক। তাদের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় নিয়মিত কাউন্টি ক্রিকেটেও খেলেন। উইকেট নেয়ার মতো ভালো মানের বোলারও আছে দলে। আমার মতে, শক্তি-সামর্থ্যে ভারতের তুলনায় অনেক পিছিয়ে থাকলেও নিজেদের দিনে ভালো কিছু করে দেখাতে পারে নেদারল্যান্ডস। তারাও চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে পারে।

আমি চাই, লিগ পর্বে দুদলের শেষ ম্যাচটি জমে উঠুক এবং রোমাঞ্চ ছড়িয়ে দিক ক্রিকেটামোদীদের মাঝে।

এ বিভাগের আরো খবর