বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২৪ বলের মধ্যে ১৬টি ‘ডট’—নাসুমের ‘উপহার’

  • ক্রীড়া ডেস্ক   
  • ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৮:৩৭

কিংসটাউনে গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেই ম্যাচটা নাসুম আহমেদের নিশ্চয়ই মনে আছে? সেবার তিনি দলে ছিলেন না। তবে সেমিফাইনালে ওঠার সমীকরণসমৃদ্ধ ম্যাচটা নাসুমের নিশ্চয়ই দেখার কথা। বাংলাদেশ সেই ম্যাচ হেরেছিল ৮ রানে, বাদ পড়েছিল সেমিফাইনালে ওঠার দৌড় থেকে।

আবুধাবিতে সেমিফাইনাল নয়, সামনে ছিল সুপার ফোরের সমীকরণ। সেখানে ওঠার আশা টিকিয়ে রাখতে জিততেই হবে—এমন ম্যাচে প্রতিপক্ষ-ও সেই আফগানিস্তান। নাসুম এবার দলে, শুধু দলে কেন নতুন বলও হাতে। বাকিটা আপনি জানেন। বাংলাদেশ এবার জিতেছে, সেই ৮ রানেই!

এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সুপার ফোরে ওঠার আশা এখনো টিকে আছে। কালকের ম্যাচের স্কোরকার্ড দেখে বলতে পারেন, সেটা আসলে ম্যাচসেরা নাসুমের কল্যাণে।

কীভাবে—তা একটু ব্যাখ্যা করা যাক। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৮৭ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। এখান থেকে ২০০ ছুঁই ছুঁই স্কোরের স্বপ্ন দেখা অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। কিন্তু পরের ১০ ওভারে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়ে তুলেছে মাত্র ৬৭ রান—যেখানে শেষ ১২টি বলের মধ্যে ৬টি ‘ডট’। এই দুই ওভারে রান উঠেছে ১৫, উইকেট ১টি।

বিষয়টি দিনের আলোর মতো পরিষ্কার যে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের শেষটা মোটেও ভালো হয়নি। শুকনো মুখে মাঠ ছেড়েছেন দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জাকের আলী ও নুরুল হাসান। এমন বাঁচা-মরার ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শেষটা ভালো করতে না পারলে স্বাভাবিকভাবেই মানসিক চাপ নিয়ে নামতে হয় ফিল্ডিংয়ে। প্রতিপক্ষের জন্য সেটা আবার উল্টো পরিস্থিতি। শেষ ১০ ওভারে বোলিং করে ম্যাচে মানসিকভাবে তখনই এগিয়ে গিয়েছিল আফগানিস্তান। স্কোরবোর্ডে ১৫৫ রানের লক্ষ্য। টেস্ট খেলুড়ে কোনো দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের এই রান টপকে জয়ের নজির না থাকলেও শেষটা ভালো করায় রশিদ খানদের কাছে কাজটা মোটেও কঠিন লাগার কথা না!

দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে দারুণ বোলিং করেন নাসুম। উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি কিপটে বোলিংও করেন

দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে দারুণ বোলিং করেন নাসুম। উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি কিপটে বোলিংও করেনএএফপি

যেটা আবার বাংলাদেশের জন্য ছিল উল্টো পরিস্থিতি। লড়াইয়ের পুঁজি যেহেতু সাদামাটা একহারা গড়নের, তাই পাওয়ার প্লেতে একটু বেশি রান দিয়ে ফেললেই শেষে গিয়ে হালে পানি না পাওয়ার ঝুঁকিটা ছিল। এমন পরিস্থিতিতে পাশার দান উল্টে দেন নাসুম।

টি-টোয়েন্টিতে নতুন বলে এমনিতেই বাঁক কম পান স্পিনাররা। সে জন্য নতুন বলে ডেলিভারিগুলো স্টাম্প বরাবর রাখতে চান। তাতে এলবিডব্লিউর সুযোগটাও থাকে। নাসুম আফগানিস্তানের ইনিংসে প্রথম বল থেকে তাঁর ৪ ওভারের কোটার শেষ বলটি পর্যন্ত ঠিক এই নিশানাতেই বোলিং করেছেন। ফল? আফগানিস্তানের ইনিংসে প্রথম বলেই উইকেট পেয়েছেন এলবিডব্লুতে। বোলিং অ্যাকশন এবং নতুন বলের ‘শাইন’-এর কারণে ডেলিভারিটি স্কিড করেছিল। সেদিকুল্লাহ আতাল আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে ব্যাটে পাননি, কারণ ফাঁদটা ছিল ভালো লেংথে বল পড়ার—যেখান থেকে ব্যাকফুটে খেলা খুব বিপজ্জনক। নাসুম ঠিক একই লেংথে বাকি পাঁচটি বল করে পেলেন উইকেট মেডেন ওভার।

বোঝাই যাচ্ছিল, পুঁজি যেহেতু খুব বড় না, তাই দ্রুত উইকেট নিয়ে আফগানিস্তানকে চাপে ফেলতে নাসুমের হাতে নতুন বল তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন। প্রথম দফায় নাসুম সেটা পারলেন, তবে দফার তখনো বাকি ছিল।

তাসকিন পরের ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ভালো সহযোগিতা করার পর নাসুম তাঁর দ্বিতীয় ওভারে দেন মাত্র ৫ রান। এরপর নিজের তৃতীয় ওভারে ২ রানে নেন আরেকটি উইকেট—এবার তাঁর শিকার ইব্রাহিম জাদরান। সেই এলবিডব্লুই এবং ক্রিজে অ্যাঙ্গেলের ব্যবহারে একটু জোরের ওপর করা ডেলিভারিতে—যেটা নতুন বলে বাঁহাতি স্পিনারদের উইকেট নেওয়ার ডেলিভারি। আফগানিস্তানের স্কোর সে সময় ৫ ওভারে ২ উইকেটে ২০। নাসুমের বোলিং বিশ্লেষণ ৩-১-৭-২! ধারাভাষ্যকার তখন বলছিলেন, বাংলাদেশ শুরুটা ভালো করে নিজেদের স্কোরবোর্ডে ‘আরও ১০-১৫ রান যোগ করে নিল।’

বলা বাহুল্য, ধারাভাষ্যকারের সেই কল্পিত ১০-১৫ রান আসলে আফগানিস্তানের ওপর আস্কিং রেট বেড়ে যাওয়ায় চাপ—যেটা আসলে নাসুমেরই দেওয়া ‘উপহার’!

এ বিভাগের আরো খবর