দলীয় রানের খাতা খোলার আগেই মেহেদী হাসান মিরাজের প্যাভিলিয়নে ফেরাটাই ছিল ইঙ্গিত। তারপর সাকিব, মুশফিকের চেষ্টার মধ্যে ছিল একের পর এক ব্যাটারদের যাওয়া-আসার মিছিল। শেষ পর্যন্ত ১৯৩ রান তুলে অল আউট হয়েছে টিম সাকিব আল হাসান।
সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৩৮.৪ ওভারে ১৯৩ রান তুলে গুটিয়ে গেছে টাইগারদের ইনিংস। ফলে জিততে ১৯৪ রান করতে হবে পাকিস্তানকে। বাংলাদেশের ইনিংসে সাকিব-মুশফিকের শতরানের জুটি ছাড়া আর বলার মতো তেমন কোনো পার্টনারশিপই হয়নি।
এদিন ইনিংস শুরুর ওভারটিই মেইডেন নেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। নাসিম শাহের করা দ্বিতীয় ওভারের প্রথম ডেলিভারিতেই স্কয়ার লেগে থাকা ফখর জামানকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন গত ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা মেহেদী হাসান মিরাজ। এর ফলে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো গোল্ডেন ডাক মারলেন মিরাজ।
এরপর শুরুর বিপর্যয় সামাল দিয়ে খেলতে থাকেন দলে ফেরা লিটন দাস ও নাইম শেখ। এই জুটিও বেশিদূর এগোতে দেননি আফ্রিদি। তার করা পঞ্চম ওভারের শর্ট লেন্থের পঞ্চম বলটি বাড়তি বাউন্স পাওয়ায় থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দেন লিটন। ফেরার আগে স্কোররেবার্ডে ১৬ রান যুক্ত করে যান তিনি।
লিটনের পর বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি নাইম শেখও। হারিসে ওপর চড়াও হতে গিয়ে ব্যক্তিগত ২০ রানের মাথায় টপ এজ হয়ে ক্রিজ ছাড়েন বাংলাদেশের এই ওপেনার। এরপর মাত্র ২ রান করে প্যঅভিলিয়নের পথ ধরেন আগের ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়া তাওহীদ হৃদয়। হারিসের লেংথ বলে ফ্লিক করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। দলীয় ৪৭ রানে চার টপ অর্ডার ব্যাটারকে হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় টাইগাররা।
এরপর বাংলাদেশের হাল ধরেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। দুজনই স্ট্রাইক রোটেড করে খেলার সঙ্গে বাউন্ডারি মেরে রানের চাকা সচল রাখেন। দুজনের এই জুটিই আজ সর্বোচ্চ ১০০ রান যুক্ত করে দলীয় স্কোরবোর্ডে।
তবে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিব। ফাহিম আশরাফের বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফখরকে ক্যাচ দেন তিনি। আর তাতে শেষ হয়েছে মুশফিকের সঙ্গে তার ১২০ বলে শত রানের জুটি।
সাকিব ফিরে গেলে শামীম পাটোয়ারিকে নিয়ে ৭১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। এদিকে দারুণ শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি শামীম। ইফতিখারের লেংথ ডেলিভারিতে মিড অনের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে ইমাম উল হককে ক্যাচ দিয়েছেন ১৬ রান করা এই ব্যাটার।
শামীমের বিদায়ের পর আউট হন মুশফিকও। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া এই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন হারিস রউফ। জায়গা বানিয়ে মারতে গিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দেন ৬৪ রানের ইনিংস খেলা মুশফিক। মুশফিকের পর ঠিক পরের বলেই আউট হয়েছেন তাসকিন আহমেদ।
ধৈর্য ধরে খেলে লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে দলীয় সংগ্রহ দুইশ’ পার করার সুযোগ ছিল আফিফ হোসেনের সামনে। অথচ আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে তিনিও উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। নাসিম শাহর করা শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিড অনে ফাহিম আশরাফের হাতে তালুবন্দি হন তিনি। এরপর শরিফুলকে বোল্ড করে ১৯৩ রানে বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে দিয়েছেন নাসিম।
পাকিস্তানের হয়ে চারটি উইকেট নিয়েছেন হারিস রউফ। আর নাসিম শাহ নিয়েছেন তিনটি উইকেট।