নারী ফুটবলারকে চুমু দেয়া নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে স্পেনসহ ইউরোপের ফুটবল অঙ্গন উত্তপ্ত। অবশেষে সেই উত্তেজনায় পড়ল জল। নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমেই শেষ পর্যন্ত স্পেনের ক্রিড়াঙ্গন স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হলো।
বিশ্বকাপের ফাইনালে পুরস্কার বিতরণের সময়ে নারী ফুটবলার হেনিফার এরমোসোর ঠোঁটে চুমু দেয়ার দায়ে রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) সভাপতি লুইস রুবিয়ালেসকে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফুটবলের কোনো কার্যক্রমে তিনি অংশ নিতে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি এরমোসোর সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগের চেষ্টাও করতে পারবেন না তিনি।
শনিবার এক বিবৃতিতে রুবিয়ালেসকে সব ধরনের ফুটবল থেকে সাময়িক নিষিদ্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। প্রাথমিকভাবে ৯০ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তাকে। এই সময়ে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আজ (আমরা) জনাব লুইস রুবিয়ালেসকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফুটবল সম্পর্কিত সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে ফিফা শাস্তিমূলক কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেয়ার আগে শুক্রবার বিশেষ সভা ডেকেছিল স্পেনের ফুটবল ফেডারেশন। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, সেখানে পদত্যাগ করবেন রুবিয়ালেস। কিন্তু সভায় নিজের সাফাই গেয়ে রুবিয়ালেস জানিয়ে দেন, তিনি পদত্যাগ করছেন না। এর জেরে স্পেনের নারী বিশ্বকাপজয়ী ২৩ জনসহ ৮০ জন খেলোয়াড় ধর্মঘটের ডাক দিয়ে জানান, ‘নেতৃত্ব’ পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত তারা স্পেনের হয়ে খেলবেন না।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে, যখন স্পেন ফুটবল ফেডারেশন ভুক্তভোগী হেনি এরমোসোর বক্তব্য মিথ্যা দাবি করে আইনি ব্যবস্থার হুমকি দেয়।
এর আগে সিডনিতে অনুষ্ঠিত নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে দলটির ফুটবলার এরমোসোর ঠোঁটে আচমকা চুমু দিয়ে বসেন রুবিয়ালেস। বিতর্কিত এই কাণ্ড ঘটানোর পর থেকে তোপের মুখে রয়েছেন তিনি। চুমু বিতর্কে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হলেও রুবিয়ালেস নিজের অবস্থানে ছিলেন অনড়। সমালোচনাকারীদের ‘ইডিয়ট’ বলে উড়িয়ে দিলেও পরে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।
তবে রুবিয়ালেসের এমন বেগতিক অবস্থায় তার পাশেই দাঁড়ায় স্পেনের ফুটবল ফেডারেশন। সংস্থাটি প্রমাণ করতে চাইছে, এরমোসোর বলা ‘সম্মতি ছিল না’ কথাটা মিথ্যা। রুবিয়ালেসই সত্য বলছেন যে সম্মতি নিয়েই তিনি চুমু দিয়েছেন।
নিজেদের ওয়েবসাইটে এ-সংক্রান্ত কয়েকটি ছবিও প্রকাশ করেছে স্পেনের ফুটবল ফেডারেশন। সেই ছবিগুলোর মাধ্যমে তারা প্রমাণ করতে চেয়েছে যে এরমোসোই চুমু দিতে উৎসাহিত করে তুলছিলেন রুবিয়ালেসকে।