বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইংলিশদের চোখ রাঙাতে পারে ডাচরা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৭ নভেম্বর, ২০২৩ ২৩:৫১

উপর্যুপরি হারে ক্ষত-বিক্ষত ইংল্যান্ড বেলা শেষে জেগে উঠতে পারে। ব্যাটিং-বোলিংয়ে তাদের যে সামর্থ্য রয়েছে, তার স্বাভাবিক প্রতিফলন হলে মাঠে স্বরূপেই দেখা মিলবে তাদের।

কথায় আছে, যত গর্জে তত বর্ষে না। তর্জন-গর্জনে যেভাবে ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে এসেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড দলটি, তাদের সেই পারফরম্যান্স কিন্তু দেখা যায়নি। যে সাতটি ম্যাচ খেলেছে তারা, সেখানে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়টি বাদ দিলে তাদের অর্জনের খাতায় শূন্য।

যে রকম দুদর্শা, বিপর্যস্ত ও বিধ্বস্ত চেহারায় দেখা যাচ্ছে ইংল্যান্ড টিমকে, তা কারও কাম্য ছিল না। যেখানে বিশ্বকাপ শিরোপা ধরে রাখতে জয়ের মূল মিশন ছিল দলটির, ফেভারিট তালিকায় নাম ছিল, শেষ চারের চারটি দলের মধ্যে অনেকেই দলটিকে রেখেছিলেন, সেই দলটি কিনা সবাইকে একযোগে ভুল প্রমাণ করে মুদ্রার উল্টো পিঠটাই দেখাল! যেখানে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ এক, দুই, তিনের মধ্যে দলটির নাম শোভা পেত, সেই ইংল্যান্ড এখন একেবারে টেবিলের তলানিতে অবস্থান করছে। বিশ্বকাপে সেরা হওয়ার দৌড়ে এসে স্মরণকালের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স শো করল তারা।

হতাশার অতল সাগরে ডুব দেয়া এই ইংল্যান্ডের সামনে আরেকটি চ্যালেঞ্জ। সেটি হলো আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি টুর্নামেন্টে তাদের খেলা নিশ্চিত করার। টানা হারতে হারতে তাদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। হাতে থাকা বাকি দুই ম্যাচেও যদি হারের তিতকুটে স্বাদ পায় ইংল্যান্ড, তাহলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগটিও হারাবে। তাই আজ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচটি তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জের হতে যাচ্ছে। সব দিক থেকেই এই ম্যাচে অনেক বেশি চাপে থাকবে ইংলিশরা।

আমার মতে, ইংল্যান্ড দলের বর্তমান যে পরিস্থিতি, তা বিবেচনা করলে নেদারল্যান্ডস তাদের জন্য আজ বড় প্রতিপক্ষ। কেননা ডাচ দলটির হারানোর কিছু নেই। নির্ভার হয়ে খেলবে দলটি। হতাশাগ্রস্ত ইংল্যান্ড যে চাপে আছে, সেই সুযোগটি নেবে নেদারল্যান্ডস। এরই মধ্যে যে দুটি জয় পেয়েছে তারা, তা কিন্তু বড় দলের বিপক্ষেই। দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশকে হারিয়ে দলটি বিশ্ব ক্রিকেটে বিস্ময় উপহার দিয়েছে।

বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে কঠিন পরীক্ষায় পাস করেই কিন্তু এখানে এসেছে তারা। জন্ম দিয়েছে রূপকথার। এখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলার স্বপ্ন দেখছেও ডাচ দলটি। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আরেকটি অঘটনের জন্ম দিতে পারে তারা। ইংল্যান্ড পরাশক্তি হলেও নেদারল্যান্ডসকে সহজভাবে নেয়ার সুযোগ নেই।

উপর্যুপরি হারে ক্ষত-বিক্ষত ইংল্যান্ড বেলা শেষে জেগে উঠতে পারে। ব্যাটিং-বোলিংয়ে তাদের যে সামর্থ্য রয়েছে, তার স্বাভাবিক প্রতিফলন হলে মাঠে স্বরূপেই দেখা মিলবে তাদের। ইংল্যান্ড নিজেদের মতো করে স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারলে নেদারল্যান্ডসকে হারানোর ক্ষেত্রে তেমন বেগ পাবে না।

অবসর ভেঙে ইংল্যান্ড দলে ফেরেন বেন স্টোকস। কিন্তু তার ফেরায় দলে প্রভাব ফেলেনি। অধিনায়ক জস বাটলার কেন হতাশ হচ্ছেন বারবার, সেটাই বুঝতে পারছি না। তবে জো রুটের ফর্মে না থাকার ব্যাপারটি সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে ইংল্যান্ডকে। তাদের ব্যাটিংয়ে গভীরতা থাকলেও পারফরম্যান্সে তা ফুটে উঠছে না। টপ অর্ডার, মিডল অর্ডারের মতো লোয়ার মিডল অর্ডারও তাদের সমান শক্তিশালী। দলে অলরাউন্ডারের ছড়াছড়ি। তারা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন যেকোনো সময়। আমার মনে হয়, নাম অনুযায়ী খেলতে পারলে বড় স্কোর সহজেই গড়তে পারবে ইংল্যান্ড।

আগের ম্যাচগুলোয় দেখেছি, ইংল্যান্ডের বিবর্ণ বোলিং। যদিও বিধ্বংসী বোলিং লাইনআপ তাদের। তা সঠিক কার্যকর হতে হবে। পেস-স্পিন সমন্বয়ে তাদের বোলিং বিভাগ খুবই বৈচিত্র্যময়। যেকোনো দলকে বেকায়দায় ফেলতে পারে। তাদের জ্বলে উঠতে যে জিনিসটা বেশি প্রয়োজন, সেটি হলো আত্মবিশ্বাস। ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলতে পারলে দারুণ কিছু করে দেখাতে পারে ইংলিশরা।

অবশ্য ফিল্ডিংসহ তাদের অনেক জায়গায় দুর্বলতা দেখা গেছে। সেগুলো শুধরাতে হবে। কোনো ভুল করা যাবে না। ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত ও সঠিক কাজটি করতে হবে। তাহলে ইংল্যান্ড স্বরূপে ফিরতে পারে বলে আশা করি।

অপরদিকে, নেদারল্যান্ডসকে সহজ প্রতিপক্ষ মনে করা হলে ভুল হবে। কেননা দলটি দুই বড় অঘটন ঘটিয়ে যে আত্মবিশ্বাস পেয়েছে, সেটি কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। অনেক দিন পর বিশ্বকাপে খেলতে আসা এবারের ডাচ দলটি ব্যাটিং-বোলিংয়ে অনেক বৈচিত্র্যময় ও শক্তিশালী। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে তাদের দারুণ সম্ভাবনা আছে। বোলিংয়েও দুর্দান্ত।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- তাদেরও বেশ কিছু অলরাউন্ডার আছেন, তারা ম্যাচে বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন। ডি লিডের কথা বলতেই হবে। দলের সেরা অলরাউন্ডার। এমন ক্রিকেটার যেকোনো দলের ব্যাটিং ও বোলিং অপশন বাড়িয়ে দেয়। সব মিলিয়ে ইংল্যান্ড দলটিকে অনেক চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে নেদারল্যান্ডস।

দুটি দলই ইউরোপের। ফলে প্রত্যেকের অপরের সম্পর্কে ভালো জানা-শোনা আছে। সবদিক বিচার-বিবেচনা করে পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে আজ দুদলের ম্যাচটি ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। আশা করি, দুদলের মধ্যে একপেশে খেলা আমরা দেখব না।

এ বিভাগের আরো খবর